আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইনটুইশন কি একেলা হিমুর দখলে? এটা কিছুতেই মানিয়া নেওয়া যায়না....

দিল ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।

ইনটুইশন হইতেসে, লজিকাল ভাবে স্টেপ বাই স্টেপ চিন্তা না করিয়া এক লাফে এ থেকে যেড এ যাইবার মত করিয়া কোন বিষয়ে সত্য বা সত্যের কাছাকাছি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া। আমার ব্যক্তিগত মত, ইনটুইশন হইল পাচটি সেন্স হইতে আহুত তথ্যের ষষ্ঠ সেন্স, যাহাকে আমি জ্ঞান এবং বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সক্ষমতা বলিব, দ্বারা বিশ্লেষন করিয়া সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার ক্ষমতা। আমাদের অনেকরই এই ক্ষমতা টুকটাক আছে। সবাই হয়ত এক লাফে এ থেকে যেড এ পৌছাইতে পারে না।

তবে অনেককেই এক লম্ফে এ থেকে সি বা ডি কিংবা ই তে পৌছাইতে দেখা গেছে দৈনন্দিন জীবনে। আমরা প্রতিনিয়ত এই সক্ষমতার ব্যবহার করি না বুঝিয়াই। হয়ত কোন বিষয়ে হয়ত না দেখিয়াই বলিয়া দিলাম এইখানে কি হইতে পারে। তাহার পরে বিশ্বয়জনকভাবে তা ঘটিলে আমরা অবাক হইয়া যাই। বাল্যকালে আমার এক জ্ঞানী বন্ধু একটা তত্ব্য প্রদান করিয়াছিল আমাকে।

তার তত্বের মুল কথা হইল, কোন বিষয়ে সাম্ভাব্য সকল তথ্য জানা থাকিলে সেই বিষয়ের ভবিষ্যত গন্তব্য বলা অসম্ভব কিছু না। এই বিষয়টা বাস্তবিক প্রয়োগ করিয়া থাকেন স্টক মার্কেটের ব্রোকাররা। তাহারা সাম্ভাব্য সকল তথ্য বিশ্লেষন পুর্বক পরের দিনের বা পরের সপ্তাহের বাজার হিসাব করিয়া সেই মতে টাকা বিনিয়োগ করিয়া থাকেন। তবে আমরা দেখিতেই পাই, সবাই কাজটা ঠিকভাবে করিতে পারেন না। অল্প কযেকজনই শেয়ার বাজারের অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে একটি বা দুটি মৌলিক প্যটার্ন দেখিতে পান এবং এর উপরে নির্ভর করিয়াই তাহারা বাজারের ভবিষ্যত ধারনা করিয়া টাকা বিনিয়োগ করিয়া কোটিপতি হইয়া থাকেন।

সুতরাং তত্ব্য বলে, কেহ যদি একটি দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আরও কিছু মৌলিক বিষয়ে সাম্ভাব্য সকল রকম জ্ঞান অর্জন করে এবং সব খবরের তাৎক্ষনিক আপডেট তাহাকে জানাইবার উপায় করিয়া দেয়া যায় এবং সেগলোকে বিশ্লেষন করিবার সময় সে পায়, তাহা হ্ইলে সে পুর্বের তথ্য প্যটার্ন এবং নতুন তথ্য বিশ্লেষন করিয়া সেই দেশের শেয়ার বাজারের উঠানামা সবই প্রেডিক্ট করিতে পারিবে এবং অতি শীঘ্রই সে বিল গেটস হইতেও বড় ধনী ব্যক্তিতে পরিনত হইবে। বান্তব কথা হইল, আমাদের মস্তিস্ক আমাদের আশেপাশের সবই লক্ষ করে। আমরা যখন কাহারও সাথে কথা বলিতেছি, তখনও আমরা অনেক কিছু লক্ষ করিতেছি। কলেজে পড়িবার সময় যেটুকু মনোবিজ্ঞান পড়িয়াছিলাম এবং যেটুকু নিজের কৌতুহল হইতে শিখিয়াছিলাম, তাহাতে জানি, আমাদের মস্তিস্ক কোন কিছুই ভুলিয়া যায় না। আমাদের মস্তিস্কের প্রাথমিক মেমোরী এবং সেকেন্ডারী মেমোরী তুলনামুলক কম হইবার কারনে অনেক স্মৃতি এবং তথ্য রিমোভেবল মিডিয়াতে ব্যাকআপ দিবার মত করিয়া অনেক গভীরে আর্কাইভ করিয়া রাখা হয়।

