আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তূয্যঃ ও একটি নিস্তব্ধ জনপদ

আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে।

একটি নিস্তব্ধ ফুটপাতে স্তব্ধ সব কিছু। কার ও যেন কোন কিছুর জন্য কোন তাড়া নেই, কোন ক্ষুধা নেই, তৃষ্ণা নেই, অভাব নেই, অভিযোগ নেই অর্থাৎ তারা যেন সকল কিছুর উধ্বে। প্রথম যাকে চখে পড়ে সে একজন বৃদ্ধ – কালি ঝুলি মাখা কোট, জঙ্গলের মত দাড়ি গোফ, হাটুতে ভর দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। যেন পৃথিবীর আর কিছুই পাওয়ার নেই তার।

একটু বাদেই চোখে পড়ে একজন বৃদ্ধা, যে অনবরত মাথায় থাপরাচ্ছে আর কিসের জন্য যেন অফসোস করছে। কি একটা বাদনা যেন বারবার বুকের ভেতরে মোচর দিয়ে উঠছে। আর একটু পরেই দেখা যাবে একটা মাঝ বয়সী নারী – ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে রাস্তার দিকে। রাস্তা দিয়ে উল্কার গতিতে চলছে একটার পর একটা বাস। তার কুলে একটা শিশু কাঁদছে – দেখে মনে হয় খুব ক্ষুদার্থ।

তার সে কান্না যেন অনন্ত কালের। কিন্তু তার সে কান্না পৌছায় না মাঝ বয়সী নারীর কানে। সে যেন কিসের আগমন প্রত্যাশায় এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ব্যস্ত রাজপথে। তার ই পাশে ভাব লেশহীন ভাবে বসে আছে একটা নববধূ। ব্যস্ত রাস্তার ফুটপাতের পাশ দিয়ে একটা ছোট পথ চলে গেছে নিস্তব্ধ জনপদের ভিতরে।

সে আকা বাকা পথ দিয়ে ভিতরে ঢুকার সময় দেখা যায় বিচিত্র দৃশ্য। রাস্তায় উপুড় হয়ে পড়ে আছে অর্ধ নগ্ন যুবক যুবতী, কোথাও বালতি, কোথাও কলসি, কোথাও হাড়ি পাতিল, কোথাও গামলা ওলট পালট হয়ে পড়ে আছে। জনপদ এর ভেতর কালো কাপড়ের কিছু তাবু – দেখলে মনে হবে রিফুজি। তাবুর গা ঘেষে কালি ঝুলি মাখা ন্যাংটি আটা কিছু যুবক পাথরের মূতির মত বসে আছে। কিছু নারী, মাথায় উশখু খুশকু চুল, শত জায়গায় ছেড়া শাড়ির আচল মাটিতে বিছিয়ে তাবু গুলোর মাঝখান দিয়ে ঘুরুঘুরি করছে।

কিছু ন্যাংটা ছেলের দল তাবুর পাশের বালির উপুড় হয়ে শুয়ে কাঁদছে। একটা তাবুর এক কোনে শুয়ে আছে এক রুগাক্রান্ত বৃদ্ধ। পাটে মত দাড়ি গোফ। ধূলো আর বালিতে সারা শরীর সাদা। মুখটা আবছা নীল আর কালো কুচকুচে চোখে যেন সাগরের গভীরতা।

শত সহস্র বছরের রহস্য যেন তাতে লুকান। এক হাতে বালি গর্ত করছে, অন্য হাতে সমান করছে আর কাশতে কাশতে বলছে, “আইব, আইজকাই আইব, শ হাজার বছরের টেরেন”। সে আনমনে বলে যাচ্ছে আর মাটি গর্ত করছে। বিধাতা যেন তাকে এই কাজ দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়াছেন। কথাটা এত স্বস্তি নিয়ে বলছে যেন এই কথাটা বলার জন্যই তার যুগযুগান্তরের অপেক্ষা।

