তার্কিক দুই প্রকার: সু-তার্কিক আর কু-তার্কিক...
আপনি আপনার বিষয়ে ডক্টরেট সার্টিফিকেট অর্জন করলেও সেই বিষয়ের মাধ্যমিক পর্যায়ের কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হতে পারবেন না। সার্টিফিকেটের কোন মুল্য নেই এনটিআরসিএ-এর বিধিমালায়- দেশের সকল বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ মাধ্যমিক পর্যায় থেকে শুরু করে সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে কোন একটি পদের জন্য আবেদন করতে হলে- আপনাকে বাংলা, ইংরেজী, গণিত সহ সাধারন জ্ঞান, এই ৪টি বিষয়ের উপর পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে হবে। অতঃপর আপনার প্রার্থীত পদের বিষয়ের পরীক্ষা তো আছেই।
আগেই বলা হয়েছে .. শিক্ষক হতে আগ্রহীগন যারা এই পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করবে তাদের প্রত্যেকেই দুইটা পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে হয়। একটা হলো আবশ্যিক: যাতে বাংলা, ইংরেজী, গণিত সহ সাধারন জ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ন হতে হয়।
আর একটা হলো পরীক্ষার্থী যে পদটির জন্য আবেদন করলেন সেই বিষয়ের পরীক্ষা। মাত্র দু’টো পরীক্ষার জন্য ৪৩৫/= টাকা ফি দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে- পাশ-ফেল ছাড়া আর কিছুই পরীক্ষার্থী জানতে পারেন না। পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের পর সেই প্রার্থী উত্তীর্ন হলে উত্তীর্ন এবং তার সনদ পাবেন। আর না হলে উনুত্তীর্ন এ ছাড়া আর কোন কিছুই জানতে পারেন না।
যার অর্থ একজন পরীক্ষার্থী একটা পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে তিনি সাধারন জ্ঞানে ফেল করলেন- নাকি নিজের প্রার্থীত পদের বিষয়ের পরীক্ষায় ফেল করলেন- তার কিছুই তিনি জানতে পারবেন না।
যাতে সামনের বছর আবার পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য তার ফেল করা বিষয়ে অধিক অধ্যয়ন করে প্রস্তুতি নিতে পারেন। বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় সহ কোন প্রতিষ্ঠান অথবা পৃথিবীর কোন দেশে- কোন আইনে কি পরীক্ষা নেওয়ার পর এভাবে সঠিক রেজাল্ট না জানানোর কোন সিষ্টেম আছে কিনা ? আমার জানা নেই।
প্রশ্ন হলো: এটা কি অধিকার হরন বা এক ধরনের প্রতারনা নয়? (পাঠকবৃন্দের মতামত চাইছি)
একদিকে যেমন দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে অনেক জগা-খিচুরী শিক্ষককে নিয়োগ দিয়ে বেতন দেয়া হচ্ছে- যাতে ১৮ জন ষ্টাফের মধ্যে ১৮ জন ছাত্র ও নাই। একাধিক তৃতীয় শ্রেণী প্রাপ্ত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হয়ে আছেন। তাদের বেলায় আইনের কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
অপরদিকে এখন অনেক যাচাই বাছাই করে প্রকৃত লোকটিকে যখন নিবন্ধন সনদ দেয়া হলো: তিনি এই সব প্রতিষ্ঠানে চাকরী করবেন না। কারন যে বেতন পাবে তা যথার্থ নয়-- সকল বিষয়ে পারদর্শী একজনের তো প্রয়োজন নেই এই চাকরী করার। তাই নয় কি ? (আমি এক জনের কথা জানি-যে নিবন্ধন সনদ পেয়েও চাকরী করে নাই)
এবার ২০১০ এর বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন প্রকৃয়ায় ৩০০০ (তিন হাজার) আবেদন বাতিল হয়েছে- মর্মে একজন আবেদনকারীর মাধ্যমে জানতে পারি। (আমার জানা ৩ জন) যাদের প্রত্যেকে ৪৩৫+১০+১০০=৫৪৫ টাকা খরচ করে আবেদন করেছিল। যার মধ্যে ৪৩৫ টাকা করে এনটিআরসিএ টেলিটকের মাধ্যমে নিয়েছে।
অতএব ৪৩৫*৩০০০=১৩০৫০০০ (তের লক্ষ, পাঁচ হাজার)
উপরোক্ত বিষয়ে আমার প্রশ্ন হলোঃ এই তের লক্ষ, পাঁচ হাজার টাকা কি এই দেশের আমার মত গরীব জনগনের কাছ থেকে স্বচ্ছ বা বৈধ আদায়? এমন কোন ব্যবস্থা কি নেওয়া যেতনা? যারা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য এডমিট কার্ড পাবেন শুধুমাত্র তাদেরকেই ফি দিতে হবে।
অথবা- ব্যবসা করাই যদি সরকার বা এনটিআরসিএ-র উদ্যেশ্য হয় তাহলে আবেদনকারী বা টাকা প্রদানকারী সকলকেই পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে দেওয়া হলে- যদি সেই প্রার্থী উত্তীর্ন হয়েই যায় তাহলে তার এনটিআরসিএ-র সনদ বিতরনের সময় অন্যান্য সনদের শর্ত পুরন না হলে তার সনদ বাতিল করা হবে। অথবা পরীক্ষা নিয়ে তাকে সনদের শর্ত পুরন না করার কারনে অনুত্তীর্ন ঘোষনা করা হবে। ত তাহলে অন্তত ধরে নিতাম যে- এই টাকা আদায় প্রকৃয়াটা বৈধ হয়েছে।
শিক্ষকতা পেশার মত মহান পেশায় যাবার আগেই সনদপ্রার্থীরা কি এক ধরনের জুয়ার মুখমুখী হতে হলোনা? আর শিক্ষক নিবন্ধন সনদ পেলেই কি একজন প্রাথীর চাকরী হয়ে যাবে? তারপরে কি আরো অনেক জটিল প্রকৃয়া একজন প্রার্থীকে অতিক্রম করতে হয়না? শিক্ষা মন্ত্রনালয় বা এর আইন প্রণেতারা এই বিষয়টিকে কিভাবে ব্যাক্ষা করবেন?
(পাঠকের মতামত চাইছি)
মোট কথা: অগনিত অসঙ্গতির দোলাচলে চলছে দেশের শিক্ষা মন্ত্রনালয়- আর এই সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীন এনটিআরসিএ- নামক প্রতিষ্ঠানটি।
যার কোন উত্তর এবং মিমাংশা জানা নেই।
সবশেষে একটা সন্দেহ মনে জেগে উঠেছে- শিক্ষক হবার আগে সনদ নেওয়ার এই ব্যবস্থাটি চালু করার সময় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী উসমান ফারুক কি আসলেই-এটি ভালর জন্য করে ছিলেন? নাকি তার আর্শিব্বাদপুষ্ট কাউকে এই প্রতিষ্ঠানটির সর্বোচ্চ পদে বসানোর জন্য এই আইন এবং প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করে ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির সকল কাজের সমালোচনা করলেও এই আইন এবং প্রতিষ্টানটির বিষয়ে অজ্ঞাত কারনে নীরব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।