আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাশটাফারি: বব মার্লে তাঁর গানে-গানে যে ধর্মটির প্রচার করেছিলেন ...

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
বব মার্লে (১৯৪৫-১৯৮১)। জ্যামাইকার এই রেগে গায়কটি কিন্তু বাংলাদেশে একেবারেই অপরিচিত নন। যিনি তাঁর গানে বলেছিলেন:You can fool some people sometimes/ But you can't fool all the people all the time. তাঁর গান ও জটপরা চুল যেমন আকর্ষনীয়- তেমনি তাঁর ধর্মবিশ্বাসটিও কিন্তু কম আকর্ষনীয় নয়।

মার্লে ‘রাশতাফারি’ ধর্মের অনুসারী ছিলেন, যে ধর্মের অনুসারীরা আফ্রিকার এক স¤্রাট কে ঈশ্বর মনে করে এবং গাঁজা সেবন বৈধ মনে করে। এদের কাছে ইউরোপ হল ব্যাবিলন, যে ব্যাবিলন খ্রিস্টপূর্ব যুগে হিব্রুভাষীদের উচ্ছেদ করেছিল, আধুনিক ইউরোপীয়রা আফ্রিকা থেকে কৃষ্ণবর্ণের মানুষদের উচ্ছেদ করে দাসে পরিনত করেছে ... আর জ্যামাইকার কৃষ্ণবর্ণের মানুষরা সেই নির্বাসিত ইহুদি গোত্র ... যারা নিরন্তর স্বভূমে ফেরার তাগিদ বোধ করে ... জ্যামাইকার মানচিত্র। দ্বীপটির অবস্থান ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জে। ১৬৫৫ সালের পূর্বে দ্বীপটি স্প্যানিশ উপনিবেশ ছিল; সে সময়টায় দ্বীপটির নাম ছিল: ‘সানতিয়াগো। ’ ১৬৫৫ সালে ব্রিটিশ সা¤্রাজ্যবাদীরা দ্বীপটি দখল করে নেয়।

বাংলায় যেমন নীলচাষ-তেমনি জ্যামাইকায় ব্রিটিশরা আখ চাষ করত। আখচাষের জন্য আফ্রিকা থেকে কৃষ্ণকায় দাস দের ধরে আনত। দীর্ঘকালীন বিক্ষোভের পর ১৯৬২ সালে জ্যামাইকার কালো মানুষেরা স্বাধীনতা অর্জন করে। জ্যামাইকার স্বাধীনতার পিছনে মারকাস গারভে নামে এক কৃষ্ণকায় জ্যামাইকান নেতার গভীর অবদান ছিল। মারকাস গারভে কুড়ি শতকের কৃষ্ণচৈতন্যের (ব্ল্যাক কনসাশনেস) অন্যতম পুরোধা, হিব্রু বাইবেলের অন্যতম ব্যাখ্যাকার।

ইনি ১৮৮৭ সালের ১৭ অগাস্ট জ্যামাইকার সেন্ট আনা’স বে-র এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। বালক বয়েসে ছাপাখানায় তাকে কাজ করতে হয়। পরে ছাপাখানার শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য আন্দোলন সংগ্রাম সংগঠিত করতে থাকে । ১৯১২ সালে যান ইংল্যান্ড। সেখানেই প্রথম পূর্বপুরুষের আবাস আফ্রিকার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্বন্ধে জেনে বিস্মিত হন।

১৯১৪ সালে জ্যামাইকা ফিরে এলেন গারভে। মারকাস গারভে (১৮৮৭-১৯৪০) ছিলেন একনিষ্ট খ্রিস্টান। ১৭৯০ সাল থেকে জ্যামাইকায় খ্রিস্টধর্মের প্রচার আরম্ভ হয়। বিশেষ করে সে সময় আখচাষীরা খৃস্টধর্মে দীক্ষিত হয়ে উঠেছিল। মারকাস গারভে জ্যামাইকার দরিদ্র মানুষদের বলতে লাগলেন, আমাদের পূর্বপুরুষ ছিল ইথিওপিয়ায় (আফ্রিকায়) ; যেমন এককালে হিব্রুবাসীরা বাস করত জেরুজালেমে।

