রানিং এন্ড রানিং...
সিঁধুর বাংলাদেশ বিরোধী মন্তব্য
ইসপিএনকে সতর্ক করল আইসিসি...
নিউজটা পড়েন আর আমার সাথে আপনারাও আনন্দে শামিল হউন...
সুত্রঃ
Click This Link
কপি পেষ্ট ভাল না, তাও শেয়ার না করে থাকতে পারলাম না বলে দুঃখিত।
----------------------------------------
নভজোৎ সিং সিঁধু ব্যাটসম্যান হিসেবে যতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন, খেলা ছাড়ার পর ধারাভাষ্যকার হিসেবেও ততটাই আক্রমণাত্মক। চিবিয়ে চিবিয়ে উচ্চৈঃস্বরে ঝাঁজালো ইংরেজিতে তিনি ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষণ ব্যবহার করেন নানারকম। তবে তাঁর সেই আলোচনা ক্রিকেট প্রিয় মানুষের মধ্যে যতটা না আগ্রহ তৈরি করে, তার চেয়ে বেশি তৈরি করে বিরক্তি আর ক্ষোভ।
কারণ, সিঁধু ইংরেজির প্যাঁচে ক্রিকেট ও ক্রিকেটের দলগুলোকে নিয়ে আলোচনায় অনেক সময় সভ্যতা, শালীনতা ও ভব্যতার সীমা ছাড়িয়ে যান।
খেলা ছাড়ার পর, একজন ‘জ্বালামায়ী’ ক্রিকেট ভাষ্যকার হিসেবে সিঁধুর আবির্ভাব। মূলত স্যাটেলাইট চ্যানেল ইএসপিএন-স্টার স্পোর্টসেই সিঁধুকে বেশি ধারাভাষ্য দিতে দেখা যায়। অনিয়ন্ত্রিত কথা বলে এর আগে কয়েকবারই বিভিন্ন মহলের ক্ষোভের কারণ হয়েছিলেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে ইএসপিএন-স্টার স্পোর্টসে ম্যাচ পূর্ব ও পরবর্তী একটি টকশোতে অংশ নিচ্ছেন নভজোৎ সিং সিঁধু।
বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার হারশা ভোগলের উপস্থাপনায় এই টক শোনাতে অংশ নিচ্ছেন, ইয়ান চ্যাপেল, সৌরভ গাঙ্গুলি, প্যাট সিমকক্স থেকে শুরু করে ডারমট রীভ ও অন্যান্য সাবেক ক্রিকেটাররা। আর এতেই বাংলাদেশ দলকে নিয়ে কয়েকটি উল্টা-পালটা মন্তব্য করে তিনি পরিণত হয়েছেন বাংলাদেশের অগণিত ক্রিকেটামোদীদের ক্ষোভের লক্ষ্যবস্তুতে। এ নিয়ে দীপন নামের একজন বাংলাদেশি ক্রিকেটভক্ত আইসিসির প্রধান নির্বাহী হারুন লরগাত বরাবর একটি ই-মেইল পাঠিয়ে প্রতিকার চান। দীপন সিঁধুকে অভিযুক্ত করেন একজন ‘বর্ণবাদী’ হিসেবে। তাঁর অভিযোগ ছিল, বাংলাদেশ নিয়ে সেই টক শোতে সিঁধু যেসব মন্তব্য করেন, সেগুলো আইসিসির বর্ণবাদ বিরোধী নীতিমালা ও কোড অব কন্ডাক্টের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
আইসিসির প্রধান নির্বাহী হারুন লরগাত দীপনের এই ই-মেইল বার্তাটি যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্তও চালান। আইসিসি সেই তদন্তে ইএসপিএন-স্টার স্পোর্টসের সেই অনুষ্ঠানটির ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে সিঁধুর বিরুদ্ধে বর্ণবাদী কথাবার্তার সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে। এর ভিত্তিতে ইএসপিএন স্টার স্পোর্টসকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে হারুন লরগাত দীপনকে মেইল করে জানান। লরগাত এই মেইলটি একই সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি আহম মোস্তফা কামাল ও আইসিসির মহা-ব্যবস্থাপক ডেভিড রিচার্ডসন বরাবরও পাঠিয়েছেন।
সিঁধু বাংলাদেশকে নিয়ে কি বলেছিলেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তিনি ইয়ান বোথামের একটি মন্তব্য খণ্ডাতে গিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে একটি কটু মন্তব্য করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বোথামের ব্যক্তিগত অভিমত ছিল, কোয়ার্টার ফাইনালের দৌড়ে ক্যারিবীয়দের থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। সিঁধু বোথামের কথা উড়িয়ে দিয়ে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্কে পাখি ও তেলাপোকা উভয়েরই আকাশে ওড়ার ব্যাপারটি টেনে আনেন। দীপন এই একটি মন্তব্যকে উদ্ধৃত করে প্রধান নির্বাহী লরগাতের কাছে মেইল করে জানান, ‘সিঁধুর এই উপমাটি আইসিসির বর্ণবাদ বিরোধী নীতিমালার অনুচ্ছেদ-২ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সেই অনুচ্ছেদে লেখা আছে, “আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময় ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি চাই সেটা মাঠে হোক কিংবা অন্য কোনো জায়গায়, কোনো দেশ, জাতি, ধর্ম , বর্ণ ইত্যাদি সম্পর্কে যদি এমন মন্তব্য করেন, যা সংশ্লিষ্টদের অনুভূতিতে আঘাত করে, সেটাই বর্ণবাদের পর্যায়ে পড়ে এবং সেটা শাস্তিযোগ্য।
”
দীপনের মেইলের উত্তরে হারুন লরগাত লিখেছেন,‘মেইলে আপনি যে প্রসঙ্গের অবতারনা করেছেন, তা আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং আইসিসি এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ সজাগ রয়েছে। আইসিসি সবসময়ই বর্ণবাদের ব্যাপারে অনমনীয় নীতি গ্রহণ করে এসেছে। আপনার অভিযোগের ভিত্তিতে ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ব্যাপারটি সত্যিই বর্ণবাদ বিরোধী নীতিমালা লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। ’
লরগাত আরো জানান, ব্যাপারটি নিয়ে আইসিসি তাদের বাণিজ্যিক উইংয়ের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ইএসপিএন-স্টার স্পোর্টসকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করে দিয়েছে।
কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সিঁধুকে তাঁর এসব মন্তব্যের জন্য ‘একজন অপ্রকৃতিস্থ’ মানুষ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
তাঁর সেই মন্তব্য দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছে।
আইসিসির এই সতর্কবার্তায় সিঁধু যদি কিছুটা সতর্ক হন, তাহলে সবারই মঙ্গল। না হলে, ক্রিকেট খেলাটা নিছক খেলার পর্যায়ে না থেকে হিংসা আর বর্ণ বিদ্বেষের পর্যায়ে চলে যাবে। যেটা কারোরই কাম্য হতে পারে না।
সবশেষে, দীপনকে অভিনন্দন।
তাঁর এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।