good
জেলগেট পার হতেই চেনা প্রিজন ভ্যানের পরিবর্তে এক সুদৃশ্য মাইক্রোবাস অপেক্ষমাণ দেখে বিস্মিত হলাম। গাডি়তে উঠে জানলাম, আমাকে পাহারা দিযে় গোপালগঞ্জ নিযে় যাওযা়র জন্য ১৩ জন পুলিশ এসকর্ট সঙ্গে যাচ্ছে। এই পুলিশ দলটির দাযি়ত্ব আমাকে গোপালগঞ্জ জেল কর্তৃপক্ষের কাছে সহি-সালামতে হস্তান্তর করা। সকাল সাডে় ১০টায় নাজিমউদ্দিন রোড থেকে রওনা হযে় মাওযা়ঘাটে পৌঁছাতে ঘণ্টা দেডে়ক লাগল। ভরা বর্ষায় একদা প্রমত্তা পদ্মার শীর্ণ রূপ পরম বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশীর অপার বন্ধুত্বের সাক্ষ্য দিচ্ছে।
শ্রাবণের এই পদ্মা দেখে মনে পড়ল, গ্রেফতার হওযা়র ঠিক দু’সপ্তাহ আগে ১৬ মে’র ফারাক্কা দিবসে রাজশাহীর পদ্মার চরে এক গণজমাযে়তে প্রধান অতিথি ছিলাম। সেই সভায় পানিযুদ্ধ চালিযে় আমার মাতৃভূমির প্রায় এক-তৃতীযাং়শ মরুভূমিতে পরিণত করার অপরাধে ভারতের কাছে ক্ষতিপূরণও দাবি করেছিলাম।
গত দু’মাসের বন্দিজীবনে অনেকবারই মনে হযে়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সম্পর্কে আমার সরাসরি বক্তব্য ও লেখালেখি এই বন্দিত্বকে ত্বরান্বিত করেছে। মাঝেমধ্যে তর্জনগর্জন করলেও আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক পরাশক্তির তাঁবেদার কোনো সংবাদপত্রকে আমার দেশ-এর মতো করে বন্ধ করার ক্ষমতা এই সরকারের কোনোদিনই হবে না। দেশের স্বাধীনতা, জনগণের স্বার্থ এবং নিজ ধর্মবিশ্বাসের পক্ষে লডা়ই করার পরিণতিতে জেলে আসায় আমার কোনোরকম অনুশোচনা নেই।
এই পথ আমি স্বেচ্ছায় বেছে নিযে়ছি। মহান আল্লাহতাযা়লাই তাঁর পরিকল্পনা অনুযাযী় আমাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেবেন। পদ্মার বুকে ফেরিতে দুই ঘণ্টা কাটিযে় গোপালগঞ্জ জেলে পৌঁছাতে বিকেল ৪টা বেজে গেল। নবনির্মিত জেলখানার চাকচিক্য দেখে ভালোই লাগল। জেল কর্মকর্তাদের অভ্যর্থনায় সৌজন্যের কোনো ঘাটতি নেই।
ছোট একটি সমস্যার কথা শুনলাম। গোপালগঞ্জ জেলে কোনো ডিভিশন ওযা়র্ড না থাকার কারণে আমাকে কারা হাসপাতালে থাকতে হবে। প্রসন্ন চিত্তে ভারপ্রাপ্ত জেলারকে আশ্বস্ত করে ঢাকা জেলে দুই মাস ধরে সাত সেলে অবস্থানের কথা জানালাম। সাত সেলের বন্দিজীবনে অভ্যস্ত হওযা়র পর ডিভিশন ওযা়র্ডের প্রসঙ্গই এখন আমার কাছে অবান্তর। হাসপাতাল ওযা়র্ডে গিযে় রীতিমত মুগ্ধ হলাম।
বিশাল একটি কক্ষে আমার থাকার আযো়জন করা হযে়ছে। সবচেযে় আনন্দের বিষয় হলো, এখানে লাগোযা় টয়লেট রযে়ছে। দুটো দিন আমাকে নিজহাতে গণটয়লেট পরিষ্কার করতে হবে না জেনেই আমি পুলকিত। কারা প্রশাসনের লোকজন একে একে পরিচিত হতে এলো। তাদের কাছ থেকেই জানলাম, ২০১০ সালের প্রথম দিকে গোপালগঞ্জের নতুন জেলটি উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।
