সভ্যাতা মানুষের তৈরি ,মানুষ সংগ্রামের পথ ধরে বেয়ে চলা সৈনিক । তাই মানুষের জয় অনিবার্য একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত চট্টগ্রামের কুখ্যাত ফকা চৌধুরীর ছেলে সাকা চৌধুরী। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় চালিয়েছে হত্যা, ব্যাপক লুটপাট, ধ্বংসযজ্ঞ। চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৭২টি মামলা। সেই সাকা দেশে সেনাশাসন ও গণতান্ত্রিক অপশাসনের ধারায় মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হন, নিজের গাড়িতে লাখো শহীদের রক্তস্নাত লাল সবুজের পতাকা ওড়ান, ওআইসিতে যেতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে।
টেলিভিশন চ্যানেল খুলে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে আত্মপ্রসাদ লাভ করতেও চেয়েছেন। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে চট্টগ্রামের গুডস হিল ছিল মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামীদের ধরে এনে পৈশাচিক নির্যাতনের অন্যতম কেন্দ্র। আর এ ঘৃণীত গুডস হিলের মালিক হচ্ছেন (পৈত্রিক সূত্রে) কুখ্যাত ঘাতক স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও তাঁর কয়েক ভাই। সাকা চৌধুরী বর্তমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য। আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় রীতিমতো বেপরোয়া মনোভাবের এ রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চট্টগ্রামে বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামীদের হত্যা, নির্যাতন, ঘরবাড়ি জ্বালাও পোড়াওসহ নানা অপকর্মের মহানায়ক ছিলেন।
ঐ সময় খোকন নামে সর্বাধিক পরিচিত এ রাজাকার সাকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা, মানুষ হত্যা, লুণ্ঠনসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এমন একজন ধিক্কৃত ও ঘৃণীত ব্যক্তিকে স্বাধীন বাংলাদেশে মন্ত্রিত্বে আসীন করেছিল এরশাদ সরকার এবং পরবতর্ীতে বিএনপি সরকার। সাকা চৌধুরীর অপকর্ম শুধু চট্টগ্রাম শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁর গ্রামের বাড়ি রাউজানে তিনি জন্ম দিয়েছেন বীভৎস নানা ঘটনার। এই রাউজানের উনসত্তরপাড়া এলাকাটি মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ নির্মমতার শিকার হয়ে বধ্যভূমির পরিচিতি লাভ করেছে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সাকার বাবা ফকা দেড় মণ স্বর্ণ নিয়ে নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়েন। পরে তাকে আইনশৃঙ্খলা রৰা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়।
একাত্তরে সাকার গতিবিধি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরম্নদ্ধাচারণকারী পাক বাহিনীর অন্যতম দোসর ছিলেন সাকার বাবা তৎকালীন মুসলিম লীগের শীর্ষ নেতা ফজলুল কাদের (ফকা) চৌধুরী। পিতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ ঐ সময়ের যুবক সাকাচৌর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন ভোগকারীদের অনেকে এখনও বেঁচে আছে। দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে নারকীয় ঘটনার জন্ম দেয়ার অন্যতম নায়ক সাকাচৌ যখন এ দেশের পতাকা উড়িয়ে মন্ত্রিত্বের স্বাদ গ্রহণ করে রীতিমতো আস্ফালনের উন্মত্ততা প্রদর্শন করেছেন তখন নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রসত্ম এবং স্বজন হারানোর বেদনাহত মানুষজনদের গুমরে কাঁদা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।