তার চোখ দুটি যেন নিভু নিভু প্রদ্বীপ –নিমেষেই জ্বলসে উঠে, আবার নিমেষেই বিলীন হয়ে যায়। এ রোগাক্রান্ত শরীরে ও যেন সে দেখতে পায় নতুন সম্ভাবনা, নতুন কিছু গড়ার স্বপ্ন। সবচেয়ে আশ্চযের ব্যাপার হচ্ছে এরা এক এক জন যে এক এক গ্রহের বাসিন্ধা। তাদের কার ও সাথে কার ও কোন যোগাযোগ নেই। হয়ত তারা বায়ু শূন্য জাড়ে বসে আছে, নয়ত বধির, হয়ত তারা পাগল, নয়ত বোকা।

প্রত্যেকে যেন প্রত্যেকের ভূবনে এক বিচ্ছিন্ন স্বত্বা। হঠাৎ নিস্তব্ধ নগরীতে প্রবেশ করে এক যুবক। মুখে খোচা-খোচা দাড়ি, অযত্নে গড়া লম্বা লালচে চুল আর গায়ের রং তামাটে। বিদ্যুৎ গতিতে সে ঢুকতে থাকে একটার পর একটা তাবুতে আর উল্কার বেগে বের হয়ে আসে। এখনই যেন ঘটবে শত সহস্র বছরের কোন ইতিহাস।

সবাই কে সে কী যেন ও বলে। তার চোখ দুটো নক্ষত্রের মত জ্বলতে থাকে। কেমন যেন একটা দ্যুতিময়তা প্রবাহিত হতে থাকে তার পা থেকে মাথা পযন্ত। পাথরের মত বসে থাকা যুবকেরা উঠে দাঁড়ায়, নারীরা তাদের আচল টেনে নেয় মাটি থেকে। সবাই যেন আজকের দিনটির স্বপ্ন লালন করছিল শত সহস্র বছর ধরে।

এ স্বপ্নই যেন এ জনপদকে স্তব্ধ আর বধির করে রেখেছে শত সহস্র বছর ধরে। যুবক বিদ্যুৎ গতিতে চলে যায় ফুটপাতের দিকে। সবাই তাকে অনুসরন করে। এ যেন এক গণ জোয়াড়। ফুটপাতের পাশ দিয়ে একটার পর একটা বাস চলে যাচ্ছে।

একচুল পরিমান জায়গা নেই রাস্তা পার হবার। অপর পাশে দাঁড়িয়ে আছে শত সহস্র বছরের প্রতিক্ষিত সেই স্বপ্নীল ট্রেন। যার যাত্রা বিরুতি খুব অল্প। যাত্রা শুরু হওয়ার সাইরেন বাজচ্ছে। এখনই ছেড়ে যাবে মুক্তিদূত ট্রেন।

কিন্তু রাস্তা পাড় হতে পারছেনা তারা। ট্রেনের সাইরেন ক্রমশ ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে, একটা ঘন অন্ধকারে যেন হারিয়ে যাবে এ মুক্তিদূত ট্রেন। অবার অপেক্ষা, অবার শত সহস্র বছর পার, নাহ, তা পারবে না তারা। এখনই নামে পরতে হবে হয়ত মরবে নয়ত ট্রেনে চড়বে। দুরন্ত তাদের সংকল্প, দুবার তাদের প্রত্যয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেয়া যুবক ফুতপাতে দাঁড়িয়ে থাকা নববধূর দিকে তাকায়। তার মুখ আর ভাবলেশহীন নয়। জানালার ফাক দিয়ে আসা এক ফালি রোদ যেমন জলমল করতে থাকে অন্ধকার ঘরে তেমনি তার মুখে এক অনন্দের ঝিলিক। যুবক সেদিকে আর তাকিয়ে থাকতে পারে না যদিও ইচ্ছে ছিল শত সহস্রকাল তাকিয়ে থাকে সে দিকে। কিন্তু তখন যে হাতে আর সময় নেই।

