ফাল্পুনী সাহা এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে রাজধানীর ট্রাস্ট কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। এসএসসি পরীক্ষাতেও একই বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন ফাল্গুনী। মেধাবী এ পরীক্ষর্থী অন্য পরীক্ষার্থীদের চেয়ে ব্যতিক্রমী। কারণ ছোট বেলায় বৈদ্যুতায়িত হয়ে তার দুই হাত পুরোপুরি ঝলসে যায়। চিকিৎসকরা উপায় না থাকায় সে সময় কনুই পর্যন্ত তার দুই হাত কেটে ফেলেন।
হয়ত সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত ফাল্গুনীর পড়ালেখার স্বপ্ন। কিন্তু অদম্য মেধাবী ফাল্গুনীকে কিছুই থামিয়ে রাখতে পারেনি। জিপিএ ৫ পাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই ফাল্পুনী বেশ আনন্দিত। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে খুব ভাল লাগছে। আমার মা-বাবাও এ সাফল্য বেশ আনন্দিত।
কিন্তু এতদিন আমার অভিভাবকতুল্য ট্রাস্ট কলেজের অধ্যক্ষ বশির আহমেদ ভূইয়া পড়ালেখা ও হোস্টেলে থাকার খরচসহ যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করেছেন। কিন্তু আমার ইচ্ছা স্বপ্নের বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। এখান থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার। কিন্তু তীব্র প্রতিযোগিতার কারনে সেখানে ভর্তির সুযোগ নিয়ে বর্তমানে খুব আতঙ্কিত তিনি। আর ফাল্গুনীর অস্বচ্ছল ও মুদি দোকানি বাবার পক্ষেও মেয়ের ব্যয়ভার বহন করা কষ্টকর।
এখন হৃদয়বান ব্যক্তিরা যদি আর্থিকভাবে মেয়েটির লেখাপড়াসহ অন্য খরচ বহনে এগিয়ে না আসে তাহলে এত ভাল ফল করেও ফাল্গুনী তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন না। ফাল্গুনী জানান, তিনি দৈনিক ১০ ঘন্টা পড়ালেখা করতেন। অবসরে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প ও গান গেয়ে সময় কাটাতেন। ভাল ফলাফলের জন্য তিনি স্কুলের শিক্ষকদের বাইরে আলাদা কোন টিউশনি নেননি। বর্তমানে ফাল্গুনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য কোচিং করছেন।
এর আগে গত ১১জুন বাংলাদেশ প্রতিদিনে 'ফাল্গুনী কি ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবেন?' শীর্ষক প্রতিবেদন হওয়ার পর সে সময় ফাল্গুনীর ব্যাপারে অনেক পাঠক খোজখবর নেন। যে সকল পাঠক দুর্ঘটনায় দুই হাত হারানো মেধাবী শিক্ষার্থী ফাল্গুনীকে তার উচ্চ শিক্ষার জন্য সাহায্য করতে চান তাদের জন্য ফাল্গুনীর ব্যাংক একাউন্ট ও মোবাইল নম্বর দেয়া হল। ব্যাংক একাউন্ট- ফাল্গুনী সাহা, প্রতিবন্ধী ৫৫, সোনালী ব্যাংক, গলাচিপা শাখা, পটুয়াখালী। মোবাইল নম্বরঃ ০১৭৫৫১৪২৬৬৪
জিপিএ-৪ পেলেন লিমন চান ব্যারিস্টার হতে : এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ পেয়েছেন র্যাবের গুলিতে পঙ্গু কলেজছাত্র লিমন হোসেন। তিনি এবার কাউখালি পিজিএস কারিগরি কলেজ থেকে কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেন।
নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এ সফলতায় খুশি লিমন ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে লিমন সাংবাদিকদের বলেন, অনেক বাধা পেরিয়ে আমাকে কৃতকার্য হতে হয়েছে। র্যাবের কারণে একটি পা ও আমার শিক্ষাজীবন থেকে এক বছর হারিয়ে গেছে। তবে আমি আত্দবিশ্বাস হারাইনি। লিমন জানান, তিনি একজন ব্যারিস্টার হতে চান।
এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন। গতকাল দুপুরে নকল পায়ে ভর করেই ফলাফল জানতে কলেজে যান লিমন। ওই সময় তার মা সঙ্গে ছিলেন। ফলাফল জানার পর হাস্যোজ্জ্বল লিমন শিক্ষকদের সঙ্গে বেশ কিছু সময় কাটান। এ সময় তাকে সহায়তার জন্যও শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানান লিমন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।