কযে়দি এবং হাজতি মিলে মোট বন্দির সংখ্যা মাত্র সাডে় তিনশ’। এখানে এমন ওযা়র্ডও আছে যেখানে আজ পর্যন্ত কোনো বন্দি ওঠেনি। উদাহরণস্বরূপ এই দোতলা হাসপাতালে আমিই সর্বপ্রথম বন্দি। একেবারেই নির্জন এই ওযা়র্ডে রাতে আমার জন্যে কোনো পাহারা লাগবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলারকে বললাম, আমি একা থাকতেই বরং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব। ফার্মাসিস্ট রক্তচাপ মাপার যন্ত্র নিযে় এলে তাকেও জানালাম, আমার রক্তচাপ স্বাভাবিকই আছে, কষ্ট করে পরীক্ষার কোনো প্রযো়জন নেই।
দীর্ঘপথ চলার ক্লান্তিতে রাত ১০টার মধ্যেই রাতের আহার শেষ করে হাসপাতালের পরিষ্কার বিছানায় ঘুমিযে় পড়লাম।
ফজরের নামাজ পডে় জেলজীবনের অভ্যাসমত সকাল ৬টার মধ্যেই গোসল শেষ করে নিজহাতে কাচা লুঙ্গি আর গেঞ্জি শুকানোর ব্যবস্থা করছি, এমন সময় গত রাত থেকে নিযো়জিত সেবক মোস্তফা এসে হাজির। আমি নিজহাতে কাপড় ধুযে়ছি দেখে রীতিমত চোটপাট শুরু করে দিল। প্রায় কুডি় বছর ধরে সাজাখাটা অভিজ্ঞ মেট মোস্তফার এই অসন্তোষের মধ্যে আন্তরিকতার ছোঁযা় খুঁজে পেযে় ভালোই লাগল। অঙ্গীকার করতে হলো, যে কদিন গোপালগঞ্জে আছি অন্তত সে ক’দিন এমন গর্হিত কাজ আর করব না।
সকাল সাডে় ৯টায় সুবেদার এলো প্রিজন ভ্যান আসার খবর নিযে়। জেল থেকে বেরিযে় দেখলাম, অন্যরকম আকৃতির এক প্রিজন ভ্যান। পেছনটা খোলা যেখানে সাধারণ কযে়দিরা চাপাচাপি করে বসে আছে, তাদের পাহারা দেযা়র জন্যে অস্ত্রহাতে তিন-চারজন সেন্ট্রি ডালার কাছে দাঁডি়যে়। আমাকে বলা হলো সামনে ড্রাইভারের পাশে বসতে। আমি গাডি়তে ওঠার পর আমাকে মাঝখানে ঠেলে দরজার দিকে বসলেন একজন এসআই।
জেল থেকে আদালত মিনিট দশেকের পথ। সোজা কোর্ট গারদে আমাকে নিযে় তোলা হলো। মুখোমুখি দুটো গারদ। একটায় সব বন্দিকে ঢোকানো হলো এবং অপরটায় আমি একাই। ঘণ্টাখানেক ধরে অবিরত পায়চারি করে আমার পাদুটো আর চলছে না।
কোর্ট ইন্সপেক্টরের বোধহয় মাযা় হলো। একটু বিব্রত মুখেই একটা চেযা়র এনে ভদ্রলোক গারদের ভেতরেই আমার বসার ব্যবস্থা করলেন। আরও আধঘণ্টা অতিবাহিত হওযা়র পর চিফ জুডিশিযা়ল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে ডাক পড়ল। এজলাসে গিযে় মনটা উত্ফুল্ল হযে় গেল। প্রকৌশলী রিজু, হাসিন, রিপন, চুন্নু, নজরুল, সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান, অ্যাডভোকেট মেসবাহ এবং আরও কযে়কজন পেশাজীবী ঢাকা থেকে এতদূর এসেছেন আদালতে আমাকে সঙ্গ দেযা়র জন্য।
