আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সময় এখন ঐক্যের, একই সাথে ধৈর্য্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে জয়ের পথে।

"জেগে উঠুক তারুন্য,জেগে উঠুক স্বপ্ন,জেগে উঠুক মনুষ্যত্ব.........." কর্পোরেট জগতের সাথে জড়িত সবাই হয়ত 'পাব্লিক রিলেশন' টার্মটার সাথে পরিচিত। আমাদের দেশে এই টার্মটার প্রচলন হয়েছে খুব বেশিদিন হয় নি। তবে প্রচলন হবার সাথে সাথেই স্বার্থান্বেষীরা ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে পুরোদমে। উইকি'র সংজ্ঞা অনুযায়ী - "Public relations (PR) is a the practice of managing the flow of information between an individual or an organization and the public relations may include an organization or individual gaining exposure to their audiences using topics of public interest and news items that do not require direct payment. The aim of public relations by a company often is to persuade the public, investors, partners, employees, and other stakeholders to maintain a certain point of view about it, its leadership, products, or of political decisions. Common activities include speaking at conferences, winning industry awards, working with the press, and employee communication." বেশ কিছুদিন আগে ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়া, অনন্ত জলিল নিয়ে যে 'ম্যাসিভ' ক্রেইজ তৈরি হয়েছিল তা মূলত বনানীস্থ একটি পিআর এজেন্সীর আলাদা দুটি প্রজেক্টের ফসল ছিল। পি আর এজেন্সী কি পারে আর না পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরন ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়া এবং এ ধরনের ইস্যুগুলো।

যারা ইতস্তত করছেন, শিরোনামের সাথে উপরের কথাগুলো মোটেই অপ্রাসঙ্গিক নয় । প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন শুরু হবার পর থেকে সবাই হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন যে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার জন্য 'হটকেকের' মত ইস্যু থাকার পরেও কর্মসূচিগুলো তারা ওভাবে হাইলাইট করেনি বরং জামাত-শিবির এর কর্মসূচিগুলোকে তাদের নিজস্ব মোড়কে উপস্থাপন করে প্রচার করেছে এবং এই অসামাঞ্জস্য ও অদ্ভূত আচরনের পর অনলাইন জগতের বাসিন্দারা '#' দিয়ে স্ট্যাটাস দেয়া শুরু করছেন এবং একই সাথে টুইটারে কর্মসূচিগুলোর আপডেট দিচ্ছেন - উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ। কেন আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্রজন্ম চত্ত্বরকে 'গুরুত্ব' দেয়নি এবং যারা গুরুত্ব দিয়েছিল তারা কেন 'ফলোআপ' প্রকাশ করছে না এবং কেন জামাত-শিবির এর ধ্বংসজজ্ঞকে জামাত-শিবিরের মত করে প্রকাশ করছে - এসব কিছুর উত্তর একটিই । জামাত-শিবির-রাজাকার গোষ্ঠী তাদের অস্তিত্ত্ব বাঁচাতে কোটি কোটি ডলার খরচ করে পিআর করেছে এবং মানবতা বিরোধী বিচার শুরু হবার পর থেকেই তারা এটি করে আসছে। তাদের পিআর স্ট্র্যাটেজি বুঝতে হলে আরো কিছু সহজ সমীকরন বুঝতে হবে।

তবে সমীকরন যত সহজই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক ‘মিডিয়া হাউজ’ এবং ‘পিআর’ এজেন্সীগুলোর হিসেব নিকেশ খুব জটিল। মানবতা বিরোধী আন্দোলন যখন শুরু হয়েছিল তখনই জামাত-শিবির বুঝতে পেরেছিল যে দেশের মাটিতে নিজরা ১০ টা টিভি চ্যানেল কিংবা প্রিন্ট মিডিয়া খুলেও এই দেশের মানুষকে অতটা সহজে বোকা বানানো যাবে না। কিন্তু তারপরেও সে চেস্টাও বাদ দেয় নি তারা পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মিডিয়া কে হাত করার জন্য চেস্টা করে গেছে তারা এবং তারই ফলস্বরূপ প্রজন্মের চত্ত্বরের আন্দোলনের খবরগুলো লাইমলাইটে আসেনি এবং একই সাথে তাদের খবরগুলো তাদের মত করে প্রচার হয়েছে। এর আগে আন্তর্জাতিক পিআর এজেন্সীগুলো আন্তর্জাতিক অনেক ইস্যুতেই ঝামেলা পাকিয়েছে এবং সেসব ঘটনা ফাঁস ও হয়েছে যথানিয়মেই। একটু গুগল করলেই প্রমান পাওয়া যাবে এ সম্পর্কে।

