আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক য়ে ছিল বুয়া তিনি বাংলাদেশ নামক একটি বাড়িতে কাজ করত ।

সাতশ কোটি মানুষের মধ্যে আমি ও একজন মানুষ । আমার আমিতে, আমাতে আর কেউ নই । গোলাপী একজন কাজের বুয়া। সে একটা বাড়িতে কাজ করে। বাড়ির নাম 'বাংলাদেশ'।

এই বাড়িতে ৪২ বছর আগে একবার ডাকাত পড়েছিলো। বাড়ির লোকজন বহু ত্যাগের মাধ্যমে সেবার ডাকাত দলকে পরাজিত করেছিল। গোলাপী সেই বাড়িতেই কাজ করে। গোলাপী তার দুই ছেলেকে নিয়েই ঐ বাড়িতে কাজে যায়। গোলাপী কাজে ফাঁকি দেয়, লবন মরিচ পেয়াজ সবই চুরি করে।

কিন্তু তার ছেলে দুইটা বড় চোর। বড় ছেলে ঐ বাড়ির একটা মোবাইল চুরি করেছে। আর ছোট ছেলে চুরি করেছে হাজার পাঁচেক টাকা। গোলাপী ধরা না পড়লেও তার দুই ছেলে ধরা পড়ে যায়। ফলাফল, গোলাপী সেই বাড়ি থেকে বিতাড়িত।

আর ছেলে দুইটাকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হলো। 'বাংলাদেশ' বাড়িতে নতুন কাজের বুয়া নিয়োগ করা হলো। নতুন বুয়ার নাম কেউ জানে না। তবে বুয়াটা কখনো হাসে না। আবার বলছি, বুয়াটা 'হাসে না'।

এই বুয়াও কাজে ফাকি দেয়। তবে বাড়ির লোকজন মোটামুটি আস্থা রাখতে পারে নতুন বুয়ার উপর। তবে হঠাত্‍ একদিন অভিযোগ উঠলো, নতুন বুয়া নাকি বাড়ির পেয়াজের 'স্টকে' ধস নামিয়েছে। এছাড়া বাড়ির মালিক একটা মুভি বানাতে চেয়েছেন। মুভির নাম- "দ্য পদ্মা সেতু"।

নতুন বুয়া নাকি সেই "দ্য পদ্মা সেতু" মুভির জন্য বরাদ্দ করা সব টাকা মেরে দিয়েছে। এরই মধ্যে 'বাংলাদেশ' বাড়িতে আবার হাজির হলো গোলাপী। তার দুই ছেলে এখনো হাসপাতালে। সে হাজির হলো সেই ৪২ বছর আগের ডাকাত দলের সদস্যদের সাথে হাত মিলিয়ে। ডাকাতদের অবশ্য এখন আর চেনার উপায় নেই।

তারা মস্ত বড় আলেম, হুজুর। গোলাপী বাড়ির লোকজনদের সাথে কথা বলতে চাইলো। গোলাপীর সাথে বড় বড় আলেম আছে দেখে বাড়ির লোকজন সম্মতি জানালো। কথার শুরুতেই গোলাপী বাড়ির নতুন বুয়া সম্পর্কে অভিযোগ তুললো। গোলাপী বললো, "একটি বুয়া এবাড়ির সুখ নষ্ট করতে চায়।

একটি বুয়া এবাড়ির আনন্দ বানচাল করতে চায়। কিন্তু বাড়ির লোকজন কখনোই তা মেনে নেবে না। " গোলাপী আরো বললো, "সাপকে বিশ্বাস করে যায়, কিন্তু নতুন বুয়াকে বিশ্বাস করা যায় না..." এসব শুনে নতুন বুয়া চুপ থাকতে পারলো না। সে কাজে ফাকি দিলেও ইতিহাস সচেতন। তাই ডাকাতদলের সদস্যদের সে ঠিকই চিনে ফেললো।

নতুন বুয়া বললো, "গোলাপী ডাকাতদের সাথে হাত মিলিয়েছে। এই ডাকাতদের বিচার করতে হবে। আমাকে আরো তিন বছর কাজে রাখলে আমি এই ডাকাতদের বিচার করবো। আমার কাছে প্রমান আছে। " তখন গোলাপী বললো, "এসব মিথ্যা! ষড়যন্ত্র! নতুন বুয়ার ষড়যন্ত্রের নীল নকশা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না।

নতুন বুয়ার 'বেয়াই' হচ্ছে আসল ডাকাত!" বাড়ির লোকজন সচেতনভাবে ইতিহাস ঘেটে দেখলো। তারা বুঝতে পারলো যে এই আলেমগুলোই আসল ডাকাত। নতুন বুয়ার মাধ্যমে তারা ডাকাতদের বিচার শুরু করলো। কিন্তু নতুন বুয়াও ডাকাতদের বিচারের সময় ঝামেলা বাধালো! বাড়ির লোকজনের মনে নতুন বুয়া সম্পর্কে সন্দেহ ঘনীভূত হলো। বাড়ির লোকজন বুঝতে পারলো যে, নতুন বুয়া ও গোলাপী- উভয়েই শুধু নিজের স্বার্থ বোঝে।

তাই শেষ পর্যন্ত বাড়ির লোকজন নিজেরাই বিচার প্রক্রিয়া শুরু করলো। ফাসিতে ঝুলিয়ে দিলো একে একে সব কটা ডাকাতকে। বাড়ির লোকজন বুয়াদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাই এবার তারা খোঁজ শুরু করলো একজন স্মার্ট বুদ্ধিমান তরুন কেয়ারটেকারের। যে 'বাংলাদেশ' বাড়ির যথার্থ দেখাশোনা করতে পারবে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।