আমি অপরিসীম কৃতজ্ঞতাবোধে আপ্লুত হলাম। আজ শবেবরাত হওযা় সত্ত্বেও আপনজনদের ফেলে এতগুলো মানুষ গোপালগঞ্জে এসেছেন আমার কুশল জানতে। দেশপ্রেমিক পেশাজীবীদের এই সমর্থন প্রাণের ঝুঁকি নিযে়ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লডা়ই অব্যাহত রাখতে আমাকে অনুপ্রেরণা জোগায়। কাঠগডা়য় দশ আসামি বেশ গাদাগাদি করে দাঁডা়লাম। বাদী আওযা়মী লীগের এক স্থানীয় নেতা।
তার পরিবারের রাজাকারি অতীতের সংবাদ আমার দেশসহ তিন-চারটি পত্রিকায় প্রকাশিত হওযা়য় সেই নেতা মানহানি মামলা দাযে়র করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে সবাই সাংবাদিক, তবে সম্পাদক আমি একাই।
দশ আসামির মধ্যে নয়জনকে এরই মধ্যে জামিন দেযা় হযে়ছে। এক আমার জন্যেই নাকি আজকের এত আযো়জন। আমি পেশায় যেহেতু আইনজীবী নই, কাজেই আইনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মারপ্যাঁচ বোঝা আমার কর্ম নয়।
তবে একজন সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে মনে হলো, এই অপচযে়র কোনো প্রযো়জন ছিল না। মামলার ধারা জামিনযোগ্য, আমি কারাগারে বন্দি, অর্থাত্ রাষ্ট্রীয় হেফাজতে আছি। এরকম পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বহীন, বানোযা়ট মামলায় কেবল জামিন মঞ্জুরের আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার জন্যে আমাকে ঢাকা থেকে টেনে আনবার কী প্রযো়জন ছিল, সেটা আমার মাথায় কিছুতেই ঢুকল না। আমার পক্ষে স্থানীয় একজন আইনজীবী দাঁডি়যে় সম্পূর্ণ বিষয় ব্যাখ্যা করে জামিনের আবেদন করলেই তো জামিন মঞ্জুর হওযা় উচিত ছিল। আমি যেহেতু সরকারের রোষানলে আছি, তাই আমার ব্যক্তিগত হয়রানির কথা নাহয় ছেডে়ই দিলাম, তবে আমাকে টানাহ্যাঁচডা় না করলে সরকারের অনেকগুলো টাকারও তো সাশ্রয় হতো।
আমাকে আনা-নেযা়র জন্য দুই দফায় গাডি় ভাডা়, ডজনখানেক পুলিশের পুরো দুই দিনের কর্মঘণ্টা নষ্ট, তাদের খোরাকির অর্থব্যয়—তা সে যতই সামান্য হোক, ঢাকা এবং গোপালগঞ্জে পুলিশ প্রশাসনে সতর্কাবস্থা, এসব করে কার কী লাভ হচ্ছে আল্লাহই জানেন! জামিন হযে় গেলে আদালত থেকে গোপালগঞ্জ জেলে ফিরলাম। ফেরার সময় জেলা পুলিশ প্রশাসন একটা পিক-আপের ব্যবস্থা করায় সকালের প্রিজন ভ্যানে চড়তে হলো না। জেলার সরাসরি না বললেও হাবেভাবে বুঝলাম, কালই ঢাকায় ফেরত চালানে যাওযা়র সম্ভাবনা রযে়ছে। জেল প্রশাসন আবার চালান নিযে় নাটক করতে পছন্দ করে। আগে থেকে কিছু না বলে চালানের সকালবেলা আসামিকে তৈরি হতে বলাটাই এদের রীতি।
আকস্মিক নির্দেশে আসামি বেচারার যথেষ্ট মানসিক নির্যাতন হয় এবং এতেই কর্তৃপক্ষের বোধহয় অপার আনন্দ।
শবেবরাতের রাত গোপালগঞ্জ জেলেই কাটল। নিজ গৃহের কথা বড় মনে পড়ছিল। মিষ্টান্নের প্রতি আমার ভযা়নক দুর্বলতা রযে়ছে। পারভীন রান্নাঘরে সচরাচর না গেলেও প্রতি শবেবরাতে আমার বিশেষ পছন্দের কযে়ক ধরনের হালুযা় তৈরি করে।