তবে আন্তর্জাতিক মিডিয়া হাউজ এবং পিআর এজেন্সীকে হাত করতে পারার আরো একটি কারন ছিল – পশ্চিমা বিশ্ব কখনোই চায় না উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, মারামারি – হানাহানি, কুসংস্কার এগুলো হারিয়ে যাক। কারন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দমিয়ে রাখতে হলে তাহলে আর তাদের অন্য কোন ব্যবস্থা নিতে হবে না, যুগের পর যুগ তারা পরাভূত থেকেই যাবে। সে হিসেবে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ‘প্রজন্ম চত্বরের’ আবেদন কখনোই পৌঁছুবে না। আবার একই সাথে আন্তর্জাতিক মিডিয়া যেহেতু সবসময় ‘প্রগতিশীল’ আচরনে অভ্যস্ত তাই, পি আর এর এফেক্ট খুব বেশিদিন যে স্থায়ী হবে না তার প্রমান ইতিমধ্যে সিএনএন দিয়ে দিয়েছে আজকে। টাকার হিসেবে বা পি আর করার জন্য দেশীয় কোন এজেন্সী জড়িত থাকতে পারে – এই তাত্ত্বিক উপাত্ত বিশ্লেষণে সময় নষ্ট করার দায়িত্বটি সরকারের কাছে পেশ করলাম।

এখানে উল্লেখ্য যে ‘গনহত্যা’ টার্মটা বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামের বিএনপি শাখা বারবার ইউজ করছে এই একটাই কারনে। বারবার এই শব্দটা তাদের প্রেস রিলিজে উল্লেখ করার অন্যতম প্রধান কারন হল মিডিয়াতে ‘গনহত্যার’ বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করা এবং তারা মোটামুটি সরাসরিই ৭১ এর গনহত্যার সাথে সাম্প্রতিককালের জামাত-শিবির-রাজাকার এর হত্যাজজ্ঞের তুলনা করছে । তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে বলাটাই বাহুল্য। তবে প্রসংগত উল্লেখ করতেই হয়, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জামাত-শিবির এমন কোন কাজ নেই যেটি করবে না। ইতিমিধ্যে তার প্রমান দেয়া শুরু হয়েছে এবং যারা ভাবছেন এটিই তাদের চূড়ান্ত রূপ তাহলে বলতেই হবে লক্ষ কোটি টাকার শক্তির এক ভাগও বুঝতে পারেন নি আপনারা।

তাদের লক্ষ্য একটাই এই মুহুর্তে ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ সৃষ্টি করে ১/১১ এর আবহের মাঝে সেনা অভ্যুত্থান। ফলাফল টা জামাত-শিবিরের চিরস্থায়ী পাকাপোক্ত বন্দোবস্ত। সব মিলিয়ে আমরা সবাই একটা ক্রান্তিকালীন সময় পার করছি। একমাত্র আমাদের ‘ঐক্য’ই এই সংকট মোকাবিলা করার শক্তি দিতে পারে । কয়েকটি বিষয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে আজীবন এবং সুসংহত করতে হবে আমাদের দৃঢ়তার স্থানটিকে ।

