আমি বাংলাদেশের বাঙ্গাল ।
১৯৩৯ সালে হিটলার পোল্যান্ডে ঝটিকা আক্রমন চালালে হাজার হাজার ইহুদি পাশের লিথুয়ানিয়া তে আশ্রয় নেয় । কিন্তু এই আশ্রয় ছিল সাময়িক । ১৯৪০ এর গ্রীষ্মে সোভিয়েত ইউনিয়ন লিথুয়ানিয়া দখল করে নিলে আর নাৎসিরাও অগ্রসর হতে থাকলে বিপদ ঘনিয়ে আসে । কিন্তু সেখান থেকে বের হতে হলে শরণার্থীদের ভ্রমণসংক্রান্ত সরকারি নথিপত্র দেখাতে হত, কিন্তু কোন সরকারই তাদের সেই কাগজপত্র দিতে প্রস্তুত ছিল না ।
শরণার্থীদের সোভিয়েত ইউনিয়ন আর জাপানের ভিতর দিয়ে বের করে আনার এক অবিশ্বাস্য পরিকল্পনা করলেন সমব্যথী এক ওলন্দাজ কূটনীতিক । শরণার্থীরা কত দ্রুত দুঃসাধ্য জাপানিজ ট্রানজিট ভিসা জোগাড় করতে পারে তার উপর নির্ভর করছিল এই পরিকল্পনার কার্যকারিতা । ওই ভিসা না হলে ফাঁদে আটকা পড়বে তারা।
সেই দুঃসময়ে আবির্ভূত হলেন একজন অপ্রত্যাশিত ত্রাণকর্তাঃ সিউন সুগিহারা, লিথুয়ানিয়ার কানাসে অবস্থিত জাপানের কনসাল জেনারেল । সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে মরিয়া শরণার্থীদের মহা মূল্যবান ট্রাভেল ভিসা অনুমোদন করা শুরু করলেন তিনি ।
যেই আবেদন করেছে তাকেই ভিসা অনুমোদন করেছেন সুগিহারা ! প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা যাচাই করে দেখেননি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিষেধ সত্বেও অনুমোদন করেছেন হাজার হাজার ভিসা ! অবশেষে তাকে লিথুয়ানিয়া ছাড়ার নির্দেশ দেয় টোকিও । এমনকি স্টেশনে পর্যন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে ভিসা হস্তান্তর করেছেন তিনি !
সুগিহারার এই প্রচেষ্টার ফলে নিধনযজ্ঞ থেকে বেঁচে যায় প্রায় ৫ হাজার ইহুদি ! এজন্য তাকে অবশ্য হারাতে হয় জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের চাকরিটা !
কেন সুগিহারা তার সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করলেন ? কেন ধ্বংস করলেন তার ক্যারিয়ার ?! " তারা সবাই মানুষ আর তাদের সাহায্যের দরকার ছিল । ভাবতে ভাল লাগে , সেই সাহায্য করার শক্তিটা আমি পেয়েছিলাম " - বলেছেন তিনি !
প্রথম আলোর পুরান সংখ্যা থেকে সংগ্রহকৃত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।