There is only one good, knowledge, and one evil, ignorance.
পৃথিবীতে কত যে আজগুবি ঘটনা/কাহিনী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার কোন শেষ নেই। ধর্ম-গুরুদের ঐশী ও ভবিষ্যত বাণী যুগে যুগে মানুষকে করেছে উতলা, সংখ্যা-তত্তের আলোকে ভবিষ্যত বাণী দিয়ে সময়ে সময়ে মানুষকে করা হয়েছে বিভ্রান্ত। অনেক দিন ধরে শুনছি
মায়া ক্যালেন্ডারের কথা, পৃথিবী নাকি ২০১২ সালে শেষ হয়ে যাবে। কি সব হিসাব-নিকাশ করে একেবারে নির্ভুলভাবে বের করে ফেলে কবে কখন শেষ হতে যাচ্ছে মানুষের আনাগোনা। বাবা ভাঙ্গা তো রীতিমত পরবর্তী তিন হাজার বছরে পৃথিবীতে কোথায় কি ঘটবে তা বলে গেছে।
ইউটিউবে এ নিয়ে অনেক ভিডিও পাওয়া যায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো বাবা ভাঙ্গার একটি ভবিষ্যত বাণী: ২০১০ সালের নভেম্বরে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে। ২৩ নভেম্বর উত্তর কোরিয়া যখন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়ংপিয়ং দ্বীপে আর্টিলারি এট্যাক করে, তার কিছুক্ষণ পরেই ইন্টারনেট জগতে দেখা যায় অনেকই বলছে এটা নাকি বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যত বাণী সত্য প্রমান করছে!
ইদানিং এরকমই একটি বিস্ময় হচ্ছে বরিস্কা। ১৪ বছরের রাশিয়ান এই বালক নাকি পুনর্জন্ম নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। বিস্ময়টি হলো এর আগে বরিস্কা মঙ্গল গ্রহে জন্মগ্রহন করেছিল।
আর সে জন্যই বরিস্কাকে বলা হয় মঙ্গল গ্রহের বালক। এবং বরিস্কা এ জন্মে মঙ্গল-জীবনের অনেক কিছুই মনে করতে পারে! ইন্টারনেটে একটু ঘাটাঘাটি করে বেশ কিছু তথ্যও পাওয়া গেল বরিস্কাকে নিয়ে।
১৯৯৬ সালে বরিস্কা জন্মগ্রহন করে রাশিয়ার ভলগোগ্রাড রিজিয়নের ভলঝাই শহরে। পৃথিবীতে তার জন্মগ্রহনের সময়কার ঘটনাও একটু অসাভাবিক বটে। তার মা কিপ্রিনিয়াওভিচ এ সম্পর্কে বলেন , "এ সব এত দ্রুত ঘটে গেল যে আমি কোন প্রসব যন্ত্রনাও পেলাম না।
যখন নার্সরা শিশুটিকে আমাকে দেখালো, সে আমার দিকে পরিপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। একজন শিশুরোগ-চিকিৎসক হিসাবে আমি জানি নবজাতক এভাবে কোনকিছুর দিকে একদৃষ্টিতে তাকাতে পারে না"।
হসপিটাল থেকে বাড়ি আসার পর সে তার নবজাতকের বেশ কিছ অসাভাবিক জিনিষ লক্ষ্য করতে শুরু করলেন। মাত্র ১৫ দিন বয়স থেকেই সে তার মায়ের হাত শক্ত করে ধরতে পারে। সে সাধারণত কাঁদে না, এমনকি তার কোন রোগেও ধরে না।