জরুরী প্রয়োজনে এবং সঠিক প্রনোদনা পাইলে সব স্মৃতিই ফিরিয়া পাওয়া সম্ভব। তাহা হইলে, আমরা চিন্তা করিতেছিলাম ইনটুইশন নিয়া। আমার ব্যক্তিগত মত ছিল, আমরা পাচটি ইন্দ্রিয় হইতে যে তথ্যলাভ করি, আমাদের জ্ঞান এবং বুদ্ধিমত্তা সক্ষমতা দ্বারা তাহাকে বিশ্লেষন করিয়া কোন যুক্তিগ্রাহ্য কারন ছাড়াই যে সঠিক বা প্রায় সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হই, তাহাই ইনটুইশন। আরেক অর্থে ইনটুইশন হইল কোন বিষয়ে সাধারনদৃষ্টিতে পর্যাপ্ত তথ্য না জানিয়া সঠিক বা প্রায় সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছান। কে এ থেখে যেড এ পৌছাবে, আর কে এ থেকে ডি কিংবা ই পর্যন্ত পৌছাবে, সেইটা নির্ভর করে তাহার সচেতন চর্চা এবং জন্মগত বৈশিষ্ট এর উপরে।

অনেকে কোনরকম চর্চা না করিয়াই অনেক কিছু পারেন। তাহারা ন্যাচারাল প্রতিভা। কেহ দীর্ঘদিনের চর্চার মাধ্যমে এই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেন। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, সব ঘটনার একটা প্যাটার্ন আছে। সব ঘটনা ছোট ছোট মৌলিক কার্য-কারন এর সমষ্টি।

আবার বড় ঘটনা অনেকগুলি ছোট ঘটনার সমষ্টি। একটা প্রবাদ আছে, হিস্টরি রিপিটস ইটসেলফ। সব ঘটনাই বার বার করিয়া ঘটে। এই ঘটনাগুলির মধ্যের মৌলিক নিয়মগুলি পর্যবেক্ষন এর মাধ্যমে আবিস্কার করা গেলে সেই ঘটনাগুলি ঘটিবার পুর্বেই তাহার সাম্ভাব্য প্রেডিকশন করা সম্ভব। ঠিকমত চর্চা করিলে, ঘটনার মধ্যে প্যটার্ন খুজিবার অভ্যাস করিতে পারিলে অনেক বিষয়ে আগে হইতেই অনুধাবন করা সম্ভব হইতে পারে।

প্রত্যেকটি ঘটনার একটি কার্যকারন থাকে। আবার কার্যকারন এর পিছনে আরেকটা ঘটনা থাকে। সুতরাং ছোটবড় ঘটনা এবং তাহাদের কার্যকারন খুজিবার অভ্যাস করিতে পারিলে অতি সত্বর হিমুর মত কান্ড কারখানা সম্পন্য করা যাইতে পারে। একটা কথা না বলিলেই নয়, হিমু কিন্তু ম্যানুফ্যাকচার করা প্রডাক্ট। তাহার বাবার স্কুল হইতে পাস করা।

সুতরাং চেষ্টা করিলে তাহার মত কান্ড কারখানা আয়ত্ব করা অসম্ভব নয়। অনেকে এইবারে বলিবেন, অনেক আশ্চর্যজনক ঘটনার কথা তো শুনা যায়, যেগুলা এই যুক্তি দিয়া বুঝা যায় না, সেগুলার ব্যখ্যা কি? এইখানে সেই পুরাতন ডায়ালগ ঝাড়িব আমি। আমরা মানব মস্তিস্কের কতটুকুই বা জানি!!! তবে এটুকু বলিয়া দেয়া যায় নিঃশঙ্কচে, সচেতন ভাবে চর্চা করিলে এবং চোখকান-দিল খোলা রাখিয়া নিজের অর্ন্তজ্ঞান এর উপরে ভরসা করিয়া চেষ্টা করিরে এই বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করিবার সম্ভাবনা আছে। ইনটুইশন কি একলা হিমুর দখলে? কেউ থাকিবে পাচতলায় কেউ থাকিবে গাছতলায়... তাহা তো মানিয়া নেওয়া যায়না। (এই লেখাটি একটু ফানি ভাবে লেখলেও ব্যপারগুলো আমি বিশ্বাস করি।

আপনাদের মতামত জানান। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।