হে খোদা! রাজনৈতিক প্রশ্নে জাতি আজ শতধা বিভক্ত। সামান্য কিছু মতপার্থক্য থাকলেও একাত্তুরের মত জাতিকে আবার এক করে দাও। অনেক বছর আগের সে গাঁয়ের কথাই বলছি। সমতল ছিল না সে গাঁ। বড় একটা অঞ্চল জুড়ে টিলা ও উপত্যকা ।
এই টিলা ও উপত্যকায় ছিল অনেক ঝোপ ঝাড় । সেখানে ছিল শিমুল, অশ্বত্থ ও বাঁশ ঝাড় । সন্ধ্যা নামলে ভীড় করত নানান পাখীরা। অনেক কিসিমের ডাক। পাখী, ঝিঁঝিঁ, শিয়ালের ডাকে গা ছম ছম করে উঠে।
রাতে পারতপক্ষে কেউ বাইরে বেরুত না। এমন সাহসও কারো নাই।
এ গাঁয়ে এক বিখ্যাত পাগলী ছিল। নাম বিনু। আমি ছোট বেলায় দেখেছি সে গ্রামটি চষে বেড়াত।
কখনও উচ্চস্বরে, কখনও বিড় বিড় করে অস্ফুট স্বরে কি যেন বলত। ক্ষুধা পেলে বলে, "বইন ভাত দে"। বাড়ির বউ, ঝি, ছোট-বড়, বুড়ো সবাই তার বইন (বোন)। খালা, মা, মামী, এই শব্দ সে কোনদিন ব্যবহার করে নাই।
বাড়ীর মেয়েরা তাকে খেতে দিত।
অনেকে অনেক কিছু চাইত তার কাছে। কেউ ছেলে, কেউ মেয়ে, কেউবা অর্থকড়ি পাওয়ার মানত নিয়ে পেট ভরে খেতে দেয়। শুনা যায় এতে করে অনেকে পোয়াতিও হয়েছে। তাই গাঁয়ে তার কদর আছে।
এই বেনু পাগলী মাঝে মাঝে হাটে যায়।
অনেকে দুষ্টুমী করে তাকে পেছনে পিঠে গুথো দেয়। তখন এই পাগলীর মাথা গরম হয়। সামনে যাকে পায় বেনু পাগলী কিল ঘুষি মারতে থাকে। অর্থাৎ গুথা দেয় যদু, আর প্রতিশোধের শিকার হয় মধু।
আমাদের রাজনীতির অবস্থাও তাই।
দলগুলো একে অপরকে পেছনে গুথো দেয় আর সামনে থাকা আমজনতা কিল ঘুষি খেতে থাকে। জামাত গুথো দিল পাগলীকে, পাগলী মারল বিশ্বজিতকে। সরকারী দলের কেউ গুথো দিল জামাতকে আর জামাত মারল বাস ড্রাইভারকে।
এখন সে গাঁ আবাদ হয়েছে। ঝোপ ঝাড় আর নাই।
দালান কৌঠা উঠেছে অনেক। মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ হয়েছে। সেই বিনু পাগলী আর নাই। কিন্তু বড় দুঃখ একটাই, রাজনীতির আঙ্গিনায় থরে থরে অনেক বিনুকে দেখি। এই বিনুরা পিছনে কারও গুথো খেয়ে আমজনতার উপর প্রতিশোধ নেয়।
জানি না এ জাতির কপালে কি আছে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।