১। ’৭১ এর চেতনাঃ ‘প্রজন্ম চত্ত্বর’ এর আন্দোলনকে অনেকেই নানাভাবে বলার চেস্টা করছে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ এবং তার সাথে মিল রেখে বিরোধী শক্তি ‘গনহত্যা’ এবং এ জাতীয় শব্দগুলো উচ্চারন করছে। কোনভাবেই ভাবা ঠিক হবে না দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাঠে আছি আমরা, এটা ২০১৩ এর আন্দোলন এবং ৭১ এর চেতনাকে সমুন্নত রাখার আন্দোলন। কোনভাবেই ৭১ এর সুমহান চেতনাকে লঘু করা যাবে না। আমাদের অন্তরের বিশ্বাস আর মূল্যবোধ যত দৃঢ় হবে জারজগুলোকে ততটাই সহজেই পরাজিত করা যাবে।

২। উদ্দেশ্যঃ অবেচেতন মনেও ভুলে গেলে চলবে না যে আমাদের দাবি হল ‘ সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি এবং জামাত-শিবির-‘রাজাকার’ এর নিষিদ্ধকরন’ । জামাত-ইসলাম কে নিষিদ্ধ করার পরে তারা যদি অন্য নামে রাজনীতি করার সুযোগ না পায় এমনকি ব্যক্তি হিসেবেও কেউ যেন এদেশের মাটিতে আর কোন রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে সেদিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে । আমাদের দাবিটি যতদিন সুসংহত থাকবে ততদিন কোন শক্তিই আমাদেরকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। ৩।

