আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রবিঠাকুর- আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে তাই হেরি তায় সকল খানে......


যদি আমাকে প্রশ্ন করা হয়, আমার জীবনের সবচাইতে প্রভাব বিস্তারকারী মানুষটি কে? সর্বপ্রথম নিশ্চিৎভাবে আমার হৃদয়ে জেগে উঠবে যার নাম, তিনি আমার প্রাণের কবি, গানের কবি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবিঠাকুরের গান আমার জীবনের প্রতি তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে, দেহের প্রতিটি শিরা উপশিরায় ছড়িয়ে রয়েছে। যেকোনো আনন্দ, বেদনা দুঃখ বা ভালোবাসায় আমার বুকে বাজে তারই গানের চরণগুলি। খুব ছোট থেকেই কবিতা, গান, গীতি ও নৃত্যনাট্য ছাড়াও, মায়ের বুকশেল্ফে রাখা গল্পগুচ্ছ নামক বেশ মোটাসোটা একটা বই এর মাধ্যমে তার সাথে পরিচয় আমার। গল্পগুচ্ছে পড়া ইচ্ছাপূরণ গল্পটি পড়ে ছেলেবেলায় আমার মনে বড়ই সাধ জেগেছিলো অন্তত একদিনের জন্য মায়ের মত হয়ে মায়ের মেরুন রঙ নতুন লিপস্টিকটা একটু ঠোঁটে বুলিয়ে দেখতে আর চওড়া বিছাহারটা গলায় পরে ঘুরে বেড়াতে।

সে যাইহোক, ইচ্ছাপূরণ গল্পে ইচ্ছাঠাকুরণের কল্যাণে একরাতের মাঝে ছেলে সুশীলের বাবা সুবল বনে গিয়ে নানা রকম পাঁকামী করে বেড়ানো, আরেকদিকে বাবার ছোট্ট খোকাটি হয়ে নানা রকম উৎপাত অত্যাচারে পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনের অবাক বনে যাওয়ার মজার কাহীনিগুলোর বর্ণনা সেই ছোট্ট বেলাতেই আমার মনে পাঁকাপোক্তভাবে গেঁথে গেলো। আরও একটি গল্প আমার মনে জেগে রয়েছে সকরুণ দুঃখের স্মৃতিস্বরূপ। সে গল্পটির নাম খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন। বাড়ির বৃদ্ধ ভৃত্য রাইচরণের হৃদয়ে মালিকের ছোটখোকাটির প্রতি অত্যধিক স্নেহবাৎসল্যতা আর তারই ভুলে শিশুটির অকালমৃত্যুর বর্ণনাটা আজও যখন পড়ি আমি একটা হার্টবিট মিস করে ফেলি। কষ্টে বুকটা ভেঙ্গে আসে।

ছুটি গল্পের শেষে দুরন্ত, অবাধ্য বালক ফটিকের বুকে মায়ের জন্য জমে থাকা কষ্টের নিদারুণ বোঝা নিজের বুকেই চাপ চাপ অনুভব করি আজও। পোস্টমাস্টারের বিদায়ক্ষণের বর্ণনায় যেমন ব্যাথিত হই, তেমনি সমব্যাথী হই আমি গ্রাম্য সরলা বালিকা রতনের জন্যও। মিনি ও কাবুলীওয়ালা’র ভালোবাসায় পুলকিত হই। চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছোট্ট এক ফ্রক পরা মিনি আর পেশোয়ারী সালোয়ার পরা লম্বা চওড়া দশাসই কোনো কাবুলীওয়ালার ছবি। যার মুঠিবদ্ধ আঙ্গুলীর ফাঁকে উকি দিচ্ছে কাজুবাদাম, কিসমিস আর আখরোট।