এবার নিশ্চয়ই রান্নাবান্না বাদ দিযে় শাশুডি়-বৌ কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে। সারা রাত প্রায় অনিদ্রায় কাটিযে় সকাল থেকে প্রস্তুত হযে় রইলাম। ৯টার দিকে ভারপ্রাপ্ত জেলার নূর মোহাম্মদ এসে জানালেন পুলিশ এসকর্ট এসে গেছে, আমি যাত্রা শুরু করতে পারি। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দুপুর আডা়ইটার দিকে ফিরলাম। সাত সেলের বন্ধুরা আমাকে সুস্থ শরীরে ফিরতে দেখে আনন্দ প্রকাশ করল।
শবেবরাতের দিন যার যার বাডি় থেকে পাঠানো খাবার খাওযা়র সময় আমার অনুপস্থিতি তাদের পীডা় দিযে়ছে শুনে বড় ভালো লাগল। ভাবলাম, জীবন কত বিচিত্র! ভিন্ন পরিবেশ থেকে আসা এই সাত সেলের বারো বন্দি কত অল্প সমযে়র মধ্যে স্বজনে পরিণত হযে়ছি।
দেখতে দেখতে জুলাই মাসের শেষ দিন চলে এলো। মাসের শেষ দিন শুরুই হলো ভারী বর্ষণের মধ্যে। ফজরের আজান আর বৃষ্টির মিলিত শব্দে ঘুম ভেঙেছে।
একটু শীত-শীতও বোধ হচ্ছে। একবার মনে হলো, দৈনন্দিন জেল রুটিনে না হয় ব্যতিক্রম ঘটাই। কী হবে আর এত ভোরে উঠে? চাদর মুডি় দিযে় আরও কিছুক্ষণ ঘুমাই। পরক্ষণেই মনের দুর্বলতা ঝেডে় এক ঝটকায় বিছানা ছেডে় উঠলাম। জেলখানার এই কঠিন জীবনযাপন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লডা়ইযে়র গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
মহাজোটের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে মনের জোর দিযে়ই পরাজিত করতে হবে। বালতি এবং মগ নিযে় চৌবাচ্চার কাছে যখন এলাম, ততক্ষণে বৃষ্টি অনেকটা ধরে এলেও একেবারে থামেনি। আমি দীর্ঘদিনের সাইনাসের রোগী, মাথায় বৃষ্টির পানি পড়লে সমস্যা বাডে়। জেলে আসার পর থেকে শরীরকে আস্কারা দেযা় যথাসম্ভব বন্ধ করেছি। জেল কর্তৃপক্ষ যে খাদ্যই দেয়, বিনা প্রতিবাদে গলাধঃকরণ করি, যেখানে-সেখানে শুযে় পড়তে অস্বস্তিবোধ করি না।
পরিষ্কারের সব বাতিক ছুডে় ফেলে দিযে়ছি। আজ বৃষ্টির পানিতে আমার কেশবিহীন মাথা ভেজালাম। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই টয়লেট পরিষ্কার, কাপড় ধোযা় ইত্যাদি শেষ করে গোসল শুরু করার আগেই বৃষ্টির বেগ আবার বেডে় গেল। বারান্দায় চেযা়র পেতে বৃষ্টি দেখার ফাঁকেই মনে হলো আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতৃভূমি সফরের কথা রযে়ছে। মাত্র দু’দিন আগে সরকার আমাকে গোপালগঞ্জ জেল দেখিযে় এনেছে।
জেলের খুব কাছেই প্রধানমন্ত্রীর মরহুম ভাই শেখ কামালের নামে জেলা স্টেডিযা়ম। সেই শেখ কামাল স্টেডিযা়মেই শেখ হাসিনার জনসভা করার কথা। জেলখানায় যাওযা়-আসার পথে ব্যাপক প্রস্তুতি দেখে এসেছিলাম। এই বৈরী আবহাওযা়য় শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর গোপালগঞ্জে যাওযা় হবে তো?
