একটা গাড়ী খুজছি , ব্যাক টু দ্য ফিউচারে যাওয়ার গাড়ীটা খুজছি / তথ্যের অংক , যুক্তির জ্যামিতি
শিরোনামটি বাংলায় বললে দাড়ায় :
একটি বরফ শীতল ষড়যন্ত্রের অশনি সংকেত ।
সত্যিই তাই।
হ্যামিলনের বাশিওয়ালার মত করে যখন মোহাবিষ্ট করা বাশীর সুরে একটি জাতিকে বশ করে ফেলা যায় , ধীরেধীরে তাদেরকে টেনে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় গুহাবন্দীত্বের দিকে , একটি মুহুর্তের জন্যও তারা টের পায়না এই বন্ধু বেশী বাঁশীওয়ালা কত বড় শয়তান - তখন বলতেই হয় :
এই বাশীওয়ালার ষড়যন্ত্র মস্তিষ্ক বরফ শীতল !
বাংলাদেশের সোজাসরল মানুষগুলোর বিশ্বাসকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এমনই এক খেলা খেলছেন প্রথমআলো সম্পাদক মতিউর রহমান ।
বিশ্বাস না হয় তো দেখুন কিভাবে মিছরীর ছুরি দিয়ে কেটে ফেলা হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের নাড়ী ।
অ্যানেসথেসিয়া ইনজেক্ট করার মত করে কিভাবে বাংলাদেশের মানুষের দেশাত্নবোধ অবশ করে , দেশ অচেতন করে ফেলা হচ্ছে ।
অনেকটা জেগে থেকে ঘুমানোর মত।
রক্তের শিরায় যেন কোল্ড আইস কিউব জমছে বাংলাদেশের মানুষের।
কিছুই টের পাচ্ছেনা তারা , বুঝতে পারছেনা মতিউর রহমান নামক এই জোব্বার ভেতরে ছুরি লুকিয়ে রাখা বন্ধু বেশী ব্যক্তিটি কত বড় এক জাতীয় গাদ্দার !
প্রতিদিন পত্রিকায় মানবিকতা , হৃদয়স্পর্শী আর নাটকীয় সব খবরের হেডলাইন তৈরী করে মানুষকে মজিয়ে রাখছে , উচিত-অনুচিতের শিক্ষা দিচ্ছে আর মেরুদন্ডের মজ্জায় চেতনানাশক করাচ্ছে।
অনেকটা ভেন্ট্রিলোকুইসমের মত , অনেকটা বীনার সুরে সাপ মোহনের মত।
এই অসাধারন বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন গাদ্দার বাংলাদেশের মানুষের "ন্যাশনাল মোরাল" / "জাতীয়তাবোধের শক্তি" কিভাবে কেড়ে নিচ্ছে মিষ্টির (নাটকীয় সব মানবিক , সামাজিক আর হৃদয়স্পর্শী সংবাদ) ভেতরে "সেন্সকিলার" ক্যাপসুল গিলিয়ে সেটা নীচের ইমেজগুলোতে পাবেন।
মার্চ ৩ , ২০১০ , পাতা ১০ , প্রথম আলোতে নীচের ছবিটি ছাপানো হয়েছিলো :
চিনতে পারছেন এটা কাদের ছবি ?
না চিনতে পারলে নীচের ইমেজগুলো দেখুন :
ঠিক এই বিএসএফ এর অসংখ্য অকর্ম - কুকর্ম , বাংলাদেশী হত্যা , সীমান্তে আন্ত:রাষ্ট্রীয় মাস্তানী প্রথম আলোর পাতায় কোন দিনও রঙীন হয়ে ছাপা হয়নি প্রথম ছবিটির মত।
শুধু তাই নয়।
বিএসএফ কে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মেজাজের উত্তপ্ততা ঠান্ডা করার জন্য প্রথম আলো তাদের প্রথম পাতায় সুযোগ পেলেই "পরিস্থিতি ঠান্ডা" শিরোনামে খবর ছাপিয়ে দেয় যেখানে বিএসএফের একের পর এক বাংলাদেশী হত্যা প্রথম আলোর বিশাল বাংলা পাতায় অপ্রমিত ভাষায় "চিপার নিউজ" হয়ে ছাপা হয়।
এই প্রথম আলোই কিনা ৭১'র গনহত্যার বিচার চায় !