এক পাশে প্রিয়তমার বধূ আর অপর পাশে শত সহস্র বছরের অবরুদ্ধ জনতা। চোখের সামনে বিপুলা পৃথিবী; মাথার উপর উল্টানো বাটির মত নীল আকাশ; আকাশে অসংখ্য শান্তির পায়রা আর কানের কাছ দিয়ে সাই সাই করে চলছে একটার পর একটা ঘাতক বাস। রাস্তায় নামলেই পিষে ফেলবে। কী করবে যুবক সে কী ফিরে যাবে তার প্রিয়তমা বধূর কোলে? নাহ, নামতে যে তাকে হবে নেতৃত্ব যে লাগবেই- নইলে আবার অপেক্ষা করতে হবে শত সহস্র বছর। নিস্তব্ধ জনপদে আবার নেমে আসবে স্তব্ধতা।

অন্ধকারে ঢেকে যাবে মানবতা। ফুসে উঠা আত্মা গুলো আবার যাবে শীত নিদ্রায়। চারিদিকে তীব্র নীরবতা। শ্বাস-রুদ্ধকর একটা অবস্থা। কী হবে কেউ জানে না।

শান্ত-ধীর পদক্ষেপে যুবক নামে রাস্তায়। মিছিলটা তাকে অনুসরন করে। মুহুতের মধ্যেই একটা ঘাতক বাস শকূণের মত ছু মেরে নিয়ে যায় যুবকটার আত্মা। ফুটপাত থেকে একটা নারী কন্ঠের করুণ আতনাদ এ আকাশ বিদিণ হয় – “তূয্য”.........................................................। ।

ততক্ষণে চাকার নিচে পিষে যায় তূয্য। যুবক যুবতীর মিছিল আবার পাথরের মূতি হয়ে যায়। বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে কটমট করে ফুটতে থাকে প্রতিটি হাড়। এক একটা হাড় যেন একটা বিষ্ফোরণ। এক পশলা বৃষ্টির মত; এক ঝাপ্টা রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ।

পায়ের নিচে পড়ে পিষে যাওয়া ছাড়পোকার মত পিষে যায় একজন তূয্য। স্তব্ধ হয়ে যায় একটা বিপ্লব। নিস্তব্ধ জনপদ আবার ডুবে যায় শত সহস্র বছরের স্তব্ধতায়। সেদিন যে মেয়েট যুবতী ছিল; আজ হয়ত সে বেচে নেই আর বেচে গেলে ও ঢিলে চামড়ার বুড়ি-থুড়ি। আর যে লোকটা রোগে ভুগছিল কবরে তার হাড়ে হয়ত এখনো একটা না পাওয়ার বেদনা দাউ দাউ করে জ্বলে।

শত সহস্র বছর পরে ও হয়ত সেদিন এর সে নববধূর চোখের নিস্তব্ধতা কাটেনি। আজো ফুটপাতের পাশ দিয়ে উল্কার বেগে বাস গুলো চলে যায় একটার পর একটা; এক সেকেন্ডের জন্য ও যেন কোন বিরাম নেই। আর বাস গুলোর পাশে একদল মানবের শত সহস্র বছরের স্তব্ধ জীবন। এ স্তব্ধ জনপদে যখনই কোন যুবতীর জরায়ুতে বীযপাত ঘটে, তখনই সে দুহাত তুলে পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে একজন তূয্য এর পুণঃ জন্ম ও আর একটা বিপ্লব। কিন্তু পরমেশ্বর সবার অলক্ষে বসে পরিহাসের হাসি হাসেন।

যেন তিনি এমনটিই চেয়েছিলেন। তার সে হাসি মিলিয়ে যায় বাস এর সাই সাই শব্দ মালায়। নিঃশব্দ জনপদের স্তব্ধতা ভেঙ্গে প্রতি রাতেই শোনা যায় সঙ্গমরত রমণীর গোংরানী, প্রতি ভূরেই শোনা যায় একজন নবজাতকের চিৎকার। কিন্তু তূয্য আর ফিরে আসে না। নিস্তব্ধ জনপদ আবার ডুবে যায় স্তব্ধতায়-প্রতিদিন এর মত শত সহস্র বছরের মত।

