আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কফি হাউজ--- (৩)



প্রথম পর্ব থেকে যারা সাথে ছিলেন তাদেরক অসংখ্য ধন্যবাদ। আর যদি কেও প্রথম দুই পর্ব পড়তে চান তাহলে ঐখানে ক্লিক করেন। কফি হাউজ- ১ Click This Link কফি হাউজ- ২ Click This Link ফিরতে হল ফাসেক আলীকে নিয়ে-- উপায় নেই, অদ্ভুদ চরিত্রের এই বালককে নিয়ে। যৎসামান্যে শেষ করা সম্ভব না। আগেই বলেছি বরাবরই পেছনের বেঞ্চে।

প্রথম বারে এসএসসি পাশ করা হয় নাই তার। দ্বিতীয় বারে কোনমতে। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয় নাই। চাকুরীতে ঢুকেছে অন্যান্য বন্ধুদের থেকে অনেক আগেই। অন্যান্য রা যখন পড়া লেখায় মশগুল ও তখন চাকুরীরত।

বন্ধুদের মাঝে প্রচন্ড বাচাল হলেও বাড়ীতে সম্পূর্ণ আলাদা; পচ্ছন্দ করে না একদম হইহুল্লো; বাবার ক্ষেতে কাজ করে স্বানন্দে- প্রতিদিন পাবলিক লাইব্রেরীতে তার ঢুকতেই হবে খবরের কাগজ পড়ার জন্য। আগেই বলেছি আমরা সবাই গ্রামের; ওর বাবা ব্যাংকের সামান্য কর্মচারী ছিল তাতে মোটেও চলা সম্ভব ছিল না ৫ভাইবোনের বহর; সাথে যুক্ত ছিল বড় ভাইয়ের স্ত্রী সন্তানাদী। ইন্টারমিডিয়েটে যখন সবাই প্রেমে মশগুল হয়েপরে ওর মাঝে ছিলনা এ ধরনের কোন অনুভূতিই। ইন্টারমিডিয়েটে এসে ছাত্র হিসেবে সে প্রতিষ্ঠিত পেয়েছিল বাংলা ও কম্পিউটারে সুন্দর নোট; দ্রুত হাতের লেখা, আর একটু মাস্তানিসহ কঠিন ব্যক্তিত্বের অধিকারী হওয়ার কারনে। ওর গ্রামের বাড়ীর সম্পর্কের এক বন্ধুর ভাগ্নের মামা ডাকে পরিচিত ছিল কলেজ 'মামা'নামে।

লম্বায় ৫ফিট ৮ ইঞ্চি লম্বায় গৌর বর্ণ হওয়ায় সব মেয়েরাই কোন ঘেষে যেত ওর; যেখানেই যাক মেয়ে বন্ধু একজন আছেই। ভালও বাসত এক সুজাতা প্রচন্ড রকমে, বোঝাতে চেয়েছে অনেকবারই কিন্তু- ও যেন বালক, কোন জ্ঞানই নেই এই বিষয়ে। জিরো থেকে যারা হিরো ও হয়তো তাদেরই দলে। হাতি জালাল যার নাম- নাম শুনেই বুঝতে পারছেন স্বাস্থ্যগত অবস্থা। কৈশরেই বিশাল দেহের অধিকারী হওয়ায় নামটিও পায় অংকের টিচারের কাছ থেকেই।

অত্যন্ত পারিবারি দুরদশা থেকে যারা বেরিয়ে এসেছে তাদের মধ্যে অন্যতম। শিক্ষা জীবনে কোন দ্বিতীয় বিভাগ নেই। বরাবরই প্রেমে ব্যর্থ এবং মেয়ে পক্ষের শালিস দরবার সয্য করতে হয়েছে শুধু আর্থিক দৈনতার কারনে। এখন অংকের টিচার এক নাম করা স্কুলের। জনক হয়েছে এক পুত্র সন্তানেরও।

