ঢাকা শহরের আমরা যারা নিয়মিত যাতায়াত করি তারা একটি বিজ্ঞাপন প্রায়শই লক্ষ্য করে থাকি _আপনি কি যৌন দুর্বলতায় ভুগছেন?/আমরিকা/সৌদি/বৃটেন/কুয়েত/কলিকালা---- ইত্যাদি হারবাল বা আর্য়ুরবেদিক অষধালয়ে আসেন বা ভিপিপি যোগাযোগ করুন। ২৪ঘন্টায় বা সেবনের পর থেকেই বা প্রথমদিন থেকেই ফলাফল ইত্যাদি টাইপের বিজ্ঞাপন। এই সকল বিজ্ঞাপনগুলি বাসের জানালায় বা ড্রাইভারের মাথার উপরে দেখতে পাবেন। এগুলি আপনাদের নজর এড়িয়ে যায় তাই ব্যস্ত বাসস্টপগুলোতে বাস থামলেই বোরখাপরা মহিলারা আপনাদের বাসের আসনগুলো লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন ছুরে মেরে থাকেন, যিনারা আজও লক্ষ্য করেন নাই দয়া করে আগামী দিন অবশ্যই লক্ষ্য করবেন নিশ্চয়।
যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে এই সব বিজ্ঞাপন ডিজিটালাইজেশন হয়েছে।
এখন এগুলোর প্রচার ক্যাবল টিভির মাধ্যমে সঞ্চালন করা হয়। যেখানে রাতের বেলার অতৃপ্ত বউকে স্বামী ছেড়ে বারান্দায় যেতে দেখবেন/স্ত্রীকে ভাবী বা বান্ধবী টাইপের আরেক মহিলার কাকে কানে বলতে দেখবেন, তার পরই দু'জনে কবিরাজ মহশয়ের শরনাপন্ন অতঃপর ঘৌড়ার দৌর দেখে স্বামী/স্ত্রীর পরিতৃপ্ত চেহারার প্রদর্শণ।
ব্যস্ততার মাঝে এত সব মহামতি কবিরাজদের শরনাপন্ন হতে পারছেন না অনেকে। মনে কষ্ট নিয়েন না তাদের জন্য রাস্তার ফুটপাতেই। আপনাদের সেবার্থ জোঁকের তেল/পদ্মমধু/২/৪ইঞ্চি লম্বা করার মালিশ, ৩০/৫০মিনিট পর্যন্ত দৌড়ানোর মালিশ/ বড়ী/ হালুয়া/ তাবিজ/ কবজসহ নানা পসরা সাজিয়ে রেখেছেন।
হয়তো আপনার বাসস্টপিজ এর পাশেই। এদের কাছে আপনার সমস্যার কথা পুরাপুরি না বললেও বুঝে নিবেন তারা, বলে দিবেন আপনার সমস্যার কথা সাথে অষধও দিবেন ১০০% কাজের নিশ্চয়তা সহ।
অনেকে হয়তো বিশ্বাস করেন না- জোঁকের তেল বা তরল জাতীয় অষধে! আপনি নিশ্বয় গাছ গাছড়া দিয়ে আপনার সামনে প্রস্তুত করা হালুয়াকে অবিশ্বাস করবেন না? প্রকৃতিক গাছ গাছড়া ও অন্যান্য খনিজ উপাদান সহ ৩৬ধরনের উপদান দিয়ে হালুয়া আপনার সামনেই প্রস্তুত করে দিবেন মাত্র ২০/৫০টাকায় যা খেয়ে আপনার- গ্যাসটিক/ আলছার/ পুরুষের দুর্বলাত _________________________ আল্লাহর দুনিয়ার এমন কোন রোগ নাই যে সারবে না।
উপস্থিত ভদ্রমহোদয়--- আপনারা ডিজিটাল যুগের ডিজিটাল বান্দর থুক্কু বাসিন্দা হয়ে কেন এসবে বিশ্বাস করবেন!!!! আপনাদের জন্য আছে নানা রকমের দেশী বৈদেশী অষধ বাহারী প্যাকেটে যা দেখেই আপনার নজর কারবে। বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার হল স্প্রে-- ব্যবহার করছেন তো ঘন্টা পার।
এবার নিশ্চয় চিন্তিত আপনারা ডাক্টারের কাছে গিয়ে ভিজিট দিয়ে তারপর আপনাদের অষধ কিনতে হবে। না মটেই তা নহে-- ঠিকানাগুলো লিখে নেন-- হাত বাড়ালে রাস্তার পাশেই পাবেন-- আজমপুর বাসস্ট্যান্ড, বনানী বাসস্ট্যান্ড, মহাখালী ফুটপাত, ফার্মগেট ফুটপাত, কাওরান বাজার সোনারগাঁ হোটেলের সামনে, শাহবাগ মোড়, রমনাপার্কের সামনে, প্রেসক্লাব মোড় ওহ কত্ত কত্ত জায়গা নিজেরে খেয়ে আর আপনাদের কত বলব একটু কষ্ট করে পাশের রাস্তায় খোজ করুন পেয়ে যাবেন। এর পরও যদি না পেয়ে থাকেন আমার সাথে যোগাযোগ করুন আমি বাতলিয়ে দিব।
এবার আসি আসল কথায়। ঐ সকল অষধ বিক্রির জন্য অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে থাকেন যা ভদ্র সমাজ তথা মিডিল ক্লাসও উচ্চারণ করে না অথচ আমাদের পাশেই ঐ শব্দগুলো বলে অষধ বিক্রি করছেন এবং ভদ্রসমাজের দাঁড়ানোর আনুপযোগী করে তুলছেন।
তাদের ঐ অশ্লীল বাক্যগুলো টিনেজরা শুনছে অতিউৎসাহ নিয়ে। কমলমতী স্কুল পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীরাও শুনছে ঐ শব্দগুলো। আর যেহেতু এগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের তাই অপ্রাপ্তবয়স্করাই এর দর্শনার্থী ও কাস্টমাররও বটে। আমাদের প্রশাসনের নাকের ডগায় এই সকল কর্মকান্ড চললেও তারাও যেন দর্শক। আর আমরা গা-বাচিয়ে চলি সর্বক্ষেত্রেই।
আমরা কি খনও ভেবে দেখি যে ঐ সকল হকারদের লেকচার শুনেই অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে কামনার বিজও রোপিত হয়ে থাকে যার ফলে ঘটে চলেছে সামাজিক অবক্ষয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।