ব্যাবিলন তাদের উচ্ছেদ করেছিল। এখন নব্যব্যাবিলনীয়রা, অর্থাৎ ইউরোপিয় শ্বেতাঙ্গরা আমাদের নির্বাসিত করেছে। আমরা পাপ করেছিলাম বলেই আমরা নির্মূল হয়েছি, এখন শাস্তি ভোগ করছি। শ্বেতাঙ্গরা আমাদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছে। (ব্যাবিলনে নির্বাসিত জীবনে হিব্রুদের ধ্যানধারণা পরিবর্তিত হয়েছিল।

) ইথিওপিয়া হল স্বর্গ আর জ্যামাইকা হল নরক। বাইবেলে আফ্রিকা বলতে ইথিওপিয়াকে বোঝানো হয়েছে। ইথিওপিয়া হল আমাদের জিওন-বা পতিশ্রুত ভূমি। আমাদের শাস্তি শেষ হলে আমরা আবার ইথিওপিয়ায় ফিরে যাব। ইথিওপিয়ার অবস্থান আফ্রিকার পূর্বে; হিব্রু বাইবেলে অর্থাৎ ওল্ড টেস্টামেন্টে আফ্রিকা বলতে ইথিওপিয়াকে বোঝানো হত ১৯১৬ সালে মারকাস গারভে আমেরিকা চলে আসেন।

‘ফিরে চল আফ্রিকা আন্দোলন জোরদার করেন। ‘নিগ্রো ওয়ার্ল্ড’ নামে একটি পত্রিকা বের করেন। তাতে লিখলেন, No one knows when the hour of Africa's Redemption cometh. It is in the wind. It is coming. One day like a storm, it will be here. When that day comes all Africa will stand together.১৯২৭ সালে আরও লিখলেন,"Look to Africa, for there a king shall be crowned." আশ্চর্য এই-১৯৩০ সালের ২ নভেম্বর রাস টাফারি মাকোননেন ইথিওপিয়ার সম্রাট নির্বাচিত হন। রাস টাফারি মাকোননেন ছিলেন অর্থোডক্স খ্রিস্টান। তিনি ‘হাইলি সেলাসি’ উপাধি গ্রহন করেন।

এর মানে :ট্রিনিটির শক্তি। এর অন্য অর্থ: ‘জুদাহর সিংহ’। হাইলি সেলাসি। একেঁ রাশটাফারিরা দেবতার পর্যায়ে উন্নীত করেছিল। মারকাস গারভে-র ভবিষৎবাণী ফলে যায়।

এর ফরে জ্যামাইকায় তাঁর অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে যায়। ইথিওপিয়ার সম্রাটের নাম (রাস টাফারি মাকোননেন) অনুযায়ী ‘রাশটাফারি’ সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে। রাশটাফারিরা ইথিওপিয়ার সম্রাট হাইলি সেলাসি কে মনে করল উদ্ধার কর্তা বা ব্ল্যাক গড। তারা এও টের পেল- ইথিওপিয়ায় ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে। এই ছবিটি অনেক কথা বলে দেয় হাইলি সেলাসি অবশ্য তাঁর ওপর আরোপিত ঈশ্বরত্ব অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, আমি ঈশ্বর নই, রক্তমাংসের মানুষ। অন্যদিকে মারকাস গারভেও হাইলি সেলাসি কে ঈশ্বর হিসেবে স্বীকার করেননি। তিনি বলেছিলেন আফ্রিকায় একজন রাজার অভিষেক হবে, বাইবেলে আফ্রিকা বলতে ইথিওপিয়াকে বোঝানো হয়েছে, সেটি বর্তমান ইথিওপিয়া নাও হতে পারে। কাজেই তিনি বর্তমান ইথিওপিয়াকে বোঝাননি। তিনি হাইলি সেলাসিকে অযোগ্য শাসক মনে করেন।

