নিজেকে তরতাজা রাখতে কে না চায়! পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে রাজা-বাদশাহ থেকে বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত তরতাজা স্বাস্থ্য আর দীর্ঘায়ুর জন্য কত চেষ্টাই না করছেন। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা প্রকৃতির মধ্যেই দেখতে পেলেন আশার আলো। মৌমাছির মধুর মধ্যে তাঁরা খুঁজে পেলেন জীবনীশক্তির আধার। সম্প্রতি গবেষণার ফলাফলে এমন তথ্যই প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ন্যাচার।
মৌচাকে সাধারণত দুই ধরনের মৌমাছি থাকে_কর্মী ও রানি।
কর্মী মৌমাছি থেকে রানি মৌমাছি বাঁচে ৪০ গুণ বেশি সময়। বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, মৌমাছির পুরো খাবার ব্যবস্থায় এক ধরনের রহস্যময় পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। দেখতে জেলির মতো। এই উপাদানটিই রানি মৌমাছির দীর্ঘায়ুর পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখে। ওই রাজকীয় জেলি রানির জন্যই তৈরি হয়।
সেটি খেয়ে রানি আকৃতিতে, ওজনে প্রায় দ্বিগুণ আকারে বড় হয়ে ওঠে কর্মী মৌমাছির তুলনায়। যদিও এ
আকার ও ওজনের কারণে রানি মৌমাছি কোনো জিনগত সুবিধা পায় না।
পুষ্পরেণু থেকে আহরিত উপাদান থেকে কম বয়সী নার্স মৌমাছির লালাগ্রন্থিতে উৎপন্ন হয় রাজকীয় এ জেলি। এ জেলি খেয়ে রানি মৌমাছি অন্যদের চেয়ে ৪২ ভাগ বেশি বড় হয়। আর ওজন বাড়ে ৬০ ভাগ।
বিজ্ঞানীরা এ মধু (রাজকীয় জেলি) পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছেন, এতে রয়েছে প্রোটিন ও রয়াল অ্যাকটিন।
জাপানের টয়ামা প্রিফ্যাক্টুয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মাসাকি কামাকুরা বলেন, মৌচাকে দুই জাতের স্ত্রী মৌমাছি থাকে। রানি ও কর্মী। এই বিভাজন জিনগত পার্থক্যের কারণে হয় না। এটা নির্ভর করে রাজকীয় জেলি গলাধকরণের ওপর।
ফলমূলের মাছি এবং মৌমাছির ওপর আলাদাভাবে গবেষণা চালিয়ে তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, রয়াল্যাকটিন খেতে দেওয়ার পর তাদের কর্মক্ষমতা ও জীবনীশক্তি বেড়ে গেছে।
গবেষকরা জানান, হাজার হাজার বছর আগেও মিসরের মানুষ এ জেলির ব্যবহার করতেন। ত্বককে সতেজ রাখার জন্য এর ব্যবহার করা হতো। এমনকি মমি সংরক্ষণেও এটা ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে ইউরোপে বিভিন্ন কসমেটিক সামগ্রীতে এ জেলি ব্যবহার করা হচ্ছে, বিশেষ করে বুড়িয়ে যাওয়া রোধের জন্য যেসব পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে সেগুলোতে।
গবেষণা থেকে আরো জানা যায়, রাজকীয় জেলি মানুষের কর্মর্ক্ষমতা, মাত্রাতিরিক্ত প্ররিশ্রম, ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা, ইনসোমনিয়া, অ্যাজমা, হেপাটাইটিস, গেঁটেবাত, হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়াও বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করা এবং যৌনক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।