নীচের ইমেজ গুলো দেখুন :
মার্চ ২৬ , ২০০৯ এর প্রথম পাতার খবর এটি :
মার্চ ১৪ , ২০০৯ এর প্রথম পাতার খবর , তবে যেটি উল্লেখযোগ্য সেটি হলো "পতাকা বৈঠকের পর পরিস্থিতি শান্ত " :
মার্চ ১৫ , ২০১০ , প্রথম আলো , প্রথম পাতা :
সীমান্তে খাসিয়া নাটকের সাথে বিএসএফকে মিশিয়ে তাদের লঘু পাপী করার একটা প্রথম আলোকীয় প্রচেষ্টা।
অথচ মাত্র ৪ মাস পর নীচের নিউজটি তারা করেছে তাদের ২য় পাতায় !
জুলাই ৫ , ২০১০, প্রথম আলো , ২য় পাতা :
জৈন্তাপুর সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলি - ভালো কথা , সত্য কথা ।
কিন্তু বিএসএফ কোথায় ?
প্রথম আলোর রিপোর্টে বিএসএফ লাপাত্তা !
অথচ দুধের বাচ্চাও বোঝে খাসিয়া নাটকের নাটের গুরু কারা ?
এভাবেই প্রথম আলো খাসিয়া শাক দিয়ে বিএসএফ মাছ ঢাকার খেলা খেলা খেলেছে।
জুলাই ৫ এর রিপোর্টে একটি ব্যাপার লক্ষ্য করেছেন কি ?
"বিডিআর এর ক্যাম্প ভাংচুর " করার তথ্যখানি প্রথম আলো বেশ সুচারু ভাবেই উল্লেখ করেছে যদিও বিএসএফের টু শব্দটিও পাওয়া যাচ্ছেনা তাদের খবরে !
ঠিক এভাবেই প্রথম আলো আরো অনেক কিছুকেই ঠান্ডা বুদ্ধিতে ঠান্ডা করে ফেলে।
অসামান্য বুদ্ধিমান এবং ঠান্ডা মাথার এই গাদ্দার প্রথম আলোর মতি এর চেয়েও বিপদজনক খেলা খেলছে।
চলুন সেটা দেখে আসি ।
_________________________________
বিডিআর ।
আমাদের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।
জীবনের মায়া ত্যাগ করেই তারা দায়িত্ব পালন করে।
মানুষ মাত্রই ভুল। মানুষ মাত্রই অপরাধ করে। গুরু অথবা লঘু।
জাতির এই সন্তানরাও অনেক বড় একটা ভুল করেছে ২৫ শে ফেব্রুয়ারী , ২০০৯ এর কুখ্যাত সেই কালো দিনে।
অপরাধীর শাস্তি হতে হবে ।
কঠোর - দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।
কিন্তু তাই বলে আমাদের পুরো এই সীমানা রক্ষী বাহিনী ত্যাজ্য হয়ে যায়নি।
অচ্ছুত হয়ে যায়নি।
কিন্তু দৈনিক প্রথম আলো যেন তাদের কে দিনের পর দিন ত্যাজ্য আর ঘৃনিত এক শ্রেনীতেই ফেলতে চাচ্ছে।
অদৃশ্য এক বেয়নেট দিয়ে আমাদের এই জীবনবাজী রাখা ভাইদের মনোবলকে খুচিয়ে খুচিয়ে রক্তাক্ত করা হচ্ছে।
তাদেরকে প্রতিমূহুর্তে "অপরাধী গোত্র " হিসেবে উপস্থাপন করে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে ।
শুরুর ছবিটি আবার দেখুন :
৩ মার্চ , ২০১০ , প্রথম আলো , সারাবিশ্ব পাতা :
ঠিক এভাবেই "ঝোপ বুঝে কোপ মারার" মত করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের কোটি কোটি সংবাদপাঠকের মানসপটে প্রথম আলোর পাতায় যখন আমাদের নিজদেশের সীমান্তরক্ষী বিডিআর চরম সংকট সময় কাটাচ্ছে ।
এবার দেখুন এই সেই একই প্রথম আলো আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রহরী , আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর কে কিভাবে দিনের পর দিন তাদের প্রথম বা শেষ পাতায় উপস্থাপন করছে সারা দেশের মানুষের সামনে :
সেপ্টেম্বর ৫ , ২০১০ , প্রথম আলো , প্রথম পাতা :
অক্টোবর ৬ , ২০১০ , প্রথম আলো , ২য় পাতা :
কি দেখতে পাচ্ছেন ছবিগুলোতে ?