সে অন্যান্য শিশুদের মত বড় হতে থাকলেও মাত্র ৮ মাস বয়সেই সাভাবিক মানুষের মত করে কথা বলা শিখে যায়। বাবা-মা (বরিস্কার) তাকে একটি মেকানো দিলে সে বিভিন্ন পার্ট দিয়ে নির্ভুলভাবে সঠিক জ্যামিতিক আকারে পরিনত করে। তারা লক্ষ্য করে শিশুটি এমন কারো সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে যেন তার নিজের বাপ-মা তার কাছে ভিন্ন গ্রহের কেউ।
বরিস্কার বয়স যখন ২ বছরে তখন সে নীল ও বেগুনি রং-এ মিশ্রিত এমন সব অদ্ভুত ছবি আঁকতে শুর করে যা প্রথমত বিমূর্ত মনে হতো। সাইকোলজিস্টরা বললো শিশুটি খুব সম্ভবত তার আশে পাশে যাদেরকে দেখে এসব তাদেরই ছবি।
বয়স ৩ না পেরোতেই সে তার বাবা-মাকে মহাবিশ্বের গল্প বলা আরম্ভ করে। সে বলতে পারে সমস্ত গ্রহ এবং তাদের উপগ্রহের সংখ্যা ও নাম, গ্যালাক্সিদের সংখ্যা ও নাম। বাবা-মা বলে, "আমরা প্রথমত ভয় পেয়ে যাই, তবে বরিস্কার দেওয়া তথ্য সত্য কিনা তা যাচায়ের নিমিত্তে বাজার থেকে জোতির্বিদ্যার উপর বই কিনে আনি, এবং এতে দেখা যায় বরিস্কার দেওয়া তথ্য পুরোপুরি সঠিক"।
একজন শিশু জোতির্বিদ হিসাবে বরিস্কার কথা খুব দ্রুত শহরে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক লোক আসে শিশু বরিস্কা এত কিছু কিভাবে জানে তা জানতে।
এবং বরিস্কাও তাদেরকে ভিন্ন গ্রহের সভ্যতা নিয়ে বলতে চেষ্টা করে। সে বলে মানুষের আদি জাতির কথা যারা নাকি ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা ছিল। সে বলে জলবায়ু নিয়ে, বৈশিক পরিবর্তন নিয়ে। সে জানায় বিভিন্ন অতীত ও ভবিষ্যতের কথা। সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে এসব শুনতে থাকে এবং কেই-ই বলে না যে এসব তারা বিশ্বাস করে না।
যাই হোক, বাপ-মার কাছে মনে হলো তাদের সন্তান অবশ্যই বেশ অসাভাবিক। তাই তাকে নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়লো, এমনকি তাকে চার্চে দিয়ে দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছিল।
২০০৪ সালে বরিস্কা প্রথমবার রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের নজরে আসে। রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের ইন্সটিউট অব আর্থ ম্যাগেনটিসম এ্যান্ড রেডিও ওয়েভসের বিশেষজ্ঞরা শিশু বরিস্কার ওরা (প্যারানরমাল) ফটোগ্রাফ নেয়। এবং তারা তাকে অসম্ভব বুদ্ধিমত্তার অধিকারি হিসাবে দেখতে পায়।
এ সম্পর্কে অধ্যাপক ভ্লাডিলাভ লিউগোভেন্কো বলেন, "একটি থিওরি আছে, যেটা অনুসারে মানুষের দুই ধরণের মেমরি আছে: ওয়ার্ক এবং রিমোট মেমরি। মানুষের ব্রেনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা হলো অভ্যন্তরীণভাবে এবং বাহ্যিকভাবে অর্জিত অভিজ্ঞতা, আবেগ এবং চিন্তাভাবনাগুলোকে মহাবিশ্বের একক তথ্য কেন্দ্রে জমা করে রাখা। শুধুমাত্র হাতেগোনা কয়েকজন মানুষই সেখান থেকে তথ্য গ্রহন করতে পারে। বরিস্কা তাদেরই একজন"।