এরপর আমার কিশোরীবেলার পরম ভালোলাগা রবিঠাকুরের অনবদ্য ছোট গল্প সমাপ্তি। গল্পের মৃন্ময়ীকে আমার এতটাই ভালো লেগেছিলো যে মাঝে মাঝে আমার দুঃখ হত মা কেনো আমার নামটা মৃন্ময়ী রাখলেন না? আর চুপিচুপি হয়তো অপেক্ষায় থাকতাম আমার শহুরে বাড়িতেই হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে আসা কোনো অপূর্বকৃষ্ণের জন্য। মৃন্ময়ীর উপর রাগ হত আহা অপূর্বের এমন উথাল পাথাল ভালোবাসা এই বোকা মেয়েটা প্রথমেই বুঝলোনা কেনো? কেনো তাকে এত কষ্ট দিলো? যাকবাবা তবুও শেষপর্যন্ত মৃন্ময়ীর বোধদয়ে ও তাহাদের মধুর মিলন সমাপ্তিতে চোখ মুখ লাল হয়ে ওঠার সাথে সাথে মহা প্রশান্তি পেয়েছিলাম মনে। দুখিরাম রুই এবং ছিদাম রুই দুইভাই সকালে যখন দা হাতে লইয়া জন খাটিতে বাহির হইল তখন তাহাদের দুই স্ত্রীদের মধ্যে বকাবকি, চেঁচামেচি চলিতেছে............ শাস্তি গল্পের এই দু'ভায়ের ভ্রাতৃপ্রেম অতুলনীয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আমার মত যে কারও পক্ষপাতিত্ব যে কলহপ্রিয় ছোট বঊ চন্দরার দিকেই যাবে শেষ মেষ, সে কথা বলার আর অপেক্ষা রাখেনা।

মূর্খ ছিদামের ভাষ্যে "ঠাকুর বঊ গেলে বঊ পাইব কিন্ত আমার ভাই ফাঁসি গেলে আর তো ভাই পাইব না। " গল্পে পড়া সেই কথাটা পৃথিবীর সমস্ত পুরুষ জাতীকেই আমার চোখে সেদিন স্বার্থপর করে তুলেছিলো। পুলিশ যখন চন্দরাকে প্রশ্ন করিল, চন্দরা কহিল, "হাঁ, আমি খুন করিয়াছি। " - কেন খুন করিয়াছ? - আমি তাহাকে দেখিতে পারিতাম না। - কোনো বচসা হইয়াছিলো? - না - সে তোমাকে প্রথম মারিতে আসিয়াছিলো? - না - তোমার প্রতি কোনো অন্যায় করিয়াছিলো? - না এইরুপ উত্তর শুনিয়া সকলে অবাক হইয়া গেলো।

তার চাইতেও বেশী অবাক হয়েছিলাম আমি। কি এক নিদারুণ ব্যাথায় বুক ভরে উঠেছিলো অভিমানিনী চন্দরার জন্য। সুভা নামের বোবা মেয়েটির জন্য কতবার যে কেঁদে বুক ভাসিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। প্রতাপের উপর রাগ হয়েছে খুব। কি এমন ক্ষতি হত এই অকর্মণ্য বেকার লোকটির বোবা মেয়েটিকে বিয়ে করলে? রবিঠাকুরের বর্ণনায় সুভার বুকে প্রতাপের জন্য ভালোবাসা জমে থাকার স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়।

পক্ষান্তরে প্রতাপ বুঝি তাকে নির্বাক জন্তু ছাড়া কিছুই ভাবলোনা। তারপরও কেনো যেনো প্রতাপের জন্য একটুখানি কষ্ট অবশিষ্ট রয়ে গেছে আজও বুকের মধ্যে। হয়তো যেভাবেই হোক সুভার জন্য একটু ভালোবাসা দেখেছিলাম ওর মাঝেই। এভাবেই ঘাটের কথার কুসুমের আত্মত্যাগ, ছুটি গল্পের ফটিক, কাবুলিওয়ালার মিনি, হৈমন্তী ও মধ্যবর্তীনি গল্পের হরসুন্দরী আর শৈলবালাদের মত কত মানুষ যে আমার বুকের গভীরে ঢুকে গেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখনীর মধ্যে দিয়ে । যেন তারা এক একজন জলজ্যান্ত মানুষ বই-এর পাতার বুকে হেসে খেলে বেড়িয়েছে আমার চোখের সামনে দিয়ে।

