আমি উঠে এসেছি সৎকারবিহীন
শেষ অবলম্বন
অথচ
এমন হবার কথা ছিল না মোটেও;
দখিনা হাওয়াকে ঝড়ের পূর্বাভাস ভেবে
হাঁড়িকাঠের ঠিকানা পেয়েছিল শরীর ও সময়।
তারপরেও
সমস্ত ভুলে বিভ্রান্ত হয়ে পড়লে
জমিন চিরে দিয়েছিল লাঙল তড়িৎ।
কেন?
কেন আমাদের স্পর্শ, ঘামে, নির্বাপিত কামে,
নির্মোহ শোকে ভেজা নিঃসঙ্গ যামে।
অনাহুত আগন্তুক কেউ
টোকা দিয়েছিল অনড় দ্বারে?
যখন
শেষ অবলম্বন মৌনতায় ডূবে গিয়ে
কারো কখনও হয় নি বলা,
"ভালোবাসি অন্ধকার..."
বিশুদ্ধ
শ্বদন্ত কেটে বসলে শাঁসালো জিঘাংসায়
আমাদের রক্তমাংসের শরীরে;
কি এক আকুলতায় আঁকড়ে ধরেছ
প্রাগৈতিহাসিক সময়!
অথচ ওতে কোন লাভ নেই...
এরচেয়ে
বরং পচে-গলে মিশে যাও মৃত্তিকায়;
আমরা খুঁটে খুঁটে শব্দগুলো কুড়িয়ে নেবো।
[৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০]
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
এখন কিংবা তখন...
স্মৃতি জিনিশটা কোনও এক শাদা চুলের ডাইনীর মতো বসে আছে ঘোলাটে অন্ধকার একটা হোটেল রুমে, আর এই হোটেলের নাম 'ইনসমনিয়া'।
সেই ডাইনী যখন তখন নিজ শরীরে নিষ্ঠুর কাঁচি চালিয়ে ঝাপসা করে দ্যায়, কিংবা সময়ের সাথে ঘষা খেয়ে খেয়ে ধুলোর গন্ধ জোটায়। রঙিন ছবিগুলো এখনও ধূসরপ্রবণ, কখনও আবার ওদের উপর ইরেজার চলে অন্য লেয়ারগুলোর।
বছর কয়েক আগে যখন...
এক কথককে খুন করে, তার লাশ গুম করে, স্ফুলিঙ্গকে আগুন করে আর রাতগুলো আরো নির্ঘুম করে আমি ফিরে এসেছিলাম এই ইঁদুরের গর্তটাতে; একবারও ভাবি নি যে এই ব্ল্যাকবোর্ড আর শাদা চকের ঠিকানা খুঁজে পাবো নতুন করে। অথচ পদ্মা দুঃস্বপ্নে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সূর্যাস্তে একঝাঁক শাদা কাক দেখাবার। যদিও পরবর্তী সন্ধ্যেয় দেখছিলাম চরের বালি এবং চায়ের দোকানে ভীড়, তবুও হাল ছাড়ি নি।
কারণ লোকমুখে শুনেছিলাম কালো কাকেরা 3B পেন্সিল এবং কার্টিজ পেপারেও ভীষণ জ্যান্ত হতে জানে; আর আমিও খুঁজে রেখেছিলাম বেশকিছু ব্ল্যাকবোর্ডের ঠিকানা। খড়িমাটির রং প্রত্যাশায় আগুন বুনে দিত বলেই সেই নদীতীরের আরাধনা করে গেছি টানা আটটি বছর।
রাত্রিপ্রবণতা শুধু নখর আর শ্বদন্তই ভোঁতা করে দ্যায় নি, আলাদা একটা রক্তমাংসের মুখোশ এঁটে দিয়েছে শরীরের উপর; হারিয়ে গেছে বর্ণ-গন্ধ-শোক-স্বাদ আর দিন। অবশেষে পাটকাঠির মত পলকা হয়ে যাওয়া এই অস্তিত্ব নিয়ে নিতান্তই অনিচ্ছায় এক বালুঝড়ের সামনাসামনি দাঁড়িয়েছি, কারণ এবার সময় এসেছে পুরনো শব্দগুলোকে টিনের বাক্সে পুরে ঝাঁকিয়ে দেখবার...
[২৬ শে অক্টোবর, ২০১০]
উৎসর্গঃ অন্ধ আগন্তুক
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আটকে পড়া সময়ে
ছেঁড়া প্যান্টের টুকরো কিংবা মোজাইক মেঝের
ক্ষতগুলো লাল-শাদা দৃষ্টি পেঁচায় দু'আঙুলে।
ভুলে যাওয়া পঙ্গুত্বের সেই আভাস অবশেষে
ধুলো ঝেড়ে স্নায়ুর মোচড়ে হিসিয়ে উঠলে
শিয়রে কালসাপ দুঃস্বপ্ন হেনেছিল,
ওতে ছটফটিয়ে মরে গেছে মগজ।
তবুও...
ধ্বংসোন্মুখ ইজেল তারপিনের গন্ধ দ্যাখে,
আকাশ চিরে দেয়া সুচারু মেঘেরা ছিনিয়ে নেয়
পালক কিংবা সূতো। এদিকে আমি মৃত্যুদন্ড দিচ্ছি
এক এলবাট্রসের কোন উঁচু চূড়ায় দাঁড়িয়ে,
হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে আছি দক্ষিণমুখী বাতাস।
লাগুক ঠোকাঠুকি কৃপণ স্রোতদের মাঝে,
সংকল্প হারিয়ে আছড়ে পড়ুক উড়ন্ত মাছেরা শক্ত জমিনে।
এই ত সেদিন,
একটা শালিকের মৃতদেহ ঢেকে দিয়ে এসেছিলাম
কালো বেড়ালটার চোখ এড়াতে চেয়ে।
এখন দেখি আস্তরের উপর আস্তর জমেছে
ধুলো আর কংক্রীটের; আমি বলি,
এই লোকালয় হৃৎপিণ্ড হারিয়ে ফেলেও টিকে আছে।
বালুঘড়ির ঠিক মধ্যখানে,
যেখানে সময় ক্ষণস্থায়ী...
সেখানে আটকে রয়েছি ঠোঁট বন্ধ করে।
এজন্যেই,
বৃত্তবন্দীদের আলো দেখাতে নেই।
[০২ রা নভেম্বর, ২০১০]
উৎসর্গঃ স্বদেশ হাসনাইন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।