পরে লিখব
ইস্পাহানিতে ভর্তি হবার ব্যাপারটা আমার জন্য বেশ জটিল ছিল। আমি থাকতাম মংলা পোর্ট, খুলনা তে। এস.এস.সি পাশ করলাম যশোর বোর্ড থেকে। আদি বাড়ি কুমিল্লা তে। বাবা চাইলেন যেন কুমিল্লাতেই ভাল কোন কলেজ এ পড়ি।
প্রতিদিন সংবাদপত্র ঘাটাঘাটি করতাম। ইস্পাহানির কোন বিজ্ঞাপন তখনো চোখে পড়েনি। একদিন দেখে বাবাকে বললাম। বাবা ফর্ম কেনার জন্য আমার খালাতো ভাইকে টাকা পাঠালেন। ফর্ম কেনা হল।
জমা দেবার আগের দিন কুমিল্লা গেলাম। কোনমতে ফর্মটা পুরন করেই জমা দিতে ছুটলাম। বাবা সাথেই ছিলেন আর ছিলেন আমার মামা। জমা দিলাম ফর্ম। মৌখিক পরীক্ষা হবে কিছুদিন পর।
প্রাথমিক বাছাইএ টিকে গেলাম। এবার মৌখিক এর অপেক্ষা। মৌখিক পরীক্ষাতে অংশগ্রহন করতে ছুটলাম ইস্পাহানিতে। ওখানে দেখা হয়েছে এবং পরবর্তীতে একসাথে ক্লাস করেছি এমন দু একজন এর সাথে তখন দেখা। পল্লব ভুঁইয়া, ডাইনোসর কামরুল মেহেদির সাথে দেখা হয়েছিল।
শেষ হল মৌখিক, চূড়ান্ত বাছাই পর্বে আমি চতুর্থ ওয়েটিং এ থাকলাম। মনটা খারাপ হয়ে গেল। কেউ কি আর সুযোগ পেয়েও ভর্তি হবেনা?? যেদিন এই খবর জানলাম সেদিন আরও একজন এর সাথে পরিচয় হল। তার নাম শাহারিয়ার ফয়সাল। সে ইস্পাহানিতে পড়বে।
তাকে বাছাই করা হয়েছে। খুব খুশি। আমার মন খারাপ দেখে বুঝে নিল। আমি কিন্তু তখনো তাকে চিনি না। আমি চলে যাবার সময় সে বলল, ইস্পাহানিতে পড়া এত্ত সহজ না।
একে তো চিনি না, আবার মেজাজ গরম করা কথা বার্তা। ক্যান্টনমেন্ট এর ভিতরে কলেজ, কিছুই বলার নেই। ফর্ম পুরন করবার সময় বিখ্যাত মিজান স্যার এর সাথে দেখা হয়েছিল। তার মোবাইল নাম্বার আমার কাছে ছিল। তাকে রেগুলার কল দিতাম।
স্যার, আমাকে কি বাছাই করা হয়েছে?? স্যার তেমন কিছুই বলতেন না। একদিন ফোন করে বললেন, ভর্তি হতে চলে আস। খুশি আর কাকে বলে। প্রসপেক্টাস অনুযায়ী সব নিয়া ইস্পাহানিতে ভর্তি হতে ছুটলাম।
যাহাই হউক, আমার সব জোগাড় যন্তর হয়ে গেছিলো।
অবশেষে এক মাহেন্দ্রক্ষণে আমি ইস্পাহানিতে পদার্পণ করলাম। বিকেলে উঠেছিলাম হাউসে। এখানে বলে রাখা ভাল, আমি আবাসিক ছাত্র ছিলাম, যেহেতু আমার বাসা দূরে, অনাবাসিক যারা তারা কুমিল্লা শহরএ থাকে। ক্যান্টনমেন্ট এ বেশি থাকে।
বিকেলে মোট তিনজন স্যার তাদের তিন হাউসের ছাত্র বুঝে নিচ্ছিলেন।
ফজলুল হক হাউসের টিকেট পাইলাম। অন্য দুই হাউসগুলোর নাম হল নজরুল ইসলাম এবং কুদরত-ই-খুদা হাউস। ফজলুল হাউস সব চেয়ে বড়ো। ১১টা রুম। প্রত্যেক রুমে ৬জন করে থাকে।
১৪-২৪ নাম্বার পর্যন্ত রুম। আমি ২৩ নাম্বার রুমের বাসিন্দা হইলাম। আমি বাস্ত থাকায় চুল কাটাইতে পারি নাই। জংলী লাগতেছিল দেখতে আমাকে। কে.জি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ইস্পাহানিতে পড়া যায়, কিন্তু হাউস এ থাকে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্ররা।
কুরবানি ঈদ এর বেশ কিছুদিন আগে আমি ভর্তি হয়েছিলাম। তাই ৭দিন পরেই ছুটি। ঈদএর ছুটি। যাই হোক, ২৩নাম্বার রুম এ প্রবেশ করলাম। রুমে তখন একটা ছেলেই আসে বিছানায় বসা।
বাবা তার সাথে কথা বললেন, তার নাম শরীফ, OLD ISPAHANIAN, মানে সে স্কুল লেভেল এ ইস্পাহানীতেই পড়তো এবং হাউসেই থাকতো। বাড়ি ময়মনসিং। আস্তে আস্তে আরও বেশ কয়েকজন রুমে উঠে পড়লো। পল্লব সিলেটের ছেলে, আনোয়ার চান্দিনার,কুমিল্লা, আল-আমিন কুঠি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শাহ-আলম মিয়াবাজার, কুমিল্লা। সবাই মিলে ৫জন।
এখনো একটা সীট খালি। কেউ আসে নাই। বাবা সবাইকে মিলে মিশে থাকতে বললেন। আমাকে কয়েকটা উপদেশ দিয়ে বিদায় নিলেন। রুম এ আস্তে আস্তে পরিচিত হচ্ছি।
সবার সাথে কথা বার্তা বলছি।
চলবে.। .। .। .।
.। .। .। .। .।
.। .। .। .। .।
.। .। .। .। .।
.। .। .। .।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।