আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্রতচারীতে কুশিয়ারা থেকে কলকাতায়

সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে..

২০০৬ সালের শেষের দিকে প্রভাষক ফয়ছল ভাইয়ের কল্যাণে এবং বাংলাদেশে ব্রতচারী আন্দোলনের নিরলস কর্তা হাবিব আহমদ দত্তচৌধুরীর সমন্বয়ে যোগ দিলাম ব্রতচারী প্রশিক্ষণে। ব্রতচারী আন্দোলনের প্রবক্তা গুরুজী গুরুসদয় দত্তের স্মৃতিবিজড়িত কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী চরিয়া স্কুলে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর জকিগঞ্জের বীরশ্রীস্থ গুরুসদয় উচ্চ বিদ্যালয়ে মশাল প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় কলকাতার পথে। আমার হাতের মশালে আলো জ্বালিয়ে সেই কাজটির সূচনা করেছিলেন বীরশ্রীর চেয়ারম্যান মহোদয়। আমাদের সুখ আর অনুভবের যাত্রায় পোঁছে যাই স্বপ্নশহর কলকাতায়।

যেখানে জড়িয়ে আছে গুরুজীর সাধনা আর কর্মের সম্ভার। সেখানে পরম যতেœ আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ দেন নরেশ জী, অহেন জী, অশোক জী, ইলা জী ও মমতাজীরা। টানা এক পক্ষ থাকার পর ফেরা হলো আপন ভূমে। গেলাম প্রশিক্ষনার্থী হয়ে ঘর ফিরলাম ‘ব্রতচারী নায়ক’ মানে প্রশিক্ষক হয়ে। শুরু করলাম শাশ্বত বাঙালি হবার সাধনা।

নিজের এালাকায় নিদনপুর কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘ছোট ব্রতচারী’ হিসেবে শুরু করি প্রশিক্ষকের কাজ। তারপরে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব সভাপতি সাইদুর রহমান সাঈদ ভাইয়ের সহযোগিতায় বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী ব্রতচারী প্রশিক্ষণ দেই একঝাঁক তারুণ্যকে। পরে ব্রতচারী পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণে ময়মনসিংহের মুকুল নিকেতনে যাই প্রশিক্ষক হয়ে আর তখনকার সাথী বিমান তালুকদার দাদাও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে একসাথে ফেরা হলো সিলেটে। স্বপ্নজাল বাড়তে লাগলো আমার। বিমান দাদার সঙ্গ পেয়ে মনোবল আরো দৃঢ় সেই সাথে হাবিব ভাইয়ের অভিভাবকত্ব আছেই।

ময়মনসিংহ থেকে ফেরার কয়েকদিনের মধ্যেই বিমান দাদার আয়োজনে সিলেট শহরের জিন্দাবাজারস্থ রাজা মিউজিয়ামে সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীদের নিয়ে সাপ্তাহিক প্রশিক্ষণের সূচনা করি আমরা। আমি প্রাণের টানে কুশিয়ারা বিধৌত বিয়ানীবাজার থেকে যোগ দিতাম সুরমার তীরঘেষা সিলেট শহরে। একে একে মিশন বাড়তে লাগলো। আমাদের যাত্রা এবার গুরুজীর জন্মভূমে। গুরুসদয় উচ্চবিদ্যালয়ে হলো সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ।

আর প্রশিক্ষক হিসেবে আমি বিমান দাদা ও আমার ব্যাচে কলাকাতা যাওয়া জহির আহমদ। স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ ফারুক স্যারদের ভূমিকা এতোটা আন্তরিক ছিলো ওখানকার ক্যাম্প শেষ হলেও ফিরে আসতে মন চায়নি। দু:খের কথা হলো জীবন ও জীবিকার তাগিদে আমাকে ওই ক্যাম্পের ৩ দিন পরই দুবাই আসতে হলো। হয়ে গেলাম পরদেশে পরবাসী। কিন্তু ব্রতচারীর আদর্শ আজো লালন করি বুকের গভীরে পরম মমতায়।

তাইতো দুবাইতে বৈশাখী মেলায় ব্রতচারী নৃত্য ও গীতি পরিবেশন করে বোদ্ধামহলের দৃষ্টি কেড়েছি। আজ আবার গুরুসদয় স্কুলে ক্যাম্প হচ্ছে নেই শুধু আমি। আমার মন এতোই ব্যাকুল্ মন চায় ফিরে আসি ব্রতচারী ক্যাম্পে। কিন্তু অপারগ! ইচ্ছে হলেও আসতে পারবোনা। আমার বাকি কাজগুলো বিমান দা জয়ন্ত দারা পূরণ করবে এই প্রত্যাশা।

ব্রতচারী যে এক মহান আদর্শ। গুরুজীর ভাষায় বিশ্বমানব হলে হলে শাশ্বত বাঙালি হতে হবে। নতুন প্রজন্মের নবীনরা ব্রতচারীর পতাকা উড়াবে বাংলায়। এই কামনা। জয়তু ব্রতচারী।

জয়তু গুরুসদয় দত্ত আমাদের গুরুজী। লেখক: ব্রতচারী নায়ক, সম্পাদক, মাসিক মুকুল, দুবাই।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.