আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কে বলে সৃষ্টিশীল মানুষেরা হিসেবি হয়না?

দিল ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।

কে যেন কবে বলেছিল, সৃষ্টিশীল মানুষেরা নাকি হিসেবি হয় না.... আসলেই কি তাই? কয়েকদিন এটা নিয়ে বেশ একটা সৃশ্টিশীল চিন্তাভাবনা করে দেখালাম, কথাটা সম্পুর্ন ভুল। এক্কেবারে ডাহা মিসা কতা। সৃষ্টিশীল মানুষেরা আর দশটা মানুষের থেকে অনেক বেশি হিসেবি। সমস্যা একটাই, তাদের হিসাব কিতাবটা ঠিক আর দশটা মানুষের সাথে মেলে না।

তাই সময়ে সময়ে দশটা মানুষের চোখে তাদের অপদার্থ প্রমানিত হওয়াটা একটা সাধারণ ঘটনা। একজন চিত্র শিল্প যে রং এর তুলি চালান, তাতে কি হাজারো রকমের হিসাব নেই? রং এর হিসাব, রং এর গভীরতার হিসাব, রং এর মাত্রার হিসাব এবং তারপরে পুরা ছবিটা মাথায় রেখে সেটাকে একটুকরা চারকোনা কাগজে ঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলার হিসাব। সবাই তখন সেটাকে বলে সুন্দর। কিন্তু কেউ কি চিন্তা করে, এর পিছনে কতগুলা হিসাব কাজ করেছে? একজন স্থপতি যে একটা সুন্দর বাড়ি বানান, কেউ তার বানানো বাড়ি বা স্থাপনার দিকে তাকিয়ে বলবেন.. ওয়াও.. কি সুন্দর ক্রিয়েটিভ কাজ!!! কিন্তু তাকে যে হিসাব করতে হয়েছে, মাপজোক করতে হয়েছে, একটার পর একটা জ্যমিতিক চিত্রাংকন করতে হয়েছে। কে বলে, কিংবা খেয়াল করে সেগুলো কথা? একজন লেখক যখন একটা লেখা তৈরি করেন, আমি আজকাল অবাক হয়ে ভাবি, কি পরিমান যে হিসাব করতে হয় তাদের... চরিত্র সৃষ্টি, তাদের সঠিক আচরণমালা তৈরি, একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে বা অবস্থায় তাদের রেসপন্স কি হবে... হঠাৎ করে আবিস্কার করলাম, এটা আইনস্টানের রিলেটিবিটি থিয়োরি কিংবা কোয়ান্টাম থিওরির মারপ্যাচে এককটা গানিতিক জটিলতা থেকে কোন অংশে কম যায় না।

প্রত্যেকটা চরিত্র যদি হয় একেকটা চিন্তা ভাবনা আচরণের জটিল রাশিমালা, তবে পুরো কাহিনীটা হবে একটা অসম্ভব জটিল গ্র্যান্ড গানিতিক অস্তিত্ব। যেখানে প্রত্যেকটা চরিত্রকে গানিতিক হিসেবে ঠিকমত আচরল করতে হয়। ঠিকমত হিসাব না করলে, কাহিনীর শেষে গল্গপের গরু গাছে তুলে দিয়ে কাহিনী মিলিয়ে দেয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না লেখকের। বাবারে... চিন্তা করতেই মাথা ঘুরছে... সাধারন মানুষ তাদের হিসেবি মনটাকে ব্যস্ত রাখেন বেচে থাকা এবং নিজের দৃষ্টিভঙ্গিমতে সুখে থাকার জন্য দরকারী মনে করা সব কাজ সম্পন্য করতে। তারা সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলোতে নিজেদের সমস্ত ক্ষমতা ব্যয় করেন এবং সবার দৃষ্টিতে সফলও হন।

সৃষ্টিশীল মানুষেরা তাদের সবটুকু ব্যয় করেন একটা বিশাল, অসাধারন জটিল, অসম্ভব রকমের বড় একটা গানিতিক অস্তিত্বকে বুঝে ওঠার জন্য। অনেকেই ব্যর্থ হন। অনেকে সেই বিশালতার কিছু অংশ নিজের মধ্যে ধারন করেও সুস্থ থাকেন এবং সেটাকে ব্যবহার করে নিজেকে প্রকাশ করে চলেন অনবরত। কেউ সেই বিশালতা আর জটিলতায় হারিয়ে যান। ঘুরপাক খেতে থাকেন এক অসম্ভবতার জগতে, একসময় নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেন।

এই মানুষগুলোও আমাদের আশে পাশে থাকেন। তাদের দেখলে বেশ বোঝা যায়, যদিও তারা আছেন, তাদের মধ্যে কি যেন নেই। জগৎটা যে কি জটিল....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।