আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জেন গল্প ১-৩: এক কাপ চা: সুখের স্বর: কাজ নেই তো খাবার নেই।


এক কাপ চা মেইজি যুগে (১৮৬৪-১৯১২) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক নান-ইন নামে এক জাপানি জেন সাধকের কাছে জেন সম্বন্ধে জানতে আসলেন। নান-ইন অতিথিকে চা পরিবেশন করলেন। তিনি অতিথির পাত্রে চা ঢাললেন। পাত্র পূর্ণ হওয়ার পরও চা ঢালতে থাকলেন। চায়ের উপচে পড়া দেখতে দেখতে অধ্যাপক আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে বললেন, ‘এ তো একেবারে পূর্ণ হয়ে গেছে।

আর তো ধরবে না!’ নান-ইন এবার বললেন, ‘এই পাত্রটির মত আপনিও নিজ মতামত ও অনুমানে পূর্ণ। আপনি আপনার পাত্র শূন্য না করলে আপনাকে কিভাবে জেন শেখাব? সুখের স্বর বানকাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি যে মঠে থাকতেন তার পাশে বাস করা এক অন্ধ লোক একদিন বলছিলেন, ‘আমি অন্ধ হওয়ায় কারো চেহারা দেখতে পাই না। তাই মানুষের স্বর শুনে তাকে বিচার করি। সাধারণত: যখন কোন মানুষ অন্য কারো সাফল্যে অভিনন্দন জানায়, আমি সে স্বরে ঈর্ষার গোপন ছোঁয়া পাই। অন্যের দু:খে কেউ সমবেদনা জানালে, সে স্বরে আমি কিছুটা সুখ আর তৃপ্তি শুনতে পাই যেন একজনের হারানোর মাঝে অন্যজনের প্রাপ্তি ঘটেছে।

‘আমার সারাজীবনের অভিজ্ঞতা বলে বানকাইয়ের স্বর সবসময় আন-রিক ছিল। তিনি আনন্দ প্রকাশ করলে আনন্দ ছাড়া আর কোন অনুভূতি থাকত না। কারো জন্য দু:খ প্রকাশ করলে সেখানে দু:খ ছাড়া আর কোন অনুভূতির প্রকাশ ধরতে পারতাম না। ’ কাজ নেই তো খাবার নেই হিয়াকুজো চীন দেশের এক জেন গুরু। আশি বছর বয়সেও তিনি ছাত্রদের সঙ্গে শারীরিক শ্রমের কাজ করতেন।

বাগান ঝাঁট দিতেন। ডালপালা কাটতেন কিংবা প্রুনিং করতেন। ছাত্ররা বুড়ো শিক্ষকের কঠোর পরিশ্রম দেখে কষ্ট পেতো। তবে তারা জানতো তাঁকে বলে কিছু হবে না। তাই তারা একদিন বাগানের কাজের যন্ত্রপাতিগুলো লুকিয়ে ফেললো।

সেদিন শিক্ষক কিছু খেলেন না। পরদিনও খেলেন না। তার পরদিনও। ছাত্ররা পরামর্শ করল, ‘যন্ত্রপাতি লুকিয়ে রাখায় উনি হয়ত রাগ করেছেন। আমরা ওগুলো আগের জায়গায় রেখে দিই।

’ ছাত্ররা যেদিন ওগুলো আগের জায়গায় রেখে দিল, শিক্ষক সেদিন কাজ করলেন। আবার আগের মতই খেলেন। সেদিন সন্ধ্যায় তিনি ছাত্রদের উপদেশ দিলেন, ‘কাজ নেই তো খাবার নেই। ’ সবক’টি পর্বের লিংক: আর কোন জেন গল্প নয়: Click This Link জেন গল্প ১০-১২: Click This Link জেন গল্প ৭-৯: Click This Link জেন গল্প ৪-৬: Click This Link জেন গল্প ১-৩: Click This Link দ্রষ্টব্য: এসব গল্পই ইন্টারনেট হতে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। অনূদিত ৯৯টির মধ্যে ১০টি গল্প দৈনিক ইত্তেফাক এর ‘সাহিত্য সাময়িকী’ ও দৈনিক সমকাল এর ‘কালের খেয়া’-তে প্রকাশিত হয়েছে।

সবশেষ কিস্তিতে ভূমিকাটি উপস্থাপনের আশা রাখছি। ধন্যবাদ।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।