নাজমুল ইসলাম মকবুল
চারদল সমর্থিতদের জয়জয়কার
কাজী জেবেল
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় ৭২ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীরা বিপুলভাবে জয়লাভ করেছেন। অপরদিকে অধিকাংশ পৌরসভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। ৭২ পৌরসভার মধ্যে চারদলীয় জোট সমর্থক প্রার্থীরা ৪২টিতে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন ২৫টি পৌরসভায়। দলীয়ভাবে বিএনপি সমর্থক ৩৭ জন, আওয়ামী লীগ সমর্থক ২৪ জন, জামায়াত সমর্থক ৫ জন ও জাতীয় পার্টি সমর্থক ১ জন এবং স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের ৫ জন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা ও আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল। মাত্র দুই বছরের মাথায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তার উল্টো অবস্থা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘন, ব্যাপক দুর্নীতি, সুশাসনের অভাবসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যর্থতার জন্য সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এর আগে বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলেও উত্তরাঞ্চলের রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলার ৭২টি পৌরসভায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। প্রচণ্ড শীতে সকালে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম। তবে দুপুর গড়াতে ভোটারদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। এদিকে নির্বাচনে গড়ে শতকরা ৬০-৬৫ ভাগ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে ভোটগ্রহণের পর গতকাল বিকালে কমিশন সচিবালয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে অনেক অভিযোগ, শঙ্কা ছিল, অনেকে অনেক কথা বলেছেন। শেষ পর্যন্ত পৌর নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠু হয়েছে। অভিযোগ বা হাঙ্গামার কারণে কোনো কেন্দ্র বন্ধ করতে হয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামনের নির্বাচনগুলোও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, ৭২টি পৌর নির্বাচনে শতকরা ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। নির্বাচনে কোনো ধরনের সংঘাত না হলেও কয়েকটি স্থানে বিধিভঙ্গের দায়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার ও সাজা দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পৌরসভার বাসিন্দারা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছ থেকে ভালো সেবা পাওয়ার আশায় কষ্ট করে ভোট দিয়েছেন। পরবর্তী নির্বাচনগুলোর পরিবেশ শান্ত থাকবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটের দিন কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
তবে নির্বাচন উপলক্ষে এমন কিছু পৌর এলাকায় এমপিরা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনো কোনো এমপি অনুরোধ রাখেননি। ভোট গণনায় কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষ করে সেখানেই কেন্দ্রের ফল প্রকাশ করা হবে। পরে এ ফল একত্রিত করবেন রিটার্নিং অফিসার।
ফল পাল্টে ফেলার আশঙ্কা অমূলক। এদিকে পৌরসভা নির্বাচনে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রভাব বিস্তার করা হয়নি বলে নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন নোয়াখালীতে এক বৈঠকে বলেছেন।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, নির্বাচনের শুরুতেই জোর করে রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর নেয়ার মতো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজশাহী অফিস জানায়, রাজশাহীর ১১ পৌরসভায় ৬টিতে আওয়ামী লীগ, ৩টিতে বিএনপি ও ২টিতে জামায়াত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক (চশমা) ৫৫৩০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের গোলাম মোস্তফা (তালা) পেয়েছেন ৩৮২৫। তানোর পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী মোখলেসুর রহমান ফিরোজ সরকার (তালা) ৭৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবুল কালাম আজদ (প্রদীপ সরকার) আনারস পেয়েছেন ৫২৯৬ ভোট। কেশরহাট পৌরসভায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আলাউদ্দিন আলো (তালা) বিজয়ী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী শহিদুজ্জামান শহিদ (দেওয়াল ঘড়ি) নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী। গোদাগাড়ী পৌরসভায় জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী আমিনুল ইসলাম (কাপ পিরিচ) ৬১৪৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম বাবু (দোয়াত কলম) ৪৩২৭ ভোট পেয়েছেন। কাটাখালী পৌরসভায় জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মাজিদুর রহমান (তালা) ৫৫৫২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সিরাজুল হক (দেওয়াল ঘড়ি) ৪৫৩৫ পেয়েছেন।
কাঁকনহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবদুল মজিদ মাস্টার (তালা) ৩৪০২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইসমাঈল হোসেন (দোয়াত কলম) পেয়েছেন ২৬২০ ভোট। আড়ানী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু (আনারস) ৪৪৩০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম (দেওয়াল ঘড়ি) ২৯৩৪ ভোট পেয়েছেন। তাহেরপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ (তালা) ৩৮শ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
বিএনপির আনম শামসুর রহমান মিন্টু (চশমা) ৩৬শ’ ভোট পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মুনসুর মৃধা (দোয়াত কলম) পেয়েছেন ৩২শ’।
