আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজমাতার অসন্তোষ - প্রজাসকল সাবধান



আমাদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও তার চেলা-চামুন্ডারা শুধু যে প্রতিহিংসাপরায়নই নন, তারা যে মুর্খও এটা রাজমাতা আবারও তার বক্তব্যে প্রমান করে দিলেন। রাজমাতার এমন বেপরোয়া অসন্তোষ দেখে আমার কিন্ত মনে হচ্ছে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। আমার যেটা মনে হয়, আমাদের রাজমাতার রাজকোষ আন্ডার দি টেবিল কিছু পাচ্ছে না বলেই এতটা হিংস্র হয়ে গিয়েছে। কিংবা এতগুলো ডক্টরেট ডিগ্রী থাকার পরেও রাজমাতাকে পাত্তা না দিয়ে কেন তার এক ক্ষুদ্র প্রজাকে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হলো - এটাও একটা কারন হতে পারে। পরিবেশ রক্ষার জন্য যদি আলগোর নোবেল পেতে পারে তাহলে রয়েল বাঘ রক্ষার জন্য রয়েল রাজমাতা কেন নোবেল পুরষ্কার পাবে না - এটা নিয়ে তার উজির-নাজীরগন নোবেল কমিটিকে কারন দর্শাও নোটিশ জারী করতে পারেন।

অথবা নোবেল কমিটিতে নোবেল ট্রান্সফার বিষয়ক পরিবর্তনের সুপারিশ করতে পারেন - এতে হয়তবা ইউনুসের নোবেলটি কেড়ে নিয়ে রাজমাতাকে দেয়া যেতে পারে। বাঘ সম্মেলন থেকে তিনি যথার্থই বাঘিনী হয়ে ফিরে এসেছেন এবং সব অবাধ্য মেষশাবকের দল গলাধঃকরন না করা পর্যন্ত ক্ষুধা-তৃষ্ণা কোনটাই মিটবে না। মেধা দিয়ে নিয়ে, অশোভন-বেফাস উক্তি দিয়ে রাজমাতা এবার তার আনুগত্য অমান্যকারী প্রজাকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে আর আমাদের বুদ্ধিজীবি চাটুকারের দল দল আহা আহা বলে তৃপ্তির রাজঢেকুর তুলবেন। এসময় আমার কাজী নজরুলের সাহেব-মোসাহেব বিষয়ক কবিতাটাও মনে পড়ে গেল। মোসাহেবীতে আমাদের সাংবাদিকরাও কম যান না।

তারা তো রাজমাতাকে সন্তষ্ট করতে গিয়ে রাজপুতকে কম্পিউটার বিজ্ঞানী বানিয়ে দিলেন। অর্থ নিয়ে কেলেংকারী আছে জানতাম, এখন দেখছি মেধা নিয়েও কেলেংকারী। কয়েকদিন পর হয়তবা কবি-লেখক বা আরো কিছু বানিয়ে দিবেন। এ প্রসংগে প্রিয় ব্লগে প্রকাশিত ডিসকভার ইনফিনিটির বক্তব্যটি পড়ে না থাকলে আবার পড়ে নিন, “বছর দুয়েক আগে দেশের সবকটা দৈনিকে দেখলাম ডঃ সজ়ীব ওয়াজেদ জয় এর পরিচিতি বিশিষ্ট কম্পিউটর বিজ্ঞানি হিসাবে। বিজ্ঞানের কোন শাখায় কি কি অবদান উনি রেখেছেন তা জানার খুব ইচ্ছা জেগেছিল সেদিন, তথ্য প্রাচুর্যের এই যুগে আমি অনেক খোজাখুজি করেও কিছু পাইনি উনার বিজ্ঞান বিষয়ক অবদানের উপর, উপরন্তু পেয়েছিলাম উনার কিছু ক্রাইম রিপোর্ট যা আমার আলোচনার বিশয় নয়।