রাশটাফারিদের পতাকা এতে অবশ্য রাশটাফারিদের উৎসাহে ভাঁটা পড়েনি। ১৯৩০ থেকে জ্যামাইকায় রাশটাফারিদের ‘আফ্রিকায় চলো’ আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠতে থাকে। তাদের ভাষা বদলে যেতে থাকে, বদলে যেতে থাকে চুলের স্টাইল, শিল্প ও সংগীত। পরবর্তীকালে রেগে সংগীতের উদ্ভব ঘটে। একজন সুযোগ্য রাশতাফারি নেতারও জন্ম হয়।

এর নাম লিওনার্দ হোওয়েল। তিনি ছ’টি নীতি প্রচার করেন। (১) শ্বেতাঙ্গ জাতির প্রতি ঘৃণা পোষন করা। (২) কৃষ্ণকায় জাতির আধিপত্য প্রচার। (৩) শ্বেতাঙ্গদের অপকর্মের জন্য প্রতিশোধ।

(৪) বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্যামাইকা সরকারের প্রতি অনাস্থা। (৫) আফ্রিকায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহন। এবং (৬) ইথিওপিয়ার স¤্রাট হাইলি সেলাসি কে কৃষ্ণকায়দের একমাত্র শাসক মনে করা। ১৯৩৩ সালে লিওনার্দ হোওয়েল কে বিদেশি রাষ্ট্রের (ইথিওপিয়া) প্রতি আনুগাত্য পোষনের কারণে এ্যারেষ্ট করা হয়। এরপর রাশটাফারি আন্দোলন অব্যাহত থাকলেও আন্দোলনটি নেতা শূন্য থাকে।

বৃদ্ধ জ্যামাইকান। রাশটাফারি ধর্মীয় আন্দোলনে শোষনমুক্ত স্বাধীন স্বদেশ ভূমির স্বপ্ন দেখেছিলেন। হাইলি সেলাসি ১৯৬৬ সালের এপ্রিল মাসে জ্যামাইকা আসেন। সে সময় জ্যামাইকায় অনাবৃষ্টি চলছিল। হাইলি সেলাসি জ্যামাইকার মাটিতে পা রাখতেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়তে থাকে।

এতে ক্যারিবিয় দ্বীপজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়। বর্ব মার্লের স্ত্রী রিটা মার্লে হাইলি সেলাসি কে দেখে ঐশ্বরিক অনুভূতি টের পান ... তিনি রাশটাফারি ধর্ম গ্রহন করেন। পরের বছর, অর্থাৎ, ১৯৬৭ সালে বব মার্লে রাশটাফারি ধর্ম গ্রহন করেন। রেগে গানের মাধ্যমে রাশটাফারি দর্শন প্রচার করে। যে কারণে রাশটাফারি দর্শন বিশ্বব্যাপী প্রচার পায়।

নতুন এক ধর্মীয় সংগীয় সংস্কৃতির জন্ম হয়। বব মার্লে তাঁর গানের মাধ্যমে বিশ্বের শ্রোতাদের সামনে এক নবতর চৈতন্যের দিক নির্দেশনা উপস্থিত করলেন ... Preacher man don't tell me Heaven is under the earth I know you don't know What life is really worth It's not all that glitters is gold Half the story has never been told So now you see the light Stand up for your rights Most people think Great good will come from the skies Take away everything And make everybody feel high But if you know what life is worth You would look for yours on earth And now you've seen the light You stand up for your rights We're sick and tired of your ism-schism game To die and go to heaven in Jesus' name We know and understand Almighty God is a living man You can fool some people sometimes But you can't fool all the people all the time And now we've seen the light (What you gonna do) We gonna stand up for our rights Get up, stand up, stand up for your rights Get up, stand up, stand up for your rights Get up, stand up, stand up for your rights Get up, stand up, don't give up the fight (Get Up, Stand Up ) যাক। ১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়ায় রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে । হাইলি সেলাসি কে এক সামরিক অভ্যূত্থানের পর গৃহবন্দি করা হল। পরের বছর অভ্যূত্থানকারীরা তাকে হত্যা করে।

