আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'স্মৃতিকাতর সুখবিলাস' সব মেয়েই কি আপেক্ষিক ঐশ্বর্যকাতর?

ihzaka@yahoo.com হুপফূল মানসিক স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী.. কিছুটা বাদর কিছুটা নিরিহ কিসিমের! তবে, অনেক বড় স্বপ্ন দেখে এদেশটাকে নিয়ে, যেখানে একদল শিক্ষিত তরুন ঘূণে ধরা রাজনীতিকে সত্যিকারের পরিবর্তণের পথে চালিত করতে নোংরা, হিংস্র সামপ্রদায়িকতামুক্ত, প্রকৃত দেশপ্

অফুরন্ত অবসর না থাকলে আজাইরা স্মৃতিচারন পইরা সময় নষ্ট না করার জন্য অগ্রিম ধন্যবাদ~ ১৮ই জানুয়ারী, মধ্যরাত~ নরসিংদী জেলাশহরের পার্শ্ববর্তী পুরানপাড়া গ্রাম। মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা মৃতপ্রায় হাড়িধোয়া নদীর উপরে একটা ৩ পিলারের ছোট্ট রেলসেতু ! ঠিক মাঝখানটায় পথচারীদের জন্যে দেয়া আছে ছোট্ট একটা পালকি~ চারিদিকে শুনশান নিরবতা~ পুলের নীচেই দেখা যাচ্ছে একজোড়া শিয়াল, পেটের দায় মেটাতে শামুক না কি যেন খুজে যাচ্ছে আপনমনে। কিছুক্ষন পরপরই ঝকঝকাঝক ট্রেনের আচমকা হুইসেল মধ্যরাতের নির্জনতা ভেঙ্গে অদুরের স্টেশনে ঝিমুতে থাকা পথচারী / যাত্রীদের জানান দিয়ে যাচ্ছে নিজের উপস্থিতি~ রাত বাজে আনুমানিক ২টা, নীচেই বাপ বেটা জেলেকে দেখা যাচ্ছে নৌকোর গলুইয়ে হ্যাঝাক লাইটের আলো জ্বালিয়ে নির্ঘুম মাছগুলোকে খাবারের প্রলোভনের ফাদে ফেলার ব্যার্থ প্রয়াসরত~ বেটারা কি বুঝেনা ? এই প্রচন্ড শীতের রাতেও কি নির্বোধ মাছগুলো ঘুম ভেঙ্গে খাবারের প্রলোভনে ছুটে আসবে বড়শির পানে? যেমনভাবে আবেগের সারল্যতায় কিছু নির্বোধ ছেলে নিজেকে উজার করে দেয় অন্ধমোহের প্রেমোন্মত্ততায়? my thoughts were never linear... never be normal... hard to describe... well,here's an attempt.... উদভ্রান্তের মত একাকী এই গভীর রাতে বন্ধুজনেদের চোখে সদা হাস্যোজ্জল উচ্ছল প্রানে আর উদ্যমতার মুর্তপ্রতীক হুপফুল পালকিটার এক কোনায় একাকী আনমনে হেলান দিয়ে বসে আছে~ প্রিয় তাহমিনা, মনে আছে সেই সব দিন গুলোর কথা? জেলাশহর নরসিংদীতে থাকি তখন। আজ থেকে আরো বছর সাতেক আগের কথা, যখন ‘ইয়াহু মেসেঞ্জার খায় না মাথায় দেয় তার কিছুই বুঝতাম না ঠিকমত’ আমি তখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি ~ সেই সময়টাতে আমাদের বাসায়, কলেজে এমনকি রেলস্টেষনের আশে পাশে কোথাও ইন্টারনেট ছিল না, নিজ বাসা থেকে প্রায় মাইল তিনেক দুরের এক সাইবার ক্যাফেতে বসে বানিয়েছিলাম প্রথম ইয়াহু ই-মেইল আকাউন্ট। সেই আকাউন্টকে সম্বল করে তোমার সাথে চ্যাটিং জগতে হাতে খড়ি।

