আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাহা কিন্তু গরুর দাম হাইরা কম

আমি সুমাইয়া বরকতউল্লাহ। ছাত্রী। লেখালেখি করা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ছড়া, গল্প লিখি। পত্রিকায় নিয়মিত লিখি।

লেখালেখি করে বেশ কয়েকটা পুরস্কারও পেয়েছি। শিশু অধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ (প্রিণ্ট মিডিয়া) পর পর ৩ বার জাতিসংঘ-ইউন

আমার আব্বু-আম্মু দু’জনেই চাকরি করেন। তাই তাঁরা আমাকে একটা মোবাইলফোন দিয়েছেন, যাতে কোনো দরকার হলে ফোন করে জানাতে পারি। ক্লাসে মোবাইলফোন ব্যবহার করা নিষেধ। তাই আমার প্রয়োজনের সময় মোবাইলফোনটা অন করে কথা বলে আবার বন্ধ করে ব্যাগে রেখে দেই।

আমাদের সমাজ পরীক্ষা চলছে। সমাজ স্যার আমার ব্যাগ হাতিয়ে মোবাইলফোন পেয়ে প্রচণ্ড রাগারাগি করতে লাগলেন। বললেন, নিষেধ করার পরও মোবাইলফোন কেনো ব্যাগে? আমি বললাম, এটা তো বন্ধ করে রেখেছি স্যার। কোনো সমস্যা নেই। স্যার রেগে আগুন।

বললেন, সমস্যা নেই মানে? এটা বন্ধ করতে যদি কখনও ভুলে যাও আর পরীক্ষা চলাকালীন যদি কেউ রিং করে হ্যালো হ্যালো শুরু করে, তখন কী করবা তুমি? কতো বড় ডিসটার্ব হবে বুঝতে পারছো? ক্লাসে মোবাইলফোনে আলাপ করলে সবার মনোযোগ নষ্ট হয়। বিরাট বড় সমস্যা। ক্লাসে মোবাইলফোন ব্যবহার করা কঠোরভাবে নিষেধ, মনে থাকে যেন। আর পরীক্ষার সময় তো এটা একেবারে হারাম। স্যার এসব বলে রাগে কাঁপতে কাঁপতে যেই চেয়ারে বসতে গেলেন, অমনি স্যারের পকেটে মোবাইলফোন বেজে উঠল।

স্যার তাড়াতাড়ি পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করে কানে লাগালেন। তিনি সারা ক্লাসজুড়ে হাঁটছেন আর হাত-পা ছুড়ে জোরে জোরে বলতে লাগলেন, অই আমি কয়বার কইতামরে, এহন যে বাইত আইতাতাম না। পোলাপাইন্তের পরীক্ষা চলতাছে। আমি ঈদের আগের দিন বাইত যামু। টেহা পাডাইয়া দিছি এহন কোরবাণীর গরুডাও কি আমারই কিন্না দিতে অইব? এত চিন্তার কাম নাই।

যেইডা কই হেইডা হোন। তরা পুইট্টার বাজারতে গরু কিন্না লা। এই হোন, লেঙুর টিপ্পা চোটপাট দেইক্কা হারগরু কিনবি। গরু বালা কইরা আডাইয়া ওডাইয়া দেইক্কা লইছ। ছয় দাইত্তা লম্বা ছেও দেইক্কা কিনিছ।

শিরু কাহা আর সুফির বাফেরে লইয়া বাজারে যাইছ, বুজজছনি। হেরা গরু চিন্না কিনতে পারে। ঢাহা কিন্তু গরুর দাম হাইরা কম। হ হ আর কতা বারাইছ না। এত তুহিমুহি করছ কিয়ের লাইগ্গা, হেহ্‌? মুক্কি মাইরা গরু একটা কিন্না লা।

আইচ্ছা, এহন রাহি। স্যারের কথার জন্য আমরা খাতায় একটা অক্ষরও লিখতে পারিনি। কান ঝালাপালা। আমি বললাম, স্যার আপনি ক্লাসে যে জোরে জোরে কথা বললেন, তখন আমাদের ডিসটার্ব হয় না বুঝি? স্যার বললেন, এই ফাজিল ছেরি, পরীক্ষা থুইয়া কটর কটর কথা কীসের? একজনের কথায় দশ জনের ডিসটার্ব। পরীক্ষার সময় এক মিনিটের দাম কতো জানছ? কতা থুইয়া হোমানে লেইক্কা যা।

সমাজ পরীক্ষার সময় আমরা কতোটা বিপদের মধ্যে ছিলাম, এখন বুঝতে পারছেন? একটা প্রশ্ন করতে পারি? কেউ বলতে পারবে, এ স্যারের বাড়ি কোন জেলায়?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।