গত পর্বে ছিল সিটিসি এবর আসব এসএমএস কে নিয়ে। বিটিসি যখন নামকরা তখনই এসএমএস শুরু করল; শফিক-মৃদুল-শামিম। ক্লাসে যে রাফ খাতা গুলো ব্যবহৃত হয় তাতে ঐ নামই শোভ পেত তিনজনেরই বিটিসি পরবর্তীতে সিটিসি'র মত করে এসএমএস; এমনকি বাগানের গাছেও খোদায় করে। এসএমএস এর শফিক'ই ফাসেক আলী। নতুন করে বলার দরকার নাই।

মজার ব্যপার হল তিন বন্ধু তিন স্কুলের এ যেন গলায় গলায় পিরিতি শুধু প্রাইভেট টিচার একছিল বলে। মৃদুল-- হিন্দু কায়স্থ সম্প্রদায়ের তাই বন্ধুদের মাঝে কথ বলত কম; ছাত্র হিসেবে বরাবরই ভাল কিন্তু বাংলা লেখা'র সেকি দশা, কখনই মাত্রা দিতে পারত না; এখনও পারে কিনা জানি না; হিসাব বিজ্ঞানে পড়ালেখা করে চাকুরী করে ব্র্যাকে। বিয়ে করেনি এখনও; বলাবাহুলা হিন্দু সম্প্রদায়ের উচ্চ বংশীদের বিয়ে ৪০শের আগে না। শামীম- জীবনের প্রথম প্রেমেই ছ্যাকা- সিটিসির টির কাছ থেকে (আমার একটা লেখায়- আমার প্রথম প্রেমে ছ্যাকা খাওয়ার কথা বলেছি বলে ধরে নিয়েন না আমিই কিনা, হেই কিন্তু আমার সম্পর্ক আবার মামু লাগে); ভাড়া থাকত আমাদের এলাকায় এসএসসি পাশের পর চলে আসে স্ব জিলা ফরিদপুরে বাবার চাকুরী পরিবর্তনের সাথে সাথে। অত্যন্ত মেধাবী হওয়া সত্বেও অনার্স করেছে ফিজিক্স-এ কোন রকমে পাশ; শুধু স্কাউটের পেছনে অধিকতর সময় দেয়ার কারনে।

প্রথমে চাকুরী করত একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। এমবিএ করেছে মার্কেটিং এ; এখন চাকুরী করে রিয়েল স্টেট কোম্পানীতে। বিয়ে করে নাই; ওর বাবা নাকি ওকে বীজ হিসেবে রেখেছে। তাহমিনা আক্তার-- ৫ফিট ৫ইঞ্চি লম্বায় অপরূপা হলেও কন্ঠ যার ছিল পুরুষের মত। সংসারে অসুন্থ পিতা আর দারিদ্রতার কষাঘাতে পড়ালেখা ঐ ইন্টারমিডিয়েটই সমাপ্ত।

বিয়ে করে ২ সন্তানের জননী। বোরখাওয়ালী-- নামেই বুঝছেন; বোরখাই যার বেশ। ইন্টারমিডিয়েট থেকে শুরু করে পড়ালেখার শেষ পর্ব পর্যন্ত সাথে ছিল। কিন্তু তার মুখের দর্শন মেলেনাই কারো; অত্যন্ত কৃষ্ণবর্ণ ছিল তা বোঝা যায় হাত ও পা থেকেই। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন কটুকথা সহ্যকরেও শেষ পর্যন্ত ধরে রেখেছিল ঐ বোরখাটি।

নূরজাহান-- বলবার মত কিছু নেই; এক বাপের একবেটী হওয়াতে অহংকার একটু বেশীই ছিল; একদা ফাসেক আলী ওর কলম ধার নিয়ে আর ফেরত না দিয়ে চোর বলে উপধী দিয়েছিল ফাসেক আলীকে। এই চোর উপধী নিয়ে রঙ্গ রসের অনেক মন্তব্যে বেচারী ছিল দিশেহারা। পড়া লেখা ঐ ইন্টারমিডিয়েটেই; এখন তার উকিল জামাই; মামলায় দরকার পরলে যোগাযোগ করবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।