আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অযোধ্যার গোলাপ বনাম বিজেপির পদ্ম ফারুক ওয়াসিফ | আজকের প্রথম আলোয় প্রকাশিত

একটা আটপৌরে ঘরোয়া সাদামাঠা প্রেমের কবিতা লিখতে চাই

: ২৫-১২-২০১০ « আগের সংবাদ পরের সংবাদ» ভারত রাষ্ট্রের জন্য বড় হুমকি সরকারি দুর্নীতি, না হিন্দু জঙ্গিবাদ, তা নিয়েই এই মুহূর্তে সরগরম দেশটির রাজনীতি। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট নেমেছে সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আর কংগ্রেস শুরু করেছে বিজেপি-আরএসএসের হিন্দু জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে বাক্যযুদ্ধ। টুজি স্পেকট্রাম টেলিকম দুর্নীতির দায়ে এরই মধ্যে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে এবং জড়িত হয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নাম। অন্যদিকে গত কয়েক বছরে বড় নাশকতাগুলোর সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস ও বিজেপির হাত আবিষ্কৃত হয়েছে।

গোলমালে সত্য চাপা পড়ে, আবার মিথ্যার হাঁড়ি হাটের মধ্যে ভেঙেও যায়। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ‘লস্কর-ই-তাইয়েবার চাইতেও ভারতের জন্য বড় হুমকি হিন্দু জঙ্গিবাদ’। কথাটি অরুন্ধতী রায় বলেননি, বলেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এবং নেহরু পরিবারের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হিসেবে ভাবি প্রধানমন্ত্রী রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধীও দলের সম্মেলনে এরই প্রতিধ্বনি করেছেন। বিজেপি-আরএসএস জোটের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সরকারকেও বলা হয়েছে, হিন্দু জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোরতা দেখাতে। কংগ্রেসের আরেক সাধারণ সম্পাদক এবং মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং গত রোববার বলেছেন, হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মতো বিজেপিও জাতীয়তাবাদের নামে মুসলিম হত্যা করছে। এর আগে ভারতে পর পর বোমা বিস্ফোরণগুলোর পেছনে বিজেপির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণে পার্লামেন্টে তথ্যপ্রমাণ হাজির করার কথাও বলেছিলেন। এর আগেই আলোচিত জঙ্গি-নাশকতার ঘটনাগুলোর সঙ্গে বিজেপি-আরএসএস তথা সংঘ পরিবারের সরাসরি সংযোগ আবিষ্কৃত হয়। গোধরা ট্রেনে অগ্নিসংযোগের যে ঘটনার অজুহাতে গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির সরকার দুই হাজারেরও বেশি মুসলমান হত্যা করে—সরকারি তদন্তে সেটিও হিন্দুত্ববাদীদের অন্তর্ঘাত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

মালেগাঁও, আজমির, মক্কা মসজিদ, আহমেদাবাদসহ বড় বড় সব বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে আরএসএসের যোগাযোগও অজানা নয়। নাশকতার অভিযোগে বিচার চলছে ১০ হিন্দুত্ববাদীর। এমনকি সামরিক বাহিনীর মধ্যেও তাদের লোক রয়েছে। মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ স্কোয়াড সন্ন্যাসিনী সাধ্বী প্রজ্ঞা, কর্নেল প্রসাদ পুরোহিত ও সাবেক মেজর রমেশ উপাধ্যায়কে জেরা করে ভারতজোড়া জঙ্গি নেটওয়ার্কের খোঁজ দিয়েছে। সংঘ পরিবারের তরফে বাংলাদেশে হিন্দুদের নির্যাতনের প্রতিশোধে এখানেও হিন্দু জঙ্গিবাদের শাখা খোলার সংবাদও প্রকাশ পায়।