মুণ্ডুমালা পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম রাব্বানী (তালা) ৪৭৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শীশ মোহাম্মদ (দেয়াল ঘড়ি) ৩২১৯ ভোট পেয়েছেন। চারঘাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নার্গিস খাতুন (আনারস) বিজয়ী হয়েছেন।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম বিকুল।
দুর্গাপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী তোজাম্মেল হোসেন (তালা) ৫৪৫৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আকবর আলী বাবলু (টেলিভিশন) ৪৪২০ ভোট পেয়েছেন ।
বগুড়া থেকে সবুর শাহ লোটাস ও আসাদুজ্জামান ফিরোজ জানান, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বগুড়ায় ৯ পৌরসভার মধ্যে ৮টির ফলাফল পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৬টিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও দুটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
অপর পৌরসভা বগুড়া সদরে বিএনপি প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন। শিবগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতিন (তালা) মোট ৯টি কেন্দ্রে ৭ হাজার ১১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম একমাত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের তৌহিদুর রহমান মানিক (আনারস) ৫ হাজার ৬৮৯ ভোট পেয়েছেন। গাবতলী পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোরশেদ মিল্টন (তালা) ৪ হাজার ৯৬১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সাইফ (মাইক) ৩ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়েছেন।
সারিয়াকান্দি পৌরসভায় বিএনপি (বিদ্রোহী) প্রার্থী আলহাজ টিপু সুলতান (আনারস) ৩ হাজার ৭৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবদুল হামিদ সরদার (মাইক) পেয়েছেন ২ হাজার ৮৩৪ ভোট। শান্তাহার পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু (দেয়াল ঘড়ি) ৯ হাজার ৪৯২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মোরশেদ (দোয়াত কলম) পেয়েছেন ৬ হাজার ৮১০ ভোট। শেরপুর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুণ্ডু (দেয়াল ঘড়ি) ৬ হাজার ৪০১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আবদুস সাত্তার (কাপ পিরিচ) পেয়েছেন ৫৮৩৭ ভোট। নন্দীগ্রাম পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সুশান্ত কুমার শান্ত (তালা) ৫ হাজার ৮৭৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কামরুল সিদ্দিকী জুয়েল (আনারস) ২ হাজার ৬৮৬ ভোট পেয়েছেন। বগুড়া সদর পৌরসভায় ৩৯ কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট একেএম মাহাবুবুর রহমান (দেয়াল ঘড়ি) ৪৬ হাজার ৩৬৫ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু (টেলিভিশন) ৩০ হাজার ৩১২ ভোট পেয়েছেন।
ধুনট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী জিএম বাদশা (তালা) ১ হাজার ৫৯৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আলিমুদ্দীন হারুন (চশমা) পেয়েছেন ১ হাজার ৪৮৯ ভোট। কাহালু পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হেলাল উদ্দীন কবিরাজ (দেয়াল ঘড়ি) মোট ৯টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৮১৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান (প্রতীক আনারস) পেয়েছেন ২ হাজার ৩৬০ ভোট।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার ৬ পৌরসভার ৩টিতে বিএনপি, ১টিতে জামায়াত ও ১টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।
বাকি ১টিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন। উল্লাপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে চারদলীয় জোট মনোনীত বিএনপি প্রার্থী মো. বেলাল হোসেন ১১ হাজার ১৩৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মহাজোট মনোনীত আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট মারুফ বিন হাবিব পেয়েছেন ১০ হাজার ৯২৪ ভোট। কাজিপুর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবদুস ছালাম (তালা) ২ হাজার ৮৬৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম মোস্তফা তালুকদার (আনারস) ২৪৪৭ ভোট পেয়েছেন।
শাহজাদপুর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম ১৮ হাজার ২৮৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হালিমুল হক মিলু ১৪ হাজার ২৭৬ ভোট পেয়েছেন। রায়গঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে জামায়াত নেতা মোশারফ হোসেন আকন্দ (মাইক) ২ হাজার ৫২৬ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নূর সাঈদ সরকার (দেয়াল ঘড়ি) ২৪৬৮ ভোট পেয়েছেন। ২০০৫ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।
বেলকুচি পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মফিজউদ্দিন লাল ১২ হাজার ৪১১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ১১ হাজার ৮৩৬ ভোট পেয়েছেন। সিরাজগঞ্জ সদর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোকাদ্দেস আলী প্রায় ১০ হাজার বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কেএম হুসেন আলী হাসান।
নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোরের ৬ পৌরসভায় নির্বাচনে ৫টিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও ১টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়েছে।
