হঠাৎ করেই ক্যামন করে মনে পড়ে যায় সে আমাদের সঙ্গে আর নেই। কতটা সময়....২৫টি বছরের মতো সে আমাদের সঙ্গে ছিলো। অপমান, অবহেলায় যে ব্যথা জমে মনে তাতে হয়তো তীব্র আগুন থাকে। সেই আগুনে পুড়ে গেল সে। তার শরীরের পোড়া ঘ্রাণ গেথে গেল অস্তিত্বের গভীরে।
হঠাৎই পথ চলতে চলতে, দৈনন্দিন স্বাভাবিকতার মধ্যে কোথাও থেকে জেগে ওঠে সেই পোড়া ঘ্রাণ। অস্থির মন হু হু করে ওঠে। ....বোনটা যে আমার আর নেই। বোনের জন্য এতটা ভালোবাসা মনে পুষতাম.....কোনদিন বুঝিনি।
ঈদ আসছে।
চারিপাশে গোল বাধানো আনন্দের মধ্যে দূরে কোথাও বিষাদের সুর বাজছে যেন। সেই সুরে মর্ত্যরে প্রিয় হারা কত মানুষের মতো বুকের মধ্যে আকুলি বিকুলি। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝি কতটা তীব্রতায় বিষাদের সুর ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে তাকে। হয়তো ঈদের একটা পর্বই কাটবে তার অবারিত চোখের জলে। আমি হয়তো সেটা পারবো না, নিরন্তর চেষ্টায় গলা বেয়ে উঠে আসা দলাপাকানো কষ্ট গিলে ফেলবো।
ঈদের আগে কতজনকে কতকিছু দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠলো, চললো তা কেনার আয়োজনও। এবার আর তার নাম কেউ উঠায়নি। অন্যবারের মতো মাও আবদার ধরেননি তার একমাত্র মেয়ের জন্য।
যখন ছোট ছিলাম, ঝগড়া করতাম। মনে মনে বলতাম সে গেলেই বাঁচি।
তার বিয়ে হলো। বুকের ভেতরটা ক্যামন করে। রাতে শুয়ে বোনের জন্য কী এক মায়ায় অঝোরে চোখের পানি ঝড়ে। দিনে মাকে বলি মা, ও যা চায় আমাকে বলবেন। সেই থেকে যা চায় তাই দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
ঈদ আসলে মেয়ের জন্য মায়ের কত আবদার। মিতুকে এটা দিবি..ওটা...দিবি। বউ হয়তো সবকিছু সহজভাবে নাও দেখতে পারে। তাই না জানিয়েও কত কিছু দিয়েছি। ছোটবেলার সেই নির্দোষ চাওয়া পূরণ করে আমাদের সে চিরতরে বাঁচিয়ে দিয়ে গেছে।
সবকিছুর পর মনে হয় এটাই নিয়তি। পৃথিবীতে আমাদের নিয়ে কেউ নিরন্তর খেলছে। সেই খেলার অংশ হয়ে কেউ হাসছি, কেউ কাঁদছি। আমরা দুর্বল, আমরা পুতুল। তাই আরো কত খেলার অনুষঙ্গ হিসেবে আরো কতো মর্মান্তিক, বেদনার, আনন্দের সাফল্যের ঘটনা ঘটবে....ঘটতেই থাকবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।