আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

!!পেডোফিলিয়া ও পেডোফিলিক বা শিশু যৌন নির্যাতন ও নির্যাতনকারী- আর নয়- চাই না !!


[img|https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/images/thumbs/Shyry_1375272056_1-Scared_Child_at_Nighttime.jpg আমাদের দেশে শিশুকালে খুব কাছের মানুষ মামা, চাচা, খালু, পাড়াপ্রতিবেশী বা শিক্ষক দ্বারা কিছু না কিছু যৌন নির্যাতনের শিকার হন নি এমন মানুষ মেলা ভার। আমাদের সমাজে লোকলজ্জা বা ছোটকাল থেকেই শিশুদের মনে যৌনতা বিষয়ক কিছু ভীতির সঞ্চার করানো হয় যার কারনে অধিকাংশ ক্ষে্ত্রেই শিশু যৌন নির্যাতনকারীর অপকর্মগুলি ঢাকা পড়ে, ধামাচাঁপা খায়। আর পার পেয়ে যায় তারা দিনের পর দিন। সময় এসেছে এসব রুখে দেবার। আর নয় শিশু নিপীড়ন।

আর নয় চাইল্ড সেক্স এবিউসমেন্ট। কিন্তু কি করে? কিভাবে? সেটা জানার আগে শিশু যৌন নির্যাতনকারীর অসুস্থ্য মানষিকতা সম্পর্কে জানতে হবে। শিশু যৌন হয়রানি-একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তি যে কোনো ভাবেই যৌনতায় শিশুকে ব্যবহার করলে সেটাকে শিশু যৌন হয়রানি বলা হয়। ইনসেস্ট- পরিবারের বয়স্ক মানুষ দ্বারা সংঘটিত শিশু যৌন হয়রানিকে বলা হয় ইনসেস্ট। পেডোফিলিয়া- শিশুর যৌনতা সম্বন্ধে কোন ধারণা তৈরী হবার আগেই যদি বয়স্ক কারো দ্বারা যৌন হয়রানির স্বীকার হয়, সেক্ষেত্রে সেটাকে বলা হয় পেডোফিলিয়া।

পেডোফিলিয়া কি মানষিক অসুস্থ্যতা? এর কি কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা সম্ভব? হ্যাঁ পেডোফিলিয়া একটি মানষিক ব্যাধি এবং এর চিকিৎসাও সম্ভব। এ ছাড়াও বিভিন্ন রকম পারিপার্শ্বিক কারণেও শিশু যৌন নির্যাতনের মত ঘটনা ঘটতে পারে। তবে জরুরী এসব পেডোফিলিক অসুস্থ্য মানষিকতার মানুষগুলো চিহ্নিত হওয়া মাত্র আইনী শাস্তির আওতায় এনে তাদের মানষিক রোগটির জরুরী চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা। বিশেষজ্ঞদের মতে এ ধরণের মানসিক রোগীদের হরমোনজাতীয় ওষুধ এবং মানসিক চিকিৎসা উভয় ধরনের চিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তোলা সম্ভব। কিন্ত সমস্যা হলো আমাদের সমাজে এসব বিষয়ে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা।

লোকলজ্জা, ভীতি ও সামাজিক অনুশাসনে প্রায়ই রোগটি চিহ্নিত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই গেলো পেডোফিলিক রোগী ও রোগটির কথা। এ কথায় এসব রোগী সনাক্ত হওয়া মাত্র আইনী আওতায় এনে চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে। এইব্যাপারে পরিবার, সমাজ সর্বপোরি রোগীর নিজেকেই কিছু উদ্যোগ নিতে হবে- ১. পেডোফিলিক আচরণ নিজের মাঝে উপলদ্ধ হওয়া মাত্র রোগী নিজেই ডক্টরের শরনাপন্ন হতে পারে। লজ্জা, ভীতি কাটিয়ে এ উদ্যোগ বরং প্রশংসনীয়।