এখন সময় এসেছে এ কুখ্যাত রাজাকার, মানুষ হত্যাকারী, নির্যাতনকারী, লুণ্ঠনকারী ও অগি্নসংযোগে নেতৃত্বদানকারী যুদ্ধাপরাধী সাকাচৌর বিচার করার।
মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান তাঁর 'বাঙালীর জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম : মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম' গ্রন্থের ৪৬৪ পৃষ্ঠায় লিখেছেন রাউজানে ফজলুল কাদের চৌধুরীর বাহিনী ব্যাপকভাবে হিন্দুদের ঘরবাড়ি পোড়ায়। নূতন চন্দ্র সিংহসহ অসংখ্যজনকে হত্যা করে। রাউজানে শহীদদের মধ্যে রয়েছেন আবদুল মান্নান, পঙ্কজ বড়ুয়া, জাফর আলম চৌধুরী, বিকাশ বড়ুয়া, শামসুল আলম, মুসা খান, সফিকুল আলম, রম্নহুল আমিন, সুবেদার আবুল কাশেম, বাদশা মিয়া, সুবেদার নুরম্নল আমিন, সুবেদার আবুল বশর, এজাহার মিয়া প্রমুখ। চট্টগ্রাম শহরে এবং রাউজানে সাকা চৌধুরী ১৯৭১ সালে রাজাকার আলবদর, আলশামসদের সংগঠিত করে।
মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন, হত্যাসহ নানা অপকর্মে নেতৃত্ব দেন। চট্টগ্রামের কৃতী সনত্মান দানবীর কুন্ডেশ্বরী ওষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহ, নগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা শেখ মোজাফফর আহমদ, ব্যবসায়ী ফজলুল হক সওদাগর, মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারম্নক, ছাত্র দয়াল হরি বিশ্বাস প্রমুখকে সাকার নেতৃত্বে হত্যা করার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সাকার নেতৃত্বে রাউজানের উনসত্তরপাড়া এলাকায় অসংখ্য মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। একাত্তরের ১৩ এপ্রিল উনসত্তরপাড়ার সতীষ মহাজনের পুকুর ৭০ বাঙালীর রক্তে রঞ্জিত হয়। এ উনসত্তর পাড়ায় গণহত্যার শিকার হয়েছেন এমন যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরা হলেন-যোগেশ চন্দ্র মহাজন, রঞ্জিত কুমার মহাজন, নিরোদ বরণ ঘোষ, শক্তিপ্রদ, মনীন্দ্র লাল, রঞ্জিত কুমার রম্নদ্র, উমেষ চন্দ্র, ক্ষেত্র মোহন, স্বপন কুমার, শ্রী কৃষ্ণ চৌধুরী, মনিকুনত্মলা, বাবুল, নিরঞ্জন, প্রতিমা, মধুসূধন, নির্মল চন্দ্র, ধীরেন্দ্র লাল, হেমনত্ম কুমার, নুপুল চন্দ্র, উত্তম বালা, নিকুঞ্জ বিহারী, পুলিন বিহারী, তারাচরন, বলরাম, ফনীন্দ্র লাল, শ্রীরাম চন্দ্র কুমার, শক্তিবালা, দুর্গাচরন, সুপ্রিয় পাল, সতীষ চন্দ্র পাল, হিমাংশু, বিমল, বিরজাবালা, গোপাল চন্দ্র, বাবুল চন্দ্র প্রমুখ।
১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী দানবীর নূতন চন্দ্র সিংহ হত্যা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। যুদ্ধ শুরম্ন হলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যসহ ৪৭ অধ্যাপক পরিবারপরিজন নিয়ে নূতন চন্দ্র সিংহের রাউজানের কুন্ডেশ্বরী ভবনে আশ্রয় গ্রহণ করেন। পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনী হাটহাজারী হতে রাউজানের দিকে অভিযান শুরম্ন করলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও তাদের পরিবারবর্গ ভারতীয় সীমানত্মের উদ্দেশে কুন্ডেশ্বরী ভবন ত্যাগের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় তাঁরা নূতন চন্দ্র সিংহকে তাদের সঙ্গে নিরাপদে চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তার প্রিয় প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