বিডিআর এর কিছু জওয়ান মাথা নীচু করে ঝুলে পড়া নত কাঁধে হেটে যাচ্ছে !
তারা অচ্ছুত !
ঐ পোশাক যারা পরে তারা ঘৃনিত !
বিডিআর নাম যাদের তারা ত্যাজ্য !
মিলিয়ে দেখুন তো বিএসএফের কুকুর শাবকগুলোর রং মাখামাখির সাথে আমাদের এই সীমান্তরক্ষী ভাইদের ঝুলে পড়া মেরুদন্ডের ছবিগুলো , হাতে হ্যান্ডকাফ আটকানো ।
এইতো প্রথম আলো !
এই তো প্রথম আলোর মতি , এইতো তার খেলা!
ওরাতো এটাই চায় !
শুধু উপরের ছবিদুটোতেই সন্তুষ্ট না হলে নীচের গুলোও দেখতে পারেন :
অক্টোবর ৪ , ২০১০ , প্রথম আলো :
অক্টোবর ৫ , ২০১০ , প্রথম আলো :
অক্টোবর ৬ , ২০১০ , প্রথম আলো :
অক্টোবর ৮ , ২০১০ , প্রথম আলো :
অক্টোবর ১৯ , ২০১০ , প্রথম আলো :
অক্টোবর ২০ , ২০১০ , শেষের পাতা , নিউজ এক্সক্লুসিভ , প্রথম আলো :
অক্টোবর ২২ , ২০১০ , শেষের পাতা , নিউজ এক্সক্লুসিভ , প্রথম আলো :
শুধু মাত্র অক্টোবর মাসেই বিডিআরকে নিয়ে এতগুলো নেগেটিভ রিপোর্ট।
প্রথম আলোর এক নিরন্তর চেষ্টা চলছে "বিডিআর " নামক এক অপরাধী শ্রেনী , শিকাগোর একখুনে রেলগ্যাং সাথে দেশের মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য !
আমি অপরাধীর সাফাই গাইছিনা।
বিডিআরের জোয়ানরা যারা ২৫ শে ফেরুয়ারীর রক্তাক্ত খুনোখুনির সাথে জড়িত ছিলো তারা রেহাই পাবেনা।
কারন ট্রায়াল জাজরা সবাই সেনা কর্মকর্তা।
আর ঐসব স্বল্পবিত্ত জোয়ানরাও ব্যারিস্টার রফিক কিংবা ড: কামালকে তাদের লইয়ার হায়ার করতে পারবেনা।
বিচার চলছে ,বিচার চলুক।
তাইবলে এই ছবি গুলো , দিনের পর দিন এই রিপোর্টগুলো কি প্রথম আলোর না ছাপালে চলতোনা ?