সুশীলদের চিনতে ভুল করছি না তো ? অনলাইনে আমাদের মাঝেই লুকিয়ে আছে শত্রু। তথাকথিত কিছু সেলিব্রেটি সুশীল সেজে আমাদের মাঝেই অবিশ্বাসের চিঁড় ধরানোর কাজে ব্যস্ত আছে। সালমান খানের চেয়েও নিজেকে পপুলার ভাবা এক ফেবু সেলিব্রেটির ফেসবুক গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত টানা পড়েও যখন একটা লাইনও পেলাম না ‘ গোলাম আযম, সাঈদী, কাদের মোল্লা, সাকা – ফাঁসি চাই’ বরং যখন নিচের লাইনগুলো পাই, তখন ফেসবুকের সুশীল সেলিব্রেটিদের নিয়ে ভীত হতেই হয় – //যে দেশে... এক যুদ্ধাপরাধির মৃত্যু রায়ের প্রতিবাদে হরতাল হয়, সে দেশে ত্রিশ লক্ষ শহীদের জন্য কম করে হলেও তো ত্রিশ লক্ষ বার হরতাল হওয়া উচিত ছিল// – কাদের মোল্লার রায় হয়েছিল যাবজ্জীবনের, ভুল সংবাদ দিয়ে তাতক্ষনিক বিভ্রান্তি... //আগামীকালকের জামাতের হরতালে আমার পূর্ণ সমর্থন আছে... "কারন... কারন, আমিও এই রায় মানি না" * * // তাইতো জিহ্বা বের করে তামাশা করার মতই তো একটা ফেসবুকীয় সাবজেক্ট // ......... আমাদের ঢাকার শাহবাগেরও একই অবস্থা, “হোনা থা তাহরীর স্কোয়ার, হো গায়া ৩২ নম্বরকা রাসেল স্কোয়ার” // - আন্দোলন শুরুর দ্বিতীয় দিনেই বিতর্কিত করার সে কি তীব্র চেস্টা এবং স্ট্যাটাসে যথেষ্ট পরিমানে সুশীলতার মিক্সচার ছিল // রাজাকার মানে কি? আজকের দিনের জন্য ধরি... “রাজাকার মানে, দুষ্টু” এখন এ রকম দুষ্টুরা, জামাতে যেমন আছে, আওয়ামী লীগেও তেমনই আছে... আছে বিএনপি তেও "এরকম সকলল রাজাকারদের বিরুদ্ধে শ্লোগান আসুক আজকের প্রজন্ম চত্বরের মহাসমাবেশ থেকে "প্রজন্ম চত্বরের আজ মহাসমাবেশের ডাক হউক... না জামাতের দাড়িপাল্লার মত অন্ধ... না হউক আওয়ামী লীগের নৌকার মত দোদুল্যমান... না হউক ধানের শীষের মত নুইয়ে থাকা জয় জনতা// - এই কথাগুলো বা এই ধরনের কথাগুলো আমরা কাদের মুখ থেকে শুনতে অভ্যস্ত? //...... এরকম প্রচুরর কনফিউজিং “কা দের কি ??” ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে... সময় এসেছে এদের চিহ্নিত করার। সময় এসেছে বের করার, এরা আসলে 'কা দের নেতা?' ... 'কা দের আমলা?'... 'কা দের রাজনীতিবিদ?' ... 'কা দের প্রতিনিধি?' ... 'কা দের সেবক?' উত্তরটা যদি......"জনগনের" না হয়ে থাকলে... তাহলে... তাহলে, এদের চিহ্নিত করার সময় এসে গেছে// - বিভ্রান্তি ছড়ানোর উপায় ছাড়া আর কি বলব? - ইঙ্গিতপূর্ন ডাইভার্সন। // ... 'সব মোল্লাই, কাদের না' ... এবং ... 'সব কাদেরই, মোল্লা না'// -ধীরে ধীরে জামাতীরা যা চাচ্ছিল ঠিক সেরকমটা করেই বিভ্রান্তি মিশিয়ে দেয়ার নিয়মিত অপচেস্টা বলাটাই কি শ্রেয় নয়? // ... দুদিন আগেও হোম পেইজের দিকে তাকালে কেমন জানি বিপ্লবী হাওয়া চোখে পড়তো... কিন্তু আজ/কাল চোখে পড়ছে কিছুটা কটাক্ষ ভাব আমি আশা করছি, "শাহবাগ আন্দোলনের হোতারা এই বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দিবে" ভুলে গেলে চলবে না, এ রকম পোস্ট যারা দিচ্ছে তারাও যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চায়... আমি ও চাই... আপনারাও চান তাহলে...সমন্বয় হচ্ছে না কেনো সবার এই কমন চাওয়ার মাঝে?? আগামীকালকের মহাসমাবেশ থেকে, এরকমই একটা সুস্পষ্ট গাইডলাইন আশা করছি // - একটু একটু করে প্রশ্ন মিশিয়ে দেয়া, একটু একটু করে আশাহত করা ... // ... *সাইদির রায় থেকে আমি এই মুহূর্তে বেশী চিন্তিত এই বান্দা কে নিয়ে! এরে ফেসবুক চালানো কে শিখাইসে? শিওর কোনও বিদেশী শক্তির হাত আছে এর পিছনে // - চরম উত্তেজনাকর সময়ে মব সাইকোলজি নিয়ে খেলা করা ,নিজের ফ্যান ফলোয়ারদের নিয়ে জলকেলি করা, এরাই তো সেলিব্রেটি ... এবং এরকম আরো শত ফেবু সেলিব্রেটি ঘাপটি মেরে বসে আছে আমাদের মাঝে যারা শুরু থেকেই সন্দেহ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে গেছেন যে এই আন্দোলন সফল হবে না।

এখন আন্দোলনের ধার বুঝতে পেরে সুশীলতার মোড়কে নিজের ব্র্যান্ডিং এ নেমে পড়েছে... এদের নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে এখনই, হতেই হবে। ৪. অনলাইনে একতাবদ্ধ হইঃ ফেসবুকের একটা পেইজ ইচ্ছামত যা খুশি করে যাচ্ছে আর কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রমোশন করেই যাচ্ছে এবং এর ভয়াবহতার আঁচ আমরা এখনো বুঝতে পারছি না। অথচ এ মুহুর্তে আমরা সবাই একতাবদ্ধ হলে ফেসবুকের এই প্রমোশনাল ক্রেইজটাকে আমরা সহজেই নস্যাৎ করে দিতে পারি। এই মুহুর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এই ‘ঐক্য’ । জামাত-শিবির এর মত থার্ড ক্লাস পোলাপানগুলো যদি একত্রিত হয়ে ‘চাঁদের মধ্যে সাঈদীর ছবি’র গুজব মানুষকে বিশ্বাস করাতে পারে তাহলে আমরা কেন ১৬ কোটি মানুষকে জামাত-শিবিরের নিষিদ্ধকরনের প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে পারব না।

