আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চলুন ড. মশিউর রহমানের পাশে দাঁড়াই

আমি বড় মাপের পাগল ।

আমাদের সেরা ব্রেনগুলোর অনেকেই বিদেশে পড়তে যান, সেখান থেকে দেশে ফিরে এসে কাজ করার জন্য আকুলি পাকুলি করেন, মাতৃভূমির কষ্ট নিয়ে ভাবেন, তবে অনেকেই শেষ পর্যন্ত ফিরতে পারেন না। কারো জন্য দেশে তাঁর মেধা দেখানোর সুযোগ থাকে না, কারো কারো ছেলে মেয়ের পড়ালেখা শুরু হয়ে যায়, কেহ কেহ এমন প্রতিষ্ঠানে চাকরি পান যে যা কেবল আমরা স্বপ্নে দেখি। ফলে ফিরবো, ফিরবো করে আর ফেরা হয় না। তারপরও অনেকে ফিরে আসেন এবং কেন জানি না তাদের সঙ্গে আমার এক ধরণের সখ্যতাও গড়ে উঠে।

তাদেরকে দেখে আমি অনুপ্রেরণা পাই, নিজের ভেতর থেকে জেগে উঠি, ভাবি কী চমৎকার জীবন ছেড়ে তারা আমাদের এই দেশে এসেছেন, এই দেশটাকে বদলে দেওয়ার লড়াইটাকে নিজের করে নিয়েছেন। ভাবি, একদিন আমিও আলসেমি ছেড়ে তাদের মতো সত্যিকারের কিছু একটা করার কাছে শরীক হতে পারবো। ভেবে ভেবে সময় পার হয়। এর মধ্যে দেশে আসেন আবেদ চৌধুরী, আসা যাওয়ার মধ্যে থাকেন আতাউল করিম স্যারসহ আরো অনেকে। আরো আসেন ড. মশিউর রহমানের মতো স্কলার লোকেরাও।

কারো কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ড. মশিউরের সঙ্গে আমার প্রথম কথা বলা। তারপর থেকে আমি তাকে দেখেছি শিক্ষার্থীদের জন্য নানান কাজে, গবেষণায় মগ্ন হয়ে সময় কাটাতে। কমিউনিকেশনের যে বিষয়টিতে তাঁর সবচেয়ে বেশি দক্ষতা সেটি এই দেশে ভাসুরের নামের সিনোনিম। এই একটি কারণ যথেষ্ট ছিল তাঁর চলে যাওয়ার। কিন্তু যাননি।

যা করা যায় দেশে থেকেই করবেন ঠিক করেছেন। গবেষণার কাজে জাপান গেলেন। একদিন আমাকে লিখলেন জাপানীরা যে কায়দায় প্রিয়জনকে খুজে ফিরেছে সেরকম একটা ব্যবস্থা নিজেদের জন্য করে রাখা দরকার (ভাবা দরকার, সে সময়ে আমাদের সরকার মনে করেছে জাপানে আমাদের দূতাবাসটা বন্ধ করে দিলে ভাল হয়!)। আমাকে জানালেন কীভাবে তিনি এই কাজের জন্য কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক যোগাড় করতে পারেন। তারপর ঠিকই তিনি কয়েকজনকে নিয়ে কাজটি করেছেন।

জাপান থেকে দেশে ফেরার সময় জেনেছেন যে একটি অপারেশন করতে হবে। কিন্তু তখন জানতেন না, ধরা পড়বে ক্যান্সার। এমন অপারেশন করতে হবে যার জন্য লাগবে ২০ লক্ষ টাকা। নিজের সঞ্চয় বলতে স্ত্রীর গচ্ছিত ১০ লক্ষ টাকা। এখন ব্যাংককে তিনি আছেন।

এরই মধ্যে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। আরো ১০ লক্ষ টাকা লাগবে! অনেকে হয়তো ভাববে,বেশিরভাগ সময় যিনি বিদেশে কাটালেন তিনি কীভাবে নি:স্ব থাকেন? থাকেন, কারণ তিনি তার স্বপ্নের পেছনে দৌড়ান। আমরা যারা চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুলে পড়েছি তারা আমাদের নূরুল ইসলাম স্যারকে দেখেছি। তিনি আমরা অংক পারলে ব্রিজ হোটেল থেকে পরোটা কিনে এনে খাওয়াতেন। সেরকম ড. মশিউর তার শিক্ষার্থীদের গবেষণার পেছনে, বিজ্ঞানী.অর্গ নামে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে, শিক্ষার্থীদের নানান কাজে যুক্ত থেকে সব টাকা খরচ করে ফেলতেন।

নিজের কঠিন দিনের কথা ভাবেন নি। ভাববেনই বা কেন? যে দেশের ডাকে তিনি প্রাচুর্য ছেড়ে এই লড়াই‌-এ ফিরে এসেছেন, সেখানে কি তিনি একা? আমরা কী প্রমাণ করবো যে, দেশে ফিরে তিনি ভুল করেছেন? আমার মনে হয় না। তার শিক্ষার্থীরাতো বটে, আমরা যারা এই দেশটাকে বদলে দেওয়ার জন্য, জ্ঞান বিজ্ঞানে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সুন্দর স্বপ্নের পেছনে একটু একটু করে লড়ে যাচ্ছি, তারা কী মাত্র ১০ লক্ষ টাকার কাছে হেরে যাবো? ১০ লক্ষ টাকা কতো টাকা? প্রত্যেকে একহাজার টাকা করে দিলে এক হাজার জন। ৫০০ টাকা করে দিলে দুই হাজার জন!!! মাত্র!!! আসুন আমরা স্যারের পাশে দাঁড়াই। কীভাবে সাহায্য করবেন? ড. মশিউরের চিঠি (Click This Link) তে তিনি একাউন্ট নম্বর দিয়েছেন।

দেশে ও বিদেশে যারা সমন্বয় করছেন তাদের নাম ধামও সেখানে আছে। প্রাইম ব্যাংক একটি অনলাইন ব্যাংক। কাজে দেশের যেকোন প্রাইম ব্যাংকের শাখায় গিয়ে সরাসরি তাঁর একাউন্টে টাকা জমা দেওয়া যাবে। তবে, সবচেয়ে ভাল হয়, নিজে যাওয়ার আগে আশে পাশের লোকদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যে তারা কেহ সাহায্য করবে কী না। তাহলে সবার থেকে নিয়ে একবারে জমা দেওয়া যাবে।

সেটি বরং ভাল। শ্রাবণীর জন্য টাকা তুলতে গিযে আমি দেখেছি অনেকে ব্যাংকে যেতে চান না। তারা কাউকে খুঁজে নিন। কয়েকজন মিলে টাকা তুলে নিজের কাছে রাখতে পারেন। নিজরা ব্যাংকে যেতে না পারলে আমাকে খবর দেবেন।

আমি তেমন ব্যস্ত লোক নই। দরকার হলে আমি টাকা নিয়ে এসে ব্যাংকে জমা দেবো। অথবা কাউকে অনুরোধ করবো। তবুও ব্যাংকে যাওয়ার সময় হবে না এ কারণে দূরে থাকবেন না। ড. মশিউর রহমানকে এই দেশের খুবই দরকার।

তিনি নিশ্চয়ই সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। ----------------------------------------------------------মুনির হাসান এই ফ্যান পেইজটি প্রপাইল এ শেয়ার করে এবং সাজেস্ট করে বন্ধুদের আমন্ত্রন জানাতে পারেন । Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।