(টাইমস অব ইন্ডিয়া, ২৪ নভেম্বর ২০০৮)। এদের জবানি থেকে জানা যাচ্ছে, বিভিন্ন রাজ্যে চালু আছে প্রশিক্ষণ-শিবির। দিগ্বিজয় সিংয়ের প্রশ্নটি তাই উপেক্ষা করা যায় না যে সব হিন্দুই জঙ্গিবাদী নয়, কিন্তু সব হিন্দু জঙ্গিবাদীই কেন আরএসএসের সদস্য? এখন বলা কঠিন যে ভারতীয় গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রধান হুমকি সীমান্তের ওপারের জঙ্গিরা। তাহলেও এ সপ্তাহেই ভারত জঙ্গি দমনে মার্কিন কায়দায় অন্য দেশে সেনা অভিযান চালানোর আইন পাস করেছে। কিন্তু ‘হিন্দু জঙ্গিবাদ’ বলে যাকে দেখা যাচ্ছে, তার জন্ম ও বাড়বৃদ্ধি খোদ ভারতীয় সমাজ-রাষ্ট্রের ভেতরই।

একে তাহলে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে? ভারতের শাসনক্ষমতায় অন্যতম প্রধান দল হিসেবে এবং সাত-আটটি রাজ্যের সরকার হিসেবে কায়েম হয়েছে। আদভানি ও বাজপেয়ী ১৯৭৭ সালে মন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৯৯ সালে বিজেপি করেছিল সরকার গঠন। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে মূলত সামরিক শাসন ধর্মীয় ফ্যাসিস্টদের পেলেপুষে বড় করেছে, আর ভারতে তা বেড়ে উঠেছে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ঝালরের আড়ালে। সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করার মাধ্যমে এই হিন্দুত্ববাদ ভারতীয় রাষ্ট্রের সংহতিকেই ভেতর থেকে আলগা করে দিচ্ছে। উপমহাদেশে দ্বিজাতিতত্ত্বের গোড়াপত্তনও কিন্তু হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের প্রবক্তা বিনোদ দামোদর সাভারকারের হাতেই হয়।

হিন্দু মহাসভার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সেই উনিশ শতকের শেষদিকেই ভারতবর্ষে প্রথম ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিষবৃক্ষ রোপণ করেন। গান্ধীর আবির্ভাবে এই রাজনীতি দুর্বল হয়ে যায়। তাহলেও ভারতীয় কংগ্রেস কমবেশি এই ধারাকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে। নেহরুর সময়েই বাবরি মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্ব আরও গভীর হয়। ইন্দিরা গান্ধীও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার করেন।

রাজীব গান্ধীর আমলে অযোধ্যায় প্রথম রামমন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেস আমলেই দাঙ্গা হয়েছে বেশি এবং পুলিশ থেকেছে প্রায় নিষ্ক্রিয়। ভারতের সব প্রধানমন্ত্রীই রাজনৈতিক সুবিধার জন্য হিন্দুত্ববাদীদের হাতে রাখার চেষ্টা করেছেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্য প্রশাসনকে দিয়ে গণহত্যা ঘটিয়েও ‘দায়মুক্তি’ পান। স্বকণ্ঠের স্বীকারোক্তি ও প্রমাণ থাকার পরও জড়িতদের প্রায় কারও বিচার হয়নি।

দেশ পত্রিকার বর্তমান সংখ্যার প্রচ্ছদ প্রতিবেদনেও নরেন্দ্র মোদিকে সুশাসনের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। রতন টাটা বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির গুজরাট বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য। আজ কংগ্রেস দুর্নীতির বদনাম ধুয়ে ফেলতে এবং মুসলিম ভোট জয় করতে বিজেপিবিরোধী হয়ে উঠলেও দলটির অতীত রেকর্ড খুব একটা সুবিধার নয়। সম্প্রতি ভারতীয় গবেষক রণজয় সেন তাঁর লিগালাইজিং রিলিজিয়ন বইয়ে দেখিয়েছেন, কীভাবে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায়ে হিন্দুত্ববাদ আইনি ভিত্তি পায় এবং ধর্মনিরপেক্ষতা দুর্বল হয়। বাবরি মসজিদের জমি ভাগাভাগি নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ও কার্যত বিজেপির রাজনৈতিক দাবিকে ধর্মীয় অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে।