রাশটাফারিরা অবশ্য এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি বিশ্বাস করে না। তারা ঘটনাটিকে বলে ভেলকি বা হোক্স। তারা বিশ্বাস করে- শেষ বিচারের দিন অবধি হাইলি সেলাসি লুকিয়ে থাকবেন। কেউ কেউ মনে করে ব্যাক্তি রাশটাফারিদের মাঝেই হাইলি সেলাসি বেঁচে আছেন। সম্ভবত এই জ্যামাইকান রাশটাফিরি শিশুটির মাঝেই হাইলি সেলাসি বেঁচে আছেন।

রাশটাফারিরা তাদের ধর্মবিশ্বাসকে ঠিক ‘রিলিজিয়ন’ না বলে ‘লাইফস্টাইল’ । যদিও এটির শিকড় ইহুদি-খ্রিস্টান ধর্ম নিহিত। তখন একবার বলেছিলাম যে ১৯৩০ সালের পর জ্যামাইকার রাশটাফারিদের ভাষা বদলে যেতে থাকে, বদলে যেতে থাকে চুলের স্টাইল, শিল্প ও সংগীত। যে কারণে রাশটাফারিদের ঈশ্বরের নাম: ‘জাহ। ’ রাশটাফারিদের কাছে ওল্ড টেস্টামেন্টের গুরুত্ব বেশি।

এরা প্রেরিত পুরুষ মোজেজ ও এলিজা কে গভীর শ্রদ্ধা করে। জাহ এই পৃথিবীতে যীশু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন । উল্লেখ্য যে- এই যীশু কৃষ্ণকায়। সম্রাট হাইলি সেলাসি ও জাহ এর প্রকাশিত রূপ-যিনি রাজনৈতিক হত্যাকান্ডে নিহত হননি, বরং শেষ বিচারের দিন অবধি বেঁচে থাকবেন। হাইলি সেলাসি কে স্বর্গীয় সত্তা হিসেবে উপাসনা করা হয়।

রাশটাফারিরা পরকালে বিশ্বাস করে না বরং বিশ্বাস করে আফ্রিকা হল স্বর্গ। সত্যিকারের রাশটারা শারীরিক এবং আত্মিকভাবে অমর- এই বিশ্বাসটি ‘এভারলিভিং’ শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। ঈশ্বর এবং মানবজাতির একত্বে বিশ্বাস করে; এবং প্রতিটি মানুষের সমতায় বিশ্বাস করে। রাশটাফারিরা ব্যাবিলন বিরোধী। ‘ব্যাবিলন’ শব্দটির মাধ্যমে ইউরোপ আমেরিকাকে বোঝানো হয়।

এই ইঙ্গ-মার্কিনীরা কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার বঞ্চিত করে কালোদের দরিদ্র করে রেখেছে। ইউরোপ-আমেরিকা লোভী ও ভোগী বলেই এর প্রতিবাদসরূপ রাশটাফারিরা সহজসরল জীবনযাপন করে। একজন রাশটাফারির কাছে গাঁজার তাৎপর্য অন্য রকম রাশটাফারিদের সমাজে গাঁজা সেবন বৈধ, তবে মদ নয় । এ প্রসঙ্গে বব মার্লে বলেন: Herb is the healing of a nation, alcohol is the destruction. কাজেই মদ পরিহার করে। মদ খেলে বুদ্ধি নাশ হয়, মাতাল সহজেই শ্বেতাঙ্গ প্রভূদের ক্রীড়নকে পরিনত হয়।

গাঁজা প্রাকৃতিক, এটির সেবনের ফরে মনের দুয়ার খুলে দেয়-বিচারবুদ্ধি শানিত করে! জ্যামাইকায় প্রচুর গাঁজা উৎপন্ন হয় । রাশটাফারিরা বলে: গাঞ্জা। এটি কে পবিত্র ঔষধি বলে বিশ্বাস করে স্বয়ং ঈশ্বর দিয়েছেন। বাইবেলের ১০৪;১৪ সংখ্যক স্তুতিগানে আছে : "He causeth the grass for the cattle and herb for the service of man." গাঁজা এরা চিকিৎসায়ও ব্যবহার করে। রাশটাফারি পাতা ;ধর্মবিশ্বাস জন্ম দেয় সংস্কৃতিরও রাশটাফারিরা দুটি পরবে গাঁজা টানে।

