আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করতে হবে



২০০২ থেকে ২০০৪ সালের বগুড়ার বেশ কয়েকটি নিভৃত অঞ্চলে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়ে ছিলো। এরপর ২০০৪ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে এমন সংবাদ মানুষের মুখে মুখে শোনা যেতো। কিন্তু সে সময় কারোই পক্ষেই প্রকৃত তথ্য বা জঙ্গি কার্যক্রম সম্পর্কে কথা বলার উপায় ছিলো না। এমনকি চায়ের দোকানেও ভয়ে আলোচনা করতো না। মানুষের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল ছিলো যে ঐসব জঙ্গি পেছনে সরকারের মদদ ছিলো (তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার)।

যেসব অঞ্চলে জঙ্গি ট্রেনিং ক্যাম্প ছিলো বলে শুনা যেতো, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো মহিষাবান (বাংলা সন্ত্রাসীর নিজ এলাকা), আকাশ তারা, বনানী পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি কলোনি ও তৎসংলগ্ন একটি মাদরাসা, শিবগঞ্জ ইত্যাদি। আ’লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার জঙ্গি দমনে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করায় জঙ্গিরা যেমন দ্রুত স্থান পরিবর্তন করেছে, তেমনি হামলার কৌশলেও নতুনত্ব আনছে। জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত তাদের মহিলা স্বজনদের সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে। ওদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে দুটি দিক থেকে; এক হলো- ধর্মীয় অন্ধ বিশ্বাস, অন্যদিকে আর্থিক যোগান। কেনো মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা? জঙ্গিরা নাশকতা করে কি অর্জন করতে চায়? রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল? এ দেশে তা কোনোকালেও সম্ভব নয়।

তাহলে কি ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা করতে চায়? তাও হবে না। বোমা ফাটিয়ে মানুষ হত্যা করে পৃথিবীর কোনো দেশে ইসলামী হুকুমত কায়িম হয়েছে, এমন নজির নেই। কেননা জঙ্গিবাদ ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়। জঙ্গিপনা ইসলাম সমর্থন দেয় না। ইসলাম এসেছে তার সুমহান আদর্শের মোহিনী শক্তি দ্বারা মানুষকে আকৃষ্ট করে, মানুষকে কল্যাণ, মুক্তি ও আলোর দিশা দিয়ে।

যে বাঙালিরা মহা জালিম, লুটেরা, জলদস্যু ব্রিটিশ ফিরিঙ্গিদের শোষণ-নির্যাতনের স্টিম রোলারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে, শক্তিশালী পাক সেনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে, সেই বাঙালিরা এতো অন্ধ হতে পারে? না, তা পারে না। তারপরও বলতে হয়, আফগানিস্তানে ইঙ্গ-মার্কিন চর বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের জঙ্গি তালেবান শাসনের পরিণতি দেখেও কি আমাদের বাংলাদেশের মুসলিম বাঙালিদের অন্ধত্ব ঘুচবে না? জঙ্গিরা ইসলামের নামে যা করছে, তা যে ইসলাম বিরোধী, তাও কি আমরা বাঙালি মুসলিমরা বুঝি না? জঙ্গি নামের এই মানুষগুলো যে দেশদ্রোহী, মানবতার শত্রু, ইসলামের শত্রু তাও কি আমরা বাঙালি মুসলিমরা বুঝি না? জঙ্গিরা যে প্রকাশ্যে আগ্রাসনবাদী, সম্প্রসারণবাদী শক্তির তথা যবন, ম্লেচ্ছ, বর্বর, অসভ্য হায়েনা ইহুদী-খ্রিস্টান-মুশরিকদের তথা ইঙ্গ-মার্কিনিদের দোসর হয়ে কাজ করছে, তারপরও কি বুঝ পয়দা হবে না? এই জঙ্গিরা মুসলিম পরাশক্তি পাকিস্তানের অবস্থা কি করেছে, দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? এই জঙ্গিরা মুসলিম পরাশক্তি পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি তৈরির ক্ষেত্র প্রস্থত করে দিচ্ছে। তারপরও কি আমরা জঙ্গি গডফাদার ইঙ্গ-মার্কিনিদের উচ্ছিষ্ট খাওয়ার জন্য হাত পেতে বসে থাকবো? ছিঃ এ যে বীর বাঙালির জন্য তথা বীর মুসলিম জাতির জন্য কতো বড় লজ্জা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কাজেই ধর্মের নামে যেসব রাজনীতিকারী নেতারা তথা ধর্মব্যবসায়ী জামাতী, দেওবন্দী, খারিজী, ওহাবী, সালাফীরা ঐসব জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে হৃষ্টপুষ্ট করেছে এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করার এখনই সময়। জঙ্গিবাদী ধর্মব্যবসায়ী রাজনীতিকারীদেরকে চিহ্নিহিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে ইসলামের আলাকেই।

এজন্য জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.