'কিছু মাতাল হাওয়ার দল... শুনে ঝড়ো সময়ের গান... এখানেই শুরু হোক রোজকার রূপকথা... / কিছু বিষাদ হোক পাখি... নগরীর নোনা ধরা দেয়ালে কাঁচ পোকা সারি সারি... নির্বান নির্বান ডেকে যায়...'
ক্রিকেটারদের বদলে রাজনীতিবিদরা যদি ক্রিকেট মাঠে নামতো তাহলে কেমন হতো ব্যাপারটা?
জানাচ্ছেন আলিম আল রাজি
১। গন্ডগোল শুরু হয়ে যেতো খেলা শুরুর আগে থেকেই। কি হবে টুর্নামেন্টের
নাম? কার নামে হবে নাম? এ নিয়ে দুই দলের মধ্যে বিরাট কেচাল লেগে যেতো। এক
দল বলতো এই নামে হতে হবে টুর্নামেন্টের নাম, আরেকদল বলতো অন্য নামে।
২।
টসের মধ্যে শুরু হতো আরেক ঝামেলা। যে দল টসে হারতো তারা শুরু করতো
হাউ কাউ। “টসে কারচুপি হয়েছে” “কয়েনের দুই দিকেই এক জিনিষ ছিলো” “এই টস মানি না” "এই টস বাতিল করে আবার টস করতে হবে" টাইপের চিল্লাচিল্লি করে
মাঠ মাতিয়ে ফেলতো পরাজয়ী দল।
৩। অন্য দিকে বিজয়ী দল বুক ফুলিয়ে বলতো “ভাগ্য ওদেরকে প্রত্যাখ্যান
করেছে”।
“ভাগ্য আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে”। তারা দর্শকদের ক্রিকেটের
জোয়ারে ভাসিয়ে নেয়া যাবে।
পরাজিত দলকে পরাজয় ভুলে ভালো খেলায় যুক্ত হতে আহ্বান জানাতো বিজয়ী দল।
৪। খেলা মাঠে গড়ানোর ঠিক আগে আগে এক দল গো ধরে বসতো এই আম্পায়ার তারা মানে না।
এই আম্পায়ার হলেন “তাবেদার”। এই আম্পায়ার হলেন “দালাল”। তারা এই দালাল
তাবেদার আম্পায়ারের পদত্যাগ চায়। না হলে তারা খেলবে না।
অন্য দিকে অন্য দল বলবে খেলা এই আম্পায়ারের অধীনেই হতে হবে।
ফলে দুই দলের
মধ্যে আবার শুরু হতো ঝগড়া।
৫। ঝগড়া থামাতে হস্তক্ষেপ করতো ICC. দুই দলের মধ্যে একটা “সংলাপ”-ও হয়ে যেতে পারে।
অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে দুই দলকে মাঠে নামানো হতো।
৬।
খেলা শুরুর পরে আবার ঝামেলা। ব্যাটসম্যানরা চার মারলে বোলাররা গো ধরতো
তারা এ চার মানে না। এই চার হলো ক্রিকেটিও সংবিধান বহির্ভূত চার। কারণ
সংবিধানের ৩৩ পৃষ্ঠার ৬ নম্বর লাইনে লেখা আছে ব্যাটসম্যান চার মারার সময়
কাশি দিলে সেই চার অবৈধ।
৭।
অন্য দিকে ব্যাটসম্যানরা সিঙ্গেল নিয়ে বলতো ছক্কা মেরেছে। আউট হয়ে
বলতো আউট হয়নি।
প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করে হলেও তারা সিঙ্গেল-কে ছক্কা বানানোর ও আউটকে
নট-আউট বানানোর প্ল্যান করতো।
৮। ব্যাটসম্যানদের এই আচরনে ক্ষুব্ধ হয়ে বোলাররা মাঠে মানব বন্ধন ও হরতাল
শুরু করতো।
'রানের চাকা চলবে না', 'ক্রিকেট বল ঘুরবে না'- এই স্লোগানে
মাঠ মুখরিত করে ফেলতো তারা।
৯। বোলারদের মানব বন্ধনে ব্যাট হাতে তেড়ে আসতো ব্যাটস্যানরা। “মৃদু ব্যাট
চার্য” করে ছত্রভঙ্গ করে দিতো বোলারদেরকে।
১০।
এক পর্যায়ে বোলার-রা বলতো তাদের হরতাল ও মানব বন্ধন সম্পুর্ন সফল
হয়েছে। দর্শকরা বোলারদের সাথে থেকে ব্যাটস্যানদের প্রতি তাদের অনাস্থা
প্রকাশ করেছে।
অন্য দিকে ব্যাটসম্যানরা বলতো দর্শক বোলারদের কর্মসূচি প্রত্যাখান করেছে।
১১। জটিলতা চুড়ান্ত রুপ ধারণ করতো খেলার শেষের দিকে যখন জয় পরাজয়
নির্ধারণ হতো তখন।
যারা পরাজিত হতে যাচ্ছে তারা অন্য দলের বিরুদ্ধে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে বসতো।
আর জয়ী হতে যাওয়া দলও পালটা কর্মসূচি দিতো। দুই দলের কর্মসূচির মাঝখানে
পড়ে বারোটা বেজে যেতো দর্শকদের।
১২। খেলার সর্বশেষ রেজাল্ট হতো ইয়া মোটা একটা গোল্লা; মতান্তরে ঘোড়ার আন্ডা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।