আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসঃ Autism Somporke Socheton houn..nije janun onnoke janan

যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।
আজ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। আসুন অটিজম সম্পর্কে সচেতন হই। অটিজম কি? অটিজম কোন সাধারণ রোগ নয়।

এটি শিশুদের একটি মনোবিকাশগত জটিলতা যার ফলে সাধারণত ৩টি সমস্যা দেখা দেয়া। যেগুলো হচ্ছে- প্রথমতঃ মৌখিক কিংবা অন্য কোনো প্রকার যোগাযোগ সমস্যা, দ্বিতীয়তঃ সমাজিক বিকাশগত সমস্যা, তৃতীয়তঃ খুব সীমাবদ্ধ ও গণ্ডিবদ্ধ জীবন-যাপন ও চিন্তা-ভাবনা এবং পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ এছাড়া অতি চাঞ্চল্য (Hiper Activity), জেদী ও আক্রমণাত্মক আচরণ (Aggressiveness), অহেতুক ভয়ভীতি, খিচুনী ইত্যাদি ও থাকতে পারে। কেন হয়ঃ অটিজমের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। অটিজম রোগটির প্রাদুর্ভাবঃ অটিজম এমন একটি কন্ডিশন যা কখনো ভালো হবার নয়। এটাকে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মোকাবেলা করতে হয়।

বাচ্চা কতটুকু ভালো হবে তা নির্ভর করে বাচ্চার সমস্যার ওপর। সমস্যা কম হলে উন্নতি বেশি হবে। বাংলাদেশে প্রতি ৫০০ জনে একজন অটিস্টিক শিশু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সে হিসেবে বাংলাদেশে ২.৫ লাখ শিশু অটিস্টিক। ইন্ডিয়াতেও ৫০০ জনে একজন, আমেরিকায় প্রতি ১০,০০০ জন শিশুর মধ্যে ৪.৫ জন শিশু অটিস্টিক।

অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে ১৯৯০-২০০০ সালের মধ্যে। ছেলেরা বেশি ঝুঁকি সম্পন্ন মেয়েদের তুলনায়। এর অনুপাত ৪:৩:১। বয়স্ক পিতা অটিজম হওয়ার জন্য বেশি দায়ী বয়স্ক মায়ের তুলনায়। কারণ বেশি বয়স্ক স্পার্ম দিয়ে মিউটেশন কঠিন হয়।

অটিজম সাধারণত সকল জাতি, বর্ণ, গোত্র ও দেশে দেখা যায়। অটিজমের সাধারণ লক্ষণ: অটিজম রয়েছে এমন শিশুর চিকিৎসার প্রথম ধাপ হচ্ছে দ্রুত তার অটিজম শনাক্তকরণ। এ জন্য তিন বছর বয়সের শিশুর মধ্যে যে লক্ষণগুলো দেখলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে: ১। শিশুর ভাষা শিখতে সমস্যা, যেমন—এক বছর বয়সের মধ্যে মুখে কোনো আওয়াজ করতে না পারা বা দুই বছর বয়সের মধ্যে এক-দুই শব্দ দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারা। ২।

শিশু যদি চোখে চোখ না রাখে ৩। নাম ধরে ডাকলে যদি সাড়া না দেয় ৪। অমিশুকে হয় এবং আদর করা পছন্দ করে না ৫। হঠাৎ করে খেপে ওঠে ৬। সামাজিক সম্পর্ক তৈরি ব্যাহত হচ্ছে ৭।

কোনো ধরনের আনন্দদায়ক বস্তু বা বিষয় সে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেয় না ৮। যদি একই শব্দ বা বাক্য বার বার উচ্চারণ করে বা তাকে বলা কোনো কথার পুনরাবৃত্তি করে ৯। একই আচরণ বার বার করতে থাকে ১০। আওয়াজ পছন্দ করে না ১১। খুব বেশি রুটিন মেনে চলতে পছন্দ করে, আশপাশের কোনো পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না ১২।

এসব লক্ষণ সাধারণত তিন বছর বয়সের মধ্যে দেখা যায়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে আরেকটু পরেও দেখা দিতে পারে। এরা প্রতিবন্ধী? অটিস্টিক শিশুরা প্রতিবন্ধী নয়। অটিস্টিক শিশুরা কখনও কখনও বিশেষ ক্ষেত্রে অত্যন্ত পারদর্শী হয়। যথাযথভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে এসব শিশু।