হাই হ্যাল্লু দিয়ে যাচ্ছিল দিনগুলো বেশ~ চ্যাটপোকাটা বাধনহারা উড়তে শিখল প্রথম চাকরিতে জয়েন করার পর ~ সারাদিনে হাতে গোনা কয়টা ডিজাইন ওয়ার্কস আর-অখন্ড অবসর। চ্যাটিং তখন নেশার মতন। আধিকাংশ সময় কাটে মনেরমত চ্যাটবন্ধুর খোঁজে। চ্যাটপোকার বন্ধুরা কলেজ ল্যাবরেটরির সীমানা ছাড়িয়ে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ-লাওস ছাড়িয়ে সুদুর অস্ট্রেলিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ততদিনে মেসেঞ্জারের আটলামি বিটলামি ভাষাও বেশ রপ্ত করে ফেলেছি অনেকটা।

কেউ ‘asl pls’ বললে আর ঘাবড়াই না-চটপট চ্যাট উইন্ডোতে ছড়িয়ে দি আমার এইজ,সেক্স,লোকেশন। কথাবার্তার মাঝখানে ‘lol’ (লটজ অব লাভ্যু) ‘bfn’ (বাই ফর নাউ) ‘cu 2mrrU’ (সি ইউ টমেটু) 'NMHNKPNK' নু মোর হাঙ্কিপাঙ্কি, 'BB' Buy bye ইত্যাদি জব্দশব্দ ব্যবহারেও বেশ পটু হয়ে গেছি। কখনও কখনও শব্দ যা পারেনা,অনেক সময় ছোট্ট ইমুটিকন তার চাইতেও অনেক বেশি কার্যকর ভুমিকা রাখে নি:সন্দেহে~ রাগ,দুঃখ,অভিমান বোঝাতে তাই yahoo hidden emoticons স্মাইলি ব্যবহারে কোডগুলো যেন রীতিমত মুখস্ত হয়ে গেল তোমার সাথে পরিচয় হবার পর আস্তে আস্তে। তুমি ছাড়াও সেইসব চ্যাটপোকাদের মাঝে এমনও অনেক বন্ধু পেয়েছিলাম-তাদের কারো কারো সঙ্গে দেখা হয় নি কখনো-কিন্তু টেলিফোনে / ইমেইলে / ওয়েব কেমে যোগাযোগ রয়ে গেছে এখনো। জীবনের বিষন্নতা ভুলিয়ে দিতে একদমই অপরিচিত এমনকি বহুদূরের ভার্চুয়াল কারো সাথে দু শব্দের হাই হ্যাল্লু আলাপনও অনেক সময় রীতিমত টনিকের কাজ করে~ কী সেই মোহের টান~ কিসের খাওয়া কিসের দাওয়া~ কিসের ইউনি? কিসের ক্লাস? কিসের জব~ মেসেঞ্জার ছাড়া কি একটা মুহুর্তও চলে? আহা~সেইসব দিনগুলোর উন্মাদনা মনে পরলে স্মৃতির জানালায় আজো এসে উকি দিয়ে যায় পরিচিত মুখগুলো বিদ্রুপের চেহারায়~ এমনিভাবে পেছনের বারান্দায় আজো হানা দিয়ে যায় কত সে স্মৃতিকথন~ হিমেল, মতিন, টাওসিফা, ছলুমেন, সামির দোছাইল, মারুফ, দাইফুর, জয়নব, রাশাত, টাহমিনা~ চারটা শব্দে এক্টা অক্ষর~ থুক্কু চারটা বর্ণে একটা শব্দ~ "টাহমিনা" হৃদয়ের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠে~ কি এমন বাধনে জড়িয়েছিলে আমায়? কিভাবে কৌশুলি সযতনে সম্পর্ক চারার গোড়ায় ঢেলে দিয়েছিলে এমন নিষ্ঠুর আবেগ ?~ মেসেঞ্জারে আচমকা পরিচয়~ একসাথে ২ বছর ধরে ক্লাস করেছি যাচ্ছিলাম একি বিভাগে একি গ্রুপে~ অথচ কেউ কাউকে বাস্তবজীবনে একদমই জানতাম না~ কি অদ্ভুত ব্যাপার~ অকপট সারল্যতাকে পুজি করে ৪ইভার ফ্রেন্ডশিপের মোড়কে চলতে থাকা বন্ধুত্বের দেয়ার ভাঙ্গতে পাইনি আমাদের কেউই বাস্তবে একে অন্যের এতটা কাছে থেকেও~ অথচ, ভার্চুয়াল্লি এক জন যেন আরেকজনের নিবিড় আত্মার আত্মীয়~ 'কিবা দিন কিবা রাত~ ভার্চুয়াল্লি হাতে রেখে হাত~ কখনও হেলতাম ডানে কখনওবা বামে কাত~' বলেছিলাম অকপটে তোর বন্ধুত্বের বাইরে আমি বেচে থেকেও বেচে নাইরে~ লুকায়িত ছিলনা কিছুই মনে ভাবনায় ছিল আজীবন নি:স্বার্থ অভবিতব্য ভার্চুয়াল ফ্রেন্ড থেকে যাবার নির্মোহ প্রকটতরো প্রত্যাশা~ কিন্তু, শব্দগাথার কল্পকথায় মলচত্তরে আড্ডারত তোরই মুখ ফসকে বলে ফেলা কি এক আচমকা উদাহরন দিতে যেয়ে তোর সাথে বাস্তবে পরিচয়~ আমার এতদিনের পরিচিত অসাধারন এই বন্ধুটিকে চোখের সামনে পেয়ে সেকি উন্মাদনা, সে কি ছেলেমানুষি পাগলামী ~তু্ই তো হেসেই খুন~ সেরাতেই জানিয়ে দিলি আমি নাকি কেমন যেন একটু অন্যরকম~ একটু ভিন্ন~ তোর চোখে আমি ছিলাম আর সব ছেলেদের থেকে একেবারেই আলাদা~ কিছুটা দুর্বোধ্য~কিছুটা গোয়ার, কিছুটা একদমই ছেলেমানুষ আবার অনেকটাই ক্ষেত ক্ষেত~ আমিও যানতাম, ভাল করেই যানতাম আমি কে~ হালচাষি কিষান বাবা আর লাউয়ের মাচায় পানিডালা কিষানী মায়ের খামখেয়ালিরকে পুজি করে আচমকা বড্ড নিষ্ঠুর পৃথিবীর আলো দেখা, ভাগ্যের জোড়ে স্রষ্টার বেখেয়ালি দানের বাটিভরা মেধার জোরে গ্রাম থেকে উঠে আসা এক দিব্য প্রেত~ তোর সাথে চলা সময়গুলো কতটা প্রবল স্রোতের মোহে হয়েছে গত~ ঠিক কিছুই নাই তার জানা~ 'গত হল কত দিন বসে গুনে দুই তিন কত ছোট ছোট মুহুর্তগুলো, সর্গিয় আবেশে~ মন ছিল চনমন প্রতিদিন সারাক্ষন~বিবর্ণ মরুভুমি সঙ্গহীন পৃথিবীটাকে রাঙ্গিয়ে দিয়েছিলি কতটা আপন করে~ তোকে কাছে পাবার পরের রাতগুলোতে প্রতিটা মুহুর্ত মনে হত মরুর বুকে তৃঞ্চার্ত রাখালের টলটলে সুপেয় পানির আবেজমজম প্রাপ্তির উল্লাসের মতই~ দিনগুলো যেন একান্তই আমার এই আমি তে আমিত্ব খুজে নিয়েছিল।

