আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উইকেটকিপার কামরান আকমলকে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন শোয়েব আকতার শ্রীলঙ্কার হোটেলের ভেতর

তক

আফ্রিদির ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানে একমাত্র কাঁটা যেন শোয়েব আখতার। অবসর নিয়েও শোয়েব সেই বিতকির্তই থেকে গেলেন। কলম্বোয় আকস্মিক অবসরের পরপর আটচল্লিশ ঘণ্টাখানেক তাঁকে নিয়ে টিমে শান্তি বজায় ছিল। কিন্তু আবার যে কে সেই। ভারত ম্যাচের আগে শোয়েব আখতার প্রসঙ্গ আবার পাকিস্তান শিবিরকে বিব্রত করছে।

পাকিস্তানি ক্রিকেটমহলের প্রভাবশালী এক পক্ষ বলছে, ইণ্ডিয়া ম্যাচে শোয়েবকে খেলানো হোক। কমানো হোক এক জন স্পিনার। ভারতকে স্পিন দিয়ে হারানো যাবে না। গতি দিয়ে হারানো যেতে পারে। উমর গুলের সঙ্গে শোয়েব বোলিং ওপেন করলে ব্যাপারটা অনেক ধারালো হয়।

এই বক্তব্য অধিনায়ক আফ্রিদিকেও কিছুটা প্রভাবিত করে রেখেছে। কিন্তু প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছেন কোচ ওয়াকার ইউনিস এবং ম্যানেজার ইন্তিখাব আলম। তাঁরা শোয়েবকে খেলাতে চাইছেন না। শোয়েবের ব্যাপারে সবচেয়ে কট্টরপন্থী হলেন কোচ ওয়াকার ইউনিস। তিনি মনে করেন শোয়েব যথেষ্ট ফিট নন।

এবং শৃঙ্খলা মানছেন না। মোহালিতে আফ্রিদি-শোয়েবের ছবি তুলেছেন। -উৎপল সরকার মোহালির মাঠে পাকিস্তান প্র্যাক্টিসের দিকে এক ঝলক তাকিয়েই বোঝা যাবে, শোয়েবকে নিয়ে দলের ভিতর কী হচ্ছে। শরীরী ভাষা গোপন করার চেষ্টা কোনও পক্ষই করছে না। এ দিন শোয়েব এসে বললেন, নেটে প্রথম দফায় বল করতে চান।

উমর গুল তখন বল করছেন পাশের নেটে। টিমে যারা নিয়মিত তাদের সাধারণত শুরুতেই বল দেওয়া হয়ে থাকে। শোয়েবকে বল না দিয়ে ওয়াকার ইঙ্গিত করলেন, একটু পরে। শোয়েব তা দেখে পিছনে না দাঁড়িয়ে সোজা চলে গেলেন কোণের দিকে। যেখানে ব্যাট করে এসে লোকে বিশ্রাম নেন।

নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ্য করে তিনি সেখানে বসে পড়লেন। কিছু পরে তাঁকে বলা হল বল করার জন্য, তখনও তাঁর শরীরী ভাষা যথেষ্ট অনিচ্ছুক। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে পাকিস্তানের ত্রাস সৃষ্টিকারী ফাস্ট বোলারের এই শরীরী ভাষা ভাবাই যায় না। আসলে শোয়েব ভেতরে ভেতরে খুব বিক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন। মোহালিতে যদি পাকিস্তান হেরে যায় তা হলে দেশে ফিরে সবার আগে শোয়েব নিয়ে বিতর্কের মহা অধ্যায় শুরু হবে।

শোয়েব এই দলে একমাত্র ক্রিকেটার যাকে বিশ্বকাপের মধ্যে দু’বার জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার খবর প্রকাশ্যে আনা হয়নি। কিন্তু এক বার বিতর্ক শুরু হলে সব খুল্লমখুল্লা চলে আসবে। প্রথম বার জরিমানা করা হয় যখন তিনি ঢাকায় বিশ্বকাপ প্র্যাক্টিস ম্যাচের আগের রাতে দেরি করে ফেরেন। সে বার তিনশো ডলার জরিমানা করা হয়েছিল।

কলম্বোতে নিউজিল্যাণ্ড ম্যাচের পর শোয়েবকে জরিমানা করা হয় দু’হাজার ডলার। কারণ? উইকেটকিপার কামরান আকমলকে বেধড়ক মারা। শোয়েব কোথায় মেরেছেন এ নিয়ে দু’রকম ব্যাখ্যা আছে। কেউ কেউ বলছেন শ্রীলঙ্কার হোটেলের ভেতর মেরেছেন। কেউ কেউ বলছেন টিম প্র্যাক্টিসের সময়ে মেরেছেন।

যা পুরো রেকর্ডিং করে রেখেছে ইএসপিএন। কিন্তু হোস্ট ব্রডকাস্টার চালাচ্ছে না পাছে বিশ্বকাপের ভাবমূর্তি খারাপ হয়। স্থান নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কামরানের গায়ে যে হাত তুলেছেন তা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। কামরানের অপরাধ, শোয়েবের বলে তিনি সহজ দুটো ক্যাচ ছেড়েছেন। গায়ে হাত তোলার পরপরই শোয়েব ইঙ্গিত পেয়ে যান, তাঁকে আর খেলানো হবে না।

বরঞ্চ দেশে ফিরে এই মারধরের প্রসঙ্গটা উঠবে। ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে তাই তিনি তড়িঘড়ি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারত ম্যাচ আসতেই এ বার শোয়েব তেজি হচ্ছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল সেমিফাইনালে ইণ্ডিয়া ম্যাচে অবশ্যই দরকার হবে তাঁকে। তখনও ভাবেননি যে, টিমের কেউ কেউ আলোচনা করতে পারে, ওকে নিয়ে জুয়া খেলার মানে হয় না।

মাঠে ম্যাচ হারিয়ে দিলে আরও কেলেঙ্কারি হবে। এ দিন প্র্যাক্টিসে তাঁর প্রতি যেমন বিমাতৃসুলভ মনোভাব দেখা গেল, তাতে নতুন কোনও চিন্তাভাবনা উপস্থিত না হলে শোয়েবকে ম্যাচটা বসতে হবে। সে ক্ষেত্রে ফাইনাল খেলারও প্রশ্ন নেই। সে ক্ষেত্রে ক্রিকেট কেরিয়ারই সাঙ্গ হয়ে গেল তাঁর। লেখাটি আনাস্দবাজার প্রত্রিকা হতে নেয়া বি:দ্র: এটা বিশ্বাস করা কঠিন হতে পারে কারণ বিশ্বকাপে আগে প্রতিপক্ষকে বিপদে ফেলার জন্য ভারত এমন প্রচার করেই থাকে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।