অবশ্যই চলতো।
বিডিআর বিদ্রোহের বিচার তাতে থেমে থাকতো না।
এর উদ্দেশ্য কি ?
কেন আমাদের নিরপরাধ বিডিআরের ভাইদের কে মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাবকানো হচ্ছে ?
কেন তাদের মাথা নীচু করা , কাঁধ ঝুলে যাওয়া ছবি ছাপানো হচ্ছে ?
যদি ছাপাতেই হয় তথ্যের ধারাবাহিকতার দায়িত্ব (!) পালনের জন্য তাহলে ৫ম পাতায় নয় কেন , ৪র্থ পাতায় নয় কেন ?
কেন প্রথম পাতায় , কেন শেষের পাতায় পাতায় ?
কেন সকালে পত্রিকা হাতে নিয়েই বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সীমান্তরক্ষী ভাইদের এমন মাথা নীচু করা ছবি দেখতে হয় ?
কেন বিএসএফের খুনোখুনির খবর ৫ম পাতা , ৬ষ্ঠ পাতার "চিপায়" ছাপা হয় ?কেন প্রথম পাতায় নয় , শেষের পাতায় নয় ?
বিডিআরের কয়টা বীরত্বপূর্ন ছবি প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে কেউ কি বলতে পারেন?
মতিউর রহমানের ঠান্ডা মাথার গাদ্দারীর খেলার আরো নমুনা দেখুন ।
যখন আমাদের সারাদেশের বিডিআর ভাইরা তাদের অল্পকিছু শৃঙ্খলাবিচ্যুত ভাইদের কারনে বিব্রত , লজ্জিত তখন প্রথম আলোর পাতায় পরদেশী কুকুর শাবক বিএসএফকে নিয়ে কি খবর ছাপা হয়েছে :
এপ্রিল ২ , ২০০৯ , প্রথম আলো , প্রথম পাতা :
বিএসএফকে ধন্যবাদ জানানোর খবরখানি আর তাদের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস টুকু প্রথম পাতায় না ছাপালে গাদ্দার মতির রূপী হালাল হবেনা।
সেপ্টেম্বর ২৪ , ২০০৯ এর প্রথম আলো , প্রথম পাতা , এক্সক্লুসিভ নিউজ :
খুনী (বিএসএফ) তার খুন বন্ধ করার জন্য আশ্বাস দিয়েছে - এই হলো প্রথম আলোর মতির প্রথম পাতার প্রিয় খবর !!!
অথচ দেখুন সেই একই বিএসএফ যখন কুপিয়ে খুন করে , গুলি করে মারে বাংলাদেশের মানুষকে তখন সেই খবর কোথায় ছাপা হয় প্রথম আলোর পাতায় :
নভেম্বর ১৬ , ২০১০ , ৫ম পাতা , কলাম ৬ ,প্রথম আলো :
নভেম্বর ১০ , ২০১০ , ৩য় পাতা , কলাম ৮ , প্রথম আলো :
এই আমাদের সীমান্তবাসী বাংলাদেশী মানুষের প্রানের মূল্য ৭১'র গনহত্যার বিচারের মিডিয়া পুরোধা প্রথম আলোর কাছে !!!
মতির বেঈমানী এতোটাই নির্লজ্জ্ব যে তা মীর জাফর- উমি চাঁদ- জগত শেঠকেও হার মানাবে ।
বিশ্বাস না হলে দেখুন :
একটু আগে ঠিক উপরে যেই নিউজ ক্লিপটি পেয়েছেন প্রথম আলোর " যুবককে কুপিয়ে হত্যা করলো বিএসএফ" শিরোনামে (বাংলাদেশী যুবক বলা হয়নি কিন্তু শিরোনামে , যদিও মূল খবরে লুকানো সম্ভব নয় !) -
সেই ছোট্ট এক কলামের নিউজটি ছাপা হয়েছে ৩য় পাতায় কলাম ৮ এর চিপায় , নভেম্বর ১০ , ২০১০ এ।
এবার দেখুন সেই একইদিন
নভেম্বর ১০ , ২০১০ , ১ম পাতা , নিউজ এক্সক্লুসিভ , প্রথম আলোর :
আবারো সেই বিডিআর বিদ্রোহকে সামনের পাতায় নিয়ে আসা , অথচ বিএসএফের খুনোখুনি ৩য় পাতার চিপায় !!!