তবে কি তূয্য আর ফিরবে না? শত শত যুবতীর গর্ভ ধারন কি বৃথা? কখন ও কি ভাঙবে না নিস্তব্ধ নগরীর স্তব্ধতা? তাহলে কি তূযের রক্ত একজন বিপ্লবীর না একটা ছাড়পোকার? এসব প্রশ্ন মশার ঝাকের মত ভাসতে থাকে নিস্তব্ধ নগরীর বাতাসে। নাহ! একজন বিপ্লবীর রক্ত কখন ও বৃথা যেতে পারে না। তূয্যের ঝরে যাওয়া রক্তের প্রতিটি ফুটা থেকে বুক টান টান করে দাঁড়াবে হাজার হাজার তূয্য – প্রত্যয় বুকে নিয়ে সঙ্গমরত রমাণীর গোঙড়ানোর শব্দে জেগে উঠে নিস্তব্ধ জনপদের স্তব্ধ রজনী। গোঙড়ানো বাড়তে থাকে আস্তে আস্তে – এক সময় তা অন্তসত্বা মায়ের তীব্র চিৎকারে রূপান্তরিত হয়। প্রতিটি যুবকের শ্বাসরুদ্ধকর নিশ্বাস আর প্রতিটি যুবতীর গঙড়ানোতে মনে হচ্ছিল যেন সিডর বয়ে যাচ্ছে স্তব্ধ জনপদের নিস্তব্ধতায়।

একটা রাক্ষসী যেন তার অপরিমেয় তৃষ্ণা নিয়ে ভক্ষণ করতে চায় নিস্তব্ধ জনপদের সকল যুবক যুবতী। চিরদিন এর মত বন্ধা করে দিতে চায় এ জনপদকে –যেন আর কোন নারী আর কোন তূয্য জন্ম দেওয়ার দুঃসাহস না করে; কোন যুবক যেন কোন তূয্য স্বপ্ন দেখতে না পারে; নিস্তব্ধ নগরী যেন বিলীন হয়ে যায় বিস্মৃতির অতল গহ্বরে। অবশেষে এক নবজাতকের চিৎকারে বিবর্ন হয় আকাশ। রাতে অন্ধকার বিদির্ন হয়ে সোনালী রোদ্দুর দেখা দেয় পূর্ব দিগন্তে। দক্ষিণ দিক থেকে ঝিরিঝিরি বাতাশ বইতে থাকে।

শরতের নীল আকাশে আবার ভাসে শান্তির পায়রা। ঈশানে ছেড়া মেঘের ভেলা, আর নানা বর্নের পাখির মেলায় শত সহস্র বছর পর নিস্তব্ধ জনপদ আবার যেন প্রাণ ফিরে পায়। যুবকেরা ঢুলু ঢুলু চোখে তাকায় নব জাতকের দিকে- তাদের চোখ জ্বলসে যায়; এইতো সেই যার জন্য শত সহস্র বছরের প্রতিক্ষা। এইতো সেই যার জন্য প্রতিটি যুবতীর শত সহস্র বছরের গর্ভ ধারণ। এখনও ফুটপাতের পাশ দিয়ে অবিরাম বয়ে চলে বাস গুলো।

কিন্তু কিসে যেন আজ মন্থর করে দিয়েছে তাদের গতি। নাকি শত-সহস্র বছর ধরে চলতে চলতে লটর পটর হয়ে গেছে তাই বা কে জানে? নাকি সবই তাদের মনের ভুল? বাস গুলো আগের মতই ক্ষিপ্র। হঠাৎ তাদের মনে এক অদ্ভুত উন্মাদনা দেখা দেয়। সেদিন তূয্যের যে রক্ত তারা রাজপথে ঝরতে দেখেছে আজ তারা সে রক্তের অস্তত্ব টের পায় তাদের ধমনীতে। কামানের মুখের উশখুশ করা বারুদের মত টগবগ করতে থাকে তা।