নাটোর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত এমদাদুল হক আল মামুন, নলডাঙ্গা পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্বাস আলী নান্নু, বড়াইগ্রাম পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. ইসহাক আলী, সিংড়া পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক শামীম আল রাজী, গোপালপুর পৌরসভায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম বিমল ও গুরুদাসপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শাহ নেওয়াজ মোল্লা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
পাবনা অফিস জানায়, পাবনার ৭টি পৌরসভার মধ্যে ৬টির বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। অপরদিকে ঈশ্বরদী পৌরসভার ফলাফল নিয়ে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেখানকার ফলাফল স্থগিত রাখা হয়। সংঘর্ষের সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ৬টি পৌরসভার মধ্যে বেসরকারি ফলাফলে ২টিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও ৪টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাবনা (সদর) পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু ৩৬ হাজার ৬১১ ভোটে (আনারস) বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবু ইসহাক শামীম পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮৯৬ ভোট। চাটমোহর পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী হাসাদুল ইসলাম হীরা ৩ হাজার ১৯৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রেজাউল করিম দুলাল পেয়েছেন ২ হাজার ৬১৮ ভোট। ফরিদপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী খ ম কামরুজ্জামান ৩ হাজার ৬৩৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এনামুল হক রুবেল ২ হাজার ৮ ১৫ ভোট পেয়েছেন। ভাঙ্গুড়ায় নাটকীয়ভাবে ফলাফল রদবদলের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, প্রথমে ২ হাজার ৭৮২ ভোট পেয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নূর মোজাহিদ স্বপনকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুর রহমানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তার প্রাপ্ত ভোট ২ হাজার ৭ ৮৭ ভোট।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুর রহমান প্রধান। তার প্রাপ্ত ভোট ২ হাজার ২৯৭ ভোট। সাঁথিয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মিরাজুল ইসলাম ৮ হাজার ৩৭৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোজাম্মেল হক মাস্টার পেয়েছেন ৬ হাজার ২০৫ ভোট। সুজানগর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন তোফা ৪ হাজার ৯১৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আবুল কাশেম ৪ হাজার ৭৮৮ ভোট পেয়েছেন।
রংপুর প্রতিনিধি জানান, রংপুরের দুটি পৌরসভার একটিতে স্বতন্ত্র, অন্যটিতে মহাজোটের প্রার্থী জয়লাভ করেছে। হারাগাছ পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদাকাত হোসেন ঝন্টু ১১ হাজার ২৬৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চারদলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী মোনায়েম হোসেন ফারুক ৮ হাজার ২০৭ ভোট পেয়েছেন। বদরগঞ্জ পৌরসভায় মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী উত্তম কুমার সাহা ৫ হাজার ২০০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আজিজুল ইসলাম ৩ হাজার ১০০ ভোট পেয়েছেন।
নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, নওগাঁ জেলার নওগাঁ সদর ও নাজিরপুর পৌরসভা দুটিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। নাজিরপুর পৌর নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন ৫ হাজার ২৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম ৪ হাজার ৯৪৩ ভোট পেয়েছেন।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড় পৌরসভা নির্বাচনের ৪ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলাম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি ১২ হাজার ৯২০ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোট প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম ৭ হাজার ৭১৫ ভোট পেয়েছেন।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রিয়াজুল হক রিন্টু ১৪ হাজার ২৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হাফিজুর রহমান বাবলা পেয়েছেন ৯ হাজার ৭১৭ ভোট। পাটগ্রাম পৌরসভায় নাগরিক কমিটির মো. শমসের আলী বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রাপ্ত ভোট ৩ হাজার ৯৮৩। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত সালউজ্জামান ওপেল পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৫৪ ভোট।
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এসএমএ মঈন ১৫ হাজার ৮৬৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির চৌধুরী গোলাম সারোয়ার রঞ্জু পেয়েছেন ১১ হাজার ২৯৮ ভোট। পীরগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী রাজিউর রহমান রাজু ৭ হাজার ১৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোট প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ইকরামুল হক পেয়েছেন ৬ হাজার ২০ ভোট। রানীশংকৈল পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মকলেসুর রহমান ২ হাজার ৮৩২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর সরকার পেয়েছেন ২ হাজার ৭১৩ ভোট।
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দেওয়ান কামাল আহমেদ পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ১১ ভোট।