১০টি পূর্ণ বসন্তের প্রহর গোনা ক্লান্তির শেষে রবীণ্দ্রনাথের 'আমি পাইলাম, আমি ইহাকে পাইলাম, এ আমার সম্পত্তি নয় সম্পদ, বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে রাখব আসুক সুনামী কিংবা প্রলয়। কিছুতেই আমি ইহাকে বিচ্ছিন্ন হতে দেবনা ~ কিছুতেই না~ নির্মোহ আবেগের সিড়ি বেয়ে একটু ছুয়ে দিতে স্পর্শের মত করে~ মাতিয়ে তুলতে চারিপাশ মৃদুমন্দ হাসির রীনিঝিনী ফোয়ারা ফুটিয়ে~ মানবিক আবেগের এমন নিরন্তর প্রকাশ :- এক্টা শালিক কিংবা বুলবুলির জয়ধ্বনি!!! নাহ~ আজকের পথচলা গুলো কেন যেন বড্ড অদ্ভুত বড় নিরামিষ ~ প্রিয় তাহমিনা, "ভাবছিলে ভীষণ কল্পনাবিলাসী আমি? তাও হয়তবা। আমি জানতাম আমি ভীষণ সেকেলে, একেবারেই তোমার ঠিক উল্টো। তাই তো তুমি আমার কাছ থেকে আহ্লাদী আবদারের মিনতিতে বাবা মায়ের ঠিক করা ভিনদেশী ওই হাড়গিলগিলে ছেলেটার সাথে বিয়ের অনুমতি নিয়ে নিতে পেরেছা আচমকাই। আমি হয়ত আমার স্বভাবজাত নির্লিপ্ততায় তোমাকে "হুম করে ফেল" বলে দিয়েছিলাম উদাসী দৃষ্টিতে আকাশটার দিকে তাকিয়ে থেকেই ।

