আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহাবাগ তার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে, উদ্যোক্তাদের মূল মন্ত্রে ফিরে আসা উচিত্‍

হতে পারি বদ অথবা ফাজিল কিংবা একটু দুষ্টু প্রকৃতির। আমি নিজেকে জোকার ভাবতেও ভালবাসি। কিন্তু আমি চরম ঠোঁটকাটা। আমি সত্যের জন্য কারো পরোয়া করি না। কারন পাপ বাপকেও ছাড়ে না।

নিশ্চই মিথ্যা বিলুপ্ত হবে। www.facebook.com/RISALATMAX ১৮৮৪ সালে বিখ্যাত লেখক মার্ক টোয়েন প্রকাশ করেন তার কিশোর এডভেন্চার উপন্যাস 'হাকেলবেরি ফিন'। বইটা দাস প্রথা নিয়ে উষ্কানী ও শিশুদের বাউন্ডুলে স্বভাবের প্রতিআস্কারা আছে এই অযুহাতে বইটি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তুঐযে মানুষের নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষন বেশি। আর তাই সকল বেড়াজাল ভেঙে বইটি বিখ্যাত হয়েছিল।

এ বিশয়ে মার্ক টোয়েনও বলেছিলেন যে তিনি সংকিত কারন তার এই বই শিশুমনে হয়ত আঘাত আনবে কিন্তু বই বিক্রেতা ও প্রকাশকেরাই এইবইয়ের বিক্রি না দেখে একে নিষিদ্ধকরল আর বইয়ের বিক্রিও বেড়ে গেল। . . এবার আমরা বিষয়টা একটু বর্তমান পরিস্থিতিতে চিন্তা করি। বর্তমানে একটা আন্দোলন হচ্ছে 'প্রজন্ম চত্তরের আন্দোলন' আর এই আন্দোলন আমাদেরসবার কাছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনবলেই পরিচিত। কিন্তু এই আন্দোলন বর্তমানে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। আর জনপ্রিয়তা লাভ করছে জামাত শিবির।

আমি ঢাকা থেকে অনেক দূরে থাকি তাই প্রজন্ম চত্তরের ব্যাপারে আমি তত বেশি কিছু জানি না তবে আমার এক বড় ভাই সাবেক যুবলীগ নেতা বর্তমানে শাহাবাগের সাথে২৪ ঘন্টা জড়িত এবং আরো দুই ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত তারাও জড়িত। এছাড়াও আত্মীয় স্বজনদের মধ্যেতিনজন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক আছেন যারা মুক্তমনা কিংবা সরাসরি ভাষায় হয়ত নাস্তিক। তারাওএর সাথে জড়িত। তাই এদের মাধ্যমে বাবার কাছ থেকে যতটুকু জানতে পারি এবংতাছাড়াও টিভি, ফেসবুক, সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে যা জেনেছি তাতে আমি এটুকু কনফিডেন্সের সাথে বলতেই পারি যে শাহাবাগ ইউজড হয়েছে। তাদেরকেব্যবহার করেছে জামাত শিবির এবং ক্ষেত্র বিশেষে আওয়ামিলীগ।

তবে তাদেরকে ফাঁদে ফেলে ব্যবহার করা হয়েছে না তারা নিজেরাই ফাঁদে ধরা দিয়েছে এই ব্যাপারে আমি বোধগম্য নই। কিন্তু কেন শাহাবাগ জনপ্রিয়তা হারাল? আমি কয়েকটা পয়েন্ট ভেবেছি। আসুন দেখি সেগুলো কি কি - . ১. শাহাবাগ প্রথমে একদফা দাবি নিয়ে এসেছিল আর তা ছিলরাজাকারদের ফাঁসি। এই বিষয়ে বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ একমত প্রকাশ করেছিল এবং করছে। কিন্তু ধীরে ধীরেশাহাবাগে আজ ছয় দফা দাবি নিয়ে মাঠে আছে।

আর অনেক মানুষের কিছু কিছু দাবি পছন্দ না হতে পারে তাইতারাবর্তমানে এর বিপক্ষে চলে গেছে। . ২.শাহাবাগে একটা শ্লোগান দেওয়া হয় আর তা হল 'একটা দুইটা শিবির ধর ধইরা ধইরা জবাই কর' যাএকটি গনতান্ত্রীক দেশের জন্য সাংঘর্ষিক। জামাত ব্রেইন ওয়াশ থেরাপির জন্য বিখ্যাত আর শিবির এই থেরাপির শিকার। শিবিরের প্রায় সব কর্মীই ৭১এর পরে জন্মেছে আরতারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসহয়ত বেশিকিছু জানে না। তাদের প্রতি আক্রোশ নয় বরং আমাদেরসহানুভুতি দেখানো উচিত্‍।