অথচ সেই একই দিন আরেকটি নিউজ দেখুন প্রথম আলোতে !
নভেম্বর ১০ , ২০১০ , শেষের পাতা , রঙিন হাইলাইটে এক্সক্লুসিভ নিউজ , প্রথম আলো :
সুপ্রিয় ব্লগ পাঠকরা - আপনাদের মনে কি প্রশ্ন জাগছেনা :
প্রথম আলো কি ভারতীয় পত্রিকা নাকি বাংলাদেশের পত্রিকা ?!!!!
_______________________________________
আসুন এবার অন্যদিকে চোখ ফেরানো যাক :
নভেম্বর ০৭ , ২০১০ প্রথম আলোর পাতা ২১ এর আরেকটি চিপার নিউজ :
এই আমাদের জাতীয় স্বার্থ প্রথম আলোর ২১ পাতার চিপায় ???
এবার দেখুন আমাদের জন্য আরেক মরনফাঁদ , ২য় ফারাক্কা টিপাইমুখ নিয়ে প্রথম আলোর খবরের নমুনা :
আগস্ট ২ , ২০০৯ , প্রথম আলো , প্রথম পাতা , ১ কলামের নিউজ :
ফয়সাল মাহুমুদ ফয়জীর নকল ট্রান্সক্রিপ্ট প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ৮ কলামের প্রশস্ততাসহ রঙীন লীড নিউজ হতে পারলেও টিপাইমুখ সেই গুরুত্বটুকু পায়নি !
বরন্চ্ঞ সেখানেই শেষ নয়।
রিপোর্টটিতে কি বলা হয়েছে পড়ে দেখুন এর বাকী অংশ সহ :
১. দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার কারনে আমাদের জ্বী হুজুরী প্রতিনিধি দল হেলিকপ্টার থেকেই টিপাইমুখ পরিদর্শন করেছেন ।
-১০০ জনের বহর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে ১৩০০০ মাইলদুরে নিউইয়র্কে আসতে পারলেও ৬ জন "জ্বী হুজুর" দেশের মরন সমস্যা টিপাইমুখ দেখতে পাশের দেশে গিয়ে একটি ভালো আবহাওয়ার দিনের জন্য অপেক্ষা করতে পারলেন না !
- প্রথম আলোর মতিও বেশ খুশী হেলিকপ্টার থেকে সফল (!) টিপাইমুখ পরিদর্শনে !
২. ভারতীয় কতৃপক্ষের দেয়া তথ্য এবং আশ্বাস প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন।
দুর্দান্ত - প্রথমে হেলিকপ্টার থেকে টিপাইমুখ পরিদর্শন , অতঃপর নির্লজ্জ্ব বেহায়ার মত ভারতীয় ফ্লাইটে কেউ দিল্লী , কেউ কলকাতা গমন এবং "তথ্য ও আশ্বাস" নিয়ে সগৌরবে বাংলাদেশে আগমন !
শেখ হাসিনা জয় হো , প্রথম আলোর মতি জয় হো।
প্রথম আলোর মতির আরেক খেল দেখুন :
ডিসেম্বর ৭ , ২০০৯ , প্রথম আলো , প্রথম পাতা , ব্ক্স নিউজ ফিক্সচার :
ছবিটি দেখে কি ভাবছেন ?
ফারাক্কার মরনছোবলে শুকিয়ে যাওয়া মৃত পদ্মার ছবি ছাপিয়েছে প্রথম আলো ?
