যা লিখি, হয়ত কিছুই লিখি না। যা লিখব হয়ত অনেককিছুই লিখব। আসল কথা হলো, গল্প ছাড়া কিছুই লিখতে পারি না
সে এক ঘোরলাগা রাতের গল্প।
বিশাল সবুজ মাঠ,মাঠের মাঝে ক্রিকেট খেলার পিচ,দু মাথায় ফুটবলের বার,চারপাশ পাহাড় দিয়ে ঘেরা। একটা রাস্তা চলে গিয়েছে পাহাড় আর মাঠের মাঝখান দিয়ে।
ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো নিভে আছে। ভূতুড়ে অন্ধকার পরিবেশ। সেই রাস্তাটি দিয়ে এক অমাবস্যার রাতে চার যুবক সিগারেট টানতে টানতে এগিয়ে যাচ্ছে মাঠের দিকে। অমাবস্যার আলোহীনতায়,সোডিয়াম বাতির গরহাজিরতার কারণে চার যুবকের একজন শুয়ে থাকা কুকুরের উপর পাড়া দিয়ে ফেলে। নিরীহ প্রাণীটি কুঁই শব্দ করে সরে যায়।
স্ব-জাতির অপমান দেখেই কোথা থেকে দু- একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে করতে এসে হাজির হয়। চার যুবককে দেখে ভয় পেয়ে দূরে সরে কুকুরগুলো।
তারা মাঠের ভেতর প্রবেশ করে।
কুকুরগুলো দূর থেকে দূরে সরে যায়।
যুবকের দল চুপচাপ গিয়ে মাঠের এককোণে বসে পড়ে।
তাদের মুখে কথার তুবড়ি ছোটে।
একজন ব্যস্ত হয়ে পড়ে গাঁজা বানাতে। মোবাইলের লাইটে তার হাতে মুদ্রিত হতে থাকে ইউফোরিক শিল্প।
চার যুবকের আর একজন ব্যাগ থেকে বের করে মরফিন।
দেরি করিস কেন?সকাল হয়ে যাবে।
বলতে বলতে মুখ থেকে গোল্ড-লিফের সিগারেট বিসর্জন দেয়। আজ এতে কাজ হবে না। আজ তাদের মাতাল হবার রাত।
তোরে আগেই বলছিলাম,রুম থেকে বানায় আনতে।
চুপচাপ বইসা থাক।
বানাইতেসি। একলগে টান দিমু।
তর সয় না তাদের। একজন মরফিন পুশ করে,তারপর আরেকজন। গাঁজা শিল্পী তার কাজ ভুলে যোগ দেয় মরফিন রাজ্যে।
তুই আইলি কেন? যা ভাগ। হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বসিয়ে দেয় ভেইনের ভেতর। অভিজ্ঞ হাত অন্ধকারেও খুঁজে নেয় রাজ্যে ঢোকার সঠিক রাস্তা।
তাদের শরীর অবশ হয়ে আসে। শরীর জুড়ে শুরু হয় অবসাদের নৃত্য।
তারা পাকা শিল্পী- একের পর এক স্টেপ নির্ভূলভাবে ফেলে যায়।
পাহাড়ের চূড়ায় একজন আবিষ্কার করে হেলিকাপ্টার। ওই দ্যাখ দ্যাখ- হেলিকাপ্টার।
শালার নেশা হইছে। হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে তারা।
এর মাঝেই একজন দেখে হোয়াইট সোয়ান।
ওই,দ্যাখ হোয়াইট সোয়ান।
মিউজিক বেজে ওঠে।
গাঁজা শিল্পী কিছুটা রেগে গিয়ে বলে- আমি তো ব্ল্যাক দেকতেসি। কাম অন সোয়ান সিডিউস আস।
হঠাৎ চাঁদের আলোতে ভেসে সবুজ মাঠ হয়ে যায় নদী। নদীর বুকে জাহাজ। মাস্তুলে দাঁড়ানো তরুণী। তরুণীর খোলা চুল। খসে পড়া শাড়ির আঁচল।
হেই,লেডি কাম হেয়ার এন্ড জয়েন আস। লেটস সেলিব্রেট। তারা সোয়ানের কথা ভুলে যায়।
একজন সাগরে ঝাঁপ দিতে গিয়ে খাবি খায়,সবুজ ঘাসে।
আরেকজন আকাশ থেকে জোছনা পেড়ে খাওয়া শুরু করে।
তারা উড়ে,তারা ভাসে।
তারা হয়ে যায় অমাবস্যা রাতের জোছনাখোড়।
গাঁজা শিল্পীর কানে ভেসে ওঠে- বাবা,বাবা।
কি রে কে ডাকে?
আমি বাবা,আমি।
তোরা শুনতে পাচ্ছিস?
কেউ শুনে না।
বাকিরা চিৎ হয়ে শুয়ে জোছনা খাওয়ায় ব্যস্ত।
আমি কে?দরদর করে ঘামতে শুরু করে শিল্পী।
যাকে তুমি মেরে ফেলবে- একদিন!
আমি?আমি কাকে মারব?
বন্ধুরা ক্ষেপে যায়। মারবি মানে?কাকে মারবি?
আমাকে মারবে।
এবার চারজন স্পষ্ট শুনতে পায়।
চারপাশে তাদের আধাঁর নেমে আসে। জোছনার হ্যালুসিনেশন কেটে যায়।
তোমরা না ডাক্তার হবে?আমি তো তোমাদের-ই সন্তান। কিভাবে বাঁচাবে আমাকে?
পরদিন এক ইউফোরিক রাতের পর চারজন যুবককে দেখা যায় শপথ নিতে- তারা কখনো বিয়ে করবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।