মাওলার অভিষেক নিয়ে সরাসরি উন্মুক্ত আলোচনার কিছু বিপদ আছে। সেই বিপদ অতিক্রম করা যাবে যদি মাওলার অভিষেক বিষয়ক আলাপ আলোচনা তথ্যের ভিত্তিতে না হয়ে তত্ত্বের ভিত্তিতে হয়। তথ্যের ভিত্তিতে হলে বিপদ হচ্ছে এই যে প্রায় পনের ষোল শতাব্দির মিথ্যা অপপ্রচারে ইসলাম সম্পর্কে জনগনের মধ্যে যে ধারনা সৃস্টি হয়েছে তার সাথে তথ্য কুলিয়ে উঠতে পারবে না। জনগণের মধ্যে প্রতিক্রিয়াশীলতা বৃদ্ধি পাবে আর তাত্তিক ভাবে একটু উপস্থাপন করতে পারলে জনগণ সেটা প্রাথমিক ভাবে বুঝতে না পারলেও হৃদয়াঙ্গম করতে পারবে। যে পদ্ধতিটা লালন সাঁইজী ব্যাবহার করে ছিলেন।
তিনি কখোনো তথ্য হাজির করেন নি,তথ্যের হালকা ছোঁয়ায় তত্ত্ব তৈরী করেছেন।
মাওলার অভিষেক মানে হচ্ছে হযরত আলি(রঃ)কে মুসলিম জাহানের মাওলা হিসেবে আল্লাহ এবং হযরত মুহম্মদ(সঃ)কর্তৃক অভিষিক্ত করে যাওয়া। এটা তথ্য এবং তত্ত্ব হিসেবেও অত্যন্ত যৌক্তিক। কিন্তু মহানবীর তিরোধানের পর অপরাপর খলিফা এবং গোত্রের প্রতিনিধিরা বিষয়টিকে নিজেদের স্বার্থানুযায়ী উল্টে দিয়ে মওলাইয়াত প্রতিষ্টা না করে খেলাফাত প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন এবং খেলাফাত প্রতিষ্ঠা হয়। খেলাফাতই আজকের মুসলমানদের কাছে সত্য কারন মুসলমানদের কেন্দ্রভূমি হচ্ছে মক্কা এবং মদিনা এবং সেই কেন্দ্র থেকে যা কিছু সত্যাকারে প্রকাশিত হলো তার সম্পর্কে আর খোঁজ খবর নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি মুসলিম জাহান,তারা কেন্দ্রের মোড়কে মিথ্যাকেই সত্য বলে জানলো।
যাই হোক মুসলমানরা আজ নিজেদের কাছে দুই মোটা দাগের বিভক্ত দুটি দল যার একটি শিয়া অপরটি সুন্নি। পৃথিবী ব্যাপি সুন্নি মুসলমানদের আধিক্য কারণ পৃথিবী ব্যাপি একসময়ে খলিফা বা খেলাফাতের আধিক্য ছিলো।
বাংলাদেশেও সুন্নি মুসলমান সংখ্যাগুরু। আর তারা শিয়া নাম শুনলে প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠে। কারবালার ঘটনায় তারা ব্যাথিত হলেও এই দিনটিতে সুন্নি মুসলমানদের কোনো আয়োজন নেই।
তারা মনে করে ওটা শিয়াদেরই ধর্ম পালন বা বাড়াবাড়ি।
যাই হোক আমরা বলছিলাম যে মওলাতন্ত্র নিয়ে আলাপ আলোচনার বিপদ। আমরা গুরুত্ত্ব দিতে চাই তাত্ত্বিক দিকটায় বেশি গুরুত্ত্ব দিতে অন্তত এই বিষয়ে।
আমরা ভাবতেও পারি না যে কি সুন্দর পদ্ধতিতে লালন সাঁই সহ আরো অনেকেই মওলাতন্ত্র সম্পর্কে তাদের তাত্ত্বিক বয়ান রেখে গেছেন কতটা কৌশলের সহিত। যদিও তাঁদের সেই মওলাতন্ত্র পুরোটা ইসলামীক কাঠামোর মতো নয়।
ভারতীয় গুরুবাদের মিশেল আছে এতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।