আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ড. মুহম্মদ ইউনূস : এক নোবেলজয়ী চোর



ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কারা নাকি টাকা আত্নসাতের অভিযোগ করেছেন। আবার নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টিভি “ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদে” নামক তথ্য চিত্র প্রচার করেছে। তারপর কি হল? বাঙ্গালীরাও উহাদের সাথে হাত মিলিয়ে ওনার বিরুদ্ধে মামলা করে দিল, অকাম করল গ্রামীণ চেক। মামলা খেল ইউনূস সাহেব। তারপর আয় এদের পায় কে! নানান ব্লগে আর ফেসবুকে সেই বাঙ্গালীরাই একেকজন উইকিলিকস হয়ে আরো নানান জিনিস আমদানী করলেন।

এত কিছু দেখে মানতেই হয় ইউনূস সাহেব একটা চোর, বদমাস, সুদখোর, ঘুষখোর। তাঁর কপাল ভালো যে এখনো কেউ তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। মহামান্য দেশীয় উইকিলিকসগণ , আমি আপনাদের একটা কথা মনে করিয়ে দেই। তিনি কিন্তু দুইটা বিয়ে করেছিলেন। আবার গন্ডগোলের সময়(৭১ সালে) তিনি আমেরিকা গিয়ে অর্থ সংগ্রহের নাম করে ছদ্মবেশে আমেরিকার দালালি করেছেন।

তাহলে তিনি আমেরিকার দালাল, আরো গভীরে তদন্ত করলে হয়তো বেরিয়ে আসবে তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী। অতঃপর, চলুন আমরা তাকে জুতার মালা পড়াই, তার কুশপুত্তলিকা দাহ করি। তারপর সুইডিশ নরয়েইনরা ভাববে ‘কি আজব জাতি, আমরা একটা কূটনীতি করলাম ওরা সব বিশ্বাস করে বসে আছে। যেই ইউনূসকে দুনিয়ার লোকেরা এত সম্মান দেয় তাকে তার দেশের লোকেরাই এমন অসম্মান করতে পারল? একবার জিজ্ঞেসও করলোনা। আমরা মারলাম পিন, আর তারা মারল গজাল!’ তারপর তারা গুগলে সার্চ দিয়ে দেখতে পাবে এই বাঙ্গালিরাই যাকে জাতির পিতা দাবী করে তাকে মেরেছে, মুক্তিযুদ্ধের সমরনায়কদের মেরেছে, জাতীয় নেতাদের মেরেছে, চিহ্নিত শত্রুদের দিয়েছে নিরাপদ আবাস।

তাহলে মনে হয় ইউনূসের কপালে একটু কমই পড়েছে। যখন চাউর হল যে ড. জাকির নায়েক দেশে আসছেন তখন এই ব্লগেই কতকিছু হয়ে গেল, রীতিমত গৃহযুদ্ধের মত অবস্থা। আর আজকে যখন পশ্চিমারা ড. ইউনূসকে নিয়ে যা-তা শুরু করেছে। তখনো সব চুপ। উলটো কয়েকটি প্রতিবাদী মুখ তার নানা আকাম কুকাম তুলে ধরে আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করার মহান ব্রত নিয়ে অবতীর্ন হয়েছেন।

তারা দেখাচ্ছেন, দেখ বাঙ্গালী দেখ। আমারা সব চোর। আমাদের নিজেদের কোন বিবেক নেই। পষচিমারা যা বলে তা-ই ঠিক। তারা আমাদের পাছায় লাথি মারবে, আর আমরা নিউটনের প্রথম সূত্র মিথ্যা প্রমানিত করে কোন প্রকার জড়তা ছাড়াই সামনের দিকে এগিয়ে যাব।

এটাই আমাদের অগ্রগতির একমাত্র পথ। এসব দেখে বহু কিছু শিখলাম। এই বছরের শুরুর দিকে মুহম্মদ জাফর ইকবালকে আমার আইডলের লিস্ট থেকে বের করে দিয়েছি। কারন সেই সময় তার বিরুদ্ধে প্রচুর আজেবাজে কথা এইসব ব্লগ-ফেসবুকে প্রচারিত হয়েছিল। আমি আবার বিশ্বাস করি -“এতগুলো মানুষ কিছুতেই ভূল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা”- এই নীতিতে।

আর বছরের শেষে ড. ইউনূসকেও বের করে দিলাম, এই নীতির উপর ভরসা করেই। আমার এক পরচিত দাদু শেষ বয়সে কোন কথাই বলতে পারতেননা, কারো কথা বুঝতেও পারতেননা। কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসত “শালার বাঙ্গালী!” এই কথাটি। লেখার শেষে এসে আরেক দাদার কথা মনে পড়ছে। তিনি তার কোন এক কবিতায় বলেছিলেনঃ সাত কোটি বাঙ্গালীরে ফে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি!


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।