বকর-বকর করতে খুব ভালো লাগে। আগ্রহি শ্রোতা পেলে পাগলামি শুরু হয়ে যায়। ধমনিতে বারুদের প্রবাহ.. ব্রিটিশ আমলে মানুষ বলতো "শায়েস্তা খাঁর আমলেই ভালো ছিলাম। "
মৌলিক চাহিদা যদি সহজে পুরন হয়, মানুষ অবশ্যই শাসকের স্তুতি করবে, প্রনতি জানাবে।
ইতিহাস বলে, সেরা শাসকেরা মানুষের খুব কাছের জন/ আপনজন ছিলেন।
তারা সংরক্ষিত এলাকায় বসবাসকারী ভিন-গ্রহের প্রানী বা সেলিব্রেটি ছিলেন না। জামার কাপড় কেন লম্বা? এই প্রশ্নের জবাবও দিতে হোতো সাধারন মানুষের কাছে। পিঠে আটার বস্তা বয়ে মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতেন। ভৃত্যকে উটের পিঠে চড়তে দিয়ে নিজে পায়ে হেটে চলতেন। তাদের কারো ছিল একটি মাত্র পরিধেয় জামা, কারো ঘরে ছিল শোবার জন্য একটি মাত্র খেজুরের চাটাই! কারো মাথায় দেবার জন্য একখানা পাথর বা ইট।
আজকের মন্ত্রি, আইন প্রণয়নকারীদের কথা বাদই দিলাম... জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার যেখানে বাস করেন, যেভাবে সংরক্ষিত হয়ে বেষ্টিত হয়ে থাকেন, তা দেখলেই বুঝবেন কেন উমর রাঃ এর সময় যাকাত নেবার লোক পাওয়া যেতনা আর এখন যাকাত দেবার লোক পাওয়া যায়না!
বিষয়টা এমন নয় যে তারা ভালো মানুষ ছিলেন বলেই এমন সুন্দর দেশ চালাতে পারতেন। বরং তাদের রাষ্ট্রীয় আদর্শই তাদেরকে সোনার মানুষে পরিণত করেছিল।
মানুষ এখন বলে "১০ বছর আগেও একটু ভালো ছিলাম। "
মানুষ ১০ বছর আগেও একই কথা বলতো! যারা বয়োজ্যেষ্ঠ তারা সাক্ষি।
কারন কিন্তু এই নয় যে গত কয়েক দশক ধরে আমাদের শাসকের মাঝে কোন ভালো বা সৎ মানুষ ছিলো না।
বরং আমাদের আইনের ফাঁকফোকর এর জন্য দায়ি। আমাদের রাষ্ট্র ব্যাবস্থা পুঁজিবাদকে তার আদর্শ হিসেবে ধারন করেছে। আর পুঁজিবাদ যে গরিব মারার দারুন এক "কল" একথা ঘোর শত্রুও অস্বীকার করতে পারবেনা।
অনেকে বলে "আমাদের আদর্শ গণতন্ত্র"। এই মানুষগুলো সম্ভবতঃ বোঝেনা যে গণতন্ত্র হচ্ছে বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যাবস্থায় শাসক নির্বাচনের একটি পদ্ধতি মাত্র।
(যারা বিরোধিতা করবেন তাদের অনুরোধ করবঃ গণতন্ত্র আছে অথচ পুঁজিবাদ নেই এমন একটি দেশের নাম বলুন)
আর আমরা যারা ভোট দিয়ে ভাবি দেশের রাজনীতিতে অংশ নিলাম তারা কয়েকটা সহজ সমিকরন বুঝিনা বলেই এরকম ভাবি।
আপনি যখন প্রতিবার ভোট দিতে যান, দেশের বর্তমান আইন কানুনের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই ভোট দিতে যান। কিন্তু আপনি আদৌ এ বিষয়টি নিয়ে সচেতনভাবে ভেবে দেখেন নি যে, বর্তমান আইনের বেড়াজালেই আপনি আটকে আছেন এবং এ থেকে মুক্তি চান।
যখন আপনাকে কেউ ঠকায়, আপনি কিন্তু তার সাথে আর কোন লেনদেনে যাবেন না। সুতরাং আবার লেনদেনে যাবার আলোচনাই উঠতে পারেনা।
অথচ, আপনি ৫ বছর পর পর সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে ডলে গোছল দিয়ে, গরুর মাংস রান্না করে, পাঞ্জাবি পড়ে ও আতর মেখে ভোট দিতে যান। যদিও এটা জানেন যে আইন না বদলানো পর্যন্ত দেশ বদলাবেনা। যেই আইন ব্রিটিশরা করেছিল লুটে খাবার সুবিধার্থে!!!
আসুন ভেবে দেখি, ভবিষ্যতে কাউকে সমর্থন দিয়ে আবারো তাকে পাপ করার সুযোগ দেব কিনা! এবং ভেবে দেখি সেই সমর্থন দেবার কারনে পাপের ভাগিদার হতে রাজি আছি কিনা।
"মুমিনেরা একই সাপের গর্তে দ্বিতীয়বার দংশিত হয়না"-নবী মুহাম্মাদ সাঃ
যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়। (সূরা আল মুলক-২) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।