আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রথম প্রেম কিংবা ভালবাসা, যা বুঝেও বুঝিনি ,এখন খুঁজেও খুঁজিনা

হারিয়ে গেছি হারিয়ে গেছি হারিয়ে গেছি ওরে, হারিয়ে গেছি অন্ধরাতে শিশির ভেজা ভোরে । হারিয়ে গেছি ভোরের আলোয় আজকে সারা দিন, হারিয়ে গেছি রাতের কালোয় বাজছে সাপের বীণ। হারিয়ে গেছি রক্ত লালে হারিয়ে গেছি ভাই, হারিয়ে গেছি শূন্য মাঝে আর যে আমি নাই ।

তখন ক্লাশ ওয়ানে পড়ি। তার ডাকনাম হল “সাথী”।

আমার জীবনে অনেক মেয়েকে দেখেছি,ভাল লগেছে কিন্তু কাউকে আর এত ভাল লাগেনি। তার সাথে বন্ধুত্ব হয় একটা ঝগড়ার মাধ্যমে । আমার আবার স্কুলে টেবিল নির্ধারিত থাকত। সবসময় আমি সেখানে বসতাম। একদিন স্কুলে যেয়ে দেখি একটা মেয়ে আমার বেঞ্ঝে বসে আছে।

মেজাজ টা একেবারেই খারাপ হয়ে গেল। মেয়ে মানুষ বলে একটা থাপ্পর দিতে গিয়েও দিলাম না। ভদ্রভাবে সরে যেতে বলার পর পর বলে কিনা,যে আগে আসবে সে আগে বসবে। আমি তাকে সরিয়ে দিতে যেতেই দেখি আমার দীর্ঘদিনের বন্ধুরাও ওকে সাপোর্ট দিচ্ছে। ( তারা ছুড বেলাই লুল ছিল) ধাক্কা ধাক্কি দিয়েও সরাতে না পেরে আমি বাসায় এসে আমার আপু আর ছোট আন্টিকে নিয়ে দল ভারী করে আসলাম।

তারা স্কুলে এসে তাকে একটা ধমক দিতেই তার সেকি কান্না। সাদা চেহারা একেবারেই লাল হয়ে গেছে সে মেয়েটির। আমার খুব মায়া লাগাতে আমি সম্প্রদান কারকের নিয়ম অনুসরন করে আমার স্বত্ত্ব ত্যাগ করতেও রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু সে আর আমার বেঞ্চে বসবেই না। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে কেদে শেষে অন্য বেঞ্চে গিয়ে বসল।

(আহারে বেচারী নতুন স্কুলের ক্লাশের প্রথম দিন এসেই এ পরিস্থিতি আমার আরেক আন্টি স্কুলে চাকরি করতেন । আমি তার কাছে সন্ধায় পড়ছি। এমন সময় সে মেয়ে তার মাকে নিয়ে হাজির। আমি তো ভয়েই মরি । আবার আমার নামে বিচার নিয়ে আসেনি তো? আন্টি ওনাদের বসালেন।

তারা এসেছে আন্টির কাছে সাথীকে পড়ানোর ব্যাপারে। সেদিন থেকেই সে পড়তে বসল। ছোট বেলার রাগ কিনা ,আর কতক্ষন ই বা থাকে। আমার সাথে খুব ভাল ব্যবহার করল। আমিও সব কিছু ভুলে গিয়ে তার সাথে দুষ্টুমি করতে লাগলাম।

সে খুব দ্রুত কথা বলত। আর কথা বলার সময় গলার রগ ফুলে উঠত। আর খুব বেশি ঠান্ডা লাগত তার। কয়েকদিন পরেই গলা ব্যাথা উঠত তার। এসব এখনো মনে আছে।

যার সাথে প্রথম দিন ঝগড়া হল সেই কিছুদিন পর আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু হয়ে গেল। একসাথে খেলা ধুলা,আমার পুতুলকে তার পুতুলের সাথে বিয়ে দিতাম। সে আমার জন্য বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসত। ভালভাবেই কেটে গেল আমাদের এক বছর। কিন্তু অলক্ষে থেকে একজন মুচকি হেসেছিলেন।

হয় তো তার কারনেই তার বাবা ট্রান্সফার হয়ে গেলেন চিটাগাং। তারা চলে যাবার দিন আমি স্কুলে যাই নি। তার সেকি কান্না,আমাদের বাসায় থাকবে,সে যাবে না। এটাই ছিল আমাদের শেষ দেখা। তারা চলে গেলেন।

যাওয়ার পর আন্টি চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে তারা ভালভাবেই চিটাগাং পৌছিয়েছেন। আর যোগাযোগ হয়নি আমাদের। এখন আমি বুঝতে শিখেছি। ভালবাসার মানে জানি। ভাললাগার অর্থও বুঝি।

তাই আজ তাকে খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে তার হাতে একটা লাল গোলাপ তুলে দিই। তার কোলে মাথা রাখি আর সে আমার চুলে বিলি কেটে দিক। এখনো যখন মন খারাপ হয়,তার কথা ভাবি,ফেসবুকে কিংবা গুগলে তার নাম দিয়ে খোজ করি যদি পেয়ে যাই!!!!!!!!!!! সে যদি বেচে থাকে এখন ঊনিশ-বিশ বছরের পরিপূর্ন যূবতী। জানিনা এখন তাকে দেখতে কেমন লাগবে।

এখনো কি সে দ্রুত কথা বলবে,কথা বলার সময় কি তার গলার রগ ফুলে উঠবে,রাগে কিংবা লজ্জায় তার চেহারা লাল হয়ে উঠবে? ইশ একবার কোথাও যদি কোনভাবে তারসাথে দেখা হয়ে যেত। আমি কি আমার ভালবাসার কথা বলতে পারব?সেও কি আমাকে ফিল করে? আচ্ছা,বিয়ে করার পর নতুন বউ এর ঘোমটা উঠাবার পর যদি দেখি সাথী বসে আছে। আর বলে সিফাত তুই আমারে বিয়ে করলি?যা পুতুল নিয়ে আয় একসাথে খেলি। হা হা হা। খুব মজা হত।

সত্যিকারের পুতুল বানাতে পারতাম। এসব তো কল্পনা কিন্তু বাস্তব কি এমন,অবশ্যই না। তারপরও অপেক্ষায় থাকি,গোল পথিবীতে হয়তো একদিন আমাদের দেখা হয়েও যেতে পারে। তখন তার দ্রুত কথা বলা,কথা বলার সময় গলার রগ ফুলে উঠা কিং বা লজ্জায় বা রাগে চেহারা লাল হয়ে গেলে আমি ঠিক ই বুঝে নিব এ আমার জীবনের প্রথম প্রেম যাকে তখন বুঝেও বুঝিনি আর এখন খুঁজেও খুঁজিনা । একটা গান শুনুন ,Little Boy In Love , by Jimmy Clanton


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.