আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা এতো ভোদাই কেন ?

ব্লগিং হোক আগামীর... ধর্মকথা - ১. বারডেম হাসপাতালে মাতৃসেবা করছি। সিঙ্গেল কেবিন পাওয়া গেল না। শেয়ারড কেবিনেই ভরসা। পাশের সিটের ভদ্রমহিলা যে হিন্দু ধর্মের এটা খেয়াল করি নাই। খেয়াল করার প্রয়োজনও ছিলো না।

আমাদের দেশে কেউ হাসপাতালে ভর্তি হইলে মোটামুটি চিড়িয়াখানার জন্তুতে পরিনত হয়। তবে টিকেট লাগে না, ফ্রী সবাই দেখে যায় ! এক মুরুব্বী আত্নীয় কেবিনে ঢুকেই পাশের সিটের ভদ্রমহিলার কপালে সিদুর দেখে মুখে আঁচল চাপা দিলেন। মুখ বিকৃত করে বললেন, "এহ্ হে ! হিন্দু !!" এই অন্চলে প্রাক্তন হিন্দুসমাজে ভিন্ন জাত ছোঁয়ার ব্যপারে একধরনের বিধিনিষেধ ছিল। ইসলামের আগমনের একটা কারন ছিল এই সমস্যা। বোঝা যাচ্ছে সেই সংস্কৃতি থেকে আমরা বের হতে পারি নাই।

ধর্মকথা - ২. ঈদের জামাত। সব বিদ্বেষ ভুলে যাওয়ার কথা। সেই বার হুমায়ূন আযাদ মারা গেছেন। এক মুরুব্বী আত্নীয় নামায় শেষে বললেন, "শুওরের বাচ্চা নাস্তিক ! মরছে ভালো হইছে !! তার আবার জানাযা পড়াইছে কেন?" নাস্তিকদের উচিৎ তাদের মৃত্যু পরবর্তী আচার-অনুষ্ঠানের বিষয়গুলো পরিস্কার করা। সমস্যা হচ্ছে একজন মানুষ মারা গেলে তার মৃতদেহ সৎকারের কাজ বেঁচে থাকা মানুষদেরই করতে হয়।

এর দায় দায়িত্ব বেঁচে থাকা মানুষেরই। তাকে কবর দেব না পুড়ে ফেলব না সমুদ্রে ফেলে দেব সেটা মূল না। মূল কাজ সৎকার করা। তা নাহলে গন্ধ ছড়াবে। নাস্তিক মরলে মানুষের মুখের বিষবাষ্পেই পরিবেশ ভারী হয়ে যায়।

তার সাথে যদি মৃতদেহের দুর্গন্ধ যোগ হয় তাহলে পরিবেশ নারকীয় হয়ে যাবে। ধর্মকথা - ৩. তিনবন্ধু মিলে বাসে করে কোথায় যেন যাচ্ছি। রোযার দিন। রোযা রেখে শেষ বিকেলে এমনিতেই বিরক্ত লাগছে। এর মধ্যে বাসের ড্রাইভার কর্কশ কন্ঠের ওয়াজের টেপ ছেড়ে দিলো।

ওয়াজ বললে ভুল হবে। ওয়াজের আড়ালে রাজনৈতিক কথাবার্তা। ধর্মীয় বয়ান এতো কর্কশ কন্ঠে দিতে হবে কেন? হেল্পারকে ডাক দিয়ে বললাম, বন্ধ কর ব্যটা ! পেছন থেকে এক উগ্র স্বভাবে স্মার্ট তরুন আগ্রাসীভাবে তেড়ে আসলো, "কেন ভাই? বন্ধ করবে কেন? আমার তো ভালো লাগতেছে !" তখন আমাদের বয়স কম, কাপড় চোপড়ের ঠিক নাই, তাই চেহারা দেখে বোধহয় ফাউল মনে করছে। একটু ভাব মারার চেষ্টা আর কি ! তারপরেও জবাব দিলাম, "আমাদের ভালো লাগতেছে না !" মুহুর্তের মধ্যে বাসে হট্টগোল শুরু হয়ে গেল। সবাই ওয়াজ বন্ধ করার জন্য চেচামেচি শুরু করলো।

ওয়াজ বন্ধ হলো। ঐ ছেলেকে আর কিছু বলতে শুনলাম না। এক রসিক ভদ্রলোক বলে উঠলেন, আরে ব্যটা একটা গান ছাড়। গান শুনতে তো নিষেধ করে নাই। আরেকজন বললেন, এইরকম ওয়াজ দিলি কেন? হামদ-নাত দে, নাইলে কোরান তেলওয়াত দে !! আর দশটা জটিলতার মতো ধর্মের ব্যপারেও আমরা অনেকটাই উদাসীন।

ধর্ম নিয়ে আমাদের দেশে অনেক সমস্যা। সমস্যা কোন দেশে নাই? কিন্তু আমাদের মতো এইরকম ভোদাই মনে হয় আর কোনো দেশে নাই যে ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজের বাবা-মার হত্যাকারীদের বাঁচাইতে চায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।