আবার একই সাথে , অনলাইনে একতাবদ্ধ হওয়া খুব সহজ না, কারন এটি একটি বিশাল উন্মুক্ত প্ল্যাটফরম। এখানে সবাই স্বতন্ত্র, কেউ কারো ইচ্ছাধীন নয়। কিন্তু আমরা সবাই বিশেষ করে দীর্ঘদিন যাবত আমরা যারা অনলাইনে জামাত-শিবির-রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেছি তাদের মাঝে ঐক্য খুব বেশি প্রয়োজন। অল্প কয়েকটি বিষয়ে আমরা একতাবদ্ধ হতে পারলে বাকি বিষয়গুলোও একতাবদ্ধ হয়েই মোকাবিলা করা হয়ে যাবে। - ফেসবুক পেইজ প্রজন্ম চত্ত্বর নিয়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে এমন সব ফেইসবুক পেইজের এডমিনরা মিলে সবগুলো পেইজকে একই সাথে পরিচালনা করলে এবং সবাই একই ভাষায় একই বিশয়বস্তু নিয়ে একই সাথে পোস্ট করলে হয়ত খুব দ্রুত ফলাফল পাওয়া যেত এবং আমাদের একতার একটা নিদর্শনে ছাগুরা ভীত হয়ে পড়ত।

- একই স্ট্যাটাস শেয়ার করা ফেসবুকে যারা প্রমিনেন্ট ফিগার এবং যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চর্চা করে এসেছেন এতদিন তারা সবাই যদি একসাথে একতাবদ্ধ আচরন করেন তাহলে হয়ত এই শক্তির চেতনা এবং দৃঢ়তা সাধারন ফেসবুকারদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ত। এখানে বলে রাখা ভাল, টুইটারে ঝড় তুলে এবং হ্যাশ দিয়ে স্ট্যাটাস লিঙ্ক করে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেস্টা বাদ দিয়ে বরং ফেসবুকে এক্টিভ হলেই দেশের মানুষগুলোকে আগে অন্ধকার থেকে বের করে আনা যাবে। ফেসবুকের পেইজ এবং অনেক ফলোয়ার এর প্রোফাইলগুলোর মালিকগন যদি একটু কষ্ট করে স্ট্যাটাসের সাথে একটা ইংরেজি ভার্সন স্ট্যাটাসের নিচে সেঁটে দেন এবং একই সাথে পেইজের পোস্ট যাতে সার্চ ইঞ্জিন খুঁজে পায় সে অপশন অন করে পোস্ট দেন তাহলে ব্যাপারটা অনেক শক্তিশালী হবে। - কভার পিক / প্রোফাইল পিক যেহেতু একটা বিশেষ অবস্থা, উৎকণ্ঠা এবং স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষার একটা যুদ্ধকালীন বিশেষ সময় পার করছি আমরা এবং এই বিশেষ সময়ে দলগত আচরন প্রকাশার্থে আমরা একটা কমন প্রোফাইল পিকচার এবং কভার ফটো কি ব্যবহার করতে পারি না? অনেকেই বিক্ষিপ্তভাবে এই চেস্টাটা করে যাচ্ছেন, এই ব্যাপারে অনেকগুলো মানুষ একত্রিত হয়ে চর্চাটা শুরু করলেই সমমনা বাকি মানুষগুলোও বুঝে যাবে। - সবগুলো প্রগতিশীল ব্লগগুলোর মাঝে সমন্বয় সাধন যেহেতু ব্লগ থেকে আন্দোলন সূচিত হয়েছিল তাই এই ব্লগগুলোর বর্তমান নিশ্চুপ অবস্থা বেশ দুঃখজনক।

