আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ষাড়ের গুতো


দিলাম স্কুল ফাকি,গেলাম মাঠে। সারাদিন না খেয়ে শুধু খেলা করেছি। মাঠের পুকুরে ৪ ঘন্টা গোসল করেছি,উচু পাড় থেকে লাফিয়ে মজা করেছি। খেজুর বাগানে গিয়ে খেলা করেছি। বাড়ির কথা মনেও ছিলনা।

আর ক্ষুধা লেগেছিল কিন্তু পাত্তা দেইনি। পানিতে ঝাপিয়ে চোখ লাল হওয়াতে একজন আরেক জনের হাতের ভেতর পানি দিয়ে সেই পানির ঝাপটা চোখে দিয়ে লাল কাটানোর চেষ্টা করেছি। শেষ বিকেলে বাড়ির পথ ধরলাম। হবিবারের বাঁশ বাগানের পাশে খাল বয়ে গেছে। সেখানে পচা পানি।

রেলওয়ে বস্তির লোকেরা সেটার ওপারে বসবাস করত। ওটা সুইপার পল্লি। পানির রং ছিল কালো এবং দূর্গন্ধযুক্ত। হাটছিলাম রাস্তার ডানপাশ ধরে। এটা সুন্নাহ কিনা জানতাম না,তবে হয়ত অটো সুন্নাহ সেট হয়ে গিয়েছিলে।

পেছন পেছন জৈটো মোড়লের একপাল গরু আসছিল,তার ছেলে ফৈজু ছিল পেছনে। হঠাৎ পেছন দিক থেকে এক বড় কালো ষাড় আমার বামপাশের পাজরে দিল এক গুতো । উচু পাড় থেকে গড়াতে গড়াতে পচা খালের পানিতে পড়লাম। খানিক পর হাচড়ে-পাচড়ে ওপরে উঠলাম। পেটের পাশে লাল দাগ হয়ে রইল।

অচেনা কাটা গাছের সাথে ঘষা লেগে প্যান্ট ছিড়ল। ব্যাথা পেয়েছি বেশ। তবে ব্যাথা পেলেও আমি কাঁদতাম না। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই পিতার হুঙ্কার....গর্জন। ক্ষুধায় কাতর আমি তখন,কারন সারাদিন লম্ফঝম্প হয়েছে।

আমার পিতার অবধারিত মাইর থেকে বাচাতে আমার মা অগ্রগামী হয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে ছিল। আমাকে আসতে দেখে ফুফাদের বাড়িতে ঢুকতে বলল। সেখান থেকে বিশেষ কায়দায় আমাকে পিতার অগোচরে ঘরে নিয়ে খাওয়ালো। ঘটনাটা প্রায় ভুলেই গেছিলাম.....
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।