একবারের জন্যও ভেবেও দেখনি, আমার বুকটা কেমন করে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যেতে পারত কালবৌশাখির ঝরের মত, আমার পাঁজরে চিড় ধরে ভেঙ্গে গেছি চিরদিনের জন্য। পুরুষ হয়েও এতটা বছর পর আজো আমি আমি লুকিয়ে কাঁদতে আসি এই নির্জন নদীর বুকে মধ্যরাতে আকাশ আর প্রকৃতিকে সাক্ষ্য রেখে। তোমাকে আমি বুঝাতে পারিনি সম্পর্কের সততা কোনদিন অনুমতির অপেক্ষায় থাকেনা। সে আপন তাড়নায় নিজের মত করে জায়গা করে নেয় একান্তই হৃদয়ের থেকে হৃদয়েরই মাঝে। জানি তোমার সুখবিলাসি 'নিশ্চিন্ত ভবিষ্যত' গড়ে দেয়ার সংজ্ঞা ক্ষেতমার্কা এই উদাসীর হৃদয়ের ভিতরে জলোচ্ছাসের প্রলয়ংকরী ঢেউয়ের আড়ালে একবারের জন্যও দেখতে-বুঝতে-শুনতেই দেয়নি তোমাকে।

তবে আমি এও জানতাম, তোমার বাস্তববাদীতা, তোমার আধুনিকতা একদিন তোমাকেই বিরাট এক প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে কুড়ে কুড়ে খাবে! সেদিন এসো আমার কাছে............আমি ফিরিয়ে দেবনা। আমি যে তোমার ফেরার আসায় পথের কোলে কোল পেতে আজো বসে আছি, থাকবও আজীবন!" ইতি তোমার হুপু~ তারও তিনটে বছর পর ফিরে এসেছিলে নিজেরও ভুল বুঝে ~ মরিচিকা ঐশ্বর্যের পেছনে ছুটে জীবন-যৌবন-আত্মঅহম, তোমার নিরেট অবুঝ পাগলাটে বোকা ছেলেটির নিখাদ ভালবাসার বিশ্বাস, একসাথে সব হারিয়ে, হয়তবা তোমার আত্মদহনও হতে পারে সেটা কিংবা প্রতিহিংসাও~ আমি ঠিক জানিনা ভালবাসার মানুষকে কেমন করে এভাবে সুখস্বপ্নের ভোগবাদিস্বার্থের কারনে এতটা নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করা যেতে পারে~ তুমি বেশ ভাল করেই জানতে আমার নির্মল সারল্যতা~ নাহ তোমার ইউরুপ প্রবাসী বর নিয়ে কেমন আছ জানতে চাই না~ শুধু প্রত্যাশা একটাই যেখানেই থাক ভাল থেকো ~ আমিও এই বেশ ভাল আছি~ উত্সর্গ:- মনের কষ্টবিলাসী স্মৃতিগুলো আজ সামুতেই উগড়ে দিলাম~ ৪বছরে আগে আচমকা বৈদেশী ছেলের হাত ধরে বধুবেশে চলে যাওয়া একমাত্র 'বিশেষ একজন'কে ~ যে তার ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসতে চেয়েছিল পুনরায়, কিন্তু ততদিনে বিশ্বাস আর শ্রদ্ধাবোধের পথ যে সীসার দেয়াল তোলে রচনা করে ফেলেছে অবিশ্বাসের মহাপ্রাচীর?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।