সামুতে ছাগুরা যে মাত্রায় এক্টিভ সে মাত্রায় সাধারন ব্লগাররা এক্টিভ না, মডারেশন প্যানেল নিয়েও অনেক প্রশ্ন থেকেই যায়। এ সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে সবগুলো প্রগতিশীল ব্লগ কর্তৃপক্ষ কি সাইটের মাঝে কমন কোন গ্রাফিক্যাল কন্টেন্ট ইউজ করতে পারেন না? ব্লগ কর্তৃপক্ষ এর মাঝে একটা সমন্বয় সাধন খুব প্রয়োজন । ছাগুরা যেন অন্তত আমাদের তৈরি করা ক্ষেত্রে একটিও মিথ্যে কথা ছড়াতে না পারে এবং এই সমন্বিত পরিস্থিতি থাকলে অন্তত গুজবগুলোকে ঠেকানো যাবে। - অনলাইন মিডিয়াগুলোর সাথে সমন্বয় অনলাইনে মিডিয়াগুলোকে এক করা যদিও অনেক কঠিন বিষয় তারপরেও প্রজন্ম চত্ত্বরের কেন্দ্রীয় লোকজন একটু চেস্টা করলেও অনলাইন মিডিয়া এবং জাতীয় প্রচার মাধ্যমগুলোর মাঝে সমন্বয় সাধন করতে পারেন আর তা করা গেলে জামাতী প্রপাকান্ডার প্রচারকে ঠেকানো যাবে সহজেই এবং একই সাথে প্রজন্ম চত্ত্বরের শক্তির স্ফুলিঙ্গকে সারা দেশে একই সাথে একই প্যাটার্নে ছড়িয়ে দেয়া যাবে। এই সব কথার মানে একটাই, এখন আমরা খুব বিশেষ একটা সময় পার করছি, এই সময়টাতে সমন্বিত শক্তির খুব প্রয়োজন এবং এই সমন্বিত শক্তির মাধ্যমে সবরকম হামলা একটি কেবলমাত্র একটি উত্তরই সবদিকে ছড়িয়ে যাক।

এতে করে দেশের সাধারন মানুষগুলোর কাছে খুব দ্রুত পৌঁছানো যাবে। একেক জন একেকভাবে বুদ্ধিজীবী হবার চেস্টায় মত্ত থাকলে আন্দোলনটা আর নিজস্ব রূপ পাবে না বরঙ সেটা দুর্গম পথ তৈরি করেই যাবে। আর একই সাথে শুধু অনলাইনে ঐক্য গড়ে তুললে হবে না, মাঠেও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রজন্ম চত্ত্বরে আমাদেরকে দল বেধে উপস্থিত হতে হবে। এবং দেশের কয়েকটি শ্রেনীর কাছে আমাদের পৌঁছাতে হবে ।

শ্রেনীবিভাগটা এরকম – - ফেসবুকের তরুন প্রজন্ম – দুঃখজনক হলেও সত্য যে এখনো পোলাপান বিভ্রান্ত এবং প্রজন্ম চত্ত্বর নিয়ে ছাগুরা যা বুঝাচ্ছে তাতেই তারা মোটিভেটেড হয়ে যাচ্ছে। এদের কাছে আমাদেরকে পৌঁছাতে হবে। - সাদামনের কিছু মানুষের সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ততা – আন্দোলনে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার কিঙবা আনিসুজ্জামান স্যারের কিংবা জাফর ইকবাল স্যারের মত মানুষদের সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ততা আন্দোলনকে আরো অনেক বেশি দৃঢ় করবে এবং একই সাথে তরুনের আন্দোলনে প্রবীনের অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে জয় আরো তরান্বিতই হবে। - সাধারন মানুষ – এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ইস্যু। সাধারন মানুষকে যেন ছাগুরা ব্যবহার না করতে পারে সেদিকে আমাদের দৃষ্টি আরো তীক্ষ্ম করতে হবে।