এ সময় তিনি একা হয়ে গেলে '৭১ সালের ১৩ এপ্রিল ৪টি আমর্ড ট্টাক ও দুটি জীপে করে একদল পাকিসত্মানী সৈন্যকে পথ প্রদর্শন করে নিয়ে যাওয়া হয় কুন্ডেশ্বরী ভবনে। নূতন চন্দ্র সিংহ তাঁর স্বভাবসুলভ অমায়িক ব্যবহার করে পাকিসত্মানী সেনাদলকে অভ্যর্থনা জানান। তাদের সামনে তিনি কু-েশ্বরী ঔষধালয়, স্কুল, কলেজের বিসত্মারিত বিবরণ তুলে ধরেন। নূতন চন্দ্র সিংহের কথাবার্তায় সন্তুষ্ট হয়ে পাকিসত্মানী বালুচ ক্যাপ্টেন নাকি তার সঙ্গী সেনাদলকে ফিরে যাবার নির্দেশ দেন। এ সময় নূতন চন্দ্র সিংহ মন্দিরে প্রবেশ করে প্রার্থনায় রত হন।
তখন বালুচ ক্যাপ্টেনকে নাকি পরামর্শ দেয়া হয় নূতন চন্দ্র সিংহকে মেরে ফেলার জন্য। ক্যাপ্টেন ইতসত্মত বোধ করেন। অভিযোগ রয়েছে, সাকার মদদে বালুচ ক্যাপ্টেন এক পর্যায়ে মন্দিরে প্রবেশ করে নতুন চন্দ্র সিংহকে টেনে হ্যাঁচড়ে বের করে। বালুচ ক্যাপ্টেনের গুলি করতে বিলম্ব দেখে সাকা নিজেই নাকি গুলি করে নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা করে। '৭২ সালের জানুয়ারি মাসে নূতন চন্দ্র সিংহের পুত্র সত্য রঞ্জন সিংহ পিতা হত্যার বিরম্নদ্ধে ফকা চৌধুরী ও তাঁর পুত্র সাকা চৌধুরীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৪১ (১) ৭২ ধারা ৩২০/১২০/১৯৮ বিপিসি)।
একই দিন ১৩ এপ্রিল '৭১ এ রাউজান থানার গহিরার নিজ বাড়ির সামনে অবস্থিত হিন্দুপাড়ায় অভিযান চালান সাকা চৌধুরী। চিত্তরঞ্জন প্রসাদের কলেজ পড়ুয়া ছেলে দয়াল হরি বিশ্বাসকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে হত্যা করা হয়। '৭১ সালে ১৭ এপ্রিল সাকা চৌধুরী ২০ বালুচ রেজিমেন্টের এক পস্নাটুন সৈন্য নিয়ে চট্টগ্রাম হতে রাউজান যাওয়ার সময় হালদা নদীর ওপর স্থাপিত সাগরঘাট ব্রিজ এলাকা হতে অপহরণ করা হয় চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মোজাফফর আহমেদকে। পরে তাকেও হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়।
১৯৭১ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে এক সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে বিশিষ্ট কাগজ ব্যবসায়ী রাউজানের বিনাজুরি ইউনিয়নের লেলেঙ্গরা গ্রামের সম্ভ্রানত্ম পরিবারের সনত্মান আলহাজ ফজলুল হক সওদাগরকে তাঁর জেল রোডের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় গুডস হিলে। সেখানে চালানো হয় নির্যাতন। দেশ মুক্ত হবার পর সাকা চৌধুরীকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা হয়। ফজলুল হক সাকা চৌধুরীর জলস্নাদখানায় ১ মাস বন্দী ছিলেন বলে উলেস্নখ করেন।
সাকা চৌধুরীর বিরম্নদ্ধে রয়েছে এ ধরনের অসংখ্য অভিযোগ।
চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি থানায় স্বাধীনতার পর হতে তার বিরম্নদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা হয়। তবে কোন মামলায় তিনি এ পর্যনত্ম গ্রেফতার হননি কিংবা আদালতে হাজির হননি। এছাড়া নানা অপকর্মের কারণে বিএনপি সরকারের আমলেই তার বিরম্নদ্ধে দায়ের হয় অনত্মত ডজনখানেক মামলা। রাউজান থানায় মামলাগুলো হচ্ছে-২৩-২-৯১ ধারা ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৪২৭/৪৩৫ ও ৩০২ দ-বিধি, মামলা নং ৭ (৯) ৯১ ধারা ১৪৩/৪৩৫/৪২৭ ও ৩০৭ দ-বিধি মামলা নং ২২ (৩-৩-৯১) ধারা ৩৬৪/৩২৩/১১৪ দ-বিধি। এ মামলাসমূহের প্রাথমিক অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশীটও দাখিল করা হয়, যার নম্বর ৬৪ তাং ৮-৬-৯১ চার্জশীট ৫৫(১৯-৫-৯১) চার্জশীট ৮৮(৩১-৭-৯১)।