(সত্য মিথ্যার দায় আমার নয়-যে কেও গুগল এ খোজ করলেই পাবেন জয় এর বিস্তারিত)। ভাবলাম এটা বোধহয় ধামাধরা মিডিয়ার অতিরঞ্জিত অলংকার। আশায় ছিলাম হয়ত প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক সংশোধনি বিবৃতি আসবে যে ডঃ জয় কোন বিজ্ঞানি নন কিন্তু এযাবত সেধরনের কিছু চোখে পড়েনি। বিজ্ঞানী না হওয়াটা অমার্যাদাকর কিছু নয় কিন্তু অসত্যটা বড়ই লজ্জকার। ” কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়কে দেখে আমাদের কম্পিউটার বিজ্ঞানী জাফর ইকবালের লজ্জায় মুখ লুকানো ছাড়া উপায় নেই যদিও কম্পিউটার বিজ্ঞানী জাফর ইকবালের নামে আমেরিকায় কিছু মেধাস্বত্ত্ব আছে ।

ইন্টারেস্ট যে অর্থনীতিতে গুরুত্বপুর্ন একটি ব্যাপার এবং এটা প্রতিযোগীতাপুর্ন (competitive) - এটা আমাদের মুর্খ রাজমাতাকে কে বোঝাবে? আমাদের এই মুর্খ রাজমাতাকে যদি এখন আমি ইন্টারেস্ট থিওরী, ইন্টারেস্ট কীভাবে valuation, pricing, amortization, investment ইত্যাদি অনেক কিছুতে ব্যবহার করা হয়, তা ব্যাখ্যা করতে যাই, আমাদের এই মুর্খ রাজমাতা তো কিছুই বুঝবে না। সে বার বার একই কথা বলে যাবে যে প্রফেসর ইউনুস সুদখোর, প্রফেসর ইউনুস গরীব মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছে। এজন্যই দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য। আমাদের রাজামাতা একইসাথে দুর্জন ও মুর্খ। ইউনুস দেশের জন্য কী সম্মান বয়ে এনেছেন সেটা ব্যাখ্যা করার দরকার নাই।

কিন্ত, আমাদের রাজমাতা নিউইয়র্কে এয়ারপোর্টে পা রাখার সাথে সাথেই এয়ারপোর্টে যে লংকাকান্ড হয়ে গিয়েছিল এটা কী দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিল? রাজমাতা ও তার উজির-নাজীরের চমৎকার কার্যকলাপের জন্য তাদের রাজ্য যখন সবচেয়ে বেশী দুর্নীতিবাজ দেশের তালিকায় প্রথমদিকে থাকে সেটা কি সম্মান বয়ে আনে? এরকম হাজারটা উদাহরন দিলেও আমাদের রাজমাতা বুঝবেন না । তাই আবারও ডিসকভার ইনফিনিটির কথাই আমাকে বলতে হয় যে, “ডঃ ইউনুস এর কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ শুধু মাত্র দেশের গরিবদের নিয়ে না ভেবে বিশ্বসভ্যতা নিয়ে ভাবুন, শ্বাশত মানব জাতির জন্য ভাবুন……পালিয়ে যান ভাই, পালিয়ে যান। পালিয়ে যান সেখানে, যেখানে আপনার যোগ্যতার মুল্লায়্যন হবে। মাহামুদুর রহমানের ভাগ্য এড়ানোর রাস্তা খুজে নিজের অমুল্য সময় এবং মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করার অধিকার আপনার নায়। মানবসভ্যতা আপনার কাছে অনেক কিছু চায়।

মৃত্যু মানুষের অনিবারয্য পরিনিতি…আপনারও সময় অফুরন্ত নয়। এই সংখিপ্ত সময়ে আপনাকে আরও অনেক কিছু করতে হবে। আপনার ভাগ্য মাহামুদুর রহমানের ভাগ্যে রুপান্তর করা ছাড়া আপনার সরকারের আর কোন যোগ্যতা নায়। ” এই দেশে কেউ বাচতে পারে না, তাই প্রতিটি মেধাবী লোক তার প্রথম সু্যোগেই দেশ ছেড়ে চলে যায়। আমাদের রাজমাতাও কিন্ত রাজপুত-রাজকন্যা উভয়কে ভাগিয়ে দিয়েছেন।

কিন্ত এখানে হিসাবটা একটু ভিন্ন। রাজমাতা শুধু ভাগিয়েই দেন নাই, রাজকোষ থেকে অর্থ নিয়ে রাজপুত-রাজকন্যার জন্য বিদেশে রাজ-প্রাসাদ, রাজগাড়ী, টাকশাল সবই বানিয়ে দিয়েছেন। তিনি কিন্ত গরিবের রক্ত চোষেন নাই, তিনি নিয়েছেন রাজকোষ থেকে। আবারও বলছি, অবাধ্য প্রজাগন সাবধান !

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.