জামাত-শিবির যে যে ইস্যু গুলো নিয়ে সাধারন মানুষের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগায় সেই একই ইস্যুগুলোতে সাধারন মানুষের ভুল ভাঙ্গাতে হবে। প্রত্যেকে নিজের এলাকাতে নিজ নিজ উদ্যোগে চায়ের দোকানে, মসজিদে নামাযের পরে, ইমামদের কনভিন্স করে এই কাজগুলো করতে পারে এবং এখানেও দলগত আচরনের কোন বিকল্প নেই। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত প্ল্যান সেট করে মাঠে নামতে হবে এবং সেটা খুব দ্রুত। ৫/ নাস্তিকতার ইস্যু নিয়ে আলোচনারই তেমন দরকার নাই। শুধু মাত্র আসিফ, রুদ্র প্রতাপের মত ঝামেলা সৃষ্টিকারী ও বিখ্যাত হওয়ার জন্য লোভী লোকগুলোকে সরায়ে দিলেই হবে।

এই ইস্যুটা নিয়ে যত আলোচনা হবে তত বিতর্ক বাড়বে এবং ইতিমধ্যে এই ইস্যুটাকে আমরা বটবৃক্ষে পরিনত করে ফেলেছি ছাগুদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে। আরো একটা ইস্যুতে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, জামাত-শিবির-রাজাকার এর মূলোৎপাটন করতে হবে এই আন্দোলন থেকেই। যারা আজকে ইনিয়ে বিনিয়ে জাতীয়বাদী কভারে কিংবা অন্য কোনভাবে জামাত-শিবির এর পক্ষ নিয়ে কথা বলছে তাদেরকে চিহ্নিত করে রাখতে হবে। এরাও জারজ সন্তান, এদেরকেও এই দেশের মাটিতে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং কোনভাবেই এই দেশে যেন আর জামাত-শিবিরের কোন রকম বীজ থেকে না যায়, এরাই আবার ১০ বছর বটবৃক্ষে পরিনত হবে, আমাদের দেশটার এই ক্ষত-বিক্ষত চেহারা আমাদের যেন আর দেখা না লাগে। সমমনা সংগঠনগুলোকে কাজে লাগাতে হবে - জামাত শিবির তাদের শুভাকাংখী সবগুলো সংগঠন কে ফুল ফোর্সে মাঠে নামিয়েছে এবং তাদের সদ্ব্যবহার করেই যাচ্ছে।

অথচ যে দেশটার জন্মই হয়েছে মুক্তিকামী মানুষের দ্বারা সে দেশে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে এমন সংগঠনের অভাব পড়েছে ? মোটেও না, সমমনা সংগঠনগুলোকে একই মঞ্চে এসে কাজ করার আহ্বান জানাতে হবে এবং তাদেরকে কাজের সুযোগ করে দিতে হবে। এ দেশে বহু সংগঠন রয়েছে যারা মাঠে নেমে একই ছাদের নিচে এসে দাঁড়ালে জামাত-শিবিরের কোন অংকের টাকাই আর কাজে আসবে। আমাদের দায়িত্ব হোক সেসকল সংগঠনকে আহ্ববান জানিয়ে একই মঞ্চে নিয়ে আসা এবং তাদের মাঝে সমন্বয় সাধন করা । সবশেষে একটা কথাই বলার আছে, নেটে বসে উপদেশ বানী লিখাটা হয়ত খুব আবেগের কাজ কিন্তু জানের ভয় নিয়ে আন্দোলনের মাঠে শারিরীক উপস্থিতি অনেক অনেক বেশি গর্বের এবং একই সাথে অনেক বেশি কার্যকর। আবার একই সাথে বিশ্লেষণেরও প্রয়োজন আছে।

যারা প্রজন্ম চত্ত্বরে এতগুলো দিন ব্যক্তিস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে আন্দোলনটাকে টেনে নিয়ে গেছেন তাদের সবার প্রতি লাল সালাম এবং একই সাথে যারা নিজেদের পাড়া মহল্লায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তাদেরও লাল সালাম। সময় হয়েছে মহা-ঐক্যের , সময় হয়েছে জামাত-শিবির-রাজাকারের বংশ কে নির্বংশ করার এবং সময় হয়েছে আর একবার বাংলাদেশ নামক দেশটাকে পবিত্র করার। জয় আমাদের হবেই ইনশাআল্লাহ। জয় বাংলা । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।