একজন জামাতের দালাল আমাকে খুর ক্রোধ ও কষ্টের সাথে বলল,ভাই এই জালিম সরকার নাস্তিক সরকার হেফাজতের অনেক কর্মীকে হত্যা করেছে মসজিদ পবিত্র স্থান। ওখানে মুসল্লিরা যান নামাজ আদায় করে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে। ওখানে বোমা, গ্রেনেড, অস্ত্র নিয়ে যারা ঢোকে, এরা মুসলমান কিনা প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়। ইহুদিরা পর্যন্ত মসজিদে আগুন দেয় না। সেখানে জামায়াতিরা কি করে আগুন দেয়, আজকের জিজ্ঞাসা।
এরা কি ইহুদি থেকেও অধম?
নামাজ যারা আদায় করতে যান, প্রকৃত নামাজির পার্থিব কোন খেয়াল থাকার কথা নয়। আমি এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনার উল্লেখ করতে চাই।
হজরত আলী (রা.) একবার যুদ্ধে তীর বিদ্ধ হন। তীর তার পায়ের হাড় ভেদ করে ওদিকে বেরিয়ে যায়। সাহাবিরা তীর ছাড়ানোর চেষ্টা করলে যন্ত্রণায় তিনি ‘হু হু’ করতে থাকেন।
ওই সময় আসরের নামাজের সময় হয়, আজান হয়। তিনি অজু করে তীর বিদ্ধ অবস্থায় নামাজে দাঁড়িয়ে যান।
নামাজ শেষে তিনি দেখেন তার পায়ে তীর নেই, সাহাবিরা নামাজরত অবস্থায় তীর ছুটিয়ে ফেলেন।
ঘটনা এই যে, তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে এতই বিভোর ছিলেন যে, তীর ছোটানোর ব্যথা তিনি অনুভব করতে পারেননি। এই হল ইবাদত, এই হল নামাজ।
একজন নামাজি যখন নামাজে দাঁড়ান, পার্থিব খেয়াল তার কাছে থাকার কথা নয়।
অথচ জামায়াতিরা মসজিদে নামাজের ভান করে অস্ত্র নিয়ে ঢোকে, আগুন লাগায়। এরা কোন ইসলাম কায়েম করতে চায়Ñ জামায়াতি ইসলাম? না প্রকৃত ইসলাম? এই জামায়াতিরা আমাদের বুকে হাত দিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতায় হাত দিয়েছে। শহীদ মিনার ভেঙে এরা প্রমাণ করেছে, এরা বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে, বাংলা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে।
শহীদ মিনার প্রত্যেক বাঙালির প্রাণস্পন্দন। এরা আমাদের প্রাণস্পন্দনে হাত দিয়েছে। এদের ক্ষমা নেই।
এরা জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেশের মানুষের কাছে জানান দিয়েছে, বাংলাদেশ এদের দেশ নয়। পাকিস্তান জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়েছে এরা।
পাকিস্তান যদি এদের শেষ আশ্রয়স্থল হয়, এরা পাকিস্তানে চলে গেলেই পারে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, পাকিস্তানেও এরা নিষিদ্ধ। ইন্দোনেশিয়ায় এরা নিষিদ্ধ।
জামায়াত একটি জঙ্গিবাদ সংগঠন। জঙ্গিবাদ সংগঠন পৃথিবীর কোন দেশেই সচল নেই, ব্যতিক্রম বাংলাদেশে।
হিজবুত তাহরিরকে যেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ওই একই পদ্ধতিতে এদেরও নিষিদ্ধ করা যায়।
জামায়াতকে সর্বপ্রথম আশ্রয় দেন জেনারেল জিয়া। বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে আদর্শিক অনেক মিল আছে বলেই বিএনপি-জামায়াতের সাহচর্য ত্যাগ করতে পারছে না। বিএনপি জামায়াতের হরতালে সমর্থন এ জন্যই দেয়, আগামী নির্বাচনে এদের ভোটের দরকার। জামায়াত যে জঙ্গি সংগঠন, বিএনপি জানে।
শুধু ভোটের আশায় এদেরকে সমর্থন করছে। কিন্তু বিএনপি উপলব্ধি করতে পারছে না যে, জামায়াতকে সমর্থন করার অর্থই হল, নতুন প্রজšে§র ভোট হারানো। প্রগতিতে বিশ্বাসীদের ভোট হারানো।
আমার ভাবতে অবাক লাগে, যারা এ দেশ বিশ্বাস করে না, তাদেরকে বিএনপি সমর্থন দেয় কোন যুক্তিতে? অবশ্য বিএনপির ভিন্ন ভিন্ন নেতার ভিন্ন ভিন্ন কথায় প্রতীয়মান হয় যে, জামায়াতকে নিয়ে এরাও সমস্যায় আছে। কোন দিকে যাবে, দিশা পাচ্ছে না।
কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব দীর্ঘদিনের। কিন্তু ইদানীং মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নামে ব্লগারদের একজন কটূক্তি করেছে বলে খবর ছাপিয়ে এদেরকেও উত্তেজিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। নিজেরা যখন ব্যর্থ, তখন স্বভাবজাত মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এরা ফেসবুকে মৃত ব্লগারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছে ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উত্তেজিত করে ফায়দা লোটা অর্থাৎ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে চাইছে। ব্লগারদের দাবির দিকে একবার তাকাতে বলি। এদের দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি।
এরা কোন যুক্তিতে আমাদের প্রিয় নবীর বিরুদ্ধে কথা বলবেন? এটা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। ধর্মের কথা ব্লগাররা কখনও উচ্চারণই করেনি। জামায়াতিরা নিজেরাই তা ছাপিয়েছে, নিজেরাই তা প্রচার করেছে।
মিথ্যার ওপর বিশ্বাস স্থাপনের কোন যুক্তি নেই। যেখানে কোরআনের আয়াত দিয়ে প্রতিদিনের কর্মসূচি শাহবাগে শুরু হয়, সেখানে প্রিয় নবীর বিরুদ্ধে কথা বলার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।
জামায়াতিরাই এ কাজ করেছে। জামায়াত একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন। এদের কাছ থেকে যতই দূরে অবস্থান করবেন, ততই মঙ্গল। এরা একবার সুযোগ পেলে কওমি মাদ্রাসায়ও আঘাত হানবে। এমনিতেই এরা সুন্নিদের বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক কথা বলে।
পীর, মাজার, দরবারে এদের বিশ্বাস নেই ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।