সমাজতাত্ত্বিক আশীষ নন্দী তাঁর ক্রিয়েটিং ন্যাশনালিটি বইয়ে দেখান, কীভাবে ভারত রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পক্ষপাত হিন্দু জাতীয়তাবাদকে প্রবল করেছে। উইলিয়াম গৌল্ডের হিন্দু ন্যাশনালিজম অ্যান্ড দ্য ল্যাংগুয়েজ অব পলিটিকস ইন কলোনিয়াল ইন্ডিয়ায় দেখান, কংগ্রেস নেতাদের বক্তৃতা ও সিদ্ধান্তগুলো কার্যত হিন্দুত্ববাদের সহায়ক হয়। গবেষক ও লেখক উইলিয়াম ডালরিম্পল তাঁর ‘স্পিরিচুয়াল অ্যাওয়াকেনিং’ প্রবন্ধে বলেন, ভারতে আধুনিকতা, প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধর্মীয় পুনর্জাগরণ। মন্দির রয়েছে ২৫ লাখ, কিন্তু বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৫ লাখ আর হাসপাতাল মাত্র ৭৫ হাজার। ধর্মীয় তীর্থস্থানগুলোই ভারতীয় পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য।

হিন্দুস্তান টাইমস-এ প্রকাশিত এক জরিপে ৩০ শতাংশ ভারতীয় বলেছে, গত পাঁচ বছরে তারা আরও বেশি ধর্মমুখী হয়েছেন। গবেষক মীরা নন্দ তাঁর দি গড মার্কেট বইয়ে জানান, ভারতে সর্ববৃহৎ নেটওয়ার্কটি একটি ধর্মসংগঠনের। ধর্মপ্রচারক শ্রীশ্রীরবিশঙ্করের বিশ্বব্যাপী অনুসারীর সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। ভারতীয় সরকারি-বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত বিজ্ঞাপন, সিরিয়াল ও অন্যান্য অনুষ্ঠান সুকৌশলে বিনোদনের আড়ালে ধর্মীয় সংস্কার ও রক্ষণশীল বিশ্বাস জাগানোর চেষ্টা দেখা যায়। পলিটিকস আফটার টেলিভিশন গ্রন্থে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অরবিন্দ রাজাগোপাল লিখেছেন: ‘১৯৮৭ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে সমস্ত ভারতীয় দর্শকদের উদ্দেশে হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ-র ধারাবাহিক প্রচার শুরু করে।

এরই ফলে রামকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক অভিযান দেখা যায়। এভাবে হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ভারতীয় রাজনীতির গঠন বদলে দিল। দর্শকেরা ভেবেছে, তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মহাকাব্যিক স্বর্ণযুগে, কিন্তু হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা তখন নিওলিবারেলিজম ও বিশ্বায়নকে আলিঙ্গন করছেন। এই আন্দোলন বেগবান হওয়ার অন্যতম প্রধান অস্ত্র ছিল টেলিভিশন। ’ আজও সেই ধারা অব্যাহত আছে, হিন্দি সিরিয়ালগুলো তার প্রমাণ।

দূরদর্শনে প্রচারিত রামায়ণ টেলিসিরিয়ালের দিনক্ষণ ও কাহিনির পর্ববিন্যাস আর বিজেপির বাবরি মসজিদমুখী রথযাত্রার দিনক্ষণের মধ্যে আশ্চর্য মিল লক্ষ করেছেন রাজাগোপাল। দাঙ্গার ইতিবৃত্ত নিয়ে আশীষ নন্দীর নেতৃত্বে একটি গবেষণায় দেখা যায়: ভারত যত আধুনিক হচ্ছে ততই সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ঘটছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সেখানে ভোট বাড়ায়। বাবরি মসজিদের ঘটনার আগে বিজেপির আসন ছিল ৮৯টি, পরে হয় ১১৩টি। এভাবে ১৯৯৯ সালে ১৭৯টি আসন পেয়ে তারা সরকার পর্যন্ত গঠন করে।

