ভিন্ন কিছু। মহৎ কিছু
টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন থেকে আমরা দাঁত সম্পর্কে যে প্রচুর জ্ঞান আহোরণ করেছি তার মধ্যে “ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয়রোধ করে দাঁতকে সুরক্ষা করে আর মাঢ়ি রাখে সুস্থ-সবল” -একটা। আসল ঘটনা হচ্ছে এই মতবাদ বাতিল হয়ে গেছে সেই ১৯৮৭ সালের দিকেই। আর আমরা বাঙ্গালিরা এখনো ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্টের পিছে ছুটে মরছি। এইগুলো নাকি আবার ডেন্টাল সোসাইটির অনুমোদন পায়! (হায় রে, অভাগা রে… নিজের কপাল নিজেই চাপড়াই…)
১৯৩৮ সালে ড. এইচ ট্রেন্ডলি ডিন নামের এক আমেরিকান দন্ত বিশেষজ্ঞ দাবি করে যে খাবার পানিতে ফ্লোরাইডের উপস্থিতি দাঁতের ক্ষয়রোধে সাহায্য করে।
ব্যস, উন্নত দেশগুলো সব পানিতে ফ্লোরাইডযুক্ত করতে থাকে। ব্যবসায়ীরা টুথপেস্ট, টুথপাউডারে যোগ করতে থাকে ফ্লোরাইড। কিন্তু ধীরে ধীরে এর বিষক্রিয়া টের পাওয়া যেতে থাকে। শুরু হয় গবেষণা। এই বিষয়ে সবচেয়ে বড় গবেষণাটি হয় ১৯৮৬-৮৭ সালে আমেরিকাতে।
বেরিয়ে আসে ভয়ানক সব তথ্য।
গবেষণায় দেখা যায় ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয়রোধে তেমন কোন ভুমিকা তো রাখেই না বরং জন্ম দেয় হাজারটা সমস্যার। ফ্লোরাইডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দাঁত ও হাড়। দাঁতে ফ্লোরোসিস দেখা দেয়। এতে এনামেলের মসৃণ স্তর নষ্ট হয়ে যায়, দাঁতের রং নষ্ট হয়ে যায়, ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়, সর্বোপরি দাঁত ভঙ্গুর হয়ে যায়।
এর মাত্রা বেশি হলে দাঁতে ফ্লোরোসিসের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। ফ্লোরাইড প্রজনন ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফ্লোরাইডের উপস্থিতিতে অ্যালুমিনিয়ামের জৈবিক প্রভাব বেড়ে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে অ্যালুমিনিয়াম সঞ্চিত হওয়ার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায় যা অ্যালযাইমার্স (বিস্মরণ রোগ) রোগটিকে ত্বরান্বিত করে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। এছাড়া ফ্লোরাইডের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে শরীরের বেশ কিছু এনজাইমের কার্য ক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ফলে দেখা দিতে পারে স্নায়বিক দুর্বলতা।
ফ্লোরাইডের সরাসরি সংস্পর্শে এলে শরীরের কোষকলা ধ্বংস হতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বা মুখ ও ত্বকের মাধ্যমে বেশিমাত্রায় ফ্লোরাইড গ্রহণ শ্বাসতন্ত্র, পাকস্থলী ও ত্বকে উত্তেজনা সৃষ্টি করে ক্ষতি সাধন করতে পারে। ফলে কালো পায়খানা, রক্তবমি, বেহুঁশ হওয়া, বমি বমি ভাব লাগা, অগভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, পাকস্থলীর পেশিতে খিঁচুনি বা ব্যথা, কাঁপুনি, অস্বাভাবিক উত্তেজনা, লালা নিঃসরণ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া, দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামন্দা, ত্বকে র্যাশ দেখা দেওয়া, মুখে অথবা ঠোঁটে ক্ষত বা অসাড়তা, ওজন কমা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।