"সকল বস্তু তার বিপরীত বস্তুর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠে"
সবকিছুতেই ফান খুজে বেড়ানোটা একটা হুজুগে পরিণত হয়েছে আর খুবই বিচিত্রভাবে এই ফানের সাথে কনসার্টের একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। জাহেলী যুগে মানুষ বিচিত্র উপায়ে ফান খুজে বেড়াত। উদাহরণ স্বরুপঃ কাবার চারপাশে হাততালি আর শিষ বাজিয়ে উদাম নৃত্য, মদের আসর, প্রত্যেক বছর মেলার আয়োজন করে বিভিন্ন নির্মিত মূর্তি দিয়ে উৎসব উৎযাপন করা হতো। মানুষ যখন ‘একত্ববাদ’ এর দাসত্ব ছেড়ে দেয় তখনি তার মাঝে কোন না কোন উপায়ে পৌত্তলিকতা প্রবেশ করে। বর্তমান দুনিয়াতে যার দাসত্ব সবচেয়ে বেশী মার্কেট পেয়েছে তা হচ্ছে ‘প্রবৃত্তি’র দাসত্ব।
প্রবৃত্তি যা বলে তাই মেনে নেয়া আর মানুষ যখন প্রবৃত্তির দাস হয়ে তখন সে হারামকে হালাল বানিয়ে নিতে পারে কোন দ্বিধা ছাড়াই। ঠিক এ কারণেই বর্তমান তরুন-তরুনীদের পোষাকের মাঝে যে কালচারে গড়ে উঠছে তা তাদের নিকট স্বাভাবিক কারণ তারা আল্লাহ তা’আলার আনুগত্যশীল বান্দাহ নয় বরং প্রবৃত্তির গোলাম। তরুনদের Baggy আর Shaggy কালচার প্রবৃত্তির গোলাম হওয়ারই ফল। Baggy কালচার হচ্ছে প্যান্ট এমনভাবে পরা অর্থাৎ যে প্যান্ট কোমড়ে থাকতে চায় না বরং নীচে নেমে যেতে চায় আর Shaggy কালচার হচ্ছে মাথার চুলের এলোমেলো, উস্কুখুস্কু, উদ্ভট অবস্থা। তরুনীদের ক্রমে ক্রমে ‘ছেলেনাইজড’ হওয়ার প্রবণতাও প্রবৃত্তির গোলাম হওয়ার ফসল।
এরপর হচ্ছে কনসার্ট, যেখানে গানগুলো থাকে মিথ্যা কথায় পরিপূর্ণ। মাদক বিরোধী কনসার্ট, ইভ টিসিং বিরোধী কনসার্ট ইত্যকার আয়োজনগুলো মাদক প্রচারণা আর ইভ টিসিং এর ট্রেনিং ক্ষেত্র হিসেবেই হয়ে থাকে। নিজস্ব মস্তিস্ক চাষ করে কোন উপায় মানুষকে মুক্তি দিতে পারে না বরং মানুষকে গিনিপিগ বানায় আর কিছু নয়। মানুষকে নিয়ে খেলা, এক্সপিরিমেন্ট করা - এই সিস্টেম করলে কেমন আউটপুট আসে প্রভৃতি। এমনকি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটাও একটা এক্সপিরিমেন্ট আর তার গিনিপিগ হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।
কয়েক বছর পর পর সিস্টেমের পরিবর্তন আর উর্বর মস্তিষ্কের চাষ করা সিলেবাস দিয়ে আউটপুট হিসেবে বর্তমান প্রজন্মকে আমরা হাতে পাচ্ছি। যারা এতটাই আধুনিক যে তাদের অধিকাংশ সালাত আদায় করার সময় পান না তবে কনসার্টে যেয়ে উদাম নৃত্য করতে আর হাত তালি বাজাতে হাতে অফুরন্ত সময় থাকে।
وَمَا كَانَ صَلاتُهُمْ عِنْدَ الْبَيْتِ إِلا مُكَاءً وَتَصْدِيَةً
অর্থঃ আর কা‘বার নিকট তাদের সালাত শিষ ও হাত-তালি ছাড়া কিছু ছিল না। (সূরা আনফালঃ ৩৫)
জাহেলী যুগে শিষ আর হাত-তালি দেয়াটাই ছিল তাদের সালাত, আচ্ছা বর্তমান প্রজন্মের যারা কনসার্টে যেয়ে হাত-তালি আর শিষ দিচ্ছে তারাও তো পৌত্তলিকতার অনুসরণ করছে! সালাতের সময় নেই কিন্তু শিষ আর হাত-তালি বাজাতে, মিউজিকের তালে তালে শরীর দুলাতে দ্বিধা নেই।
মুসলমানদের অবস্থার পরিবর্তন তখনি হবে যখন তারা সাহাবীদের মতো করে ইসলামকে বুঝতে শিখবে অন্যথায় যত পদ্ধতীরই অবলম্বন করা হোক না কেন অবস্থার পরিবর্তন তো হবেই না বরং আরও অধপতন হবে।
কাজেই সময় থাকতে আর যত দ্রুত কুরআন ও সহীহ সুন্নাহকে আকড়ে ধরে নিজের জীবনকে পরিবর্তন করে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী সাজিয়ে নিব তত দ্রুতই আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হবে। গোলামের জাতি হয়ে থাকার জন্যে আমরা পৃথিবীতে আসিনি বরং পৃথিবীতে মানুষকে আল্লাহর একত্ববাদের বাণী প্রচার করতে, সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করতে আমরা পৃথিবীতে এসেছি। এটাই জীবন, এটাই বাস্তবতা যতই অস্বীকার করি না কেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সাথে সাথেই সব কিছু স্বচ্ছ হয়ে যাবে। আল্লাহ তা’আলা আমাদের হক কথা বুঝার সুমতি দান করুন, আমীন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।