আমাদের দেশের দুইটি সমুদ্র বন্দর চট্রগ্রাম এবং মোংলা। কিন্তু দুটি বন্দরের মধ্যে চরম বৈষম্য বিরাজমান। অনেক সম্ভাবনা থাকলেও এখন মোংলা বন্দর মৃত প্রায়। অথচ এই বন্দরের উপর নির্ভশীল হাজার হাজার পরিবার আজ আধবেলা, আধপেটা, অনাহারে দিন অতিক্রম করেছ। বিভিন্ন সময়ে সরকারের উদাসিনতা, বন্দর কতৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা এবং লুটতরাজ, বিভিন্ন মহলের চক্রান্ত, শ্রমিক অসন্তোষ, বঞ্চনা আর চরম অবহেলার কারনে মুখ থুবরে পড়ছে আমার তথা আমাদের প্রিয় মংলা বন্দর ।
এখানকার মানুষের জীবিকার তথা আয়ের প্রধান উৎস ছিল জাহাজ সংশ্লিষ্ট, কারন অধিকাংশ মানুষ শ্রমের পেশায় নিয়োজিত। অন্যদিকে ধান চাষের জন্য আবাদি জমিতে লবন পানি আটকিয়ে চিংড়ি চাষের ফলে জমি হয়ে উঠেছে পতিত, এবং চিংড়ি চাষে নানান ধরনের বালাইয়ের কারনে এ পেশায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী এবং জমির মালিকগন সবর্র্ শান্ত হয়েছে কিন্তু প্রভাবশালী কতিপয় মহাজন শ্রেনী আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে আর নিপিড়িত হয়েছে দুর্বল গরীব শ্রেনী। সুন্দরবনের উপরও অনেক পরিবার নির্ভরশীল আছে কিন্তু প্রলয়ংকারী ঘুরনিঝড় সিডর আর আইলার পর সুন্দরবনের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারী করায় জেলে, বাওয়ালি, মৌয়াল সবার রোজগারের পথ বন্ধ। আমদানী-রপ্তানির তথা মালামাল বোঝাই-খালাশ এ বন্দরের জন্য নির্ধারিত কোঠা থাকেলও আমরা তার বাস্তবায়ন কোনদিন দেখিনি। সেই নিয়ম পালন করলেও এই দুরঅবস্থা আমরা দেখতে পেতাম না ।
মোংলার সকল রাস্তাঘাট এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুবই জরুরী। ভোটর আগে কিংবা জাতীয় সংসদের অমুক অধিবেশেনে (!) অমুক মন্ত্রীর মুখে, অমুক নেতার গলাবাজিতে আমরা মংলাকে ঘিরে যত প্রতিশ্রুতি পেয়েছি এযাবৎ সব তলিয়ে গেছে পশুর আর মংলা নদীর ঘোলা জলে। আজ আমরা মংলার মানুষের মুখে কেবলই মলিনতা, বিষন্নতা , আর হতাশার ছাপ দেখি, দেখি কন্যা দায়গ্রস্ত কোন পিতার চিন্তিত চেহারা, কিংবা ১২ বছরের শিশু ছোবাহান ভ্যান কিংবা রিক্সার প্যাডেলে ঘা মারে পেটের দায়ে অথবা দেখি আশি বছেরর বুড়ো হাকিম মিয়া তার বাকানে কুজো পিঠে ভিক্ষার ঝোলা নিয়ে হাতপাতে খেয়া ঘাটে ,বাসস্টান্ডে দিনভর। মোংলার এই মানুষ গুলোর কি অপরাধ? আমাদের অপরাধ আমরা মোংলার মানুষ। আমরা ভিক্ষা চাইনা, আমরা চাই আমাদের প্রানের মংলাকে আবার সচল করে দেয়া হোক।
আমি সরকারকে তথা দেশের সুশীল সমাজকে বিনীত অনুরোধ করবো আসুন আমরা এই বন্দরকে বাচাতে সবাই এগিয়ে আসি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।