গত চার দশকে দাঙ্গার হার বেড়েছে প্রায় আট গুণ। বেশির ভাগ দাঙ্গাই হয়েছে শহরে এবং এসবের হোতারা বেশির ভাগই শিক্ষিত ও আধুনিক নাগরিক। বিজেপির সমর্থন কেবল ভারতীয় পুঁজিপতি শ্রেণী থেকে শুরু করে দরিদ্র হিন্দুদের মধ্যেই নয়, শহুরে মধ্যবিত্ত পেশাজীবী এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও পশ্চিমা লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত তরুণদের মধ্যেও ব্যাপক। এ জন্যই বিজেপি আসলে ভোটের দল, দাঙ্গা বা জঙ্গিবাদ নির্বাচনে জিতবার কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়। বলা দরকার, হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে সনাতন হিন্দুধর্মের সম্পর্ক অতি ক্ষীণ।

নরেন্দ্র মোদি শিল্পাঞ্চল গঠনের জন্য অজস্র মন্দির ভেঙেছেন। সম্প্রতি আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থিত মন্দিরটিও ভাঙা হয়। একসময় মহাত্মা রামকে তাঁরা মনে করত অতিমাত্রায় মেয়েলি, এখন মনে করে পুরুষোত্তম। সাবেক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই বলেছিলেন, বিজেপি হিন্দুধর্মের বহুত্ববাদী উদারতাকে নষ্ট করে একেশ্বরবাদী করে তুলছে। ধর্মের আড়ালে চালানো সম্ভব হচ্ছে সর্বধর্মের দরিদ্রদের ধোঁকা দেওয়া শোষণ।

হবু পরাশক্তি ভারতের উদরে এখন লড়াই করছে পরস্পরবিরোধী দুটি ধারা। একটি গণতন্ত্র অন্যটি ফ্যাসিবাদ। উপমহাদেশের গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও মানবিকতার চেতনা সবচেয়ে জোরদার ভারতীয় সমাজেই। আবার ভারতের রাজনীতিতেই প্রোথিত রয়েছে সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বিষবৃক্ষ। গান্ধীর মানবিক ভারত আর সাভারকারের উগ্র হিন্দু ভারতের শতবর্ষ প্রাচীন স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্ন এখনো লড়াই করে যাচ্ছে পরাশক্তির ছাতার তলে।

ইতিহাসের রসিকতা এমনই, গান্ধী ও জিন্নাহ দুজনই ছিলেন গুজরাটি। অশোক ও আকবরের উদার উত্তরাধিকারের মুখ্য জিম্মাদারও ভারত। কংগ্রেসসহ ভারতের অসাম্প্রদায়িক মহলের সামনে তাই সুযোগ এসেছে বিজেপির শেকড় কাটবার এবং কথা ও কাজে মিল আনবার। গান্ধী পরিবারের কাছে অনেকের প্রত্যাশাও এটাই। অযোধ্যার কথা বলেই শেষ করি।

এই অযোধ্যা ছিল ভারতবর্ষের সবচেয়ে শান্ত ও সুখী এলাকাগুলোর একটি। সেখানকার মন্দিরগুলোয় লেখা ছিল, মুসলমান নবাবেরা এই শহর তাদের উপহার দিয়েছে। অযোধ্যার বেশির ভাগ মন্দিরও নবাবি আমলে তৈরি। এখনো সরাসরি একটি মন্দির চালায় মুসলমানরা। কয়েক বছর আগেও রামের সিংহাসন, মুকুট বানিয়ে সম্মানিত হতো মুসলমান কারিগরেরা।

পূজারিরা ভক্তি ভরে মন্দিরে যে নৈবেদ্য অর্পণ করতেন, তাও তৈরি হতো মুসলমানদের হাতে। এক মুসলিম দানবীর সব সম্পদ দিয়ে মন্দির বানিয়ে সেখানেই বাস করতেন, জীবন ধারণ করতেন পূজারিদের দানে। অযোধ্যার মন্দিরগুলোতে যে পুষ্প নিবেদিত হয়, আজও তা মুসলমানদের বাগানেই ফোটে। এই ফুলই ফোটাতে চেয়েছিলেন অশোক, আকবর, কবীর, নানক ও গান্ধীর মতো ব্যক্তিরা। কিন্তু কী পরিহাস, বিজেপির প্রতীকও যে পদ্মফুল! ফারুক ওয়াসিফ: সাংবাদিক।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।