বৃষ্টির মধ্যেই ১০টার খানিক পর আমার পড়শি মেজর (অব.) জয়নাল আবেদিনকে পিজি হাসপাতালে নেযা়র জন্য জেলের লোকজন এসে হাজির। ভদ্রলোক দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছেন।
ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি নিযে়ই দিনের পর দিন অনেক কষ্টে কোরআনের তাফসির লিখে চলেছেন। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ তার প্রযো়জনীয় চিকিত্সার ব্যবস্থা করছিল না। তারা গোঁ ধরে বসে ছিল, জেলের বাইরে জয়নাল ভাইকে নেযা় যাবে না। চিকিত্সা যা হবে, সেটা জেলের মধ্যেই হবে। অথচ চোখের চিকিত্সার সুব্যবস্থা এই জেলে নেই।
মুক্তিযুদ্ধের এই সেক্টর কমান্ডারকে শেষ পর্যন্ত আদালতের শরণাপন্ন হতে হযে়ছে। আদালত চিকিত্সার নির্দেশ দেযা়র পরও প্রশাসন বেশ কিছুদিন ওপরের নির্দেশে টালবাহানা করে কাটিযে়ছে। মার্কিন-ভারত সমর্থিত সরকার মানবাধিকারের কোনো তোযা়ক্কা করবে না, এটাই স্বাভাবিক। এই প্রকৃতির শাসকশ্রেণীকে উদ্দেশ করেই মহান আল্লাহতাযা়লা সুরা আশ-শুরা’র ৪২ নম্বর আযা়তে বলেছেন, ‘অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেডা়য়। তাদের জন্য রযে়ছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
’ আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার ধর্মপরায়ণ রূপটি জনগণের কাছে বেশ দেখাতে আগ্রহী বলেই আমার সর্বদা মনে হযে়ছে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের প্রচারণায় ব্যবহৃত তার হিজাবপরিহিত, দু’হাত তুলে মোনাজাতরত পোস্টারের স্মৃতি দেশের অনেক নাগরিকের মনেই আশা করি এখনও উজ্জ্বল। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রচারাভিযান আরম্ভ করেন হজরত শাহজালাল (র.)-এর রওজা জিযা়রতের মধ্য দিযে়। প্রায় প্রতিবছর ওমরাহ পালন করেন, তাও দেখতে পাই। কিন্তু এগুলো সবই ধর্মের বাহ্যিক রূপ।
পবিত্র গ্রন্থের মর্মবাণী হৃদযে় প্রবেশ না করলে এসব করে কোনো ফায়দা নেই। জয়নাল ভাই যে সারারাত জাগ্রত থেকে ইবাদত করেন এবং তাফসির লেখেন তার উল্লেখ আগেই করেছি। ধর্মপ্রাণ এই বীর মুক্তিযোদ্ধা চোখের চিকিত্সা শেষে আজ হয়তো একটা চশমা নিযে় ফিরতে পারবেন। (চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।