কিন্তু আমার সেই হ্যালুসিনেশনটা মোটেও অমূলক নয় সেকথা জেনেছিলাম অনেকদিন পর। জীতেন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ লেখায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্পের উৎস ও ব্যাখ্যান পড়তে গিয়ে। রবিঠাকুর তার ছোট গল্প রচনা সূচনার ইতিহাস সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, প্রথমে তিনি শুধুমাত্র কবিতাই লিখতেন। একদিন বাবা উনাকে ডেকে বললেন জমিদারী কাজকর্ম এবার থেকে দেখতে। সেই সুবাদেই উনার গ্রামে গঞ্জের পল্লীসমাজে যাওয়া-আসা ও সেখানকার বিভিন্ন দৃশ্যাবলী দেখে বেশীভাগ গল্পের প্লট বাস্তব দৃশ্য বা বাস্তব ঘটনাবলী থেকেই নেওয়া।

সবার আগে আমার কিশোরীবেলার পরম প্রিয় গল্পটি সম্পর্কেই বলি, রবিঠাকুরের ভাষ্যে তা এমন ছিলো, আমি একবার জমিদারী দেখা উপলক্ষে একটি নদীর তীরে নৌকা লাগিয়েছি। মেয়েরা ঘাটে আসতো, কেউ বা ছেলে কোলে, কেউ বা একপাঁজা বাসন নিয়ে, কেউ বা কলসী কাঁখে। একটি মেয়ে, বেশ বড়সড়, হিন্দুর ঘরে অত বড় মেয়ে অবিবাহিতা প্রায় দেখায় যায়না। ছোটো করে চুল ছাঁটা। রোগা রোগা দেখতে, শ্যামলা রঙ।

একদিন নৌকায় বসে কাজ করছি। হঠাৎ মেয়েটি নদীতীরে উদয় হলো, আমার দিকে দেখতে পেয়ে তখনই কোথাও চলে গিয়ে আবার ফস করে একটি ছেলে কাঁখে ফিরে এলো। নৌকার এদিক ওদিক দেখতে লাগলো। নৌকোর জানালা দিয়ে ভেতরে দেখতে লাগলো। বোটের উপর আমাকে সবাই দেখতো।

ওর দেখাটা ছিলো অন্যরকম। মাঝে মাঝে কোলের ছেলেটাকে দূর থেকে আমাকে দেখাতো আঙুল দিয়ে, 'ঐ দেখ'। আমার ভারি মজা লাগতো। এমন একটি স্বাভাবিক চঞ্চলতা স্ফূর্তি ছিলো তার যা ও বয়সের জড়সড় বাঙ্গালী মেয়েদের বেশী দেখা যায়না। একদিন দেখলুম বঁধুবেশে শ্বশুরবাড়ি চললো সেই মেয়ে।

সে যেতে কিছুতেই রাজী নয় । মায়ের কাঁধে মুখ রেখে কি তার কান্না। অন্য মেয়েদের বলাবলি কানে এলো, যা দুরন্ত মেয়ে। কি হবে ওর শ্বশুরবাড়িতে! কত করে বললাম, পরের ঘর করতে যাচ্ছিস ঘাড় হেট করে থাকিস। উঁচু করে কথা বলিসনে।

কিন্তু সে কি তা পারবে? ওকে তো জানো বোন। ভারি দুঃখ হলো ওর শ্বশুরবাড়ি যাওয়া দেখে। বনের হরিণীকে যেন বন্দী করে পাঠানো হলো। সেই মেয়েটিই সমাপ্তি গল্পের মৃন্ময়ী। যাকে নিয়ে রবিঠাকুর গেঁথেছেন চির অবিস্মরণীয় রচনাটি।