২. সামাজিক প্রচারণা বা মিডিয়াগুলোর সহায়তা প্রয়োজন। ৩. প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এ ব্যাপারে শিশুদেরকে সচেতন করে তুলতে হবে। এখন আসি ভুক্তভুগীদের প্রসঙ্গে। সবচাইতে ভয়ংকর ও কষ্টকর অভিজ্ঞতাটি গোপনে বহন করে চলে আক্রান্ত শিশুরা। হীনমন্যতা, কষ্ট মনোবেদনা, ভীতুস্বভাব কখনও কখনও এগ্রেসিভ বা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বিদ্বেষ, ভয় এরূপ মনোভাবের শিকার হয় তারা।

এইক্ষেত্রে কি কি করণীয় - পরিবারে ও সমাজে? ১) প্রথমেই বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে- শিশুটিকে বাড়িতে রেখে কর্মক্ষেত্রে, মার্কেটে বা অন্য কোথায় যাবার সময় অবশ্যই তার জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যাবস্থা করতে হবে। নির্ভরযোগ্য ব্যাক্তিকে শিশুর দায়িত্ব দিতে হবে ও খেয়াল রাখতে হবে যতদূর সম্ভব। ২) শিশুকে বুঝিয়ে বলতে হবে। প্রয়োজনে তাকে এই টাইপ নির্যাতন সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। শিশুর সাথে বন্ধুত্বপূর্ন আচরণ গড়ে তুলতে হবে যেন সে কোনো রোক ভয় বা লজ্জায় ব্যাপারগুলো মা বা বা পরিবারের কাছে গোপন না করে।

৩) স্কুল কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গোপনীয়তা রক্ষার ভিত্তিতে এই সব সমস্যাগুলো জানানোর ব্যাবস্থা থাকতে হবে। ৪) সামাজিক প্রচারণার ব্যাবস্থা করতে হবে। ৫) যে কোনো ভুক্তভুগীকেই মানষিক ট্রমা কাটিয়ে উঠবার সহযোগীতা করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে ভুক্তভুগী ও নির্যাতনকারী উভয়ের জন্যই মেন্টাল থেরাপী, কাউন্সেলিং ও চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিতে হবে।

সর্বোপরী শিক্ষা, জ্ঞান ও বিবেকের সমন্বয়ে গড়ে উঠুক সুস্থ্য সমাজ। সবাই বাঁচুক আনন্দে, উচ্ছলতায়। আর হ্যাঁ পেডোফিলিয়া বা শিশু যৌন হয়রানী শুধু মেয়ে শিশুদের জন্যই প্রযোজ্য নয়। তুলনামূলকভাবে ছেলেদের চাইতে মেয়ে শিশুরা এর শিকার হয় বেশী বটে তবে ছেলে ও মেয়ে উভয় শিশুই এই হয়রানীর শিকার । মেয়েদের হয়রানীগুলিই মিডিয়ায় প্রাধন্য পায় হেতু মেয়েরাই এর শিকার বলে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে।

আমাদেরকে ছেলে ও মেয়ে উভয় শিশুর ক্ষেত্রেই সচেতন হতে হবে। পেডোফিলিয়া সংক্রান্ত এই ব্লগেই পূর্বে প্রকাশিত কিছু লেখা নেট ঘেটে পাওয়া- Click This Link Click This Link কৃতজ্ঞতা- http://en.wikipedia.org/wiki/Pedophilia Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link .html সম্প্রতি শিক্ষক দ্বারা স্কুলের ছোট ছোট অসংখ্য কোমলমতী শিশু ও কিশোরীদের সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের বিষয়টি আমাকে এ লেখাটি লিখতে ভাবিয়েছে। চাই সুস্থ সমাজ, প্রতিটি শিশু, কিশোর, বয়স্ক মানুষ বেঁচে থাকুক সুস্থ্য মানষিকতায়। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত আনন্দ ধারার শেষ বিন্দুটি পান করুক প্রতিটি প্রাণ এই কামনায় শেষ করছি লেখাটি।
 


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।