প্রত্যৰদর্শী-স্বজনহারাদের বক্তব্য অশ্রম্নসিক্ত নয়নে পিতার মৃতু্যর করম্নণ চিত্র বর্ণনা করতে গিয়ে নূতন চন্দ্র সিংহের ছেলে পিআর সিংহ বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল। নিজের প্রতিষ্ঠিত রাউজানের কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ে কাজ করছিলেন তার বাবা নুতন চন্দ্র সিংহ। তার প্রতিষ্ঠানে হঠাৎ ঢুকে পড়ে একদল পাকসেনা। তবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের জন্য নূতন চন্দ্র সিংহের কল্যাণমুখী কার্যক্রম দেখে সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যান বালুচ ক্যাপ্টেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই এক রাজাকার ফের নিয়ে আসেন ওই পাক সেনাদের।
ঘটনা আঁচ করতে পেরে প্রাণ বাঁচাতে মন্দিরে ঢুকে প্রার্থনায় বসে যান নূতন চন্দ্র সিংহ। এ সময় ওই রাজাকার তাকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন পাকসেনাদের সামনে। উপুর হয়ে মাটিতে পড়ে থাকা বৃদ্ধ নূতন চন্দ্র সিংহকে গুলি করতে পাক সেনাদের বিলম্ব দেখে নিজের পিসত্মল থেকে ওই রাজাকার তাকে বুকে, পাজরে, বাম চোখের নিচে ও বাহুতে উপযর্ুপরি গুলি করেন। নিজ প্রতিষ্ঠানেই মৃতু্য ঘটে নূতন চন্দ্র সিংহের।
'৭১-এর সেই হত্যাকারী এখনকার সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে আরও বলেছেন, সাকার বাহিনীর হাতে খুন হওয়া ব্যক্তি কেবল আমার বাবাই নন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কেবল রাউজানেই এভাবে খুন করা হয়েছে ৬৭ জনকে। এরপরও রাজাকার সাকা স্বাধীন বাংলাদেশে ঘুরেছেন বীরদর্পে। যে জাতীয় পতাকার জন্য প্রাণ দিয়েছে ৩০ লাখ বাঙালী, সেই পতাকা গাড়িতে ঝুলিয়ে যখন সাকা ঘুরে বেরিয়েছেন তখন বাবার মৃতু্যটা আমাদের আরও বেশি কষ্ট দিয়েছে।
সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরম্ন হলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. এআর মলিস্নক, শিক্ষক ড. জাকির উদ্দিন, ড. আনিসুজ্জামান, সৈয়দ আলী আহসান, ড. শামসুল হক, ড. আলী ইমদাদ খান ও তাদের পরিবারের প্রায় ৪৭ জন কুন্ডেশ্বরী ভবনে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকলে সবাই অন্যত্র চলে যেতে থাকেন। এ সময় নূতন চন্দ্র সিংহকে তাদের সঙ্গে যেতে অনুরোধ করলে তিনি দেশত্যাগে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমি এ দেশের মাটিকে ভালবাসি। মৃতু্য যদি আসে তবে দেশের মাটিই হবে আমার চিরনিদ্রার স্থান। আমি এ দেশ, এ মাটি ত্যাগ করে কোথাও যাব না। ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রম্নমুক্ত হলে নূতন চন্দ্র সিংহের পুত্র-পরিবার দেশে ফিরে আসে।
হালের প্রভাবশালী এক নেতার নাম সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী। তবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে এই নামে তাকে খুব কম লোকই চিনত। সেই সময় খোকন নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। যে নাম শুনলেই অাঁৎকে উঠতেন সবাই। একাধিক মুক্তিযোদ্ধা জানান, এই সেই সাকা।
মুক্তিযুদ্ধে খোকন নাম ধারণ করেই চালিয়েছে হত্যা ও নির্যাতন। চট্টগ্রাম মহানগরী ও রাউজানে রাজাকার, আলবদর ও আল শামসকে সংগঠিত করেছিল খোকন অনেক কিলিং অপারেশনে নেতৃত্বও দিয়েছে। এসব ঘটনায় স্বাধীন বাংলাদেশে তার বিরম্নদ্ধে চারটি মামলাও দায়ের করা হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।