না , তাহলে ভুল করছেন ?
পদ্মাতো ফারাক্কার বিষে নীল হয়নি , মারা যায়নি ।
আপনি ভুল জানেন , আমিও ভুল জানি।
আমরা সবাই ভুল জানি।
আসল এবং ১০০% খাঁটি সঠিক উত্তরটা জানে প্রথম আলো ।
তাইতো জানলাম প্রথম আলোর মতির কাছে থেকে!
পদ্মা শুকিয়ে মরে গেছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে , ভারত, ফারাক্কার কোনো দোষই নেই একেবারে !
জলবায়ু পরিবর্তনই আসল শয়তান !
ভারত কিচ্ছু করেনি , ফারাক্কাতো মধুর নহর !
আমরা যত্তোসব অযথাই ভারত আর তার ফারাক্কার পিন্ডি উদ্ধার করি !
বিশ্বাস না হলে প্রথম পাতার ঐ বক্স ফিক্সচার এর মূল খবরটি পড়ুন :
ডিসেম্বর ৭ , ২০০৯ , প্রথম আলো , প্রথম পাতা , ব্ক্স নিউজ :
টিপাইমুখ নিয়ে আমাদের পানি বিশেষজ্ঞদেরকে যখন ভারতীয় চামার চন্ডাল পিনাক "তথাকথিত " বলার আস্পর্ধা দেখালো প্রথম আলোর মতির সেটা নিয়ে এত বয়ে যায়নি।
এবার কিন্তু পদ্মার আসল শত্রু জলবায়ু পরিবর্তন আবিষ্কারে রাবির ভূ-তত্ত্বের অধ্যাপকের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে ফেলেছে!
ঐ জলবায়ু পরিবর্তনই আসল শয়তান , পদ্মার শত্রু !
অযথাই আমাদের "তথাকথিত" পানি বিশেষজ্ঞরা ফারাক্কাকে নিয়ে খিস্তি করেন !
প্রিয় ব্লগাররা , কখনো কি দেখেছেন ফারাক্কার মরনছোবল নিয়ে প্রথম আলোর পাতায় একটি ব্ক্স নিউজ ?
___________________________________
চলুন এবার অন্যদিক থেকে ঘুরে আসি :
জানুয়ারী ১৩ , ২০১০ , প্রথম আলো , লীড নিউজ :
ভাবছেন এতে প্রথম আলোর দোষ কোথায় ?
যা বলেছে পুরোটাতো শেখ হাসিনাই বলেছে - তাইনা , এইতো ভাবছেন।
হ্যাঁ , পাঠকরা , ওপরের নিউজটিতে যা পড়ছেন তার পুরোটাই হাসিনার সংলাপ , সিনেমার সংলাপ , প্রথম আলো নিজে থেকে কিছু বলেনি।
কিন্তু সিনেমার রচয়িতা কে সেটা কি দেখবেন না ?
কবে সিনেমার পুরো স্ক্রিপ্ট তৈরী হয়েছিলো , কে তৈরী করেছিলো , কিভাবে করেছিলো সেটা দেখতে হাসিনার ভারত সফরের আগে দীপুমনির সফর নিয়ে এই নিউজটি দেখুন :
সেপ্টেম্বর ১১ , ২০০৯ , লীড নিউজ , প্রথম আলো ! :
এই রিপোর্টটি কিন্তু এমনকি দীপুমনির সংলাপও নয়!
খোদ প্রথম আলোর মতির "দিল্লীকা নওকর" দীপান্জ্ঞনের রিপোর্ট !
শুরুটা কিভাবে হয়েছে দেখুন :
"ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহাসিক মোড় নিতে চলেছে"
"ভারত দেবে বিদ্যুত , বাংলাদেশ দেবে পরিবহন সুবিধা "
ঠিক এভাবেই হাসিনার ভারত সফর সিনেমার ট্রেলার প্রচারিত হয়েছিলো প্রথম আলোর স্ক্রীনে !