ছুটি গল্পের ফটিকের চরিত্রটিও রবিঠাকুর তার চাক্ষুস দেখা এক গ্রাম্য বালকের দৌরাত্বীর কীর্তি কলাপ থেকেই সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি একবার এক নদীতীরে নৌকা ভিড়িয়েছেন। নদীতীরে গ্রামের অনেকগুলি ছেলে খেলা করছিলো। প্রায় চৌদ্দ পনেরোজন। তাদের মধ্যে একজন ছিলো সরদার।

অন্যগুলি নিরীহ প্রকৃতির। সরদার ছেলেটির বয়স বারো তেরো। স্ফূর্তি ও সজীবতার অবতার। কোমরে পৈতে বেঁধে সকলের আগে হৈ হৈ করতে করতে চলেছে। এ নৌকা থেকে ও নৌকা।

হঠাৎ নৌকা থেকে নেমে তীরে গাঁদা করে রাখা গুড়িকাঁঠ গুলো গড়িয়ে নদীতে ফেলেতে শুরু করলো। হঠাৎ এরি মাঝে একটি মেয়ে কোথা থেকে এসে গুড়িতে চেপে বসলো। ছেলেটি তাকে উঠাবার চেষ্টা করলো কিন্তু মেয়েটির তাতে গ্রাহ্যই নেই। তখন ছেলেটা গুড়ি শুদ্ধু মেয়েটাকে ঠেলে পানিতে ফেলে দিলো। মেয়েটা পড়ে গিয়ে বিকট কান্না জুড়ে দিলো আর উঠে এসে ছেলেটাকে ঠাস করে এক চড় বসিয়ে দিলো।

এই ঘটনা থেকেই ছুটি গল্পের শুরু । রবিঠাকুর তার চিঠিপত্র-৯ এ বলেছেন কাবুলীওয়ালার মিনি তার বড় মেয়ের আদর্শে লেখা। মিনির ডায়ালগগুলি বলতে গেলে সব তার বলা কথা থেকেই তুলে দেওয়া। কঙ্কাল গল্পটি তিনি ছেলেবেলায় তার রুমে ঝুলানো কঙ্কালটি দেখেই বড়বেলায় গল্পটি লিখেছিলেন। বাস্তবের পোস্টমাস্টার বন্ধু, মনিহারা গল্পের ইতিহাসসহ প্রায় প্রতিটি গল্পেরই পেছনে ইতিহাস আছে।

সেসব ছাড়াও আমার মনে সব সময় কবিগুরুর একটি গানের প্রতিটি লাইন ভীষণ রকম দাঁগ কেটে কেটে যায় যা আসলে তার নিজের জীবনের অতি সূক্ষ্ম তন্ত্রী থেকেই নেওয়া। রবিঠাকুরও প্রায় তার সমবয়সী বৌদির মাঝে ছিলো দারুণ সখ্যতা। কিন্তু সদা হাস্যমুখী বৌদিটি কোনো এক অজ্ঞাত কারনে হঠাৎ আত্মহননের পথ বেছে নেন। বৌদির মৃত্যুর কিছুকাল পরেই এ গানটি লিখেছিলেন তিনি। আত্মহত্যার কিছু আগে বৌদি শেষবারের মত সেদিন সন্ধ্যায় তার ঘরে হঠাৎ ঢুকেছিলেন।

রবিঠাকুর ফিরে তাকাতেই কিছু না বলে শুধুই মৃদু হেসে ফিরে গিয়েছিলেন। তারপরপরই পৃথিবী হতে চিরতরে চলে যান প্রিয় বন্ধুটি। নস্টনীড়ের চারুলতা আর অমলের সখ্যতার মাঝে খুঁজে পাই আমি রবিঠাকুর আর বউদিকে। মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে সেদিন ভরা সাঁঝে যেতে যেতে দুয়ার হতে কি ভেবে ফেরালে মুখখানি? কি কথা ছিল যে মনে মনে? (কোনদিন আর জানা হবে না কি কথা ছিল তার মনে? চিরবিদায়ের প্রাক্কালে শ্বশুরঘরে তার সবচাইতে প্রিয় বন্ধুটির কাছে ক্ষণিকের জন্য দেখা দিতে এসেছিলেন তিনি। নীরব ভাষায় হয়তো জানিয়েছিলেন বিদায় সম্ভাষণ।

