আমি বিদ্রোহী
রিবেল মনোয়ার
শেয়ারবাজারে অস্থিরতা চলছে প্রায় দু’মাস ধরে। এ অস্থিরতা প্রশমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। ফলে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী তাদের পুঁজি হারিয়েছেন অতি দ্রুত।
সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবাহান দেশে পুঁজিবাজারকে তুলনা করেছেন ক্যাসিনোর সঙ্গে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন এটি প্রতীকী বক্তব্য।
বাস্তবে শেয়ার বাজার সত্যি সত্যি জুয়া খেলার বোর্ডে রূপান্তরিত হয়েছে গত ক’মাসে। পেশাদার জুয়াড়িরা এ বাজারকে নিয়ে খেলছেন আর সর্বস্বান্ত হচ্ছে হাজার হাজার অপেশাদার খেলোয়াড়।
পুঁজি বাজারকে নিয়ন্ত্রণে রাখার দায় সরকারের। কিন্তু সরকার বার বার সিদ্ধান্ত বদলে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে লক্ষ লক্ষ বিনোয়াগকারীকে।
বিনিয়োগকারী কারা।
শেয়ারবাজার বোঝে এরকম পেশাদার বিনিয়োগকারী ছাড়াও সাধারণ মানুষও এখন লাভের আশায় লগ্নী করছে শেয়ারবাজারে। আগে সঞ্চয়পত্র কিনত যারা, তারা সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্র না কিনে শেয়ারবাজারে টাকা খাটাচ্ছে। এদের মধ্যে আছে অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবীর দল, আছে তরুণ, আছে গৃহবধূ। এদের অধিকাংশই শেয়ারবাজার বোঝে না। সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিটের সুদ কমিয়ে দিয়ে সরকারই এদেরকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করেছে।
গত বছরের অর্ধেকের কম সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে চলতি বছরে। এ টাকার সবটাই যোগ হয়েছে শেয়ার মার্কেটে। হঠাৎ লাভের আশায় শেয়ার মার্কেট না বোঝা মানুষগুলি বিনিয়োগ করেছে, শেয়ার মার্কেটে। বাজার তখন দ্রুত ছুটছে। সূচক ক্রমেই বাড়ছে।
ষাঁড়ের মতো ছুটন্ত এই বাজার প্রায় প্রতিদিন লাভ এনে দিচ্ছে নতুন বিনিয়োগকারীদের। বাজার বিশ্লেষণের ক্ষমতা না থাকায় শুধু লাভের পিছে ছুটছে বিনিয়োগকারীরা। অনেকে জমি জমা বিক্রি করেও লগ্নী করছে শেয়ার বাজারে।
স্বাভাবিক নিয়মে এক সময় পতন ঘটল শেয়ারবাজারের। যাদের কারসাজীতে বাজার বাড়ছিল তারা নিজেদের কমদামী শেয়ার বিক্রি করে ততদিনে ঝাড়া হাত পা।
নতুন বিনিয়োগকারীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের মূলধন অর্ধেক হয়ে গেল। তারপরও বাজার পড়ছে, সূচক নামছে। পুঁজি হারাচ্ছে মানুষ। বিক্ষোভ, ভাঙচুর, আগুন, লাঠিচার্জ সব মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর অবস্থা।
সরকার প্রধান বলছেন দায়ী বিএনপির কিছু লোক।
যার খোঁজখবর রাখেন, বলছেন, দায়ী কিছু ব্যবসায়ী যারা দু’দলের। নানাভাবে বাজার সামলানোর চেষ্টা করছে সরকার। কোনো লাভ হচ্ছে না। শেয়ার মার্কেটে দরপতন অব্যাহত আছে।
গত তিন মাসেরও কম সময়ে সূচক কমেছে তিন হাজার ৩৩০ পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমার এ হার প্রায় ৪০ শতাংশের মতো। আর এতে বাজার মূলধন কমেছে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এ মূলধন হারিয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এভাবে শেয়ার বাজার কতদিন চলবে সেটাই জিজ্ঞাসা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।