ওপরে যা দেখলেন সেটাতো পূর্নদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র , প্রথম আলোর মতি সুযোগ পেলেই মাঝেমাঝে সামনের স্ক্রীন (প্রথম পাতা) কিংবা পেছনের স্ক্রীনে (শেষের পাতায়) স্বল্পদৈর্ঘ্য নাটকও দেখিয়ে থাকে।
এই যেমন নীচের এই নিউজটি :
অক্টোবর ২৪ , ২০১০ , শেষের পাতা , এক্সক্লুসিভ নিউজ , প্রথম আলো :
এই সেই একই প্রথম আলো দীপুমনির ট্রানজিটের মাশুল নিয়ে বোল্ড অ্যান্ড ক্লীয়ার স্টেটমেন্টের খবর ৩য় পাতায় পাঠিয়ে দেয় !
নভেম্বর ১৬ , ২০১০ , ৩য় পাতা , প্রথম আলো :
সম্প্রতি ভারত তার থলের বেড়াল বের করেছে ।
ট্রানজিটে মাশুল নিলে ভারত ৬৭ পন্যে শুল্ক ছাড় দেবেনা ।
যেইসব ভারতীয় দালালরা এর পক্ষে সাফাই গাইতে আসবে তাদের জন্য নীচের নিউজটা একটা ভালো দাওয়াই হতে পারে :
জুলাই ৪ , ২০১০ , প্রথম আলো :
চীনকে কিন্তু ট্রানজিট দিতে হচ্ছেনা !
অথচ ভারতের সামরিক - অর্থনৈতিক শত্রু চীনকেও কিন্তু প্রথম আলো সুযোগ পেলেই চেপে ধরছে ।
আমির ভারতের যথাযোগ্য গোলামী বলে কথা !
দেখুন নীচের নিউজটি :
সেপ্টেম্বর ২৬ , ২০১০ , লীড নিউজ , প্রথম আলো :
চীনের শুল্কমুক্ত ছাড়ের বদান্যতার খবরটুকু প্রথম আলো তাদের বানিজ্য পাতাতেই আটকে রাখলেও নীচের খবর ২টি কিন্তু একেবারে এক্সক্লুসিভ নিউজ বানিয়ে ছেড়েছে শেষের পাতায় !
জুলাই ১১ , ২০১০ , শেষের পাতা , প্রথম আলো :
নভেম্বর ১১ , ২০১০ , শেষের পাতা , নিউজ এক্সক্লুসিভ , প্রথম আলো :
গাছে কাঠাল , গোঁফে তেল !
ভারত সরকার অনুমতি দিলে তবেই ত্রিপুরা বিদ্যুত বিক্রী করবে - এই হচ্ছে মতিউর রহমানের নিউজ এক্সক্লুসিভ !
_________________________________
শুধু এতসব গাদ্দারীর খেলাতেই মতি থেমে নেই।
বেশ লম্বা সময় ধরেই এই বেঈমান তার পত্রিকার পাতায় পাতায় ভারত কে সামহোয়াট স্কয়ার ইন্চ্ঞ জায়গা মোটামুটি বলা চলে রেজিস্ট্রী করে দিয়ে দিয়েছে ।
সত্যতা চান ?
তাহলে নীচের ইমেজগুলো দেখুন :
অক্টোবর ৭ , ২০১০ , কুটনৈতিক রিপোর্ট , শেষের পাতা , প্রথম আলো :
এই ভারতীয় এক্স আইজিপি কিরনবেদী কিংবা তার তিহার কারাগারের গল্প কিভাবে আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ন হতে পারে ?কোন প্রয়োজনীয়তা থেকে এটি শেষ পাতায় স্কয়ার নিউজ হতে পারে ?
অক্টোবর ১৪ , ২০১০ ,সম্পাদকীয় পাতা , প্রথম আলো :
কে এই পংকজ মিশ্র ?