তাদের কে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসজানানোর জন্য আমাদের বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। . ৩.ব্লগার রাজিব হায়দার ওরফেথাবা বাবা যিনি বেচে থাকা অবস্থায় তেমন কিছুই হয়নি কিন্তু মৃত্যুরপর তারইসলাম বেদ্মেশ ও ধর্মকে অবমাননার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। আর তা জনসম্মুখে এনেছে আমার দেশ। (যদিও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দাবি উঠেছে যে লেখাগুলো তার নয়) আর এই কারনে অনেক ধর্মপ্রানমুসলিমই এর বিরুদ্ধে চলে গেছে। . ৪.শাহাবাগে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই বামপন্থী।

তাই জামাত অতি সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করিয়ে দিল যে এটা নাস্তিকদের আন্দোলন। .৫.বঙ্গবীর কাদের সিদ্দীকিকে রাজাকার বলাটাওশাহাবাগের একটা চরম ভুল। তাদের বোঝা উচিত্‍ বঙ্গবীর উপাধী পাকিস্তানীরা দেয় নাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়েছেন। . ৬. জামাতের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে একটাদুটো নয় শতাধিক। আর এখানে কর্মী সংখ্যাও লক্ষাধিক।

তাই জামাতের প্রতিষ্ঠান বন্ধেরদাবী যে আন্দোলনে জানানো হয়সেখানে কর্মরত কেউ এই আন্দোলনে সমর্থন না দেওয়াটাই বেশি যুক্তিযুক্ত . ৭.আগেই বলেছি যে নিষিদ্ধের প্রতি আগ্রহের কথা। শাহাবাগেরআন্দোলন দিগন্ত, আমার দেশ, সংগ্রাম ইত্যাদি বন্ধেরকথা বললেও এদের প্রচার হাজারগুন বেড়ে গেছে। ইভেন ফেসবুকের বাঁশের কেল্লা পেজ তৃতীয় বারের মত শুরু করেছে যাদের প্রথম ছয় ঘন্টায় লাইক ত্রিশহাজারের অধিক। . ৮.সবচাইতে ভয়ঙ্কর কর্ম ঘটেছে যেটা তা হল শাহাবাগ সমর্থক এক ওলামা মাশায়েখের ফতোয়াতে। জামাতশিবিরের সাথে নামায পড়লে মানুষ মুসলমান থাকবে না।

যতটুকু জানি ইসলামের সবচেয়েবড় শত্রু হচ্ছে মুনাফিক। তাদেরসাথে নামায পড়তে কোন বাধা নেই অথচ উনি একটা মনগড়া কথা বলে বসলেন যা অনেক ধর্মপ্রানমুসলমানের মনে আঘাত করেছে। . . . এছাড়াও অনেক বিচ্ছিন্ন ঘটনারয়েছে যার ফলে অনেকেই মনে করছেন যে শাহাবাগ রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে কিংবা তারা নিজেরাই এর শিকার হচ্ছে। আর মাঝখানেজামাত লাভবান হচ্ছে। আরো একটি ঘটনা হচ্ছেডাঃ ইমারানের পতাকাঅবমাননা বিষয়ে মামলা।

এটা ৭২ এর সংবিধান মোতাবেক হয়েছে। অনেকেই এর বিরোধীতা করেছে। যারা কট্টরপন্থী বঙ্গবন্ধুর সমর্থক তাদের গায়ে এটা লাগবেই। কারন ৭২ এর সংবিধানের বিরোধীতা আর বঙ্গবন্ধুর বিরোধীতা একই কথা। আর আমার এক নানা যিনি মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দীকিকে রাজাকার বলার কারনেই উনি শাহাবাগের বিরুদ্ধে চলে গেছেন।

তার ভাষ্যমতে বঙ্গবীর উপাধী নিয়ে টানাহ্যাচড়া করা বঙ্গবন্ধুরমূল্যায়নকে নিয়ে টানাহ্যাচড়ার সমান। আমি রাজনীতি কিংবা শাহাবাগ নীতি তেমন বুঝি না কারন মাত্র জীবনে ১৬ বসন্ত পার করেছি। তবে একটা দাবির বিষয়ে সকলে একমত ছিল রাজাকারের ফাঁসি। আশা করি আর যাই হোক শুষ্ঠ বিচারের মাধ্যমে অন্তত এই দাবিটুকু আদায় করাসম্ভব হবে। আর শাহাবাগের উদ্যোক্তারা তাদের ভূলত্রুটিগুলোকে শুধরে নিয়ে আবার পূর্বের শাহাবাগে পরিনতকরবেন।

জয় বাংলা ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।