এক. সাধারণ সম্মেলনে, যেখানে রাশটাফারিরা জড়ো হয়ে তাত্ত্বিক আলাপ আলোচনা করে, অনেকটা বাংলার বাউলের ‘সাধুসঙ্গের’ মতো। দুই. বিনঘি নাচের সময়। ধর্মীয় পার্বনে ও সাধারণ ছুটির দিনগুলিতে বিনঘি এই নাচের সময়। কয়েকদিন ধরে চলে। জ্যামাইকার নানান জায়গা থেকে রাশটাফারিরা সববেত হয়, তারা খোলা জায়গায় তাঁবু খাঁটিয়ে ক্যাম্প করে, মন্ডপ নির্মান করে মন্ডপে রাতভর বিনঘি নাচ চলে।

দিনের বেলায় কেবল বিশ্রাম। রাশটাফারি মানেই জটপরা চুল বা matted locks ...এর কারণ, বাইবেলে চুল না কাটার নির্দেশ (লেভিটটিকাস ২১:৫), তাছাড়া জটা চুল সিংহের কেশর এর মত দেখায়, সিংহ শক্তির প্রতীক। আফ্রিকা ও ইথিওপিয়ারও প্রতীক। মনে থাকার কথা, সম্রাট হাইলি সেলাসি এর উপাধি জুদাহর সিংহ । তা ছাড়া জট হল প্রকৃতির স্বাভাবিক বিকাশ, এটিও আফ্রিকার প্রতীক, রাশটার শিকড় আফ্রিকায়।

তিন রঙের রাশটাফারি টুপি। লাল রং বিজয়ের প্রতীক এবং শেতাঙ্গদের নির্যাতনের কৃষ্ণকায়দের রক্তের প্রতীক। সোনালি রঙের মানে আফ্রিকার সম্পদ এবং সবুজ হল ইথিওপিয়ার সবুজশ্যামল রূপ। ইথিওপিয়ার ফ্ল্যাগ। ওই তিনটি রঙের সমাহার।

জুদাহর সিংহ। রেগে গানের সঙ্গে মিলেমিশে গেছে। রাশটাফারিরা নিরামিষভোজী। বোতলজাত খাবার ও ক্যামিকেল/প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলে। তারা প্রাকৃতিক খাবার খায়।

কখনও কখনও কাঁচাই খায়। অপ্রাকৃতিক বলে দুধ ও কফিও এড়িয়ে চলে । বর্তমানে রাশটাফারিদের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। পৃথিবীর সবর্ত্রই এদের দেখা যায়। ইংল্যান্ড থেকে জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

পথিক নবী, বাংলাদেশি গায়ক । রাশটাফারি চুলের স্টাইল অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। বছর কয়েক আগে কবি বিনয় মজুমদার এর ওপর পথিক নবীর একটি অনবদ্য লেখা পড়েছিলাম । সম্ভবত তিনি রাশটাফারিদের সম্বন্ধে সচেতন। বাংলাদেশের আরেকজন গায়ক মাকসুদ (মাকসুদুল হক) তাঁর ‘বাউলিয়ানা: ওরশিপিং দি গ্রেট গড ইন ম্যান’ বইটি বব মার্লে এবং রাশটাফারিদের উৎসর্গ করেছেন।

এই ছবিটিই রাশটাফিরি ধর্মবিশ্বাসের পিছনে সক্রিয় আমি এই ছোট লেখাটি কুড়ি শতকের কৃষ্ণচৈতন্যের (ব্ল্যাক কনসাশনেস) অন্যতম পুরোধা মারকাস গারভে কে উৎসর্গ করছি। তথ্যসূত্র: Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।