ভারতের কমনওয়েলথ গেমস নিয়ে আমাদের কিসের মাথাব্যথা ?
কেন সম্পাদকীয় পাতার মত এত গুরুত্বপূর্ন জায়গায় এক অচেনা ভারতীয়র কলাম ছাপানো হয়েছে , তাও আবার নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপানো ইংরেজী থেকে অনুবাদ করে ?
এটি কিভাবে আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ন হতে পারে ?
অক্টোবর ৫ , ২০১০ , সম্পাদকীয় পাতা , প্রথম আলো :
কেন ভারতীয় সাংবাদিক- বুদ্ধিজীবি কূলদীপ নায়ারের ডক্ট্রিন আমাদের দেশের পাঠকদের গেলানো হচ্ছে ?
কেন দিনের পর দিন এই সব ভারতীয় বুদ্ধিজীবিদের কলাম ছাপানো হচ্ছে প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পাতায় ?
নভেম্বর ১৬ , ২০১০ , শেষ পাতা , কলাম ১ , প্রথম আলো :
নভেম্বর ২১ , ২০১০ , ১ম পাতা , এক্সক্লুসিভ নিউজ , প্রথম আলো :
নভেম্বর ২৩ , ২০১০ , ১ম পাতা , ডেস্ক রিপোর্ট , প্রথম আলো :
ভারতের আভ্যন্তরীন এই সমস্ত ঘটনা কিভাবে আমাদের দেশের মানুষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট হতে পারে ??????
কেন এই সব খবর প্রথম আলোর ১ম পাতা, শেষ পাতায় এক্সক্লুসিভ নিউজ হয়ে ছাপা হয় ??????
নভেম্বর ১৫ , ২০০৯ , ১ম পাতা , প্রথম আলো :
কেন সেই ভারতীয় চামার কূটনীতিক পিনাকের ছবি ছাপা হয় প্রথম আলোর ১ম পাতায় ?
সুপ্রিয় ব্লগ পাঠকরা , বিনা বাতাসে গাছ নড়েনা , নো স্মোক উইদাউট ফায়ার ।
এই শীতল ষড়যন্ত্রের পেছনেও কেউ না কেউ কলকাঠি নাড়ছে।
মতি নিজে থেকেই একা এই খেলা খেলছেনা ।
প্রথম আলোর মতির এই সুক্ষসব জাতির সাথে বেঈমানীর খেলা দেখতে দেখতে ৯০ 'র দশকের মাঝামাঝির একটা ধারাবাহিক নাটকের কথা মনে পড়ে গেলো।
স্টেরিং এ ছিলো আলী জাকের আর ডলি জহুর।
জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোনা-মুদ্রা চোরাচালানীর গ্যাং ক্র্যাকডাউন নিয়েই কাহিনী চলছিলো।
আলী জাকের ছিলেন বুড়ো হিরো।
আর চোরাচালানীদের লাটভাই ছিলো খুরশীদুজ্জামান উৎপল ।
প্রথম আলো মতির ভারতের পক্ষে "তথ্য এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চোরাচালানী" দেখে সেই লাটভাই এর কথা মনে পড়ে গেলো ।
ভারতের সুস্পষ্ট চর প্রথম আলোর মতির ব্যাপারে শুনেছিলাম ১/১১ এর পর প্রথম আলো মতি , ডেইলী স্টার মাহফুজ আর সমকাল সারোয়ার মিলে দিল্লী ভ্রমনে গিয়েছিলো।
সুস্পষ্ট প্রমান না পেলে সেটা নিয়ে মন্তব্য না করার স্ট্যান্ড
আছে আমার।
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে দিল্লীর কোন লাট ভাইয়ের সাথে এই অসামান্য শীতল বুদ্ধিমান,গাদ্দার প্রথম আলো মতি যোগাযোগ রাখে সেটা খুঁজে বের করার সময় এসেছে !!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।