আমি এই লেখাটি পড়েছি CNN এর I Report এ সেটার বাংলা করার চেষ্টা করেছি। ভুল হলে শুধরে দেবেন আশা করি। মুল লেখাটির লিংক হল http://ireport.cnn.com/docs/DOC-969918
বাংলাদেশ একটি মানবিক ও ধর্মিয় সম্প্রীতির দেশ। ধর্ম নিরপেক্ষ এ দেশটি গত কয়েক মাস ধরে উগ্রপন্থিদের হুমকির মুখে আছে। গত ৫ মে যখন হেফাজতে ইসলাম তাদের ভয়াবহ রুপ ধারন করে রাজধাণী জুড়ে তাণ্ডব চালায় বাংলাদেশকে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় ।
আমরা দেখেছি তারা সরকার তাদের ১৩ দফা বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত ঢাকা না ছাড়ার ঘোষণা দেয়। এ জন্য সরকারকে তাদেরকে মতিঝিল শাপলা চত্তর থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ১৫/২০ মিনিটের সফল অপারেশন শেষ হবার পরে একটি প্রচারনা শুরু হয় যে ২০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ২৫০০০ মানুষ আহত হয়েছে। যারা এই প্রচারনা ছড়িয়েছে তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও চরম পন্থি শক্তি। তারা নিজেদেরকে সত্য প্রমানিত করার জন্য কিছু ভুয়া ফোটো এবং অযৌক্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এখানে আমি একটি প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলবো যেটা আল যাযিরা প্রকাশ করেছে। সবাইকে মনযোগ দিয়ে প্রতিবেদনটি দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। এই প্রতিবেদনটি ফেসবুক এ বাঁশের কেল্লা ও অন্যান্য কিছু পেজ এ আপলোড করা হয়েছিল। ভিডিও টির লিংক দেয়া হল। Click This Link
এ প্রতিবেদনটির আল জাজিরায় শিরোনাম করেছে।
সত্য বের হতে শুরু করেছে। প্রতিবেদনটির সহশিরোনাম ছিল ৬ মে আধার রাতের গনহত্যা।
দয়া করে শিরনামটি মনে রাখবেন।
আমি আশা করি আপনারা ডাক্তার এবং প্রতিবেদকের বক্তব্য গুলি ভাল করে শুনবেন ।
তারা বলেছেন।
১. ডজন ডজন গুলি এক এক জনের শরীরে।
২.হাসপাতালের লোকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে আহতদের সামাল দিতে।
৩.দুপুরের পরে থেকে আমরা অনেক রুগী পাচ্ছি। (কিন্তু ডাক্তার বলছিলেন গত কাল দুপুরের পরে থেকে। )
৪.আমরা তাদেরকে প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি।
( দয়া করে শব্দটা মাথায় রাখবেন প্রথমিক চিকিৎসা)
তারা খুব কাছে থেকে গুলি করেছে তাই গুলি শরীর ভেদ করে গেছে।
আমি আশা করছি আপনি প্রতিবেদনটি খুব মনযোগসহকারে দেখেছেন।
এখন আপনার কাছে কিছু প্রশ্ন।
১.আপনার প্রতিবেদনটি দেখে কি মনে হচ্ছে যে এটি একটি এমন ঘটনার প্রতিবেদন যেখানে ২০০০ মানুষ মারা গেছে এবং ২৫০০০ মানুষ আহত ?
২.আপনি কি আশা করেননি প্রতিবেদক আরও কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে আরও ভিডিও চিত্র দিয়ে প্রতিবেদনটি বানাবেন।
৩.আপনি কি আরও কিছু আহত লোক দেখতে চাননি ?