তার নিকটতম বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জহুরুল আলম পেয়েছেন ৬১৭৩ ভোট। জলঢাকা পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ারুল কবির চৌধুরী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী ছিলেন জাপার ইলিয়াছ হোসেন বাবলু। সৈয়দপুর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আমজাদ হোসেন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী জাপার সিদ্দিকুল আলম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপি সমর্থিত শামীম কবির হেলিম, রহনপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস ও নাচোল পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মালেক চৌধুরী মিটু বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
রাজশাহীর দুর্গাপুরে বিএনপি-আ’লীগ সংঘর্ষ : রাজশাহী অফিস জানায়, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দাপটে ভীতিকর পরিবেশে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যে রাজশাহীর ১১টি পৌরসভার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের চৌপুকুরিয়া এলাকায় ভোটকেন্দ্রের পাশে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৭ জন আহত এবং আইয়ুব আলী নামে একজনকে র্যাব গ্রেফতার করে। দুর্গাপুর পৌরসভার ধরমপুর ভোট কেন্দ্র আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেনের সমর্থকরা এক ঘণ্টার মতো কেন্দ্র দখল করে রেখেছিল বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
অন্য পৌরসভাগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের হুমকি-ধমকি, ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা ও ভোটারদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রংপুরের হারাগাছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া : রংপুর প্রতিনিধি জানান, রংপুরের হারাগাছ পৌরসভা ভোট কেন্দ্রে প্রচার চালানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে হারাগাছ পৌরসভার হারাগাছ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজের পক্ষে প্রচার চালাতে থাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদাকাত হোসেন ঝন্টু। তাকে বাধা দেন ভোটাররা। এতে ঝন্টুর কর্মী ও ভোটারদের মাঝে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কাউনিয়া থানার ওসি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
পাবনায় জোর করে রেজাল্টশিটে স্বাক্ষর : পাবনা অফিস জানায়, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গড়া, ফরিদপুর ও সাঁথিয়া পৌরসভায় ভোটারদের ভোট দিতে বাধা এবং ফলাফলশিটে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাটমোহর পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী হাসাদুল ইসলাম হীরা আমার দেশকে জানান, চাটমোহর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৮টি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সবাই জোর করে আনারস মার্কা প্রার্থীর এজেন্টদের স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।
পরে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্তার কাছে অভিযোগ জানানো হলে ৫টি কেন্দ্রের স্বাক্ষরিত ফলাফলশিট ফেরত দেয়া হয়।
বগুড়ায় পুলিশ কনস্টেবল প্রত্যাহার : বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ার ধুনটে পুলিশ ভোটকেন্দ্র এলাকা থেকে ৪ জনকে আটক করে। শহরের মালতিনগরে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। কিছু কেন্দ্রে সাময়িক উত্তেজনা দেখা দিলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি শান্ত করে। কনকনে শীতে জেলার ৯ পৌরসভায় গড়ে ৬০ থেকে ৬২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
জানা গেছে, শহরের মালতিনগর স্কুল কেন্দ্রে দুপুরে পুলিশ কনস্টেবল মিজানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালানোর অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। একই কেন্দ্রে একটি জাল ব্যালট পেপার ভোটকেন্দ্রের বাইরে পাওয়া যায়। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ফখরুল ইসলাম জানান, ভোট কেন্দ্রের বাইরে পাওয়া ১টি ব্যালট পেপার ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। এদিকে ধুনট পৌরসভায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত ভোটকেন্দ্র থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন পৌর এলাকার পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম, এন্তাজ আলীর ছেলে এজার উদ্দিন, অফিসারপাড়ার আবদুর রশিদের ছেলে সুলতান আলম এবং সোনাতলা উপজেলা সদরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে একাব্বর হোসেন। তারা অবৈধভাবে ভোট কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিল। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ হারুন বলেন, নির্বাচনী আইন ভঙ্গের অভিযোগে পৌর নিম্নমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড শাখা কার্যালয় ও পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ৪ জনকে আটক করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জে সংঘর্ষে আহত ৩ : সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর মোড় এলাকায় দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন আহত হয়েছে।
এছাড়া কাজীপুরে নির্বাচনে জালভোট প্রদানের চেষ্টাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪ জন আটক করা হলেও পরে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
নাটোরে ৫ জন গ্রেফতার : নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভার ব্রহ্মপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় শহিদুল ইসলাম নামের এক আনসার সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া ভোটগ্রহণের আগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বড়াইগ্রাম পৌর এলাকায় পাঁচজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও আটক করা হয়।
সুত্রঃ আমার দেশ
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।