প্রত্যেকের আত্মায় তারা এক তূয্যের আত্মা খুজে পায়। সে আত্মা যেন বারবার বলে যায়-“আর নয় নিস্তব্ধ নগরীর নিস্তব্ধতা; আর নয় আহার পীড়িত মানবের কান্না; আর নয় কোন যুবকের শীত নিদ্রা; আর নয় কোন তূয্য প্রত্যশী রমনীর শত সহস্র বছরের গর্ভধারন”। নিস্তব্ধ জনপদ যেন এমন একটা দিনেরই প্রত্যশা করছিল শত-সহস্র বছর ধরে। রাস্তার ওপাশে শত সহস্র বছরের প্রতিক্ষিত ট্রেন-যার যাত্রা বিরতি খুব অল্প। সাইরেন বাজছে, ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর আর ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে।

তূয্যের দল নেমে গেছে রাস্তায়-পটাশ পটাশ ফুটছে চাকার নিচে পড়ে। রক্তের ঝাপ্টায় লাল হয়ে গেছে গোধূলীর লাল সূয্য। ছোপ ছোপ রক্তের ভিতর একটা অওয়াজ ভাস্তে থাকে, “দূবল সবল হক, সবল দূবল”। ছোপ ছোপ রক্তে আঠা লেগে যায় পথ, আটকে যায় বাসের চাকা। ঈঞ্জিনে পুরুদম তবুও চাকা ঘুরে না।

ঘুরবে কিভাবে, এ রক্ত যে শত সহস্র বছরের সাধনার ফল। বিকট শব্দে ফেটে যায় ইঞ্জিন, যেমন ফেটেছিল তূয্যের হাড়। আগুন ধরে যায় চারিদিকে। পিছন দিক থেকে একটার পর একটা বাস পড়তে থাকে আগুনে। বিধ্বস্ত বসের সাথে বিধ্বস্ত হতে থাকে শত সহস্র বছরের ইতিহাস, নিয়ম- নীতি, আচার-আচরন।

চারিদিকে পাক খাওয়া ধূয়ার কুন্ডলী থেকে শুধু একটা আওয়াজই ভাসতে থাকে শূন্য থেকে মহাশূন্যে – “দূবল সবল হক, সবল দূবল”। নিস্তব্ধ জনপদ যেন একটা স্বক্রিয় আগ্নেয়গিরি। আগুনের পত পত শব্দে ভেসে যায় নিস্তব্ধ জনপদের নিস্তব্ধতা। ধূয়ার ভিতর হারিয়ে যেতে থাকে গূধোলীর লাল সূয্যটা। ট্রেনের সাইরেন অসহ্য হয়ে উঠে।

বেচে যাওয়া তূয্য প্রত্যাশীরা উঠে তাদের মুক্তিদূত, শত সহস্র বছরের প্রতিক্ষিত ট্রেনে। পিছনে পড়ে থাকে রক্তে ভেজা রাজপথ, ধূয়ার কুন্ডলী আর এক নিস্তব্ধ জনপদ। অবশেষে, তূয্যের অনুসারীরা ট্রেনে চড়ে, কিন্তু সেটা দেখে যেতে পারেনা, মায়ের কূলে ক্রন্দনরত সেই ছোট্ট শিশুটা; সেই ন্যাংটা ছেলের দল; সেই রোগাক্রান্ত লোকটা-যে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়; সেই ঢিলে চামড়ার বৃদ্ধা, যে একজন তূয্যের প্রত্যাশায় শত- সহস্র বছর অকাতরে গর্ভধারন করেছে; সেই ভাব লেশহীন নববধূটা – যে তার সমস্ত যৌবন পাড় করেছে এ নিস্তব্ধ জনপদের নিস্তব্ধতায় আর সেই বৃদ্ধটা যে শত সহস্র বছর একটা তূয্যের প্রত্যাশায় পরমেশ্বরের দরবারে ধ্যানমগ্ন ছিল। আর সেই তূ্য্যটা যার মৃত্যুতে একটা বিপ্লব শত সহস্র বছর পিছিয়ে গেল। সাকিব শাহরিয়ার


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.