এখন বরিস্কার বয়স ১৪/১৫ বছর।
এ্যাস্ট্রোনমিতে প্রচুর নলেজ তার। বরিস্কার মতে মঙ্গল গ্রহে মানুষের পূর্বপুরুষদের বাস ছিল, তারা অনেক লম্বা ছিল। খাদ্যের ঘাটতি হবার ফলে এখন তাদের প্রায়-সব ধ্বংস হয়ে গেছে। যারা এখনও বেঁচে আছে তারা মঙ্গলের মাটির ভিতরে আশ্রয় নিয়েছে। বরিস্কা মনে করতে পারে তার মঙ্গল-জীবনের অনেক কিছু।
সে মনে করতে পারে তার বন্ধুর কথা যার সাথে সে অনেক সময় স্পেসশিপে করে মহাবিশ্ব ভ্রমনে বের হতো। এমনকি সে পৃথিবীর আশে পাশেও এসেছে। আর সে জন্যেই সে মহাবিশ্বের গ্রহ-নক্ষত্রের কনস্টেলেশন বলতে পারে নির্ভুলভাবে। পৃথিবীর মানুষ মঙ্গলের মাটির রং লাল হিসাবে জানলেও সেটা নাকি আসলে কমলা। সেখানে কোন গাছপালাও নাই।
ইন্টারনেট থেকে নেওয়া বরিস্কার ছবি:
প্রিয় পাঠক, কেমন যেন সব গল্প মনে হচ্ছে তাই না? আপনারা দেখতে পারেন বরিস্কার উপর ইউটিউব ভিডিও। তাকে অনেকবারই অনেকের সামনেই দিতে হয়েছে সাক্ষাতকার। প্রজেক্ট ক্যামেলটও হাজির হয়েছে তার কাছে। সেই বরিস্কা এবার বলছে ২০১১ তে পৃথিবীর বুকে ঘটতে যাচ্ছে ভয়াবহ বিপর্যয়। এর আগে সে বলেছিল ২০০৮ এ একটি মহাদেশ সর্বনাশ ঘটবে।
অনেকই বলেন চায়নার সিচুয়ান প্রদেশে ঘটে যাওয়া ভুমিকম্পটাই ছিল বরিস্কার ভবিষ্যতবাণী। কয়েক লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল সেই ভয়াল ভুমিকম্পে। সে বলছে ২০১১ তে তিনটি বিপর্যয় হবে এবং একটি বড় বিপর্যয় ঘটবে ২০১৩ তে। অনেক মানুষই বরিস্কার এই ভবিষ্যতবাণী নিয়ে শংকিত এবং তারা ভাবছে কি ধরণের বিপর্যয়? এটা কি শুধু ভুমিকম্প নাকি অন্য কিছু।
বরিস্কার মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণও আছে।
এ্যাস্ট্রোনমির গুরুদেব ষ্টিফেন হকিংসও বরিস্কার প্রতিভা বিশ্বাস করে । ইউনিভার্স নিয়ে বরিস্কার নলেজকে প্রশংসাও করেছে হকিংস। বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী সবাইকে সতর্ক করে বলেন বরিস্কার ভবিষ্যববাণীকে উপেক্ষা করা উচিৎ নয়। হকিংস আরো বলেন, " বরিস্কা মঙ্গল গ্রহ থেকে এসেছে নাকি পৃথিবীই তার একমাত্র আবাস সেটা বিষয় নয় বরং মহাবিশ্বের উপর বরিস্কার যে নলজে রয়েছে সেটা আমার কল্পানার বাইরে"।
আমরা যেমন অন্য গ্রহের খোঁজ-খবর নিতে পাঠায় ভাইকিং, ফোবোস, পাথ-ফাইন্ডার, এম.এস.এল/কিউরিয়াসিটির মতো মহাকাশযান।
অন্যরাও হয়তো পৃথিবীর দিকে পাঠাচ্ছে বিশাল সব স্পেসশিপস । সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আসলেই কি একদিন মানুষ এবং এলিয়েনের মধ্যে সম্পর্ক/যোগাযোগ গড়ে উঠবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।