যা হোক আমি আমার আসল কথায় আসি।
১. ডাক্তার এবং কর্মচারিরা বলেছেন প্রতিটি আহতের শরীরে ডজন ডজন বুলেট । তাদেরকে সামাল দিতে তাদের হিম শিম খেতে হচ্ছে । তাহলে প্রতিবেদক কেন প্রতিবেদনে তা দেখালেন না আমাদের বুঝতে সুবিধা হতো আসলে কি হচ্ছে। হাসপাতালের পরিবেশ দেখে কি মনে হচ্ছে এখানে অনেক হতাহত রুগীর ভিড়। যার বাংলাদেশের হাসপাতাল গুলির পরিবেশ সম্বন্ধে বিন্দু মাত্র ধারনা আছে আপনি এমন পরিবেশ হাসপাতালে চিন্তা করতে পারবেন ?যখন বলা হচ্ছে ২৫০০০ এর মত আহত তখন হাসপাতালের পরিবেশটা আরও ভয়াবহ হবার কথা।
আপনি সাভার ঘটনার সাথে এটাকে তুলনা করতে পারেন সাভারে আহত হয়েছিলেন ২৫০০ জন।
২.ডাক্তার বলছেন গতকাল বিকেলের পরে থেকে আমাদের এখানে অনেক আহত রুগী আসছেন তারমানে এটা হল ৫মে রবিবার বিকেল। আর প্রতিবেদক বলছেন বিকেল থেকে তার মানে ৬মে সোমবার বিকেল।
এখানে একটা ব্যপার আছে।
যদি এটা রবিবার বিকেল হয় তবে কিভাবে এত রুগী আসে যেখানে অপারেশন শুরু হয়েছে মধ্য রাতে।
যদি এটা সোমবার বিকেল হয় তবে এটা কি বিশ্বাস যোগ্য যে ডজন ডজন বুলেট গায়ে আহত হয়েছে মধ্য রাতে আর আপনি তাদের চিকিৎসা দিচ্ছেন বিকেলে। এটা কি কোন কথা হল ?
৩.এরপরে এল আসল মজা আপনি কি শুনেছেন ডাক্তার বলছেন আমরা তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি এবং বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি। "তাদেরকে খুব কাছে থেকে গুলি করা হয়েছিল,গুলি তাদের শরীরকে ভেদ করে চলে যায় "। আল্লাহ্
আপনি তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন যাদের গায়ে ডজন ডজন গুলি যাদেরকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে এবং গুলি শরীর ভেদ করে চলে গিয়েছে।
এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা ।
আপনার এটা বোঝার জন্য কোন ডাক্তারের দরকার নেই যে আহত বা অসুস্থ রুগীর জন্য প্রথমিক চিকিৎসা একটি আপদ কালিন সমাধান যতক্ষন না হাসপাতাল বা ঔষধ পাওয়া যায়। তারা প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন যেখানে রোগী প্রথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি থেকে হাসপাতালে আসেন। আর এখানে ডজন ডজন গুলি লাগা লোককে অপনারা প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন?
আপনাদের কি আরও ব্যখ্যা চাই,ব্যপারটা বুঝতে ?
আল জাজিরা সাংবাদিকতার নুন্যতম নিয়ম মানেনি এ প্রতিবেদনটি করার সময়। তারা আইন সৃঙখ্লা বাহিনির কোন বক্তব্য নেননি যখন ডাক্তাররা বলছেন হেফাজতের কর্মিদের খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে।
প্রতিবেদক ডাক্তারকে প্রশ্ন করেননি এত মারাত্তক ভাবে আহত লোকদের কি করে প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হল ?
এমনকি তারা অন্য হাসপাতালের রোগীদেরও দেখাননি।
আমার সবিনয় অনুরোধ যারা দেশকে ভালবাসেন তারা এইসব প্রচারনার বিরুদ্ধে দাঁড়ান।
শেষ করার আগে দুটি যুক্তি দেই সাভার ট্রাজেডির সময় ফেসবুকে ওয়াল ভরে গিয়েছিল প্রচুর পরিমাণে রক্তের দ্রকার। যেখানে আহত হয়েছিলেন ২০০০ এর মতন লোক । আর ২৫০০০ লোকের জন্য রক্ত কোথাথেকে আসল ?
২৫০০ মানুষের লাশ কোথায় গেল বা কি ভাবে সরানো হল ?একজন মানুষের কমপক্ষে ওজন ৫০ কেজি তাহলে ২৫০০ মানুষের ওজন ১২৫০০০ কেজি এত লাশ গুম হল আর একটা ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেল না ? যেখানে রিক্সাওয়ালার কাছেও ক্যামেরা ফোন থাকে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।