সরসারি সংসদ থেকে
আগামী ২৫ এপ্রিল সংবিধান সংশোধনে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার মতামত নেবে এ লক্ষে গঠিত বিশেষ সংসদীয় কমিটি। ওইদিন বিকেলে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও জামায়াত ইসলামীর মত নেবে না কমিটি। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কারাগারে আটক থাকায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি।
বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে বিশেষ কমিটির বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আগামীকাল চিঠি পাঠানো হবে।
এছাড়া ২৪ এপ্রিল সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং জুরিদের মতামত নেবে কমিটি।
২৬ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনার মতামত নেয়া হবে। ২৫ এপ্রিল বিকেলে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোরও মতামত নেয়া হবে।
মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান কমিটির মুখপাত্র ও কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
সুরঞ্জিত বলেন,‘‘কমিটি সবার মতামতের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনে কাজ করতে চায়। এজন্যই সকলের মত নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এজন্য প্রধান বিরোধী দলসহ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলগুলোর সাথে বৈঠক করবে কমিটি। ’’
জামায়াতের বিষয়ে সুরঞ্জিত বলেন,‘‘এই রাজনৈতিক দলটির সেক্রেটারি জেনারেলসহ অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতারা একটি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে একটি আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারাধীন আছে। একারণে এখনই তাদের ব্যপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ’’
কমিটির আজকের ১৭তম বৈঠকে ২৪ এপ্রিল সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং আইনজ্ঞদের সাথে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠকে সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে ড. কামাল হোসেন, সাবেক বিচারপতি টি.এইচ খান, ব্যারিস্টার আমির-উল-ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
এছাড়া ওইদিন কয়েকজন সাবেক প্রধান বিচারপতিরও মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। এরা হলেন- কামাল উদ্দিন হোসেন, ফজলুল করিম, মোস্তফা কামাল, হাবিবুর রহমান, তফাজ্জল হোসেন।
২৫ এপ্রিল সকালে খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠকের পর বিকেলে জাতীয় পার্টি, এলডিপিসহ অন্যান্য প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সাথে বৈঠক করবে কমিটি।
প্রেস কনফারেন্সে এক প্রশ্নের জবাবে কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন,‘‘কমিটি চায় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের মতামত নিয়ে সংবিধান সংশোধন করতে। একমাত্র জামায়াত ছাড়া।
বাইরে অনেকে অনেক কথা বলছেন, এজন্যই আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নেবে কমিটি। ’’
এর আগে কমিটির চেয়ারম্যান সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোঃ রহমত আলী, মোঃ ফজলে রাববী মিয়া, আব্দুল মতিন খসরু, হাসানুল হক ইনু ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অংশগ্রহণ করেন।
বিশেষ আমন্ত্রণে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বৈঠকে যোগদান করেন।
উল্লেখ্য- গত বছরের ২১ জুলাই সংবিধান সংশোধনের জন্য ১৫ সদস্যের কমিটি করা হয়। সংসদের পক্ষ থেকে এই কমিটির জন্য প্রধান বিরোধী দল বিএনপির একজনকে সদস্য করার প্রস্তাব করা হয়।
কিন্তু বিএনপি এ প্রস্তাব নাকচ করে কমিটিতে তাদের একাধিক সদস্য রাখার দাবি জানায়। পরে সরকারি দলকে বিএনপির জন্য দুটি পদ দেয়া হবে বললেও বিরোধী দল এতে সাড়া দেয়নি। এ অবস্থায় সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে সংবিধান সংশোধনের জন্য সর্বদলীয় কমিটি গঠনের আহবান জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১১, ১২ ও ১৩ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন এই বিশেষ কমিটি। ওই তিনটি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ কমিটির ১৬টি বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত শুনেছেন।
একই সাথে তিনি সংশোধিত সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে প্রতিটি অনুচ্ছেদে কি থাকছে আর কি বাদ যাচ্ছে; তা নিয়েও আলোচনা করেছেন। কমিটির অধিকাংশ সিদ্ধান্তের সাথেই একমত হয়েছেন তিনি। তবে ওই তিন দিনে তার কাছ থেকে বেশ কিছু দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ পেয়েছে এই কমিটি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।