চিকিৎসাঃ অটিজম সারিয়ে তোলার জন্য কোন প্রকার জাদুকরী চিকিৎসা এখনও পর্যন্ত অবিষ্কৃত হয়নি। এরূপ পরামর্শে বিভ্রান্ত হওয়া বোকামী। তবে নিজেদের সম্পূর্ণ অসহায় মনে করাও সঠিক নয়। কেননা বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, পিতা-মাতা ও আপনজনদের শ্রম ও যত্ন এবং এই রোগের সাথে সংশিস্নষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহায়ক দলের একত্রে কার্যক্রমে শিশুর বিকাশ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হলেও একটি শিশুকে স্বাধীন জীবন-যাপন করার মত পর্যায় আনা সম্ভব হয়। আর এজন্য যা করণীয় তা হচ্ছেঃ এ ধরনের শিশুর বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিশুটিকে সার্বক্ষনিক সহায়তা প্রদান।

কিছু ঔষধপত্র প্রয়োগ যা তার অন্যান্য শারীরিক অসুবিধা দূরীকরণে সহায়তা করে। দ্রুততার সাথে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া যা শিশুটির ভাষা বিকাশ, সামাজিক বিকাশ, স্বাবলম্বিতার বিকাশ, বিশেষ দক্ষতার বিকাশ এবং অন্যান্য স্বকীয়তা অর্জনে সহায়তা করবে। সামাজিক স্বীকৃতি এবং সকলের সহযোগিতা এই ধরনের শিশুর বিকাশের জন্য খুবই জরুরী। ডাঃ মারুফা আহমেদ লেঃ কর্ণেল মোঃ তোফায়েল আহমেদ, পিএসসি দৈনিক ইত্তেফাক, ১৬ মার্চ ২০০৮ ডা. আবু সাঈদ শিমুল রেজিস্ট্রার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আহমেদ হেলাল মনোরোগবিদ্যা বিভাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ৩১, ২০১০ অকুপেশনালথেরাপিস্ট, শিশু প্রতিবন্ধী চিকিৎসা ও পূনর্বাসনে বিশেষজ্ঞ, শ্যামলী, ঢাকা মো. জহির উদ্দিন আকন্দ এই তিনজনের লেখা থেকে কিছু কিছু অংশ নেয়া হল। অটিজম সম্পর্কে সচেতন হলে অনেক শিশু অবহেলার হাত থেকে বাচঁবে।

গ্রামে এমনকি শহরেও দেখা যায় অটিস্টিক শিশুদের পাগল বলা হয়। অবহেলার চোখে দেখা হয়। বাবা মা রাও মনে করেন পাগল। কয়দিন আগে এক লোক বসে গল্প করছেন তিনি এক বাসায় গিয়েছিলেন। ওইখানে একটা বাচ্চা পাগলামী করে(আসলে অটিস্টিক),তিনি হেসে হেসে দেখাচ্ছিলেন কি কি করে।

তখন আমার নিজেরই এত খারাপ লেগেছিল যে তার সাথে কথা বলার রুচি হয় নি। মানুষ আজিব জীব। তার নিজের কারো কিছু না হলে সে এইটা নিয়া মজা করে। অটিস্টিক শিশু নিয়া বা অটিজম নিয়া গ্রামে গঞ্জে ও কাজ করা দরকার সরকারের অথবা যারা কাজ করতেছেন তাদের। কারন রোগ তো আর গ্রাম শহর দেখে আসে না।

গ্রামেও অনেক অটিস্টিক শিশু আছে যে হয়ত পাগল হয়ে জীবন যাপন করছে। এইটা ওইখানে প্রকট। একজন অটিস্টিক শিশু হইলে আশপাশের দশগ্রামে খবর যাবে। অমুক মিয়ার ছেলে/মেয়ে পাগল। তারপর থেকে এই শিশুটি আস্তে আস্তে বড় হবে পাগল অপবাদ নিয়ে।

অথচ কাউরে পাগল বলে গালি দেয়া একটা সামাজিক অপরাধের মধ্যে পড়ে । তাই সবাইকে অনুরোধ আসেন আমরা অটিস্টিক শিশুদের পাগল না বলে তাদের সম্পর্কে আরো জানি এবং পারলে তাদের অভিভাবকদের জানাই। মানুষ হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। .। কখনো যেন ভূলে না যাই, প্রকৃতি অবিচার করেছে এই সব মানুষদের প্রতি।

সেই একই অবিচার আমাদের প্রতিও করতে পারত..। । ...। । ...।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।