যা এক গোপন বেদনা হয়ে চির জাগরুক রয়ে গেল কবিমনে। গানের চরণগুলিতে স্পষ্ট দেখা যায় কবি তার ঘরে বসে কাজ করছেন। সেদিন সাঁঝের বেলা। বউদি হঠাৎ দরজা ঠেলে ঢুকলেন। কবির দিকে চেয়ে কিছু না বলে একটু হেসে আবার ফিরে গেলেন।

) তুমি সে কি হেসে গেলে, আঁখিকোণে আমি বসে বসে ভাবি, নিয়ে কম্পিত হদয়খানি। তুমি আছো দূর ভুবনে। আকাশে উড়িছে বকপাতি, বেদনা আমার তারি সাথি বারেক তোমায় শুধাবারে চাই। বিদায়কালে কি বলোনাই? সে কি রয়ে গেল গো, সিক্ত যুথির গন্ধ বেদনে? (আমি স্পষ্ট দেখি রবিঠাকুর বসে আছেন তার বাগানে। সেদিন বৃষ্টিবিঁধুর সন্ধ্যাকাল।

ফুলের গন্ধে চারিদিক মৌমাতাল। আকাশে উড়ে চলেছে বকের সারি বলাকাদল। রবিঠাকুরের বড় বেশি মনে পড়ছে প্রিয় বন্ধুটিকে। কেন এইভাবে চলে যাওয়া এই প্রশ্নের কোনো উত্তর জানা নেই, জানা হলোনা তার। মনটা ভিষণ খারাপ হয়।

জানতে ইচ্ছে জাগে একটা বার, কি কথা না বলে চলে গেলে তুমি? সেই অজানা বেদন জানতে মন টা বড় অস্থির হয়। ব্যাথাতুর দৃষ্টি খুঁজে ফেরে চারিদিকে, হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিতে প্রিয় মানুষটিকে। বড় বেশি স্বার্থপর মনে হয় আমার তাকে। রবিঠাকুরের চোখে তিনি এক বিস্ময়! এত দুঃখ তার চাপা ছিলো মনে জানতে পাননি তিনি কখনো সদাহাস্যজ্জল রমনীটির মুখে। ) মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে রবিঠাকুরের দুঃখ কষ্ট বেদনা, ভালোবাসা ও ভালোলাগাগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে গেছে আমাকে সারাটা জীবন জুড়ে।

মনে হয় আমার মনের সকল কথা, সকল আবেগ জেনেই তিনি বসে বসে লিখে গেছেন তার সকল কাব্য, কবিতা, গান। তার রচিত প্রতিটি বাণী মূর্ত হয়ে উঠেছে আমার নিজের জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তে হাসি আনন্দ দুঃখ বেদন হয়ে। তাইতো আমি আজ গাই- আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে তাই হেরি তায় সকল খানে...... আমার প্রানের মানুস আছে প্রানে তাই হেরি তায় সকল খানে কখনো কোনো হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর বেদনায় মনে বাজে একটি গান- দিবস রজনী আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি...... অথবা এই নতুন দিনে যখন সবাই গায় নতুন ভালবাসার নানা গান, আমার প্রাণে তখনো একটিই সঙ্গীত- ভালোবাসি ভালোবাসি........ এই সূরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাঁশী........ নিশীথ রাতের বাদল ধারার মত হঠাৎ দেখা পেতে চায় আমার মন কোনো প্রিয়তমের। রবিঠাকুরের জন্মদিনে তার প্রতি জানাই আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। ।

তিনি আর তার অমর সৃষ্টিগুলি না থাকলে আমার জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া হয়ত আমার হত না কখনও কোনোদিন!!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।